14182
Points
Questions
3
Answers
7076
পালিয়ে বিয়ে করার বিষয়টি যদিও সমাজ স্বীকৃত নয় তারপরও অহরহ এই ধরনের ঘটনা ঘটে চলেছে। তবে পালিয়ে বিয়ে করার সময়ে কিছু প্রস্তুতি এবং সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। আসুন এই বিষয়ে সংক্ষেপে জেনে নিই।
অনেকে ভাবেন এসব ক্ষেত্রে হয়ত কোর্ট ম্যারেজ করতে হবে। কোর্ট ম্যারেজ টার্মটা আমরা প্রায়ই শুনে থাকি। কিন্তু এটা নিয়ে অনেকের একটু ভুল ধারনা আছে। অনেকে যারা অভিভাবকের সম্মতি ছাড়া বা পালিয়ে বিয়ে করতে চায় তারা কোর্ট মারেজ করতে যায় বা করতে চায়।
অনেকে মনে করেন কোর্ট ম্যারেজ হয়তো কোর্টে গিয়ে বিয়ে করা। অথবা মাজিস্ট্রেট-এর সামনে বিয়ে করা। আসলে তা নয়। কোর্ট ম্যারেজ করতে হলে যেতে হবে কোন নোটারী পাবলিকের (সরকারী রেজিস্টার্ড উকিল) কাছে। তিনি (বর কনেকে) ১০০ বা ২০০ টাকার স্ট্যাম্পে একটি হলফনামায় সই করাবেন যাতে লিখা থাকবে আমরা প্রাপ্তবয়স্ক এবং সজ্ঞ্যানে সেচ্ছায় বিয়ে করেছেন।
বিয়ে কাজী অফিসে রেজিস্ট্রী কাবিনমুলে করতে হবে। কাজী অফিসে কাবিননামায় সই করতে হবে । কাজি সাহেবকে বর কনের এস এস সি-এর সার্টিফিকেট বা ন্যাশনাল আইডি কার্ড দেখাতে হবে বয়স প্রমাণের জন্য। বয়স অবশ্যই আঠারো (মেয়ে) ও একুশ (ছেলে) হতে হবে। আর লাগবে দুইজন সাক্ষী। আর ঐ কাবিননামাই আপনাদের বিয়ের প্রধান আইনী দলিল। আর নোটারী পাবলিকের কাছে গিয়ে শুধু ঐ দলিলের আরও একটা সম্পূরক আইনী দলিল করে রাখলে ভবিষ্যতে মামলা টামলায় একটু সুবিধা পাওয়া যায়।
তবে জেনে রাখবেন, নোটারী পাবলিকের কাছে করা হলফনামার কোনো দাম নেই যদি কাবিননামা না থাকে। কাবিননামা থাকলে বিয়ের পক্ষে আর কোনো ডকুমেন্টই লাগবেনা। কাবিননামাই সব।
এক পক্ষ হিন্দু বা মুসলিম বা অন্য ধর্মের হলেও, ধর্ম পরিবর্তন না করেই বিয়ে করা সম্ভব। বিয়ে হয়ে গেলে অনেকসময় পরে দুই পক্ষের বাবা মা-রা মেনে নেয়, অনেক সময় মেনে নেয়না। অনেকসময় মেয়ের বাবা ক্ষেপে গিয়ে ছেলের বিরুদ্ধে মামলা করে বসে। মামলাগুলো হয় সাধারণত অপহরণপূরবক ধর্ষনের। এই মামলাগুলোর জামিন বা রিমান্ড শুনানী এবং বিচার হয় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে। মামলার ধারাগুলো জামিন-অযোগ্য এবং আমলযোগ্য, মানে পুলিশ এসব ক্ষেত্রে ম্যাজিস্ট্রেট বা আদালতের পারমিশন ছাড়াই আসামিকে অ্যারেস্ট করতে পারে। তাই যখন শুনবেন মামলা হয়ে সে তখন থেকে কিছুদিন পালিয়ে থাকতে হবে কারণ পুলিশ ধরে নিয়ে গেলে কিন্তু প্রথমেই জামিন হবেনা।
এমন সময়ে বর কনে উভয়কেই মানসিকভাবে শক্ত থাকতে হবে। কেননা মামলা (উক্তরূপ) হবার পর তদন্ত শুরু হয়। ভিকটিম (মেয়ের বাবার চোখে মেয়েটি এখানে ভিকটিম)-এর জবানবন্দী দিতে হবে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-এর সামনে। এটি ২২ ধারার জবানবন্দি, ম্যাজিস্ট্রেট-এর চেম্বারে হয়। কেউ কোন প্রভাব খাটাতে পারেনা। এখানে মেয়েকে বলতে হবে, “আমি সেচ্ছায় বিয়ে করেছি। আমাকে কেউ অপহরন করেনি।“ ব্যাস। তাহলে মামলায় পুলিশ আর চার্জশীট দেবেনা। আসামি (ছেলে) অব্যাহতি পাবে।
সতর্কতা :
বাবা মা কে কষ্ট দিয়ে যদিও পালিয়ে বিয়ে করা একেবারেই উচিত না তারপরও অনেকেই এই কাজটি করে থাকেন। কারণ হয়তবা বাবা মায়েরা তাদের ভালোবাসার গভীরতাটি বুঝতে পারেন না। এক্ষেত্রে দুই পক্ষেরই ভূমিকা রয়েছে বিষয়টি না ঘটানোর পক্ষে। যেমন ধরুন ছেলে মেয়েরা যদি তাদের ভালোবাসার বিষয়টি বাবা মাকে বুঝিয়ে বলেন এবং তাদের অনুমতি চেয়ে থাকেন আবার অন্যদিকে বাবা মা বিষয়টি ভালোভাবে যাচাই না করেই সন্তানদের যদি না জানিয়ে দেন যে তাদের এই বিষয়ে কোনো অনুমতি নেই তাহলেই পালিয়ে বিয়ে করার ঘটনাটি ঘটে না। তাই দুই পক্ষেরই সমঝোতার মধ্য দিয়ে বিষয়টিকে সমাজ বা পরিবারের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তোলা উচিত।
- 712 views
- 1 answers
- 0 votes
