RE: বাস্তব জীবন কী আনফেয়ার হতে পারে কখনও?
বাস্তব জীবন কী আনফেয়ার হতে পারে কখনও?
অবশ্যই বাস্তব জীবন কখনও কখনও আনফেয়ার (অন্যায় বা অবিচারপূর্ণ) মনে হতে পারে, কারণ জীবনের অনেক দিকেই বৈষম্য, অন্যায়, অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি, বা অসম সুযোগ-সুবিধা থাকে। এই বৈষম্য কখনও ব্যক্তিগত, কখনও সামাজিক বা কখনও বৃহত্তর বিশ্বমঞ্চে ঘটে। আমরা এই বিষয়গুলো আরও গভীরে দেখে বুঝতে পারি কেন কখনও কখনও বাস্তব জীবন আমাদের কাছে অবিচারপূর্ণ বা অন্যায় মনে হয়। বিশ্বজুড়ে বৈষম্য এক বড় ধরনের কারণ, যার ফলে অনেক মানুষ ন্যায্য সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়। দুনিয়ার অনেক জায়গায়, বিশেষ করে কিছু দেশে, জাতিগত বৈষম্য এখনও বিদ্যমান। কিছু জাতি বা গোষ্ঠী আজও সামাজিকভাবে অবহেলিত। উদাহরণস্বরূপ, আফ্রিকান আমেরিকান, আদিবাসী বা অন্যান্য সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর মানুষেরা অনেক সময় শিক্ষা, চাকরি, স্বাস্থ্যসেবা, এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়। এটি তাদের জীবনে একধরনের অন্যায় পরিস্থিতি সৃষ্টি করে, যা অনেকের কাছে অবিচার মনে হয়।
আবার কোনো ব্যক্তি বা সম্প্রদায়ের জীবনে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে সব কিছু বিপর্যস্ত হয়ে যেতে পারে, যা কোনোভাবেই তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকে না। উদাহরণস্বরূপ, এক জায়গায় বন্যা, ভূমিকম্প, অথবা হারিকেনের আঘাত, যেগুলো মানুষের নিয়ন্ত্রণের বাইরে এবং এসব প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে অনেকের জীবন ধ্বংস হয়ে যায়। এখানে কেউ দোষী নয়, কিন্তু জীবনের প্রতি এই আচরণ বা ঘটনা অনেককে অবিচারের শিকার মনে হতে পারে।
জীবন inherently অনিশ্চিত এবং অনিয়ন্ত্রিত। এই অনিশ্চয়তা অনেক সময় আনফেয়ার পরিস্থিতি তৈরি করে। মানুষের স্বার্থপরতা, ঈর্ষা বা নেতিবাচক আচরণ অনেক সময় অন্যায়ের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কিছু মানুষ বিশ্বাস করে যে জীবনের সবকিছুই পূর্বনির্ধারিত, যা আনফেয়ার পরিস্থিতিকে ব্যাখ্যা করে। ব্যাক্তি জীবনে মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যা, সম্পর্কের টানাপোড়েন এবং পরিবারের অভাবও অনেকের জন্য জীবনের আনফেয়ার অথবা অবিচার বা অন্যায় হতে পারে। যখন মানুষ খুবই চাপের মধ্যে পড়ে তাদের মনে হতাশা, উদ্বেগ বা ডিপ্রেশন হতে পারে, যা তাদের জীবনে এক ধরনের অবিচারের অনুভূতি সৃষ্টি করতে পারে। তারা পরিশ্রম করেও মানসিক শান্তি বা সঠিক ফলাফল পায় না। তাদের সমস্যা দেখা না দেয়ায়, তারা কখনও কখনও অন্যদের কাছে বোঝানোই কঠিন মনে করে।
ব্যাক্তিগতভাবে পরিবারে অত্যাচার বা সহিংসতার শিকার হওয়া অনেকের জীবনে অবিচারের অনুভূতি সৃষ্টি করে। কেউ যদি শৈশব বা জীবনের একাংশ সহিংসতার মধ্যে বেড়ে ওঠে, তবে এটি তাদের জীবনে গভীরভাবে প্রভাব ফেলতে পারে। এসব পরিস্থিতিতে, সেই ব্যক্তির কাছে পৃথিবী কখনও কখনও অগ্রহণযোগ্য, নিষ্ঠুর এবং আনফেয়ার মনে হতে পারে।
তবে, আরো অনেক কারণ বিদ্যমান যার ফলে জীবন আনফেয়ার মনে হতে পারে, আমরা সবাই চেষ্টা করতে পারি নিজেদের অবস্থার উন্নতি করতে। জীবনের সত্যগুলো এবং আমাদের সামনে আসা চ্যালেঞ্জগুলো মেনে নিয়েই, আমরা একে অপরকে সাহায্য করতে, সমান অধিকার রক্ষা করতে এবং আরও ভালো ভবিষ্যতের জন্য কাজ করতে পারি। এছাড়া, জীবনের চ্যালেঞ্জ ও কঠিন পরিস্থিতি আমাদের শক্তিশালী, সহনশীল এবং সহানুভূতিশীল করে তোলে। তাই, আমরা যখন অনুভব করি যে জীবন ন্যায্য নয়, তখন আমাদের স্মরণ রাখতে হবে যে এইসব কঠিন মুহূর্তও আমাদের জীবনকে আরও সমৃদ্ধ এবং মূল্যবান করে তোলে।