RE: ঘরেই চুল হাইলাইটস করার কোনো উপায় আছে কী?
ঘরেই চুল হাইলাইটস করার কোনো উপায় আছে কী?
ইসলাম-পূর্ব আইয়ামে জাহেলিয়া যুগে যখনই কোনো কন্যাশিশু জন্মলাভ করত, তাদের বেশিরভাগকেই জীবন্ত পুঁতে ফেলা হতো। তখন ভাবা হত কন্যা শিশু মানেই অকর্মক একটি পদার্থ যা মানুষের কোনো কল্যাণেই আসে না। তাছাড়া পুত্র সন্তান মানে অর্থ আয়ের উৎস আর কন্যা সন্তান মানে অর্থ ব্যয়ের উৎস। কেননা সে যুগে কন্যা সন্তান বিয়ে দেয়ার জন্য প্রচুর পরিমাণে অর্থ যৌতুক হিসেবে প্রদান করা হত। আর পুত্ররা বিয়ে করে অর্থ আয় করত। এসব সূক্ষ্ম কিছু কারণে আইয়ামে জাহেলিয়া যুগে কন্যা সন্তান জন্ম দেয়াকে পাপ কর্ম বলে অভিহিত করা হত। এ কারণে মা ও মেয়ে দুজনকেই পুড়িয়ে মারা হত বা জীবন্ত কবর দেয়া হত।
ইসলামের আগমনে এ প্রথা চিরতরে বন্ধ হয়ে যায়। কন্যা ও নারীদের প্রতি এ ধরনের পৈশাচিক মনোভাব ইসলাম সমর্থন করে না। ইসলাম সব ধরনের হত্যাকাণ্ডের বিরোধী। তার পরও আলাদাভাবে নারী শিশুকে হত্যা করতে নিষেধ করেছে। এ প্রসঙ্গে সূরা তাকভীরের ৮ ও ৯ নং আয়াতে আল্লাহতায়ালা বলেন, যখন জীবন্ত প্রোথিত কন্যাকে জিজ্ঞেস করা হবে, কী অপরাধে তাকে হত্যা করা হলো? সন্তান ছেলে হোক বা মেয়ে হোক আচরণের ক্ষেত্রে এ দুইয়ের মধ্যে কোনোরূপ পার্থক্য ইসলাম সমর্থন করে না।
হজরত রাসুলুল্লাহ [সা.] ছেলে ও মেয়ের মধ্যে পার্থক্য বিধান এবং মেয়েদের ওপর ছেলেদের অহেতুক প্রাধান্যদান কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেছেন, যার তত্ত্বাবধানে কোনো কন্যা শিশু থাকে আর সে তাকে জীবিত দাফন না করে, তার প্রতি তাচ্ছিল্য প্রদর্শন না করে… আল্লাহতায়ালা তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন।-আবু দাউদকোরানে কারিমের বিভিন্ন স্থানে তাদের মর্যাদার কথা উল্লেখ রয়েছে। এমনকি কোরানে কারিমে সূরাতুন নিসা নামে একটি স্বতন্ত্র সূরাও স্থান পেয়েছে। নারী শিক্ষা সম্পর্কে হজরত রাসুলুল্লাহ [সা.] বলেছেন, নর-নারী সকল মুসলমানের ওপর জ্ঞান অর্জন করা ফরজ। [মিশকাত]
বর্তমান সমাজে কন্যা শিশুদের ওপর যেসব নির্যাতন করা হয়, তন্মধ্যে পাচার অন্যতম। নারী ও শিশু পাচাররোধে ইসলাম কঠিন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে। নারী ও শিশু পাচার একটি মহা অন্যায় ও হারাম কাজ। মানব পাচারকারী চক্র জনগণের বিশ্বাসের চরম অবমাননা ও অবমূল্যায়ন করে থাকে। এ প্রসঙ্গে হজরত রাসুলুল্লাহ [সা.] বলেছেন, এর চেয়ে বড় বিশ্বাসঘাতকতা আর কিছুই নেই যে তুমি এমন ব্যক্তির সঙ্গে মিথ্যার আশ্রয় নেবে, যে তোমাকে বিশ্বাস করে। [আবু দাউদ] সমাজে নারীদের তাবৎ অধিকার নিশ্চিত করতে ও পাচারের মতো জঘন্য অপরাধ দমন করতে ইসলাম প্রদত্ত মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা, গণসচেতনতা বৃদ্ধি এবং সামাজিক প্রতিরোধ অত্যন্ত প্রয়োজন।