RE: খুসকি দূর করার উপায় বলুন?

      আমার মাথায় অনেক খুসকি হয়। বিশেষ করে শীতকালে বেশি হয়। কী করব? 

      Add Comment
      1 Answers

        খুশকি সমস্যায় কখনোই ভোগেননি, এমন মানুষ হয়তো খুঁজে পাওয়াই যাবে না! কারণ এটা অতি সাধারণ একটা সমস্যা। মাথার ত্বকে নতুন কোষ তৈরি হয় এবং পুরনো কোষগুলো ঝরে যায়। এটা একটা ক্রম। কিন্তু পুরনো কোষগুলো যখন ঠিকঠাক মতো ঝরে যেতে পারে না তখন সেগুলো জমে যায় এবং ফাঙ্গাস সংক্রমিত হয়। ফলে খুশকি হয়। মাথা থেকে সাদা গুঁড়ার মতো খুশকি পড়ে এবং মাথা চুলকায়।

        মাথায় খুশকির সৃষ্টি নানা ভাবে হতে পারে। মাথার ত্বক যদি অতিরিক্ত তৈলাক্ত হয়, যদি চুল নিয়মিত পরিষ্কার না করা হয় তাহলে সহজেই খুশকি হয়। স্কাল্প বা মাথার ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক হলেও খুশকি হতে পারে। এমনি মানসিক দুশ্চিন্তার কারণেও খুশকি হয়।

        শীতকালে আবহাওয়া থাকে শুষ্ক ও ধুলাবালিযুক্ত। ফলে খুশকির প্রকোপও বেড়ে যায়। যাঁদের খুশকির সমস্যা অন্যান্য সময় থাকে না, দেখা যায় শীতকালে তাঁদেরও খুশকির সমস্যা হয়।

        উপায় : 
        তবে চুল ও মাথার ত্বকের সামান্য যত্ন নিলেই এই সমস্যা দূর করা সম্ভব। জেনে নিন খুশকি দূর করার ৭টি উপায়।

        ১. পুরনো তেঁতুল পানিতে গুলে নিন। গোলানো তেঁতুল চুলের গোড়ায় ভালো করে লাগান। ১০-১২ মিনিট অপেক্ষা করে চুল শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে অন্তত দুদিন তেঁতুল মাথায় দিন। এতে খুশকি যেমন দূর হয় তেমনি মাথার চুলকানিও কমে যায়।

        ২. টকদই খুশকি দূর করতে ও চুল ঝলমলে করতে খুবই কার্যকরী। ৬ টেবিল চামচ টকদই খুব ভালো করে ফেটিয়ে নিন। এরপর এতে ১ টেবিল চামচ মেহেদি বাটা ভালোভাবে মেশান। মিশ্রণটি চুলের গোড়াসহ পুরো চুলে লাগিয়ে ৩০-৪০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর চুল ভালো করে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে একদিন এই মিশ্রণটি ব্যবহার করুন। এতে চুল যেমন খুশকিমুক্ত হবে তেমনি চুল হয়ে উঠবে ঝলমলে ও রেশমি।

        ৩. একটি ডিমের সাদা অংশ ও ৪ টেবিল চামচ টকদই খুব ভালোভাবে ফেটিয়ে নিন। এরপর এতে ১ টেবিল চামচ পাতিলেবুর রস মেশান। মিশ্রণটি মাথার ত্বকসহ পুরো চুলে লাগান। ২০ মিনিট পর চুল শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে অন্তত ১ বার এটা ব্যবহার করুন।

        ৪. মেথি চুলের খুবই উপকারী একটা জিনিস। নারকেল তেল গরম করুন। এরপর এতে মেথি গুঁড়া মেশান। মিশ্রণটি পুরো চুলে লাগিয়ে ১ ঘণ্টার পর শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। দ্রুত ফল পাওয়ার জন্য সপ্তাহে ৩ দিন এটি ব্যবহার করুন।

        ৫. মেথি সারা রাত ভিজিয়ে রাখুন। তারপর এটি থেঁতো করে চুলের গোড়ায় লাগান। ৩০ মিনিট পর চুল ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে অন্তত দুবার মেথি লাগান।

        ৬. চুলের স্বাস্থ্য রক্ষার্থে ও খুশকি দূর করতে অলিভ অয়েলের জুড়ি নেই। অলিভ অয়েল গরম করে নিন। এতে পাতিলেবুর রস মেশান। চুলের গোড়াসহ পুরো চুলে লাগিয়ে ১ ঘণ্টা অপেক্ষা করুন। এরপর চুল ভালো করে শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ২ থেকে ৩ বার চুলে অলিভ অয়েল লাগান। খুশকি দূরের পাশাপাশি চুল হবে কোমল ও ঝলমলে। একই পদ্ধতিতে নারকেল তেলও ব্যবহার করতে পারেন।

        ৭. পেঁয়াজের রস খুব দ্রুত খুশকি দূর করতে পারে। পেঁয়াজ মিহি করে বেটে নিয়ে রস ছেঁকে নিন। পেঁয়াজের রস চুলের গোড়ায় ভালো করে ঘষে ঘষে লাগান। ২০-২৫ মিনিট রেখে চুল ভালোভাবে শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে অন্তত দুবার মাথায় পেঁয়াজের রস লাগান। এতে মাথা চুলকানোও কমে যাবে।

