RE: আপনার জীবনে সবচেয়ে কষ্টের বিষয় কী?
আপনার জীবনে সবচেয়ে কষ্টের বিষয় কী?
দীর্ঘদিন বেকার ছিলাম। সংসারে বেশ অভাব। অভাবে অভাবে জীবন তেজপাতা। আর ভালো লাগে না। একদিন হঠাত একটা চাকরী পেয়ে গেলাম। ছোট চাকরী। তবুও তো চাকরী! সারা মাস খুব মন দিয়ে কাজ করলাম। চারজনের কাজ আমি একাই করলাম। অফিস ছুটি বিকেল পাঁচ টায়। অথচ অফিস ছুটির পরও বসদের ব্যাক্তিগত কাজ করে দিয়ে হয়। এমনকি কারো কারো ঘরের বাজার পর্যন্ত করে দিতে হয়েছে। তাতেও আমি খুশি। যে করেই হোক চাকরীটা টিকিয়ে রাখতে হবে।
যাইহোক মাস শেষে সেলারি হলো। অনেক গুলো টাকা হাতে পেলাম। কয়েকদিন পর ঈদ। কার কার জন্য কি কি কেনাকাটা করবো মনে ভাবছি। কি কি বাজার করবো সেটা একটা লিস্ট করলাম। জামা কাপড় আর ঈদের বাজার বাসায় নিয়ে গেলে পরিবারের সবাই খুব খুশি হবে। চোখ বন্ধ করেই পরিবারের সদস্যদের হাসিমাখা মুখ গুলো দেখে নিলাম। মার্কেটে গেলাম আগে। আগে জামা কাপড় কিনি পরিবারের জন্য। তারপর যাবো কাঁচা বাজারে। হায় কপাল। পকেটে হাত দিয়ে দেখি টাকা নাই। পকেটমার হয়ে গেছে!
আমার মনে হলো- পুরো আকাশটা আমার মাথায় ভেঙ্গে পড়লো। আর চারদিন পর ঈদ। এখন আমি কি করবো? বাবা মা, ছোট ভাইবোন সবাই আমার অপেক্ষায় আছে। কষ্টে বুকটা ছারখার হয়ে যাচ্ছে। এখন আমি কি করবো? যাইহোক, পরের দিন অফিসে গেলাম। ভাবলাম বসকে বলে কিছু টাকা অগ্রীম নিবো। বসের কাছে টাকা চাওয়ার আগেই বস বলল, স্যরি তোমাকে আর কাজে রাখা যাচ্ছে না। তুমি অন্য কোথাও চেষ্টা করো। কষ্টে আমার চোখে পানি এসে গেলো। মনে মনে ভাবলাম- বসের পা ধরবো? তাতে যদি চাকরিটা ফিরে পাই।
ঈদের দিন সকালবেলা। পরিবারের সবাই না খেয়ে বসে আছি। মা বাবা দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ। কিন্তু আমাদের ভাগ্য ভালো ঈদের আমাদের না খেয়ে থাকতে হয়নি। পাশের বাসার রুনা ভাবী আমাদের জন্য প্রচুর খাবার নিয়ে এসেছেন। দুই পদের সেমাই। মূরগীর মাংস, গরুর মাংস আর পোলাউ। প্রচুর খাবার। পরিমানে অনেক। আমরা পুরো পরিবার পেট ভরে গেলাম। রাতের খাবারেরও চিন্তা নাই। নীচ তলার হারুন ভাইদের বাসা থেকে আসবে। দয়াল মূরশীদ যার সহায় তার কিসের ভাবনা?