RE: আগাম জামিন কীভাবে নিতে হয়?
আগাম জামিন :
যখন গ্রেপ্তার হবার সম্ভাবনায় বা গ্রেপ্তার হবার অনুমানে কোন ব্যাক্তিকে জামিন প্রদান করা হয়, তখন তাকে Anticipatory Bail বা আগাম জামিন বলে। অভিযুক্ত ব্যক্তি অনেক সময় গ্রেপ্তারের আগেই আদালত থেকে জামিন গ্রহণ করতে পারেন। এ ধরণের জামিন সাধারণতঃ দেয়া হয় না। জামিনের সাধারণ নিয়মের ব্যাতিক্রম হিসাবে এ ধরণের জামিন দেয়া হয়। যখন কোন ব্যাক্তির নিকট বিশ্বাস করার এমন কারণ থাকে যে, তিনি কোন জামিন অযোগ্য অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তার হতে পারেন, তখন তিনি হাইকোর্ট বিভাগে বা দায়রা আদালতে নির্দেশের জন্য আবেদন করলে আদালত যদি যথাযথ মনে করেন তাহলে ঐ মুহুর্তে উক্ত ব্যাক্তিকে ভবিষ্যৎ গ্রেপ্তারের উপর আগাম জামিন নির্দেশ করবেন।
আগাম জামিন নেয়ার উপায় :
আগাম জামিন অনুমোদন করার জন্য আইনের বিধানে কোন নির্দিষ্ট ধারা নেই। ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৯৮ ধারাকে ব্যাখ্যা করে পরবর্তীতে ‘আগাম জামিন’ দেয়া অব্যাহত রাখেন আদালত। তাই আগাম জামিনের জন্য ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৯৮ ধারা অনুযায়ী আবেদন করতে হবে। এই ধারার শব্দাবলী “হাইকোর্ট বিভাগ বা দায়রা আদালত যে কোন ক্ষেত্রে যে কোন ব্যাক্তিকে জামিন মঞ্জুর করার নির্দেশ প্রদান করতে পারেন” এই অংশের ব্যাখ্যা প্রদান করে কেবল মাত্র হাইকোর্ট বিভাগ ও দায়রা আদালত আগাম জামিন প্রদান করতে পারেন যে কোন ক্ষেত্রে এবং কোন রকম সীমাবদ্ধতা ছাড়া।
‘আগাম জামিন’ পেতে আবেদনকারীকে আদালতের সামনে প্রমাণ করতে হবে যে, তিনি সরকারের বিরাগভাজন হয়ে আশু গ্রেপ্তারের আশঙ্কা করছেন। তাকে দেখাতে হবে যে, রাষ্ট্রপক্ষ অসদুদ্দেশ্যে তাকে গ্রেপ্তার করতে চায় এবং এতে করে তার সুনাম এবং স্বাধীনতায় অপূরণীয় ক্ষতি হতে পারে। পিএলডি ১৯৮৩-এর একটি মামলায় বলা হয়েছে, পুলিশ যে তাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে গ্রেপ্তার করতে চাইছে, আদালতের সামনে তা প্রমাণ করতে হবে।
৫ বিএলডি ১৯৮৫’র একটি মামলায় আপিল বিভাগের পূর্ণ বেঞ্চের এক সিদ্ধান্তে বলা হয়, কাউকে খাটো করার উদ্দেশ্যে বিদ্বেষমূলক মামলায় জড়ানোর আশঙ্কা থাকলে একজন ব্যক্তি ‘আগাম জামিন’ পেতে পারেন। তবে আসামি যেন দেশ ত্যাগ করতে না পারে এবং আদালতের নির্দেশমাত্র হাজির হতে পারে, আগাম জামিন মঞ্জুর করার ক্ষেত্রে সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে।