|
RE: যৌনতা কখন কীভাবে আসক্তির পর্যায়ে চলে যায়?
যৌনতা কখন কীভাবে আসক্তির পর্যায়ে চলে যায়?
Add Comment
যৌন আসক্তি হল একপ্রকার অনিয়ন্ত্রিত যৌন কর্মকান্ড যা না করে থাকাটা বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। একজন যৌন আসক্ত ব্যক্তি প্রায়শঃ যৌনকর্মে লিপ্ত হবার জন্য জোর প্রয়োগ করে থাকে। যৌন আক্রোশের ফলশ্রুতিতে আসক্ত ব্যক্তি তার ব্যক্তিগত এবং কর্মজীবনে এমনকি সামাজিক জীবনেও সমস্যার সৃষ্টি করেন। এরা অনেক সময় যৌনতাকে পরিবার, বন্ধুবান্ধব এবং কাজের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে।
কিভাবে যৌনতা আসক্তির পর্যায়ে চলে যায় :
মদ এবং নিষিদ্ধ মাদক যেভাবে আসক্তির দিকে যায় – যৌন অভ্যাসও একইভাবে আসাক্তির পর্যায়ে চলে যেতে পারে। যৌনক্রিয়ার সময় আমাদের শরীর অনেকগুলো রাসায়নিক পদার্থের ককটেইল নিষ্কৃত করে যা একপ্রকার প্রবল সুখবোধ জন্ম দেয়। কিছু মানুষ সেই সকল রাসায়নিক পদার্থের আসক্তিতে মজে যান এবং মোহিত হয়ে পরবর্তী যৌন অনুভূতির জন্য উন্মত্ত হয়ে উঠেন। অন্যন্য আসক্তির মত শরীর যৌনক্রিয়াকালীন নিঃসরিত রাসায়নিক পদার্থের ব্যাপারেও অভ্যস্ত হয়ে যায়, তাই ভুক্তভুগি অতিরিক্ত অনুভূতি অর্জনের লক্ষ্যে যৌনমিলনের মাত্রা ক্রমশঃ বাড়াতে থাকেন।
অনেক যৌন আসক্ত ব্যক্তি বলেন তাদের অস্বাস্থ্যকর যৌন অভ্যাস ক্রমশ আসক্তিতে রূপ নিয়েছে। তাদের যৌন আসক্তি হয়তো শুরু হয়েছে হস্তমৈথুনে আসক্তি, পর্নো ছবি দেখে কিংবা কোন অবৈধ শারীরিক সম্পর্ক থেকে যা পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমিক ভয়াবহ আচরণে পরিবর্তিত হয়েছে।
যৌন পিপাসা কম থাকাকালীন যৌন আসক্ত ব্যক্তি লজ্জিত বোধ করেন, পাপের জন্য অনুতপ্ত হন, তীব্র অনুশোচনা বোধ করেন এবং উদ্ভিগ্ন হন। যৌন আসক্তরা অনেক সময় একা, নিঃসঙ্গ এবং শক্তিহীনতায় ভোগেন এবং অভ্যাস পরিবর্তন করতে চান। আবার তারা প্রায়শঃ এ সকল কঠিন চিন্তা থেকে মুক্ত হবার উদ্দেশ্যে পুনরায় যৌনাচারে লিপ্ত হয়ে পড়েন। বিষয়টি অনেকটা জালের মত তাদের পেঁচিয়ে ধরে।
যৌন আসক্তির রূপ/আচরণসমুহ :
– অতিরিক্ত হারে পর্নো ভিডিও দেখা
– বাধ্যগত হস্তমৈথুন করা
– বিলসন কাম (অঙ্গের অশোভনীয় অনাবৃত অবস্থা)
– ঝুঁকিপূর্ণ যৌনমিলন
– ফোন সেক্স
– পতিতাবৃত্তি
– নেট সেক্স
– অনেক জনের সাথে সম্পর্ক করা
– বেনামী যৌন সম্মুখীন হত্তয়া
– যৌন হয়রানী করা
– খুব বেশী ব্যক্তিগত বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে ডেটিং।
যৌন আসক্তির পরিসংখ্যান :
যৌন আসক্তদের মাঝে পরিচালিত এক জরিপে প্রাপ্ত তথ্য মতে তাদের পরিসংখ্যান হলো :
– ৭০% আসক্ত ব্যক্তি কঠিন সাংসারিক সমস্যায় পতিত হন।
– ৪০% তাদের সঙ্গীর সাথে সম্পর্কে বিচ্ছেদ ঘটান।
– ২৭% তাদের চাকুরী হারিয়েছেন।
– ৪০% অনাকাঙ্খিত গর্ভধারণ/গর্ভপাতের অভিজ্ঞতা প্রাপ্ত হয়েছেন।
– ৭২% আত্মহত্যার প্ররোচক মানসিক বিষন্নতায় ভুগছেন।
– ১৭% একাধিকবার অত্মহননের চেষ্টা করেছেন।
– ৬৮% এসটিডি তথা কোন না কোন যৌনবাহীত রোগে আক্রান্ত হয়েছেন।
যৌন আসক্তির ভয়াবহতার একটি প্রথমিক ধারণা নিশ্চয় এই লেখায় পেয়েছেন। একজন ধূমপায়ী ব্যক্তি যত সহজে গাঁজা কিংবা হিরোইনে আসক্ত হতে পারে – অধূমপায়ী ততটা সহজে অন্য মাদকে আসক্ত হয়না। ঠিক তেমনি যারা হস্তমৈথুন কিংবা পর্নো ছবি দেখেন তারা সহজে যৌন পাপাচারে লিপ্ত হয়ে যেতে পারেন – সেটা অন্যদের ক্ষেত্রে ততটা প্রকটতা পায়না।
হোমিওপ্যাথি চিকিত্সা :
আসক্ত ব্যক্তির শারীরিক এবং মানসিক সবগুলি লক্ষণ পর্যবেক্ষণ করে উপযুক্ত ট্রিটমেন্ট দিলে অল্প কিছু দিনের মধ্যেই স্বাভাবিক হয়ে যায়। এক্ষেত্রে হোমিও চিকিৎসা অনেক ভালো ফলাফল দিতে পারে।