RE: জীবন সংক্রান্ত কোন উপদেশটি আপনি মেনে নিতে পারেন না?
জীবন সংক্রান্ত কোন উপদেশটি আপনি মেনে নিতে পারেন না?
এই যে এই কথাটা। একেবারে সহ্য করতে পারিনা আজকাল।এটার মত অন্তঃসারশূন্য কথা আর কিছু নেই।
ছোট থেকে পাখিপড়ার মত করে এই বাক্যটি আমার মাথা থেকে শুরু করে মনের গভীরে প্রবেশ করিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সাথে আরেকটি ত্রাস যে অন্যের খারাপ করলে তোমারও ক্ষতি হবে। ব্যাস আর কি ? ওই ভালো হওয়ার, ভালো করার ভুত ঘাড়ে চেপে বসল। অত কিম? ঘোড়ার ডিম।
আমি এতগুলো বছর ভালো মানুষ হওয়ার জন্য প্রাণপাত করে ফেলে উপাধি অর্জন করলাম “বোকা”। বন্ধুরা আরো আদর করে ডাকে “গাধা” বলে। তাঁদের বক্তব্য “তুই গাধার গাধাই রয়ে গেলি।তোর মাথায় সবাই কাঁঠাল ভেঙে খায় আর তুই গাধা কাঁদতে থাকিস।” বিশ্বাস করুন একবর্ন এদিক ওদিক করে বলছি না। এটাই বলে।
আর আমার মাদার ইন্ডিয়া সারাজীবন যিনি “ভালো থেকো ভালো করো” বলে বলে মাথা খারাপ করে ফেলেছিলেন, আজ তাঁর বক্তব্য হলো – “আমিই তোকে ভুল শিখিয়েছি। তাই তুই এত কষ্ট পেলি। তাও অন্যের ক্ষতির কথা ভাবিস না। ঈশ্বর আছেন, বিচার করবেন।” ব্যাস আরকি!এবার ঈশ্বর ভরসা করে দিন কাটাই।
আজকের যুগে ভালোমানুষের সমার্থক শব্দ হল বোকা, পাগল। অন্যের উপকার করার বদলে জুটবে অপবাদ, অপমান আর বেইমানি। তাই ইদানিং কেউ আমায় “ভালোত্ব” সংক্রান্ত উপদেশ দিতে এলে মেনে তো নিই না, উল্টে সুযোগ বুঝে পাল্টা দু’চারটে খারাপ কথা বলে নিজেকে শান্তি দিই। ভালোমানুষ হয়ে আর কাজ নেই।কিন্তু “স্বভাব যায় না মলে”! তাই এখনো কেউ বিপদে পড়ে সাহায্য চাইলে না বলতে পারিনা, সেই আগের মত একই রকম ঝাঁপ দিয়ে পড়ে তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করি (ভালোমানুষের ভুতটা নামেনি এখনো)। শুধু মুচকি হেসে বলে দিই যে আমি জানি উদ্ধার পেলেই কি শুনতে হবে আমায়। বিপদগ্রস্থ বন্ধু তখন যতই বলুক — “না না আমি অন্যের মত নই, আমি ওরকম করবনা”, ততই আমার বিশ্বাস দৃঢ় হয়ে যায়। এবং যেদিন তাঁর হ্যাঁ তে না, আর না তে হ্যাঁ বলতে শুরু করি সেদিন সেই পরম আদরের বন্ধুটিই আমায় “পাগল, বোকা” আখ্যা দিয়ে বাতিলের দলে ফেলে দেয়। কারণ তখন তাঁর সব প্রয়োজন শেষ। আগে খুব কাঁদতাম, এখন আর কাঁদিনা বেশি। আগেই ভবিষ্যৎ জেনেও যখন নিজেকে সামলাইনি, তখন দোষ অতি অবশ্যই আমার। এই ঘটনা বারবার ঘটেছে, ঘটছে এবং ঘটবে। কারণ আমি বোধহয় এই জীবনে খারাপ হব না।
আজকাল তাই এই উপদেশ শুধুই রাগের সঞ্চার করে। Atmaja আবার একটু বেশি কড়া কথা বলে ফেললাম গো । কিছু মনে করোনা। সত্যিই দুঃখিত।