RE: কীভাবে মনের শান্তি খুঁজে পাবো?
কীভাবে মনের শান্তি খুঁজে পাবো?
ধন্যবাদ আপনাকে প্রশ্ন করার জন্য।
আমরা প্রত্যেকেই চাই শান্তি তে থাকতে। আমাদের মন শান্তির প্রতীক। কোন মন ই আশান্তি, দুঃখ, রাগ, গন্ডগোল পছন্দ করে না।
কিন্তু মনে শান্তি আনতে গেলে আগে বুঝতে হবে, কিসে শান্তি আসে। আপনার ভালো থাকা, মন ভালো রাখা, শান্তির সহিত বসবাস করা এই পুরো টাই নির্ভর করে আপনার নিজের উপরে।
আমরা মনে শান্তি আনার জন্য বাইরের মানুষের কাছে শরণাপন্ন সই, আমরা ভাবি পরিবার, বন্ধু, বান্ধব, আত্মীয় স্বজন সবাই কে যদি ভালো রাখতে পারি বা খুশি দিতে পারি তাহলে আমি ভালো থাকব। সেই মতো আমরা প্রাণপণ চেষ্টা করি সবার মন জুগিয়ে চলার, সবাই কে ভালো রাখার। এর জন্য আমরা অনেক কিছু জীবন থেকে ত্যাগ ও করি।
কিন্তু সত্যি কথা বলতে, এভাবে কখনোই ভালো থাকা যাবে না বা মনে শান্তি আসবে না। কারণ আপনি কিছু পাওয়ার আশায় মানে, সে মনের শান্তি হোক কিংবা নামযস যাইহোক সেটা পাওয়ার জন্য এতো কিছু করছেন, এমনকি নিজেকে পর্যন্ত অনেক কিছুর থেকে বঞ্চিত করেছেন, এতে করে সবার কাছে আমাদের প্রত্যাশা তখন প্রচুর বেড়ে যায় ।
এটা গ্যারান্টির সঙ্গে বলা যায়, আপনার বা আমাদের সেই প্রত্যাশা পূরণ হবে না। ঠিক এই সময়ই আমাদের মনের শান্তি উধাও হয়ে যায়, কারণ আপনার চাহিদা মতো সবাই আপনার গুণকীর্তন করছে না তাই।
তার মানে কি এই , যে কারওর জন্য কিছু করব না, কাউকে ভালোবাসব না!!!
না, সেটা তো কখনো হতেই পারে না। কারণ পরিবারের সবাই ভালো না থাকলে নিজে ভালো থাকা যায় না।
এবার আপনি দ্বন্দ্বে পড়ে গেলেন যে আমি আসলে বলতে কি চাইছি।
আমি এটাই বলতে চাইছি যে, অন্য কে ভালোবাসুন, শ্রদ্ধা করুন, স্নেহ করুন, আপনার সামর্থ্য অনুযায়ী সবার পাশে দাঁড়ান কিন্তু এ সবের বিনিময়ে কারওর কাছে কিছু আশা করা যাবে না।
আমার নিজের ভালো রাখার দায় আমার নিজের। আমার মনে শান্তি আনার দায় অন্য কারো নয়। এখানে আমি কাউকে এমন স্বাধীনতা দেব না যে সে তাঁর ইচ্ছা মতো যখন খুশি আমাকে হাসাবে আবার তাঁর ইচ্ছা না হলে বা তাঁর মন ভালো না থাকলে আমাকে কাঁদাবে।
আমি হাসব কি কাঁদব সে স্বাধীনতা সম্পূর্ণরূপে আমার।
এবার প্রশ্ন হল নিজের মন কে কিভাবে সব সময় শান্তি তে রাখা যায়?