বাংলাদেশ পুলিশের মূলনীতি হল শান্তি, নিরাপত্তা এবং প্রগতি কখনই ঘুষ খাওয়া নয়। দুর্নীতির বিষয়টি আসলে শুধু পুলিশ বিভাগ নয় সবকিছুর সাথেই জড়িত। বাংলাদেশ এই দুর্নীতিতে অন্যান্য দেশের তুলনায় এগিয়েই আছে। আসলে এই দুর্নীতির রসাতলে যেমন আমরাই পড়ে থাকি তেমনি এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ গড়ে তোলার দায়িত্ব আমাদের নিজেদেরই।
বর্তমানে বাংলাদেশ পুলিশ বিভাগ এই ধরনের দুর্নীতির সাথে প্রত্যক্ষভাবেই জড়িত হচ্ছে। প্রকাশে ঘুষ খাওয়া যেন এখন খুবই মামুলি একটি বিষয়। দিনদিন হারিয়ে যাচ্ছে তাদের নৈতিক মূল্যবোধ। এমতাবস্থায় সরকারের দৃঢ় পদক্ষেপের সাথে সাথে এগিয়ে আসতে হবে সাধারণ জনতাকেও। আশেপাশের যেকোনো ধরনের সূক্ষ্ম অপরাধের উপযুক্ত প্রমাণ পৌঁছিয়ে দিন মিডিয়ার হাতে। এভাবে ছোট ছোট প্রতিবাদে একদিন আমাদের এই দেশ দুর্নীতিমুক্ত হবে এই আশা করা যায়। ধন্যবাদ
- 852 views
- 1 answers
- 0 votes
বাংলাদেশের বেশির ভাগ মানুষ ভাড়া বাসায় থাকেন। আর ভাড়া ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে বাড়ির মালিকের সাথে দ্বন্দ্বের বিষয়টি নতুন নয়। অনেক ক্ষেত্রেই বাড়ি ভাড়া বাড়ানো হয় অযৌক্তিকভাবে। থাকতেই হবে সেজন্য ভাড়াটেরা বাধ্য হয়ে বর্ধিত ভাড়া দিয়ে যান। অথচ আমাদের দেশে বাড়ি ভাড়া সংক্রান্ত একটি আইন রয়েছে যেটা প্রায় কেউই জানেন না। চলুন জেনে নিই বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইনে ভাড়াটিয়াদের অধিকার কতটুকু সংরক্ষণ করা হয়েছে।
বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন–১৯৯১ এর প্রয়োজনীয় অংশ
অগ্রিম ভাড়া
বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন ১৯৯১-এর ১০ ও ২৩ ধারা মোতাবেক বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রকের লিখিত আদেশ ছাড়া অন্য কোনোভাবেই বাড়ি মালিক তার ভাড়াটিয়ার কাছ থেকে অগ্রিম বাবদ এক মাসের বাড়ি ভাড়ার অধিক কোনো প্রকার ভাড়া, জামানত, প্রিমিয়াম বা সেলামি গ্রহণ করতে পারবেন না। তা হলে দণ্ডবিধি ২৩ ধারা মোতাবেক তিনি দণ্ডিত হবেন।
ভাড়ার রসিদ
আপনার পরিশোধকৃত বাড়ি ভাড়ার রসিদ সংশ্লিষ্ট বাড়ির মালিক বা তার প্রতিনিধি দিতে বাধ্য।
ভাড়া বাড়ানো
বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইনের ১৬ ধারায় স্পষ্ট করে উল্লেখ করা হয়েছে যে, মানসম্মত ভাড়া কার্যকরী হবার তারিখ হতে দুই বছর পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। দুই বছর পর মানসম্মত ভাড়ার পরিবর্তন করা যাবে। এই আইনের ৮ ধারা এবং ৯ ধারায় বর্ণিত রয়েছে যে, মানসম্মত ভাড়া অপেক্ষা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অধিক বাড়ি ভাড়া আদায় করলে সে ক্ষেত্রে প্রথমবারের অপরাধের জন্য মানসম্মত ভাড়ার অতিরিক্ত যে অর্থ আদায় করা হয়েছে তার দ্বিগুণ অর্থদণ্ডে বাড়ি মালিক দণ্ডিত হবেন এবং পরবর্তী প্রত্যেক অপরাধের জন্য এক মাসের অতিরিক্ত যে ভাড়া গ্রহণ করা হয়েছে তার তিনগুণ পর্যন্ত অর্থদণ্ডে বাড়ি মালিক দণ্ডিত হবেন।
মানসম্মত ভাড়া নির্ধারণ
মানসম্মত ভাড়া সম্পর্কে আইনের ১৫ (১) ধারায় বলা হয়েছে, ভাড়ার বার্ষিক পরিমাণ সংশ্লিষ্ট বাড়ির বাজার মূল্যের শতকরা ১৫ ভাগের বেশি হবে না। বাড়ির বাজার মূল্য নির্ধারণ করার পদ্ধতিও বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা, ১৯৬৪ তে স্পষ্ট করা আছে।
বাস উপযোগী বাসস্থান
বাড়ি মালিক তার বাড়িটি বসবাসের উপযোগী করে রাখতে আইনত বাধ্য। বাড়ির মালিক ইচ্ছা করলেই ভাড়াটিয়াকে বসবাসের অনুপযোগী বা অযোগ্য অবস্থায় রাখতে পারেন না। স্বাস্থ্যসম্মতভাবে বসবাসের উপযোগী করে বাড়িটি প্রস্তুত রাখতে বাড়ির মালিকের উপর এই বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইনের ২১নং ধারায় বাধ্যবাধকতা আরোপ করেছে। অর্থাৎ ভাড়াটিয়াকে পানি সরবরাহ, বিদ্যুৎ সরবরাহ, পয়ঃপ্রণালী নিষ্কাশন ইত্যাদি সুবিধা প্রদান করতে হবে। এমনকি প্রয়োজনবোধে লিফটের সুবিধাও দিতে হবে। কিন্তু উক্তরূপ সুবিধা প্রদানে বাড়ি মালিক অনীহা প্রকাশ করলে কিংবা বাড়িটি মেরামতের প্রয়োজন হলেও ভাড়াটিয়া নিয়ন্ত্রকের কাছে দরখাস্ত করতে পারবেন।
