RE: আকুপাংচার কী?
আকুপাংচার কি :
আকুপাংচার একটি চীনের চিকিৎসা পদ্ধতি। এতে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় সরু লম্বা সুঁই ফুটিয়ে চিকিৎসা করা হয়। বহুপুর্বে চীনা চিকিত্সাবিদ্যার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিলো আকুপাংচার। আকুপাংচার এর লক্ষ্য আসলে কৌশল।
যেভাবে করা হয় :
‘অ্যাডেনোসিন’ নামের এক ধরণের প্রাকৃতিক রস বের করে দিয়ে মানবদেহের বিভিন্ন অঙ্গের ব্যথা দূর করে এই আকুপাংচার৷ এটি একটি দর্শনভিত্তিক চিকিৎসাপদ্ধতি, যাতে মনে করা হয় যে এনার্জি দেহে একটি প্রণালির মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিতভাবে প্রবাহিত হচ্ছে। যদি কোনো কারণে এনার্জির এই প্রবাহ বাধাপ্রাপ্ত হয় বা এতে অসামঞ্জস্যতা দেখা দেয়, তবে রোগের উদ্ভব ঘটে।
আকুপাংচার দিয়ে এই কারণগুলো লাঘব বা অপসারণ করে এনার্জি প্রবাহকে আবার স্বাভাবিক পর্যায় ফিরিয়ে আনার মাধ্যমে রোগ নিরাময়ের চেষ্টা করা হয়। দেহের বিভিন্ন আকু-বিন্দুতে বিশেষ এক ধরনের সুঁচ ফুটিয়ে বহু রোগের চিকিৎসা হয় আকুপাংচার পদ্ধতিতে। কার্যকর চিকিৎসা পদ্ধতি হিসেবে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক আকুপাংচার স্বীকৃত। আকুপাংচার হচ্ছে দেহের বিভিন্ন আকু-বিন্দুতে বিশেষ এক ধরনের পিন ভেদ করিয়ে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত রেখে চিকিৎসা করা। এসব আকু-বিন্দুকে উদ্দীপ্ত করলে শরীরের নিজস্ব রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এবং রোগটি থেকে শরীর ধীরে ধীরে মুক্ত হতে থাকে। বিশেষ সুঁচগুলো আসলে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রকে উদ্দীপ্ত করে নিউরোট্রান্সমিটার নামের বিশেষ ধরনের কেমিক্যাল ও হরমোনের নিঃসরণ ঘটায়। এতে তীব্র ব্যথার অনুভূতি কমিয়ে দেয়, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের কর্মক্ষমতা বাড়ায়।
আকুপাংচারের সবই যে সুঁচ ফুটিয়ে করতে হয় তা নয়। এর বিভিন্ন ধরণ রয়েছে। যেমন আকু-বিন্দুকে ইলেকট্রিক্যালি উদ্দীপ্ত করা (ইলেকট্রো-আকুপাংচার), শব্দ তরঙ্গের মাধ্যমে আকু-বিন্দু উদ্দীপ্ত করা, আকু-বিন্দুতে চাপ প্রয়োগ, আকু-বিন্দুতে বিশেষ ধরনের ভেষজের উপস্থিতিতে তাপ প্রয়োগ, কাপের মতো বিশেষ পাত্র আকু-বিন্দুতে স্থাপন করে আকু-বিন্দুকে উদ্দীপ্ত করা । বহু রোগের চিকিৎসায় আকুপাংচার ব্যবহৃত হয়। যেমন_মাদকাসক্তি, অ্যাজমা, ব্রঙ্কাইটিস, ব্যথা, কার্পাল টানেল সিনড্রোম, ফুসফুসের ইনফেকশন, কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়ারিয়া, মাইগ্রেন ও মাথাব্যথা, ফাইব্রোমায়ালজিয়া, কোমর ব্যথা, অস্টিওআর্থ্রাইটিস, অস্ত্রোপচার পরবর্তী ব্যথা, ঘাড় ব্যথা, সাইনুসাইটিস, স্ট্রেস ও উদ্বিগ্নতা এর মধ্যে অন্যতম।