14182
Points
Questions
3
Answers
7076
অনেকে মনে করেন মেশিন ছাড়া সুন্দর কফি বানানো যায় না। পুরোপুরি ভুল কথা। বাসায় বসেও আপনি রেস্টুরেন্টের চেয়েও ভালো কফি বানতে পারবেন।
সুস্বাদু ক্ল্যাসিক কফি বানাতে যা যা লাগবে/ উপকরণ :
১. কফি মেট।
২. গরুর জ্বাল দেয়া ঘন দুধ।
৩. দুধ পাউডার।
৪. ভালো মানের কফি পাউডার l
কফি মেট একটি নন ডেইরী ক্রিমার মানে এখানে দুধ জাতীয়
কোন ক্রিম থাকনো। এটি কোলস্টেরল ফ্রি, স্বাস্থের জন্য ভালো,
তবে বাঙ্গালী জিহবাকে শান্তি দেবার জন্য যথেষ্ট নয়। অরজিনাল ক্রিমের
মত স্বাদ পাবেন না এটিতে। কফিকে ভারী এবং সুস্বাদু করতে ব্যবহার করা হয়। প্রতি মগে ২ চামচ এবং কাপে ১ চামুচ ব্যবহার করলে কফি আঠালো, ভারী ও সুস্বাদু হয়।
শুধু কফি মেট মিশিয়ে কফির পুরো স্বাদ আসেনা। ১/হাফ চামুচ দুধ পাউডার মেশালে টেস্ট বেড়ে যায় বহুগুণ। দুধ পাউডার নির্বাচনের ক্ষেত্রে ভালো ব্রান্ডের ফুল ক্রিম দুধ পাউডার বেছে নিন।প্রথমে, গরুর সরযুক্ত ঘন দুধ নেবেন মগের ১/৪ ভাগ। বাকী ১/৩ ভাগ পানি মেশাবেন। এরপর ১ চামুচ কফিমেট ও হাফ চামুচ দুধ পাউডার মিশিয়ে বয়েল করুন ফুটে ওঠা না পর্যন্ত। মাইক্রোওভেন হলে ৩/৪ মিনিট লাগবে।
এরপর মগে ঠেলে মাত্র হাফ চামুচ কফি পাউডার মেশাবেন। বেশী পাউডার মেশালে কড়া হয়, সুস্বাদু হয়না। কড়া কফি নেশা মেটায় ঠিক তবে তৃপ্তিকর হয়না। তাই কফির লিকার দেবার সময় সবসময় চেষ্ঠা করবেন কম মেশাতে।
যদি ফেনা চান তবে দুটো মগ নিয়ে একমগ থেকে অন্যমগে কফি ঠালুন যা বোতলে ঢুকিয়ে ঝাকান।
কখনোই কড়া গরম কফি খাবেন না, কারণ স্বাদ ভালো লাগেনা। হালকা ঠান্ডা (৭০ সেন্ট্রিগেডের কাছাকাছি) কফির স্বাদ সবচেয়ে ভালো লাগে।
- 1725 views
- 1 answers
- 0 votes
আমরা সবাই কম বেশি ফ্রিকেলস শব্দটির সাথে পরিচিত। যার বাংলা প্রতিশব্দ হচ্ছে তিল বা ক্ষুদ্র চিহ্ন। এটি এমন ধরনের দাগ যার বর্ণ বাদামী, আকারে ২ – ৪ মিমি এর মত গোলাকার, ত্বকের সমান স্তরে অবস্থান করে এবং মূলত ত্বকের কোন ক্ষতি সাধন করে না। তবুও সবাই এর থেকে পরিত্রাণ চেয়ে থাকেন। যদিও এটা কোন রোগ বা শারীরিক সমস্যা নয়, এটি অনেকের কাছেই বিব্রতকর। ফর্সা ত্বকে এ দাগ বেশি পরিলক্ষিত হয়। এটা অনেকটাই বংশগত, পরিবারের কারো এ সমস্যা থেকে থাকলে আপনার হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।
ফ্রিকেলস সূর্য রশ্মিতে আরো বেশি প্রকট আকার ধারণ করে তাই সান এক্সপোজড জায়গা গুলোতে বেশি হতে দেখা যায়, এছাড়া সারা শরীরেই ফ্রিকেলস হতে পারে। বাজারে অনেক ব্র্যান্ডের ফ্রিকেলস আউট ক্রীম পাওয়া যায়, যার সবই কম-বেশি ব্লিচিং উপাদান দিয়ে তৈরী আর ব্লিচিং পদার্থ আমাদের নাজুক ত্বকের জন্য হুমকি স্বরূপ।
প্রকারভেদ :
ফ্রিকেলস সাধারণত দু ধরনের হয় –
০১. এফিলাইডস
এরা সমতল এবং লালচে বাদামী রঙের হয়ে থাকে। মূলত গ্রীষ্ম কালে দেখা দেয় এবং শীত আসলেই চলে যায়। এই রকমের ফ্রিকেলস বংশগত হতে পারে।০২. লেনটিজাইন্স
লেনটিজাইন্স সম্ভবত ছোট ছোট ট্যানের দাগের মত বাদামী বা কালো রঙের হতে দেখা যায়। এ ধরণের তিল এফিলাইডস থেকেও গাঢ় রঙের হয়। আর শীত কালে চলেও যায় না। সারা বছর ব্যপী এটি আপনার সুন্দর ত্বকে রাজত্ব করে বেড়ায়। এটিও অনেকটা বংশগত সমস্যা ।লক্ষণ :
ফ্রিকেলস প্রধানত কালো বা বাদামী দাগ যা মুখের ত্বকেই বেশি হয়ে থাকে, বিশেষ করে নাকের দুই পাশের জায়গাগুলোতে। ফর্সা বা ফ্যাকাসে ত্বক এতে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। রোদের আলোতে ফ্রিকেলস আরো স্পষ্ট ও তীব্র ভাবে পরিলক্ষিত হয়।
কারণ :
এর আসল কারণ জেনিটিকাল। কারো পরিবারে বাবা-মা দু জনের তিল থাকলে তার হবার সম্ভবনা ৮০ %। আর যে কোন এক জনের থাকলেও এ মাত্রা ৬০-৬৫ %।
রোদ ফ্রিকেলসের প্রধান শত্রু । অতিরিক্ত সূর্য রশ্মিতে ঘোরাঘুরির ফলেও হতে পারে। অনেকে আছেন গাড়িতে চলাফেরা করেও ফ্রিকেলস কবলিত হন এবং ভাবেন গাড়িতে থাকার কারণে তার ত্বক হয়ত সূর্য রশ্মির দ্বারা আক্রান্ত হয়নি । এ ধারণা ভুল। গাড়ির কাঁচ ভেদ করে খুব সহজেই সূর্য রশ্মি পৌঁছে যেতে পারে আপনার ত্বকে এবং তৈরী করতে পারে ফ্রিকেলস ।
- 679 views
- 1 answers
- 0 votes
নাকের নিচের অবাঞ্ছিত লোম আসলেই ত্বকের সৌন্দর্য নষ্ট করে ফেলে। এই অবাঞ্ছিত লোম দূর করার জন্য আপনি একটি প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করতে পারেন। এক চামচ লেবুর রস, তিন চামচ চিনি এবং এক চামচ পানি ভালোভাবে মিশিয়ে লাগাতে পারেন। আশা করি উপকৃত হবেন।
- 1434 views
- 1 answers
- 0 votes
বাংলাদেশে হেয়ার ট্রান্সপ্লান্ট করা হয় না।
- 1102 views
- 1 answers
- 0 votes
কনডম বা কন্ডোম (ইংরেজি: Condom) প্রধানত যৌনসংগমকালে ব্যবহৃত এক প্রকার জন্মনিরোধক বস্তু। এটি মূলত গর্ভাধানও গনোরিয়া, সিফিলিজ ও এইচআইভি-এর মতো যৌনরোগের প্রতিরোধক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এটি পুরুষদের উত্থিত পুরুষাঙ্গেপরানো হয়। রেতঃস্খলনের পর কনডম যৌনসঙ্গীর শরীরে বীর্য প্রবেশে বাধা দেয়। কনডম জলাভেদ্য, স্থিতিস্থাপক ও টেঁকসই বলে একে অন্যান্য কাজেও লাগানো যায়। বীর্যহীনতা চিকিৎসায় ব্যবহারের জন্য কনডমের মধ্যে করে বীর্য সংগ্রহ করা হয়। জলাভেদ্য মাইক্রোফোন তৈরি ও রাইফেলের ব্যারেল নোংরা পচা বস্তু দ্বারা বুজে যাওয়া আটকাতেও কনডম ব্যবহৃত হয়।