ভাড়া বাসা থেকে উচ্ছেদ
বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইনের ১৮নং ধারায় উল্লেখ রয়েছে যে, ১৮৮২ সনের সম্পত্তি হস্তান্তর আইন বা ১৮৭২ সালের চুক্তি আইনের বিধানে যাই থাকুক না কেন, ভাড়াটিয়া যদি নিয়মিতভাবে ভাড়া পরিশোধ করতে থাকেন এবং বাড়ি ভাড়ার শর্তসমূহ মেনে চলেন তাহলে যতদিন ভাড়াটিয়া এভাবে করতে থাকবেন ততদিন পর্যন্ত উক্ত ভাড়াটিয়াকে উচ্ছেদ করা যাবে না। এমনকি ১৮(২) ধারা মতে বাড়ির মালিক পরিবর্তিত হলেও ভাড়াটিয়া যদি আইনসম্মত ভাড়া প্রদানে রাজি থাকেন তবে তাকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করা যাবে না। চুক্তিপত্র না থাকলে যদি কোনো ভাড়াটে প্রতি মাসের ভাড়া পরবর্তী মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে পরিশোধ করেন, তাহলেও ভাড়াটেকে উচ্ছেদ করা যাবে না। যুক্তিসংগত কারণে ভাড়াটেকে উচ্ছেদ করতে চাইলে যদি মাসিক ভাড়ায় কেউ থাকে, সে ক্ষেত্রে ১৫ দিন আগে নোটিশ দিতে হবে। চুক্তি যদি বার্ষিক ইজারা হয় বা শিল্পকারখানা হয়, তবে ছয় মাস আগে নোটিশ দিতে হবে।
ভাড়া বাবদ ভাড়াটিয়ার আসবাবপত্র ক্রয়
আইনের ১২ নং ধারায় বলা হয়েছে, কোনো বাড়ি ভাড়ার জন্য বা তার নবায়ন বা মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য কোনো ব্যক্তি তার আসবাবপত্র ক্রয়ের কোনো শর্ত আরোপ করতে পারবেন না। অর্থাৎ কোনো বাড়ির মালিক তার বাড়ি ভাড়া বাবদ ভাড়াটিয়ার আসবাবপত্র ক্রয় করতে পারবেন না। তদুপরি ভাড়া নবায়ন কিংবা মেয়াদ বৃদ্ধির শর্ত যদি বাড়ি ভাড়া চুক্তিতে থেকেও থাকে তা সত্ত্বেও ভাড়াটিয়া বাড়ি ভাড়া নবায়ন না করে, তাহলেও বাড়িওয়ালা ভাড়াটিয়ার আসবাবপত্র আটক বা ক্রয় করতে পারবেন না।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আইনের প্রয়োগ হবে না ভেবে বেশিরভাগ মানুষ এরকম হয়রানিগুলো মেনে নেন। তবে এক্ষেত্রে অভিজ্ঞ আইনজীবীদের মতামত হলো, প্রচলিত আইনের যথাযথ প্রয়োগ ও সবাই সচেতন হলে এ ধরণের সমস্যাগুলো থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
- 760 views
- 1 answers
- 0 votes
বাড়ি করার স্বপ্নটি প্রতিটি মানুষেরই স্বপ্ন। নিজের একটি সাধের বাড়ি থাকবে যার প্রতিটি ইটের কণায় নিজের কষ্টের ছাপ থাকবে। আপনার মনেও এই স্বপ্ন যে বাবান মৃত্যুর আগে তার স্বপ্নটাকে বাস্তবায়িত করতে চান। এক্ষেত্রে ঋণ অনেক প্রতিষ্ঠানই দিয়ে থাকে তবে একেক প্রতিষ্ঠানের নিয়ম একেক রকম। আসুন প্রতিষ্ঠানগুলোর নাম এবং নিয়মকানুন ছোট্ট পরিসরে জেনে নিই।
বাংলাদেশের সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো গৃহঋণ দিয়ে থাকে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরাসরি গৃহঋণ দেয় না। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে এই ঋণ দিয়ে থাকে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি এ খাতে গ্রাহকদের এক কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ দেওয়ার আদেশ জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশন
বাংলাদেশের যেকোনো সুস্থ নাগরিক, যাঁর নির্দিষ্ট আয় আছে, তিনি গৃহঋণ পেতে পারেন। রাজউক অনুমোদিত নকশার ওপর ভিত্তি করে প্রকৌশলী যে আনুমানিক হিসাব দেবেন, তার ৮০ শতাংশ ঋণ দেওয়া হয়। ঢাকা-চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এলাকায় ঋণের পরিমাণ সর্বোচ্চ ৪০ লাখ টাকা। এর বাইরে অন্যান্য এলাকায় ১৫ লাখ টাকা ঋণ দেওয়া হয়। তবে সম্প্রতি ঢাকা-চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এলাকার জন্য এই ঋণের পরিমাণ ৫০ লাখ টাকা অনুমোদন দেওয়া হবে বলে জানায় ওই প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ। সে ক্ষেত্রে ঢাকা-চট্টগ্রামে সুদের হার ১২ শতাংশ। এ ছাড়া অন্যান্য এলাকার সুদের হার ১০ শতাংশ এবং ঋণ পরিশোধের মেয়াদ ১৫ বছর। প্রতি মাসের কিস্তিতে সরল সুদে এই টাকা পরিশোধ করতে হয়।
ডিবিএইচ
