RE: স্থূলতার কারণে কী ধরনের জটিলতা দেখা দিতে পারে?
স্থূলতা বা মোটা হওয়া শরীরের জন্য কি খুব বেশি খারাপ? আসলে আমি বুঝতে পারছি না, আমি কয়েকমাস যাবত অনবরত মোটা হয়ে যাচ্ছি। অবশ্য প্রথমদিকে কিছুটা চিকন স্বাস্থ্যের অধিকারী ছিলাম। কিন্তু এখন মনে হয় একটু বেশিই মোটা হয়ে যাচ্ছি। আমি আসলে জানি না যে অতিরিক্ত স্বাস্থ্য শারীরিক কী ধরনের জটিলতা তৈরি করতে পারে?
আপনার ওজন খুব বেশি বেড়ে গেলে আপনি হৃদরোগ, স্ট্রোক, গল ব্লাডার স্টোন, ডায়বেটিস, ক্যান্সার এবং বাত রোগ দ্বারা আক্রান্ত হতে পারেন। এক্ষেত্রে ওজন বৃদ্ধির সাথে সাথে আপনার শারীরিক অসুস্থতাও বৃদ্ধি পেতে থাকবে। স্থূলতার কারণে যে ধরনের শারীরিক জটিলতা তৈরি হতে পারে :
১. হৃদরোগ এবং স্ট্রোক :
হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের কারণে পুরুষ ও মহিলা উভয়েরই মৃত্যু ও অঙ্গহানি হতে পারে। কোলেস্টোরোল এবং ট্রাইগ্লিসারাইডের উচ্চ স্তর হৃদরোগ সৃষ্টি করতে পারে। এর সাথে অতিরিক্ত ওজনেরও সম্বন্ধ রয়েছে। এর ফলে অ্যাঞ্জাইনাও হতে পারে এবং ব্যক্তি মারাও যেতে পারেন। মস্তিষ্কের ধমনীতে চর্বি জমে গেলে রক্ত জমাট বাঁধে যার ফলে স্ট্রোক হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে শতভাগ।
২. ডায়বটিস টাইপ ২ :
স্থূলতার কারণে ডায়বেটিস হতে পারে। ইনসুলিন শরীরের ব্লাড সুগারের স্তরকে নিয়ন্ত্রণ করে কিন্তু স্থূলতা এক্ষেত্রে বাঁধার সৃষ্টি করে। যদি আপনার শরীরে সুগার থাকে তবে অবশ্যই ওজন কম করার চেষ্টা করুন। আপনি যদি ডায়বেটিসের ওষুধ সেবন করেন তাহলে আপনাকে শারীরিক পরিশ্রম বেশি করতে হবে। কারণ এর ফলে আপনার ওষুধের পরিমাণ কমে যেতে পারে।
৩. অ্যান্টিওআর্থারাইটিস :
এটি আপনার হাঁটু, নিতম্ব এবং পিঠের নিচের দিককে প্রভাবিত করে। ওজন হঠাৎ করে খুব বেড়ে গেলে এই স্থানগুলিতে চাপের সৃষ্টি হয়। এর ফলে আপনার উচ্চতাও কমে যেতে পারে।
৪. ঘুমানোর সময়ে শ্বাসকষ্ট :
এটি অত্যন্ত মারাত্মক একটি রোগ। এর ফলে একজনের শ্বাস নিতে সমস্যা হয় তিনি কোনোভাবেই শ্বাস নিতে পারেন না। এক্ষেত্রে জোরে জোরে শ্বাস নিতে হয় এবং এর জন্য নাকেও প্রচন্ডরকম শব্দ হয়ে থাকে। স্থূলতার কারণে এই মারাত্মক সমস্যাটি হয়ে থাকে। ফলে স্থূলতা কমিয়ে এনে সমস্যাটির সমাধান করা যেতে পারে।
৫. ক্যান্সার :
স্থূলতার কারণে শরীরের বিভিন্ন অংশে মরণঘাতি ক্যান্সারও হয়ে থাকে। যেমন মহিলঅদের গর্ভাশয়, ওভারি, স্তন এবং গল ব্লাডারে ক্যান্সার হতে পারে। পাশাপাশি পুরুষদেরও শরীরের বিভিন্ন অংশে ক্যান্সার হয়ে থাকে।
৬. বাত :
রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে বাতের সৃষ্টি হয়। অনেক সময়ে এই ইউরিক অ্যাসিড শরীরের জয়েন্টগুলোতে জমে যায় এবং বাতের সমস্যাটি দেখা দেয়। আর স্বাভাবিকভাবেই মোটা লোকেদের এই ঝুঁকিটি বেশি থাকে।
৭. গলস্টোন :
গল ব্লাডারের মধ্যে অতিরিক্ত পরিমাণে কোলেস্টোরোল সঞ্চিত হয়ে পাথরের জন্ম দেয়। আর স্থূলতার কারণে এটি ভয়ংকর রূপ ধারণ করে।
৮. উচ্চ রক্তচাপ :
শরীরের ওজন বৃদ্ধি পেলে কোষগুলির মাঝে চর্বির পরিমাণ বেড়ে যায়। ফলে অনেক বেশি পরিমাণে অক্সিজেনের প্রয়োজন হয় এবং এর অভাব পূরণ করার জন্য শরীর মধ্যস্থ রক্তের গতি বৃদ্ধি পায়। সুতরাং ধমনীতে চাপের সৃষ্টি হয় এবং উচ্চ রক্তচাপ দেখা দেয়।