আধুনিক যুগে কনডম মূলত তরুক্ষীর থেকে প্রস্তুত করা হয়। তবে কনডম তৈরি ক্ষেত্রে অনেক সময় পলিআরথিন, পলিইসোথ্রিন বা ল্যাম্ব ইনসেসটাইনও ব্যবহৃত হয়। মহিলাদের কনডমও পাওয়া যায়। জন্ম নিয়ন্ত্রণের পদ্ধতি হিসেবে কনডম অত্যন্ত সুলভ, সহজে ব্যবহার্য, কম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াযুক্ত ও যৌনব্যাধি প্রতিরোধে সর্বাধিক কার্যকর। সঠিক জ্ঞান ও ব্যবহার কৌশল এবং যৌনসংগমের প্রতিটি ক্রিয়ায় ব্যবহৃত হলে যেসব মহিলাদের পুরুষ যৌনসঙ্গীরা কনডম ব্যবহার করেন, তাঁরা বার্ষিক মাত্র ২ শতাংশ গর্ভাবস্থার সম্মুখীন হন।
কনডম প্রায় ৪০০ বছর ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ঊনবিংশ শতাব্দী থেকেই কনডম ব্যবহার সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় জন্মনিরোধ পদ্ধতি। আধুনিক সমাজে কনডমের ব্যবহার ব্যাপক মান্যতা লাভ করেছে। যদিও যৌনশিক্ষা পাঠক্রমে কনডমের ব্যবহার ইত্যাদি প্রসঙ্গে কনডম নিয়ে কিছু বিতর্কও সৃষ্টি হয়েছে।
প্রাচীন সভ্যতাগুলিতে কনডমের ব্যবহার প্রচলিত ছিল কিনা তা নিয়ে পুরাতাত্ত্বিক ও ঐতিহাসিকদের মধ্যে মতবিরোধ বিদ্যমান। প্রাচীন মিশর, গ্রিস ও রোমে গর্ভাধান রোধ নারীর দায়িত্ব হিসেবে পরিগণিত হত। এই সব দেশ থেকে সে সকল সুলিখিত প্রাচীন জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির বিবরণীগুলি পাওয়া গেছে, সেগুলিতে মূলত নারী-নিয়ন্ত্রিত গর্ভনিরোধ বস্তুগুলিরই উল্লেখ রয়েছে। পঞ্চদশ শতাব্দীর পূর্বে কিছু শিশ্নাগ্র কনডমের ব্যবহারের কথা জানা যায়; এগুলি প্রধানত পুরুষাঙ্গের অগ্রভাগকে ঢেকে রাখত। মনে করা হয়, জন্মনিরোধক হিসেবেই কনডমের ব্যবহার প্রচলিত ছিল এবং এই প্রচলন কেবলমাত্র সমাজের উচ্চশ্রেণির মানুষের মধ্যেই পরিলক্ষিত হত। চীনে শিশ্নাগ্র কনডম তৈরি হত তৈলনিষিক্ত রেশমি কাগজ বা ভেড়ার অন্ত্র দিয়ে। জাপানে কনডম তৈরি হত কচ্ছপের খোল বা জন্তুর শিং দিয়ে।
ষোড়শ শতাব্দীর ইতালিতে গ্যাব্রিয়েলে ফ্যালোপিও সিফিলিস রোগের উপর একখানি গবেষণাগ্রন্থ রচনা করেন। সেই সময়কার লিখিত ইতিহাস থেকে জানা যায় যে ১৪৯০-এর দশকে সিফিলিস একটি ভয়ানক রোগের আকারে প্রকট হয়েছিল। রোগাক্রান্ত হওয়ার মাস কয়েকের মধ্যেই রোগীর মৃত্যু ঘটত। ফ্যালোপিওর গবেষণা গ্রন্থটি কনডম ব্যবহারের প্রাচীনতম অবিতর্কিত বিবরণ। এই বর্ণনা অনুযায়ী, একটি ক্ষৌমবস্ত্রনির্মিত খাপকে একটি রাসায়নিক দ্রবণে ডুবিয়ে রাখা হত এবং ব্যবহারের পূর্বে সেটি শুকিয়ে নেওয়া হত। বর্ণনা অনুযায়ী এক কাপড়টি কেবলমাত্র শিশ্নাগ্রভাগকেই ঢেকে রাখত এবং একটি রিবন দিয়ে এটিকে বেঁধে রাখা হত। ফ্যালোপিও দাবি করেন, ক্ষৌমবস্ত্রাকার খাপের একটি পরীক্ষামূলক ব্যবহার ঘটিয়ে দেখেছেন যে এর মাধ্যমে সিফিলিস প্রতিরোধ করা সম্ভব।
প্রাণীর অন্ত্র থেকে তৈরি প্রথম যুগের কনডম
