RE: বাড়ি তৈরি করার জন্য ঋণ কোথা থেকে নিতে পারি?

      আমি বাড়ি করব অনেকদিন ধরেই ভাবছি কিন্তু জমানো টাকা নেই বলে এই কাজে হাত দিতে পারছি না। আমার ইচ্ছা বাবার মৃত্যুর আগেই তাকে একটা উপহার দিতে চাই এই বাড়ি বানিয়ে। অনেক জায়গা থেকে শুনেছি বাড়ি বানাতে ঋণ সংগ্রহ করা যায়। তাই আমাকে কি জানাবেন বাড়ি তৈরির জন্য আমি ঠিক কোথা থেকে ঋণ সংগ্রহ করতে পারি? 

      sajib Supporter Asked on March 4, 2015 in আইন.
      Add Comment
      1 Answers

        বাড়ি করার স্বপ্নটি প্রতিটি মানুষেরই স্বপ্ন। নিজের একটি সাধের বাড়ি থাকবে যার প্রতিটি ইটের কণায় নিজের কষ্টের ছাপ থাকবে। আপনার মনেও এই স্বপ্ন যে বাবান মৃত্যুর আগে তার স্বপ্নটাকে বাস্তবায়িত করতে চান। এক্ষেত্রে ঋণ অনেক প্রতিষ্ঠানই দিয়ে থাকে তবে একেক প্রতিষ্ঠানের নিয়ম একেক রকম। আসুন প্রতিষ্ঠানগুলোর নাম এবং নিয়মকানুন ছোট্ট পরিসরে জেনে নিই।

        বাংলাদেশের সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো গৃহঋণ দিয়ে থাকে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরাসরি গৃহঋণ দেয় না। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে এই ঋণ দিয়ে থাকে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি এ খাতে গ্রাহকদের এক কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ দেওয়ার আদেশ জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।

        বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশন

        বাংলাদেশের যেকোনো সুস্থ নাগরিক, যাঁর নির্দিষ্ট আয় আছে, তিনি গৃহঋণ পেতে পারেন। রাজউক অনুমোদিত নকশার ওপর ভিত্তি করে প্রকৌশলী যে আনুমানিক হিসাব দেবেন, তার ৮০ শতাংশ ঋণ দেওয়া হয়। ঢাকা-চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এলাকায় ঋণের পরিমাণ সর্বোচ্চ ৪০ লাখ টাকা। এর বাইরে অন্যান্য এলাকায় ১৫ লাখ টাকা ঋণ দেওয়া হয়। তবে সম্প্রতি ঢাকা-চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এলাকার জন্য এই ঋণের পরিমাণ ৫০ লাখ টাকা অনুমোদন দেওয়া হবে বলে জানায় ওই প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ। সে ক্ষেত্রে ঢাকা-চট্টগ্রামে সুদের হার ১২ শতাংশ। এ ছাড়া অন্যান্য এলাকার সুদের হার ১০ শতাংশ এবং ঋণ পরিশোধের মেয়াদ ১৫ বছর। প্রতি মাসের কিস্তিতে সরল সুদে এই টাকা পরিশোধ করতে হয়।

        ডিবিএইচ

        ঋণের কোনো নির্দিষ্ট পরিমাণ নেই। সম্পত্তির পরিমাণ, ঋণ পরিশোধের সামর্থ্যের ওপর ভিত্তি করে ঋণ দেওয়া হয়। সে ক্ষেত্রে ঋণ পরিশোধ করতে হবে ২০ বছরের মধ্যে। সুদের হার নয় থেকে ১৬ শতাংশ।

        আইডিএলসি

        গ্রাহকের সম্পদের পরিমাণের ৭০ শতাংশ পর্যন্ত গৃহঋণ দিয়ে থাকে এই প্রতিষ্ঠান। সুদের হার ১৩ থেকে ১৪ শতাংশ। পরিশোধের সময়কাল ২০ বছর। প্রবাসীদেরও এ ঋণের সুবিধা দেওয়া হয়। এ ছাড়া চাকরিজীবী, ব্যবসায়ীদের আয় ন্যূনতম ২০ হাজার টাকা হলে, তিনি এ প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হন।

