RE: মানুষের মনে এত হিংসা কেন? কেন তারা অন্যের উন্নতি চায় না?
মানুষের মনে এত হিংসা কেন? কেন তারা অন্যের উন্নতি চায় না?
হিংসা,হল অন্যের ভালো দেখলে খারাপ লাগা।আপনার বন্ধু,ভাই-বোন,আত্মীয়-স্বজন,প্রতিবেশী যাদের সাথে আপনি চলাফেরা করেন তাদের ভাল দেখলে,উন্নতি দেখলে আপনার যদি খারাপ লাগে,তাহলে বুঝবেন যে আপনার হিংসে আছে।
হিংসা একটা কবিরা (বড়)গুনা, পৃথিবীর বুকে এমন মানুষ খুব কমই হবে যার হিংসে নেই,কম-বেশি হিংসা সবার মধ্যে থাকে।আফসোস,আমরা হিংসাকে অপরাধ মনে করিনা যদিও কোরআন পড়লে আমরা জানতে পারি,যে সৃষ্টিজগতের প্রথম গুনাহ ছিল হিংসা।ইবলিশ,আদম(আ:)এর সম্মান দেখে হিংসার বশে তাকে সেজদা করে নাই,যদিও সে জানতো যে তার ক্ষমতা,জ্ঞান,দক্ষতা মানুষের চেয়ে অনেক বেশি,তাও সে আল্লাহর নাফরমানি করেছিল।
হিংসা করার কুফল গুলো হ’ল-
১)আমাদের সমাজে যারা ব্যভিচার,যেনা,মদ খাওয়া এসবের মতো হারাম কাজে লিপ্ত থাকে তাদেরকে জাহান্নামে নিয়ে যাওয়া শয়তানের জন্য একদম সহজ।কিন্তু আমাদের মধ্যে যারা আল্লাহর খাঁটি বান্দা যে,নামাজ,রোজা সবই রাখে,দাড়ি রাখে,সুন্নত মানে তাদেরকে শয়তান কিভাবে জাহান্নামে নিয়ে যাবে? তাদের জন্য শয়তান হিংসা কে অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করে। রাসুলুল্লাহ(স:) বলেছেন-
তোমরা অবশ্যই হিংসা পরিহার করবে।কারণ,আগুন যেভাবে কাঠকে বা ঘাসকে খেয়ে ফেলে তেমনি হিংসাও মানুষের নেক আমল কে খেয়ে ফেলে।(সুনানে আবু দাউদ:৪৯০৩)
হিংসে অনেকটা ছাই এর স্তুপ মতো,এই ছাই এর স্তুপ দেখতে অনেক বড় মনে হয় কিন্তু হালকা বাতাস আসতেই তা বিলীন হয়ে যায়,আপনি সারা জীবন অনেক কষ্ট করে ভালো আমল করলেন,কিন্তু হিংসে আপনার আমলকে পুড়িয়ে ছাই বানিয়ে দিল,এবং যখন আপনি আপনার আল্লাহর সামনে দাঁড়ালেন সে আর কোন কাজেই আসলো না,তাইতো রাসুল (স:) হিংসে করতে বারণ করেছেন।
২)হিংসুক হিংসে করে কোনদিনও কারো ক্ষতি করতে পারবে না,সে হিংসে করে অকারনে দিন-রাত দুশ্চিন্তা করে,তার অন্তর জ্বলে-পুড়ে শেষ হয়ে যায়, সে তার কোন কিছুতে সন্তুষ্ট হয় না, এভাবেই সে তার দুনিয়া এবং আখিরাত দুটোই নষ্ট করে ফেলে।
একবার যখন আপনি আপনার হিংসে করা প্রবৃত্তিকে চিনে ফেলবেন,তারপর এর প্রতিকার অত্যন্ত সহজ-
১)একটা কথা মনে রাখবেন,আল্লাহ যার জন্য যা ভালো মনে করেন তাকে তাই দেন,ব্যবসায় একজনের লাভ আপনার চেয়ে বেশি হ’ল,অথবা অন্য কোন ভাবে সে আপনার চেয়ে এগিয়ে গে’ল,তা কিন্তু আল্লাহর ইচ্ছেতেই হয়েছে। যখন আপনি হিংসা করেন তখন আপনি আল্লাহর ফয়সালা কে একপ্রকার অস্বীকার করেন,অর্থাৎ কুফরী করেন যা অত্যন্ত জঘন্য কাজ।
২)আপনি হিংসে করার পরিবর্তে আল্লাহর কাছে এভাবে দোয়া করতে পারেন যে,-“আল্লাহ তুমি তাকে দিয়েছো তোমার ভান্ডারে তো কোন কমতি নেই, ইয়া আল্লাহ তাকে যেমন দিয়েছো আমাকেও দাও” এটাকে ঈর্ষা(Envy) বলে যা হিংসার(Jealousy)মত নিন্দনীয় নয়।
৩)উপরোক্ত দুটি করার পরেও যদি কাজ না হয় তাহলে,এবার আপনি আপনার নফসের/মনের ইচ্ছার বিরুদ্ধে মুখ থেকে আল্লাহর কাছে দোয়া কবেন সে ব্যক্তির জন্য যে আল্লাহ,“আপনি ওকে দিয়েছেন তার জন্য শুকরিয়া,আল্লাহ আপনি ওকে আরো দিন।”