ঋণের কোনো নির্দিষ্ট পরিমাণ নেই। সম্পত্তির পরিমাণ, ঋণ পরিশোধের সামর্থ্যের ওপর ভিত্তি করে ঋণ দেওয়া হয়। সে ক্ষেত্রে ঋণ পরিশোধ করতে হবে ২০ বছরের মধ্যে। সুদের হার নয় থেকে ১৬ শতাংশ।
আইডিএলসি
গ্রাহকের সম্পদের পরিমাণের ৭০ শতাংশ পর্যন্ত গৃহঋণ দিয়ে থাকে এই প্রতিষ্ঠান। সুদের হার ১৩ থেকে ১৪ শতাংশ। পরিশোধের সময়কাল ২০ বছর। প্রবাসীদেরও এ ঋণের সুবিধা দেওয়া হয়। এ ছাড়া চাকরিজীবী, ব্যবসায়ীদের আয় ন্যূনতম ২০ হাজার টাকা হলে, তিনি এ প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হন।
ডাচ্-বাংলা ব্যাংক
সাধারণত যাঁদের আয় ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা, তাদের এই ব্যাংক থেকে ঋণ দেওয়া হয়। ঋণের পরিমাণ দুই থেকে ৭৫ লাখ টাকা। সুদের হার ১৩ শতাংশ। ঋণ পরিশোধের সময় ১৫ বছর। বাড়ি নির্মাণ খরচের ৭০ শতাংশ ঋণ দেওয়া হয়। সে ক্ষেত্রে ঋণগ্রহীতার বয়স ২৫ থেকে ৬৫ বছর হতে হবে। প্রসেসিং ফি ঋণের পরিমাণের শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ।
প্রাইম ব্যাংক
সম্পত্তির মূল্যের ওপর ৭০ শতাংশ ঋণ দেওয়া হয়। ঋণের পরিমাণ পাঁচ থেকে ৭৫ লাখ টাকা। সুদের হার ১৩ শতাংশ। ঋণ পরিশোধের সময়সীমা ১০ বছর। ভ্যাটসহ সার্ভিসচার্জ রয়েছে।
ইস্টার্ন ব্যাংক
ঋণের পরিমাণ পাঁচ থেকে ৭৫ লাখ টাকা। ঋণগ্রহীতার মাসিক গড় আয়ের ৫০ গুণ পরিমাণ ঋণ দেওয়া হয়। ঋণ পরিশোধের সময়সীমা তিন থেকে ২০ বছর। ঋণগ্রহীতাকে বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে এবং তার বয়সসীমা ২২ থেকে ৫৭ বছর। ঋণের পরিমাণ পাঁচ থেকে ১৫ লাখ টাকা হলে সুদের পরিমাণ ১৪ থেকে ১৫ শতাংশ। ঋণগ্রহীতার সম্পত্তির পরিমাণের ৮০ শতাংশ ঋণ দেওয়া হয়।
ঢাকা ব্যাংক
চাকরিজীবী, পেশাজীবী, ব্যবসায়ী, যাঁদের আয় ন্যূনতম ৪০ হাজার টাকা, তারা ঋণ পাওয়ার যোগ্য। সম্পত্তির মূল্যের ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ দেওয়া হয়। পাঁচ থেকে ১৫ বছরের মধ্যে ঋণ পরিশোধ করতে হয়। ঋণের পরিমাণ পাঁচ থেকে ৭৫ লাখ টাকা। সুদের হার ১২ থেকে ১৩ শতাংশ। প্রসেসিং ফি ১ দশমিক ২৫ থেকে ১ দশমিক ৫ শতাংশ ।
এইচএসবিসি ব্যাংক
ঋণগ্রহীতার রেজিস্ট্রেশন খরচসহ সম্পত্তির ক্রয়মূল্যের সর্বোচ্চ ৮০ শতাংশ গৃহঋণ দেওয়া হয়। ঋণের পরিমাণ সাত লাখ ৫০ হাজার থেকে ৭৫ লাখ টাকা। ঋণ পরিশোধের সময়সীমা পাঁচ থেকে ২০ বছর। সুদের হার ৯ শতাংশ। ঋণগ্রহীতা চাকরিজীবী হলে তাঁর ন্যূনতম আয় ৪০ হাজার এবং নিজস্ব প্রতিষ্ঠান আছে, এমন কেউ বা ব্যবসায়ী হলে তাঁর আয় ৫০ হাজার টাকা হতে হবে। এ ব্যাংকে চলছে ‘বৈশাখী অফার’। এই বছরের এপ্রিল থেকে অক্টোবর পর্যন্ত চলবে এ অফার। এতে সুদের হার ৯ দশমিক ৯৯ শতাংশ।
স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক
এ ব্যাংক থেকে ঋণ পেতে হলে ঋণগ্রহীতাকে চাকরিজীবী, পেশাজীবী বা ব্যবসায়ী হতে হবে এবং তাঁদের মাসিক আয় হতে হবে ন্যূনতম ২৫ হাজার টাকা। ন্যূনতম বয়স ২৫ বছর। ঋণগ্রহীতার সম্পত্তির পরিমাণের ৮০ শতাংশ ঋণ দেওয়া হয়। মোট ঋণের পরিমাণ ৭৫ লাখ টাকা। সুদের হার ১২ দশমিক পাঁচ শতাংশ থেকে ১৪ দশমিক ২৫ শতাংশ। প্রসেসিং ফি ঋণের পরিমাণের ১ দশমিক ৫ শতাংশ এবং সঙ্গে ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রযোজ্য। ঋণ পরিশোধের সময় ২০ বছর।
তথ্যঋণ : লাইফস্টাইল
- 716 views
- 1 answers
- 0 votes
মিথ্যা মামলার হয়রানিতে অনেকেই পড়ে থাকেন। যেকোনো ধরনের রেশ ধরে যেকেউ মিথ্যা মামলা করার ক্ষমতা রাখে। এমতাবস্থায় যার বিরুদ্ধে মামলা আনা হয়েছে তিনি প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ২১১ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধের অভিযোগ এনে পাল্টা মামলা করতে পারেন। এ অবস্থায় কেবল সংশ্লিষ্ট আদালতই পারে স্বতঃপ্রণোদিতভাবে ফৌজদারি কার্যবিধির ২৫০ ধারা অনুযায়ী মিথ্যা অভিযোগ আনয়নকারীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে।
ক্ষতিপূরণ প্রদানের আদেশঃ