        ডাচ্-বাংলা ব্যাংক

        সাধারণত যাঁদের আয় ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা, তাদের এই ব্যাংক থেকে ঋণ দেওয়া হয়। ঋণের পরিমাণ দুই থেকে ৭৫ লাখ টাকা। সুদের হার ১৩ শতাংশ। ঋণ পরিশোধের সময় ১৫ বছর। বাড়ি নির্মাণ খরচের ৭০ শতাংশ ঋণ দেওয়া হয়। সে ক্ষেত্রে ঋণগ্রহীতার বয়স ২৫ থেকে ৬৫ বছর হতে হবে। প্রসেসিং ফি ঋণের পরিমাণের শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ।

        প্রাইম ব্যাংক

        সম্পত্তির মূল্যের ওপর ৭০ শতাংশ ঋণ দেওয়া হয়। ঋণের পরিমাণ পাঁচ থেকে ৭৫ লাখ টাকা। সুদের হার ১৩ শতাংশ। ঋণ পরিশোধের সময়সীমা ১০ বছর। ভ্যাটসহ সার্ভিসচার্জ রয়েছে।

        ইস্টার্ন ব্যাংক

        ঋণের পরিমাণ পাঁচ থেকে ৭৫ লাখ টাকা। ঋণগ্রহীতার মাসিক গড় আয়ের ৫০ গুণ পরিমাণ ঋণ দেওয়া হয়। ঋণ পরিশোধের সময়সীমা তিন থেকে ২০ বছর। ঋণগ্রহীতাকে বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে এবং তার বয়সসীমা ২২ থেকে ৫৭ বছর। ঋণের পরিমাণ পাঁচ থেকে ১৫ লাখ টাকা হলে সুদের পরিমাণ ১৪ থেকে ১৫ শতাংশ। ঋণগ্রহীতার সম্পত্তির পরিমাণের ৮০ শতাংশ ঋণ দেওয়া হয়।

        ঢাকা ব্যাংক

        চাকরিজীবী, পেশাজীবী, ব্যবসায়ী, যাঁদের আয় ন্যূনতম ৪০ হাজার টাকা, তারা ঋণ পাওয়ার যোগ্য। সম্পত্তির মূল্যের ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ দেওয়া হয়। পাঁচ থেকে ১৫ বছরের মধ্যে ঋণ পরিশোধ করতে হয়। ঋণের পরিমাণ পাঁচ থেকে ৭৫ লাখ টাকা। সুদের হার ১২ থেকে ১৩ শতাংশ। প্রসেসিং ফি ১ দশমিক ২৫ থেকে ১ দশমিক ৫ শতাংশ ।

        এইচএসবিসি ব্যাংক

        ঋণগ্রহীতার রেজিস্ট্রেশন খরচসহ সম্পত্তির ক্রয়মূল্যের সর্বোচ্চ ৮০ শতাংশ গৃহঋণ দেওয়া হয়। ঋণের পরিমাণ সাত লাখ ৫০ হাজার থেকে ৭৫ লাখ টাকা। ঋণ পরিশোধের সময়সীমা পাঁচ থেকে ২০ বছর। সুদের হার ৯ শতাংশ। ঋণগ্রহীতা চাকরিজীবী হলে তাঁর ন্যূনতম আয় ৪০ হাজার এবং নিজস্ব প্রতিষ্ঠান আছে, এমন কেউ বা ব্যবসায়ী হলে তাঁর আয় ৫০ হাজার টাকা হতে হবে। এ ব্যাংকে চলছে ‘বৈশাখী অফার’। এই বছরের এপ্রিল থেকে অক্টোবর পর্যন্ত চলবে এ অফার। এতে সুদের হার ৯ দশমিক ৯৯ শতাংশ।

        স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক

        এ ব্যাংক থেকে ঋণ পেতে হলে ঋণগ্রহীতাকে চাকরিজীবী, পেশাজীবী বা ব্যবসায়ী হতে হবে এবং তাঁদের মাসিক আয় হতে হবে ন্যূনতম ২৫ হাজার টাকা। ন্যূনতম বয়স ২৫ বছর। ঋণগ্রহীতার সম্পত্তির পরিমাণের ৮০ শতাংশ ঋণ দেওয়া হয়। মোট ঋণের পরিমাণ ৭৫ লাখ টাকা। সুদের হার ১২ দশমিক পাঁচ শতাংশ থেকে ১৪ দশমিক ২৫ শতাংশ। প্রসেসিং ফি ঋণের পরিমাণের ১ দশমিক ৫ শতাংশ এবং সঙ্গে ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রযোজ্য। ঋণ পরিশোধের সময় ২০ বছর।

        তথ্যঋণ : লাইফস্টাইল

        Professor Answered on March 4, 2015.
        Add Comment

        Your Answer

        By posting your answer, you agree to the privacy policy and terms of service.