        লক্ষ্য করুন :
        *নিয়মিত চুল আঁচড়ান। এতে খুশকি হবার সম্ভাবনা কমে যাবে।
        *পুষ্টিকর খাবার খান। এতে মাথার ত্বক ও চুল ভালো থাকবে।
        *চুল নিয়মিত পরিষ্কার করুন। কারণ অপরিচ্ছন্ন চুলে খুশকি হয় বেশি।
        *কিছু চর্মরোগ সাধারণভাবে দেখতে খুশকির মতো হয়। তাই মাথায় খুশকির পরিমাণ বেশি হলে চিকিত্‍সকের শরণাপন্ন হোন।

        এছাড়া :
        চুলকে রাখুন চিরকাল খুশকি মুক্ত খুব সহজে : খুশকির সমস্যা চুলের জন্য সব চাইতে বড় একটি সমস্যা। কারণ খুশকি থেকেই চুলের নানা সমস্যার সৃষ্টি হওয়া শুরু হয়। খুশকির সমস্যা থেকে শুরু হয় চুল পড়া, চুল রুক্ষ হয়ে যাওয়া, উকুনের সমস্যা, চুলের আগা ফাটা ইত্যাদি। কারণ খুশকির কারণে চুলের গোঁড়ায় পুষ্টি পৌছুতে পারে না। আপনি চুলের যত্নে যাই ব্যবহার করুন না কেন এই খুশকির কারণে চুল ভেতর থেকে পুষ্টি পায় না। তাই সবার প্রথমে খুশকি মুক্ত করতে হবে চুলকে। হালকা পাতলা খুশকিকে অনেকেই অবহেলা করেন। কিন্তু অবহেলা করবেন না। কারণ সামান্য অবহেলা থেকেই খুশকির সমস্যা বাড়তে থাকে। এতে করে চুলের স্থায়ী ভাবে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়। তাই খুশকি দেখতে পেলেই নির্মূল করতে সচেষ্ট হতে হবে আমাদের।

        খুশকি তাড়াতে ঘরোয়া উপায় : খুশকিমুক্ত ঝলমলে চুল আমারা সবাই চাই। তাই বলে প্রতিদিনে পার্লারে গিয়ে নিয়মিত ট্রিটমেন্ট নেয়ার সময় হয়না কারো। খুশকি হচ্ছে হরমোনের একধরনের ভারসাম্যহীনতা, বেশি বেশি জেল বা স্প্রে ব্যবহার করা, মানসিক চাপ,চর্বি বা মিষ্টি খাওয়া এবং খারাপ স্বাস্থ্যও খুশকির কারণ হতে পারে।

        চুলকে রাখুন খুশকি মুক্ত-৩টি সহজ ঘরোয়া উপায়ে : শীতকালে চুলে খুশকির উপদ্রব বেড়ে যায় অনেকাংশে। শুষ্ক বাতাস ও রুক্ষ আবহাওয়া মাথার ত্বকের ওপর প্রভাব ফেলে অনেকখানি। বাতাসের সাথে ধুলোবালি পুরোটাই চুলে এসে পড়ে। মাথার ত্বকের তৈলাক্ততায় এই ধুলোবালি আটকে গিয়ে খুশকির উপদ্রব বাড়িয়ে ফেলে বহুগুন। আবার শীতকালে যখন গরম পানিতে গোসল করা হয়, তখন গরম পানি মাথার ত্বককে শুষ্ক করে ফেলে ফলে সৃষ্টি হয় খুশকি। নামিদামী অনেক শ্যাম্পু ও অন্যান্য চুলের প্রসাধন ব্যবহার করেও এই যন্ত্রণাদায়ক খুশকির উপদ্রব থেকে মুক্ত হওয়া যায় না সহজে। আবার খুশকি দূর করতে গিয়ে এই এসব রাসায়নিক প্রসাধন রুক্ষ করে ফেলে চুলকে।

        খুশকি থেকে রক্ষা পেতে : চুলে খুশকি নিয়ে অনেকেই খুব দুশ্চিন্তা করে। সাধারণত ত্বক রুক্ষতা ও ছত্রাকের প্রভাবে চুলে খুশকি হয়। তবে এ নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। একটু যত্ন নিলেই খুশকি থেকে রক্ষা পেতে পারে আপনার চুল।

        যে ৯ টি অভ্যাস চিরতরে রাখবে খুশকি মুক্ত : খুশকির যন্ত্রণা ভুক্তভোগী মাত্রেই জানেন। সারাক্ষণ মাথার তালুতে অস্বস্তিকর একটা অনুভূতি ছাড়াও পোষাকের কাঁধের কাছে সাদা সাদা গুঁড়ো গুঁড়ো খুশকি পরে থাকা আপনার ব্যক্তিত্বকেও অনেকটাই ম্লান করে দেয়। প্রিয়জনের সামনে এই খুশকির কা্রণে আপনি পড়ে যেতে পারেন বেশ বিব্রতকর পরিস্থিতিতেও। অথচ খুশকি রোধ করা কিন্তু খুব কঠিন কিছু নয়। প্রয়োজন কিছু ভালো অভ্যাসের। যা আপনি গড়ে তুলতে পারেন সহজেই!

        Professor Answered on March 1, 2015.
        Add Comment

        Your Answer

        By posting your answer, you agree to the privacy policy and terms of service.