মিথ্যা নালিশ আনয়নকারী সব ব্যক্তির বিরুদ্ধে ফৌজদারি কার্যবিধি ২৫০ ধারা অনুযায়ী মিথ্যা মামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে ক্ষতিপূরণ প্রদানের আদেশ করা যায়। কোনো পুলিশ কর্মকর্তা আমলযোগ্য নয়, এ রকম কোনো মামলায় মিথ্যা প্রতিবেদন দিলে তাঁর বিরুদ্ধেও এ ধারা অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে ক্ষতিপূরণ প্রদানের আদেশ প্রদান করা যায়।
রিভিশনঃ
দায়রা জজ আদালত ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৩৫-এর ৪৩৯(এ) ধারা অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ প্রদানের আদেশ রিভিশন করতে পারেন।
আপিলঃ
ফৌজদারি কার্যবিধির ২৫০(৩) ধারা অনুযায়ী, দায়রা জজ আদালতে আপিল করা যায়।
আমাদের দেশের বিজ্ঞ আদালতসমূহ যদি সতর্কতার সঙ্গে নিয়মিতভাবে মিথ্যা মামলাসমূহের ক্ষেত্রে ফৌজদারি কার্যবিধির ২৫০ ধারা অনুযায়ী মিথ্যা অভিযোগ আনয়নকারী পক্ষকে কারাদণ্ড ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রদানের আদেশ প্রদান করেন, তাহলে প্রথম দিকে আদালতে কাজের পরিধি বাড়লেও একটা পর্যায়ে মিথ্যা মামলা দায়েরের সংখ্যা দ্রুতগতিতে হ্রাস পাবে। ফলে একদিকে যেমন স্তূপীকৃত মামলার সংখ্যা হ্রাস পাবে, অন্যদিকে মিথ্যা মামলায় ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষ অন্তত তাদের আর্থিক ক্ষতি কিছুটা হলেও পুষিয়ে নিতে পারবে।
মূললেখা :
অমিত কুমার দে
জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, বরগুনা- 792 views
- 1 answers
- 0 votes
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে নানা বিষয়ে নানা দলিল সম্পাদন করতে হয়। দলিলের বিষয়ের ওপর নির্ভর করে স্ট্যাম্পের মূল্যমান বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। ২০১২-১৩ অর্থবছরের বাজেট অনুযায়ী, গত ১ জুলাই থেকে দলিল সম্পাদনের জন্য স্ট্যাম্পের নতুন মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী দলিল সম্পাদনের ক্ষেত্রে স্ট্যাম্প ক্রয়ের জন্য নির্ধারিত নতুন মূল্য প্রযোজ্য হবে। তাই এ নতুন নিয়ম প্রযোজ্য হওয়ার পর থেকে পুরোনো মূল্যের স্ট্যাম্প দিয়ে দলিল সম্পাদন করা হলে সে দলিল বাতিল বলে গণ্য হবে এবং এর কোনো প্রকার আইনগত ভিত্তি থাকবে না। নতুন নিয়মে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দলিল সম্পাদনের জন্য যে মূল্যমানের স্ট্যাম্পে তা সম্পাদন করতে হবে তা হলো:
রাজউকের প্লট এবং ট্যাক্সের দলিলের জন্য মূল্যের ওপর ২ শতাংশ টাকার সমমানের স্ট্যাম্প;
ট্রাস্ট ডিড-ক্যাপিটাল দলিলের জন্য মূল্যের ওপর ২ শতাংশ টাকার সমমানের স্ট্যাম্প;
অছিয়তনামার কপির জন্য ৩০ টাকার স্ট্যাম্প;
নকলের কবলা দলিল, বন্ড, বণ্টননামা, সার্টিফাইড কপির দলিলের জন্য ৫০ টাকার স্ট্যাম্প;
অনুলিপি, খাস-মোক্তারনামা দলিলের জন্য ১০০ টাকার স্ট্যাম্প;
হলফনামা, বায়নার হলফনামা, হেবার ঘোষণাপত্র, নাদাবি পত্র, বাতিলকরণ দলিলের জন্য ২০০ টাকার স্ট্যাম্প;
চুক্তিনামা দলিল, অঙ্গীকারনামা, বায়নানামার দলিল, মেমোরেন্ডাম অব অ্যাগ্রিমেন্ট, রিডেম্পশন, সোলেনামা বা আপসনামার দলিলের জন্য ৩০০ টাকার স্ট্যাম্প;
আমমোক্তারনামা দলিল এবং সাফকবলা দলিলের জন্য ৪০০ টাকার স্ট্যাম্প;
তালাকের হলফনামার দলিলের জন্য ৫০০ টাকার স্ট্যাম্প;
পার্টনারশিপ বা অংশীদারি দলিলের জন্য ২০০০ টাকার স্ট্যাম্প;
মর্টগেজ বা বন্ধকের দলিল সম্পাদনের ক্ষেত্রে
ক. এক টাকা থেকে ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত ২০০০ টাকা
খ. ২০ লাখ এক টাকা থেকে এক কোটি টাকা পর্যন্ত পাঁচ হাজার টাকা এবং
গ. এক কোটি এক টাকার ওপরের ক্ষেত্রে পাঁচ হাজার টাকার এবং প্রতি লাখের জন্য ২ শতাংশ হারে মোট টাকার মূল্যমানের স্ট্যাম্পে সম্পাদন করতে হবে।- 933 views
- 1 answers
- 0 votes
আধুনিককালের এই সময়ে এসেও বাল্যবিবাহের প্রভাব থেকে যেন বাংলাদেশ এখনও মুক্ত হতে পারে নি। এখনও গ্রামাঞ্চলে বাল্যবিবাহের গুপ্ত খবর শোনা যায়। গোপনীয়তা রক্ষা করে এই ধরনের বিয়েগুলো সম্পন্ন হয়ে থাকে। প্রত্যেকেই সচেতন নাগরিক হিসেবে বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া উচিত আমাদের সকলেরই।
বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী, ১৮ বছরের কম বয়সী মেয়ের সাথে ২১ বছরের কম বয়সী ছেলের বিয়েকেই বাল্যবিবাহ বলা হয়। ১৯২৯ সালের বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনে বাল্যবিবাহ বলতে বোঝায়, বাল্যকাল বা নাবালক বয়সে ছেলে মেয়েদের মধ্যে বিয়ে। এছাড়া বর-কনে দুজনেরই বা একজনের বয়স বিয়ের আইন অনুযায়ী নির্ধারিত বয়সের কম হলে অর্থাৎ বিয়েতে মেয়ের বয়স ১৮ বছরের নিচে অথবা ছেলের বয়স ২১ বছরের নিচে থাকলে সেটাও আইনের চোখে বাল্যবিবাহ বলে চিহ্নিত হবে।
১৯২৯ সালের বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন অনুযায়ী-
১. বাল্যবিবাহ আইনের দৃষ্টিতে শাস্তিযোগ্য অপরাধ
২. পিতা-মাতাসহ এই বিয়ের সাথে যুক্ত সকলেই শাস্তি পাবেন
৩. বাল্য বিবাহ একটি বাতিলযোগ্য বিবাহশাস্তি :
ক) শিশু বিবাহকারীর শাস্তি
১৯২৯ সালের বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন, ধারা -৪ অনুযায়ী
২১ বছরের বেশি বয়সের কোন পুরুষ অথবা ১৮ বছরের বেশি বয়সের নারী কোন বাল্যবিবাহের চুক্তি করলে, তারা দুই বৎসর পর্যন্ত বিনাশ্রম কারাদন্ড বা পঞ্চাশ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হতে পারে।খ) বিয়ে সম্পন্নকারীর শাস্তি
১৯২৯ সালের বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন, ধারা-৫, অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি বাল্যবিবাহ অনুষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা, পরিচালনা বা নির্দেশ প্রদান করলে তিনি দুই বৎসর পর্যন্ত বিনাশ্রম কারাদন্ড বা পঞ্চাশ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হতে পারেন। যদি তিনি প্রমাণ করতে পারেন যে বিবাহটি বাল্যবিবাহ হিসেবে বিশ্বাস করার কোন কারণ ছিল না, সেক্ষেত্রে তিনি এই অপরাধের দায় থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
গ) অভিভাবকের শাস্তি
১৯২৯ সালের বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন, ধারা -৬ অনুযায়ী, যেক্ষেত্রে কোন নাবালক বাল্যবিবাহের চুক্তি করে, সেক্ষেত্রে ঐ নাবালকের পিতা-মাতা, অভিভাবক যদি উক্ত বিবাহে উৎসাহ দেয়ার কাজ করে অথবা বিবাহ বন্ধ করতে অবহেলার কারণে ব্যর্থ হয়, তবে ঐ ব্যক্তি দুই বৎসর পর্যন্ত বিনাশ্রম কারাদন্ড বা পঞ্চাশ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হতে পারেন। শর্ত থাকে যে এক্ষেত্রে কোন নারীকে কারাদন্ড দেয়া যাবে না।
সুতরাং একজন সমাজ সচেতন নাগরিক হিসেবে আপনার চোখে পড়া যেকোনো বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে রুখে দাড়ান এবং এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ গড়ে তুলুন। প্রয়োজনে সন্নিকটস্থ থানায় যোগাযোগ করুন।
তথ্যসূত্র : বিকশিত নারী নেটওয়ার্ক
- 668 views
- 1 answers
- 0 votes
এমন ঘটনা প্রায়ই দেখা যায় যে বাবার অবর্তমানে বোনেরা সম্পত্তির অংশ পান না। তাদেরকে অনেক ধরনের ভূগোল বুঝিয়ে সম্পত্তি থে কে বঞ্চিত করা হয়। বোনেরাও অনেক সময় বাবার সম্পত্তির অংশ ছাড় দিয়ে দেন। অনেকে অজ্ঞতার কারণে, আবার অনেকে ভাইদের সঙ্গে কোনো ঝামেলা হবে ভেবে প্রাপ্য অংশটুকু ছেড়ে দেন। কিন্তু বোনেরা ইচ্ছা করলে তাঁদের অধিকারের জন্য আইনের আশ্রয় নিতে পারেন।
বোনদের সম্পত্তির অংশ
মুসলিম আইনে বাবা বা মা মারা গেলে মৃত ব্যক্তির যদি ছেলে এবং মেয়ে উভয়ই থাকে তাহলে রেখে যাওয়া সম্পত্তিতে ছেলেরা যা পাবেন, মেয়ে বা মেয়েরা তার অর্ধেক পাবেন। অর্থাৎ ভাইয়েরা ইচ্ছা করলেই বোনদের সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করতে পারবেন না। এক্ষেত্রে বোনের বিয়ে হোক বা না হোক, সেটি বিবেচ্য নয়। বোনদের বিয়ে হয়ে গেলেও বোনদের সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করা যাবে না। এমনকি বোনের বিয়েতে খরচ হয়েছে বলে বিভিন্ন অজুহাত দিলেও তা কখনই আইনিভঅবে গ্রহণযোগ্য না কেননা ভাইদের ক্ষেত্রেও এমন অনেক টাকা খরচ করা হয়ে থাকে।
যদি সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করা হয় :