1.ভালোবাসুন:
নিজেকে খুব ভালোবাসুন, নিজের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করুন। সকালে ঘুম থেকে ওঠে নিজের মুখে হাত দিন, নিজের নাক, চোখ, মুখ সব কিছু কে আদর করুন।
নিজেকে এই পৃথিবীর সেরা সুন্দর ভাবুন। নিজেকে মূল্যবান ভাবুন, এতে আপনার আত্মবিশ্বাস বেড়ে যাবে।
সঙ্গে পরিবারের সবাই কে মন থেকে ভালোবাসুন, এটা আশা করা যাবে না যে, আমি সবাই কে ভালোবাসি তাই সবাই আমাকেও একি রকম ভালোবাসবে।
আমি শুধু মনে রাখব, আমি সবাই কে ভালোবাসি কারণ, এতে আমার মন শান্তি তে থাকে তাই। আমি আমার প্রয়োজনে সবাই কে ভালোবাসি।
2.চাহিদা কমান:
আমরা কাজ কম করি, নিজের কাছে বা অপরের কাছে চাহিদা বেশি রাখি।
আমাদের চাহিদা দিনকে দিন বাড়তে থাকে, কিন্তু আপনি যখন কাজ কে বেশি গুরুত্ব দেবেন তখন চাহিদা কমে যাবে।
লাগাম ছাড়া চাহিদা মনের শান্তি নষ্ট করে। আমাদের চাহিদা তখনই বাড়ে যখন আমরা অন্যের সঙ্গে নিজের তুলনা করি।
অমুক দামি বাইক কিনেছে আমাকেও কিনতে হবে, অমুক দামি বাড়ি করেছে আমি কেন পারলাম না।
এমন ভাবনা ভাবতে থাকলে আমরা কখনোই সামনে এগিয়ে যেতে পারব না বরং আরও পিছিয়ে পড়ব । কারণ ওমন করলে মনে শান্তি থাকে না। তাই এটা বন্ধ করতে হবে।
3. সব সময় মন পবিত্র রাখুন:
আমরা একমাত্র নিজেরাই জানি, আমি ভালো কি খারাপ। নিজের সঙ্গে মিথ্যা কথা বলবেন না। অনেকেই আছে নিজের স্বরূপ সবার সামনে যেটা দেখায় আদতে সে তা নয়। এটা খুব ভয়ঙ্কর একটি ব্যাপার। দিনের পর দিন এমন করতে থাকলে মনের অজান্তেই মনে আত্মগিলানী প্রবেশ করবে। তখন আর কখনোই মনে শান্তি পাওয়া যাবে না।
কারো সমালোচনা করা যাবে না, হিংসা করা যাবে না, মনের মধ্যে অহঙ্কার আনা যাবে না। এ সব গুলোই মনের শান্তি হরণ করে।
আমরা ইচ্ছা করলে সব সময় হাসি খুশি এবং শান্তি তে থাকতে পারি। এবং আমরা প্রত্যেকেই জানি এগুলো যদি সঠিক নিয়মে পালন করি তাহলে আমি অবশ্যই ভালো থাকতে পারব। কিন্তু আমরা জানি সব মানি না কিছুই।
4.জ্ঞান মূলক বই পড়ুন:
জ্ঞান সঞ্চয় করুন প্রতি দিন। একদিন খাদ্য না খেলে আমাদের শরীর ও দুর্বল হয়ে পড়ে।।
ঠিক তেমনি জ্ঞান না সঞ্চয় করলে মনে সুন্দর ভাবনা প্রবেশ করবে না আর মন পবিত্র ও হবে না।
মনের শান্তি চাইলে নিজেকে সময় দিন, নিজেকে উন্নত করুন, বাইরের কোলাহল থেকে নিজেকে বার করুন। প্রচুর বই পড়ুন।
মোট কথা নিজের মনে চার্চ দিন, যেমনটি প্রতি দিন সকালে মোবাইল এ দেন ঠিক তেমন।
5. মন খুলে হাসুন:
মনের সমস্ত জড়তা দূর করে এই পৃথিবী কে উপভোগ করুন, এখানে এক ইঞ্চি জমিও ছাড়া যাবে না, আমি ভালো থাকব আমি ভালো আছি এই বার্তা প্রেরণ করুন নিজের কাছে।
এবং কাজের ফাঁকে ফাঁকে হাসির কমেডি মুভি দেখুন আর হা হা করে হাসুন। আমি তো তাই করি।
আমি ছোট্ট ছোট্ট পাওয়া তেই খুশি হই, এবং হাসতে ভালোবাসি।