RE: কিভাবে একজন বিনয়ি হয়ে উঠবো?
কিভাবে একজন বিনয়ি হয়ে উঠবো?
আচ্ছা, এই বাংলাদেশের মানচিত্র যদি এক টুকরো কাগজের ওপরে আঁকানো হয়, আর সেখানে আঠারো কোটি জনসংখ্যা এঁকে আপনাকে চিহ্নিত করতে বলা হয়, কী মনে হয়? একটা বিন্দুও কি আপনার ভাগ্যে জুটবে?
এবারে বাংলাদেশ বাদ দিয়ে গোটা পৃথিবী আঁকা হোক। সেখানে আপনি?
আবার গোটা সৌরজগত আকাঁ হলে আপনি?
You are just NOTHING compared to the whole domain of creations.
শুধু আপনি না, এই গোটা মানুষজাতি কিছুই না সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টিজগতের কাছে।
তাহলে বিনয়ী না হয়ে উপায় কী বলুন?
বিনয়ী বলতে তাদের বোঝানো হয়, যারা অহংকার করে না। নিজেকে খুব বড় ভাবে প্রকাশ করে না। নিজেকে অন্যের কাছে জাহির করে না। নিজের কর্তব্য সঠিকভাবে পালন করে, এবং তার জন্যেও “ভাব নেয়” না। অন্য যে কারো সাথে ইন্টারেকশনের সময় তার যে ব্যবহার (সে বয়সে ছোট হোক বা বড়) সেই ব্যবহারের ভেতরে প্রকাশ পায় বিনয় কারে কয়।
অন্য কোনো নিয়মকানুনে পাত্তা না দিলেও, মানুষ যে আশরাফুল মাখলুকাত, বা সৃষ্টির সেরা জীব, সেটা নিয়ে দ্বিমত খুব কম মানুষেরই আছে বোধহয় (যদি না সে এলিয়েন বিশেষজ্ঞ হয়)। তাই সবার ভেতরে নিজেকে অত্যাধিক তুলে ধরার একটা টেনডেন্সি দেখাই যায়। আমি অমুক, আমি ঐ জিনিস করে ফেলেছি, অমক দুনিয়া উল্টায় ফেলেছি, নানা কথা। আজকাল মানুষের শোনার পরিমাণ কমে গেছে। মানুষ শুধু বলতে ভালোবাসে নিজের কথা। নিজেকে তুলে ধরতেই যে ব্যাস্ত, সে অন্যের কথা শুনবে কোন অবসরে?
কিন্তু এভাবে চলার ভেতরে কোনো মহিমা নেই। পটল তুলতে টাইম লাগে না, ধ্বংসযজ্ঞেও টাইম লাগে না। প্রতি মুহুর্তে আমরা যে বেঁচে আছি, তার জন্যে শুকরিয়া আদায় করা উচিত আমাদের স্রষ্টার কাছে। অন্তত এজন্য শুকরিয়া আদায় করা উচিত যে পৃথিবীর আশেপাশে দিয়ে এত্তগুলো গ্রহাণু-উল্কাপিন্ড উড়ে ছুড়ে বেড়িয়ে যাচ্ছে, কিন্তু স্রষ্টার দয়ায় কোনোটাই পৃথিবীতে আঘাত করে পৃথিবীর দফারফা করে দিচ্ছে না।
আপনি এক সত্তার দয়ায় বেঁচে আছেন, এটা কখনোই ভুলে যাবেন না।
বিনয়ী হওয়ার প্রসঙ্গে অহংকারের কথা কেন তুলছি এত? কারণ আমার মতে বিনয়ী হওয়ার সবচেয়ে ভালো উপায় হলো অহংকার থেকে বেঁচে থাকা। আপনি নিরহংকার থাকেন, আপনি বিনয়ী হয়ে থাকবেন। নিজেকে অত্যাধিক জাহির করবেন না, আপনি বিনয়ী হয়ে থাকবেন। কেউ আপনার কোনো উপকারে এলে দম্ভের ফিকির না দেখে তাকে সুন্দর করে একটা ধন্যবাদ জানাবেন, বিনয়ের সাথে। আমি এক্সট্রা বিনয়ী হতে বলবো না, কারণ মানুষ বাউন্ডারি বা লিমিট জিনিসটার ভেতরে থাকে কম। বেশি বিনয়ী হওয়ার তাগিদে অনেকে অনেক নিচে অবধি নেমে যেতে পারে, যেটা আবার আত্মসম্মানবোধের সাথে সাংঘর্ষিক।
সুতরাং, মাথার ভেতরে ঢুকিয়ে নিন, দুনিয়াতে আপনি সর্বশ্রেষ্ঠ হতে আসেন নাই, চাইলেও পারবেন না। কারণ দুনিয়ার সর্বশ্রেষ্ট মানুষের চেয়েও ইনিফিনিটি গুণ বেশি সম্মানের এক সত্তা রয়েছেন। আর তাঁর কাছে প্রত্যেকের মাথা নত করতে হয়। সেই অভ্যাসটা চলে এলে আপনার অহংকারও কমে যাবে। আর অহংকার জিরো হয়ে গেলেই গেলেই, আপনি বিনয়ী, আপনি সম্মানিত।
ধন্যবাদ, আসসালামু আলাইকুম।