ভাই-বোনেরা আলোচনা করে নিজেদের মধ্যে আপস করে বণ্টননামা সম্পন্ন করে নিতে পারেন। এই বণ্টননামা রেজিস্ট্রি করে নিতে হবে। যদি আপসের মাধ্যমে ভাইয়েরা বোনদের সম্পত্তি দিতে না চান কিংবা বোনদের সম্পত্তি কম দিতে চান তাহলে বোনেরা দেওয়ানি আদালতের আশ্রয় নিতে পারেন। এ ক্ষেত্রে বঞ্চিত বোনেরা বাঁটোয়ারা বা বণ্টনের মোকাদ্দমা করতে পারেন। মৃত ব্যক্তির রেখে যাওয়া সম্পত্তির ভাগ-বণ্টন নিয়ে উত্তরাধিকারীদের নিজেদের মধ্যে বনিবনা না হলে আদালতের মাধ্যমে এই ভাগ-বণ্টন দাবি করা যায়। একে বাঁটোয়ারা মামলা বলা হয়। কোনো যৌথ সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ দেখা দিলেও কে কতটুকু অংশ পাবেন তা আদালতের মাধ্যমে নির্ধারণের জন্য বাঁটোয়ারা মামলা করতে হয়। সাধারণত বিরোধ দেখা দেওয়ায় ছয় বছরের মধ্যে মামলা করতে হয়। এই মোকদ্দমা চলাকালে কেউ মারা গেলে তাঁদের উত্তরাধিকারীরা অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন এবং অংশ চাইতে পারেন। অর্থাৎ শুধু বোনেরা নন, বোনেরা মারা যাওয়ার পর তাঁর উত্তরাধিকারীরাও এই মামলায় পক্ষ হতে পারেন। এ মামলায় দুবার ডিক্রি হয়। প্রাথমিক ডিক্রি হওয়ার পরে বা আগে নিজেরা নির্ধারিত সময়ে আপস-মীমাংসা করে নেওয়ার সুযোগ আছে। প্রাথমিক ডিক্রির পর বণ্টন না করা হলে আদালত অ্যাডভোকেট কমিশনার নিয়োগ করে অংশ নির্ধারণ করে দিতে পারেন এবং চূড়ান্ত ডিক্রি প্রদান করেন।
তানজিম আল ইসলাম
আইনজীবী
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট- 740 views
- 1 answers
- 0 votes
আপনি আপনার হাজবেন্ডের কাছ থেকে কী কারণে নিরাপদ থাকতে চান এর কারণ সম্পর্কে স্পষ্ট কোনো ব্যাখ্যা করেন নি। আপনার হাজবেন্ড আপনার সাথে আসলে কী করে, শারীরিকভাবে নির্যাতন করে নাকি অন্য কোনো ধরনের সমস্যা কিছুই বলেন নি। স্পষ্টভাবে কিছু না বললে আপনাকে কীভাবে সমাধান দিতে পারি বলুন। তাই আপনার কাছে অনুরোধ আপনার সমস্যাটি সম্পর্কে ডিটেইলস আমাদের জানান আমরা সুষ্ঠু সমাধান দেয়ার চেষ্টা করব।
- 701 views
- 1 answers
- 0 votes
প্রশ্নটির উত্তর অতি ব্যাপক। সংক্ষেপে, সামাজিক মর্যাদা এবং আইনগত অধিকার রক্ষার জন্যই বিবাহ রেজিস্ট্রেশন করা অতি জরুরী। রেজিস্ট্রেশন ব্যতীত আপনি আইনগত অধিকার থেকে বঞ্চিত হতে পারেন। মুসলিম পারিবারিক আইন অনুযায়ী বিবাহ রেজিস্ট্রেশন একটি প্রামাণ্য দলিল হিসেবে সাক্ষ্যগত মূল্য বহন করে। রেজিস্ট্রেশন ব্যতিত বিবাহ প্রমাণ করা কঠিন ফলে মেয়েদের প্রতারিত হবার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয় সবচেয়ে বেশী। দেনমোহর, ভরণপোষণ, উত্তরাধিকার নির্ণয়, সন্তানের পিতৃত্ব ইত্যাদি দাবীর ক্ষেত্রে বিবাহ রেজিস্ট্রিশন বা বিবাহের কাবিননামা আইনগত দলিল হিসেবে বিবেচিত হয়। পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে কাবিননামার গুরুত্ব ব্যপক। কাবিননামায় বয়স উল্লেখ করতে হয় বিধায় বাল্য বিবাহ রোধও সম্ভব। এটি বিবাহিত ছেলে-মেয়ে উভয়ের ভবিষ্যত আইনগত অধিকার সংরক্ষণ করে। বিবাহ সম্পর্কে উভয় পক্ষ থেকেই যে কোন সময় জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে, তখন কাবিননামা প্রমাণ পত্র হিসেবে কাজ করে। অন্যদিকে, আইনের দৃষ্টিতে বিবাহ রেজিস্ট্রেশন না করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ, তাই সকল বিবাহ রেজিস্ট্রেশন করা আইনত আবশ্যক।
বিবাহ রেজিস্ট্রেশন কী এবং কেন :
