RE: রাতে দেরি করে ঘুমানোর অভ্যাস কী করে ত্যাগ করব?
আমি রাতে প্রায়ই দেরি করে ঘুমাই। কোনো কাজ না থাকলেও অযথা জেগে থাকি। এমনকি ঘুমানোর প্রস্তুতি নিলেও ঘুম আসে না। আমি জানি এই অভ্যাসে আমার শারীরিক সমস্যা হচ্ছে। কিন্তু কোনোভাবেই এই বাজে অভ্যাসটি ত্যাগ করতে পারছি না। কী করব?
সময়মত ঘুম হয় না আমাদের অনেকেরই অথবা রাতে বার বার ঘুম ভেঙ্গে যায়। এর জন্য মূলত দায়ী আমাদের অনিয়মিত খাদ্যভ্যাস এবং লাইফস্টাইল। খাদ্যভ্যাসে কিছুটা পরিবর্তন আনলেই পাওয়া সম্ভব নিয়মিত এবং পর্যাপ্ত ঘুম। কিছু খাবার আছে যা সময়মত ঘুমাতে সাহায্য করে, আবার কিছু খাবার আছে যা ঘুমের পরিমান কমিয়ে আনে। খাওয়ার সময় এসব বিষয়গুলো মনে রাখা দরকার।
ঘুমানোর আগে যা খাবেনঃ
ভালো ঘুম হওয়ার জন্য রাত ৯ টার মধ্যে খেয়ে নেওয়া ভালো কারন রাত বাড়ার সাথে সাথে কমতে থাকে আমাদের হজমশক্তি। মাঝরাতের দিকে যদি খিদে পেয়ে যায় তবে ভারী কিছু না খাওয়াই উত্তম।
রাতে ঘুমানোর আগে এক গ্লাস হাল্কা গরম দুধ খেত পারেন। দুধের বদলে দই অথবা পনিরও খাওয়া যায়। দুগ্ধজাত খাবারে আছে ট্রিপটোফ্যান। এটি এমন একটি অ্যামিনো এসিড যা মস্তিস্ক থেকে ঘুমের দুটি এনজাইম সেরোটোনিন এবং মেলাটোনিন যেগুলো শরীরকে শিথিল করে, ঘুমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও এ থেকে পাওয়া যায় প্রচুর ক্যালসিয়াম যা স্ট্রেস কমায় এবং স্নায়ুকে ঠাণ্ডা করে।
রাতের খাবারে রাখুন শর্করা। এতে রক্তে ইনসুলিনের পরিমান বাড়ে যার সাথে সাথে বাড়ে ট্রিপটোফ্যানের কার্যক্ষমতা।
শরীরকে কার্যক্ষম রাখার জন্য আমিষ খান। এতে শরীরে শক্তির পরিমান থাকবে সমান এবং নিজস্ব সময়েই শরীর ঘুমিয়ে পড়ার সঙ্কেত পাবে। এসব খাবারের মধ্যে আছে ডিম, চর্বিমুক্ত মাংস, মাছ, ডাল এবং বাদাম।
তাজা ফল খেতে পারেন ঘুমানোর আগে। যেমন কলা। এতে প্রচুর ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম থাকে যা পেশীকে শিথিল করতে সাহায্য করে। আপেল এবং নাশপাতি পরিপাকতন্ত্রকে ঠিক রাখে। চেরি এমন একটি ফল যা আপনার শরীরে বাইরে থেকে ঘুমের এনজাইম মেলাটোনিন সরবরাহ করে।
ভেষজ চায়ে ক্যাফেইন থাকে না বরং থাকে প্রাকৃতিক এমন অনেক উপাদান যা ঘুমের সহায়ক।
যা খাওয়া এড়িয়ে চলবেনঃ
দেরি করে রাতের খাবার খাবেন না। এতে বদহজম হয়ে ঘুম ভেঙ্গে যেতে পারে।
রাতে ঘুমানোর আগে অবশ্যই ক্যাফেইন জাতীয় খাবার পরিহার করবেন। কফি, চা , কোলা এবং চকলেট জাতীয় খাবারে থাকে ক্যাফেইন যা আপনার স্নায়ুকে উত্তেজিত করে রাখে, ঘুমের প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করে। চা বা কফি যদি খেতেই হয় তবে তা খাবেন ঘুমানোর কমপক্ষে ৫ ঘণ্টা আগে।
ফাস্টফুড খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। উচ্চ চর্বিযুক্ত এসব খাবার আপনার পেটে এসিড তৈরি করে এবং এতে পেটে-বুকে হতে পারে জ্বালাপোড়া।
প্রাকৃতিক চিনি ঘুমের জন্য ভালো হলেও আমরা বিভিন্ন খাবারে যেসব কৃত্রিম চিনি ব্যাবহার করি সেগুলো রক্তে মিশে গিয়ে খুব তাড়াতাড়ি শক্তি সরবরাহ করে, কিন্তু এর কার্যকারিতাও শেষ হয়েও যায় খুব তাড়াতাড়ি, ফলে রাতে ঘুম ভেঙ্গে যেতে পারে।
যেসব খাবারে আপনার বদহজম অথবা এলার্জি আছে সেগুলো অবশ্যই এড়িয়ে চলুন।
যে কোন রকমের অ্যালকোহল এড়িয়ে চলুন। এসব পানীয় ঘুমের মাঝে শরীরের সুগার এবং পানির পরিমাণ কমিয়ে দেয়। দেখা গেছে, অ্যালকোহল পান করার ফলে বেড়ে যায় রাত্রে বার বার ঘুম ভেঙ্গে যাওয়ার পরিমাণ।