বিবাহ রেজিস্ট্রেশন হচ্ছে সরকারিভাবে বিবাহকে তালিকাভুক্তি করা। সরকারের নির্ধারিত ফরমে বিবাহের তথ্যবলী দিয়ে এই তালিকাভূক্তি করতে হয়। তালিকাভূক্তি ফরমটিকে কাবিননামাও বলে। ১৯৭৪ সালের মুসলিম বিবাহ ও তালাক (রেজিস্ট্রেশন) আইন অনুযায়ী প্রতিটি বিবাহ সরকার নির্ধারিত কাজী বা নিকাহ রেজিস্ট্রার দ্বারা রেজিস্ট্রেশন করা বাধ্যতামূলক। ২০০৫ সালের ৯ নং আইন দ্বারা ১৯৭৪ সালের মুসলিম বিবাহ ও তালাক (রেজিস্ট্রেশন) আইনের সংশোধনী আনা হয় এবং বিবাহ রেজিস্ট্রেশন না করাকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়। উক্ত সংশোধনীতে বলা হয়েছে, নিকাহ রেজিস্ট্রার বা কাজী বিবাহ সম্পন্ন হবার সাথে সাথেই বিবাহ রেজিস্ট্রেশন করবেন অথবা তিনি ব্যতিত অন্য কেহ বিবাহ সম্পন্ন করলে ৩০ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট নিকাহ রেজিস্ট্রার বা কাজীর নিকট বিবাহের তথ্য প্রদান করতে হবে এবং কাজী উক্ত তথ্য প্রাপ্তির সাথে সাথে বিবাহ রেজিস্ট্রি করবেন। যদি কেউ বিবাহ রেজিস্ট্রেশনের এসব বিধান লঙ্ঘন করেন তাহলে তার ২ (দুই) বছর বিনাশ্রম কারাদন্ড বা ৩০০০ (তিন হাজার) টাকা জরিমানা বা উভয়দন্ড হতে পারে। আইন অনুযায়ী কেউ যদি রেজিস্ট্রেশন বিষয়ে ভুক্তভোগী হয়ে থাকেন তবে প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট অভিযোগ দায়ের করতে পারেন। উল্লেখ যে, রেজিস্ট্রেশন না হলে বিবাহ বাতিল হয় না তবে আইনগত অধিকার থেকে বঞ্চিত হবার সম্ভবনা থাকে।
খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের ক্ষেত্রেও ১৮৭২ সালের খ্রিস্টান ম্যারেজ এ্যাক্ট অনুযায়ী খ্রিস্টানদের বিবাহ রেজিস্ট্রেশন করা বাধ্যতামূলক। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ক্ষেত্রে হিন্দু পারিবারিক আইন অনুযায়ী হিন্দু বিবাহ রেজিস্ট্রেশনের কোন বিধি বিধান নাই। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের ক্ষেত্রেও এরূপ বিধান নাই। এসব ক্ষেত্রে ভবিষ্যত প্রয়োজনীয়তা কথা বিবেচনা করে নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে হলফনামা করে রাখা যেতে পারে।
কখন এবং কিভাবে বিবাহ রেজিস্ট্রেশন করতে হয় :
২০০৫ সালের মুসলিম বিবাহ ও তালাক (রেজিস্ট্রেশন) সংশোধিত আইন অনুযায়ী বিবাহ সম্পন্ন হবার সাথে সাথে বিবাহ রেজিস্ট্রেশন করতে হয়। তবে নিকাহ রেজিস্ট্রার ব্যতিত বিবাহ সম্পন্ন হলে ৩০দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট নিকাহ রেজিস্ট্রারের নিকট বিবাহ রেজিস্ট্রি করতে হয়। রেজিস্ট্রি করতে রেজিস্ট্রেশন সরকারি ফি দিতে হয়। দেনমোহরের পরিমাণের উপর ভিত্তি করে রেজিস্ট্রেশন ফি নির্ধারিত হয়। ধার্য্যকৃত দেনমোহরের প্রতি হাজার বা তার অংশবিশেষের জন্য ১০ টাকা হারে রেজিস্ট্রেশন ফি দিতে হয়। তবে রেজিস্ট্রেশন ফি এর মোট পরিমাণ ১০০ টাকার কম হবে না এবং ৪০০০ টাকার উপর হবে না। এই ফি সরকার কর্তৃক নির্ধারিত এবং পরিবর্তন হয়ে থাকে। রেজিস্ট্রেশন ফি পরিশোধের দায়িত্ব বরপক্ষের।
আইন অনুযায়ী বিবাহের গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় বা শর্ত যেমন, বর কনের বয়স, উভয়ের সম্মতি, দেনমোহের, তালাক প্রদানের ক্ষমতা ইত্যাদি পূরণ সাপেক্ষে কাজী বা নিকাহ রেজিস্ট্রার বিবাহ রেজিস্ট্রি করবেন। খ্রিস্টান বিবাহর ক্ষেত্রে যিনি বিবাহ সম্পাদন করবেন তিনিই বিবাহ রেজিস্ট্রেশন করবেন। রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হবার পর কাজী উভয়পক্ষকে রেজিস্ট্রেশন ফরম বা কাবিননামার সত্যায়িত কপি প্রদান করবেন।বিবাহ রেজিস্ট্রেশনের সুফল-কুফল :
বিবাহ রেজিস্ট্রেশন করলে আইনগত কিছু সুফল পাওয়া যায় কিন্তু রেজিস্ট্রেশন না করলে কুফলও রয়েছে অনেক
যেমন রেজিস্ট্রেশনের ফলে,১) বর বা কনে পক্ষ উক্ত বিবাহ অস্বীকার করতে পারেনা এবং একে অপরের প্রতি সামাজিক ও পারিবারিক দায়-দায়িত্ব পালনে বাধ্য হয়।
২) স্বামী/স্ত্রী উভয়ে উভয়ের সম্পত্তিতে উত্তরাধিকার হতে পারে।
৩) স্ত্রী তার প্রাপ্ত দেনমোহার ও ভরণপোষণ আদায় বা দাবী করতে পারে।
৪) সন্তানের পিতৃত্ব দাবী/প্রমাণ করতে সহজ হয়।
৫) স্বামী দ্বিতীয় বিবাহর জন্য উদ্যোগী হলে স্ত্রী আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারে।
আর বিবাহ রেজিস্ট্রেশন না হলে স্বামী বা স্ত্রী’র আইনগত বৈধতা প্রমাণ করা কস্টসাধ্য, অনেক ক্ষেত্রে যায় না। রেজিস্ট্রেশন না হবার ফলে পুরুষ অথবা স্ত্রী উভয়ই আইনগত অধিকার থেকে বঞ্চিত বা প্রতারিত হবার সম্ভাবনা দেখা দেয়। এবং রেজিস্ট্রেশন না করা আইনত শাস্তিযোগ্য অপরাধও বটে।
লেখক: জয়নাল আবেদীন চৌধুরী রিগ্যান
আইনজীবী- 705 views
- 1 answers
- 0 votes