এর পর থেকে সমগ্র ইউরোপে বিভিন্ন গ্রন্থে বর্ণিত নানা রকম পুরুষাঙ্গ-আচ্ছাদনী রোগ প্রতিষেধক হিসেবে ব্যবহৃত হতে থাকে। ১৬০৫ সালে রচিত De iustitia et iure (বিচার ও আইন প্রসঙ্গে) নামে একটি ধর্মীয় পুস্তকের বক্তব্য থেকে অনুমিত হয় এই জাতীয় বস্তুগুলি রোগ প্রতিরোধের বদলে জন্মনিয়ন্ত্রক হিসেবেই বেশি ব্যবহৃত হত। এই পুস্তকের লেখক ক্যাথলিক ধর্মতত্ত্ববিদ লেওনার্দাস লেসিয়াসএগুলিকে অনৈতিক বলে বর্ণনা করেছেন। ১৬৬৬ সালে ব্রিটিশ বার্থ রেট কমিশনের বক্তব্য থেকে জানা যায় যে এই সময় “condons” ব্যবহারের ফলে জন্মহার হ্রাস পেয়েছে। এই শব্দটিই কনডমের অনুরূপ বানানবিশিষ্ট কোনো শব্দের প্রথম উল্লেখ।ক্ষৌমবস্ত্রের পাশাপাশি রেনেসাঁর যুগে অন্ত্র ও মুত্রাশয় নির্মিত কনডমের ব্যবহারও প্রচলন লাভ করে। পঞ্চদশ শতাব্দীর শেষভাগে ওলন্দাজ বনিকেরা “ভাল চামড়া” নির্মিত কনডম নিয়ে যায় জাপানে। এই অঞ্চলে পূর্বে ব্যবহৃত শিং-নির্মিত কনডম শুধুমাত্র শিশ্নাগ্রভাগকেই ঢাকত। কিন্তু এই সকল চামড়ার কনডমে সমগ্র পুরুষাঙ্গকে ঢাকার সুবিধা পাওয়া যেত।
অষ্টাদশ শতাব্দী থেকে আইনজ্ঞ, ধর্মতত্ত্ববিদ ও চিকিৎসকদের একটি অংশ কনডম ব্যবহারের বিরোধিতা করতে থাকেন। তাঁরা যে আপত্তিগুলি তোলেন, সেগুলির অনেকগুলি আজও তোলা হয়ে থাকে: কনডম গর্ভাধান সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়, যাকে কেউ কেউ জাতির পক্ষে অনৈতিক ও অবাঞ্ছিত মনে করেন; এগুলি যৌনরোগ থেকে সম্পূর্ণ রক্ষা করতে অক্ষম, অথচ এদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতায় বিশ্বাস রেখে মানুষ তাদের যৌন কার্যকলাপ বৃদ্ধি করে থাকে; তাছাড়া অনেকেই নানা ব্যবহার সংক্রান্ত সমস্যা, চড়া দাম ও ব্যবহারের ফলে কামোদ্দীপনা কমে যাওয়ার জন্য কনডম ব্যবহার এড়িয়ে চলেন।
কিন্তু কোনো কোনো মহলের বিরোধিতা সত্ত্বেও কনডমের বিক্রি বাড়তে থাকে। অষ্টাদশ শতাব্দীতে বিভিন্ন মান ও আকারের কনডম কিনতে পাওয়া যেত। এর মধ্যে যেমন রাসায়নিক মাখানো ক্ষৌমবস্ত্র নির্মিত কনডম ছিল, তেমনই ছিল “ত্বক”-ও (সালফার ও লাই মিশ্রিত নরম করা মুত্রাশয় বা তন্ত্র)। সমগ্র ইউরোপে ও রাশিয়ায় পাব, নাপিতের দোকান, ঔষধের দোকান, খোলাবাজার এবং নাট্যশালায় কনডম বিক্রি হত। পরে এগুলি আমেরিকাতেও বিক্রি হতে শুরু করে। তবে সর্বত্রই চড়া দাম ও যৌনশিক্ষার অভাবগত কারণে কেবলমাত্র উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মধ্যেই কনডমের প্রচলন সীমাবদ্ধ থাকে।
১৮০০ থেকে ১৯২০-এর দশক
ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথমভাগে জন্মনিরোধক পদ্ধতিগুলির সঙ্গে সমাজের দরিদ্র শ্রেণি পরিচিত হয়। এই সময়কার জন্মনিরোধক সম্পর্কিত লেখকেরা জন্মনিয়ন্ত্রণের অন্যান্য পদ্ধতিগুলিকেই বেশি গুরুত্ব দিতেন। এযুগের নারীবাদীরা বলতেন জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি একান্তভাবেই নারীর হাতে থাকা উচিত। তাঁরা কনডম জাতীয় সকল পুরুষ-নিয়ন্ত্রিত জন্মনিরোধকের বিরোধী ছিলেন। অন্যান্য লেখকেরা লিখেছেন কনডম ছিল দামী ও নির্ভরযোগ্যতাশূন্য (এগুলিতে ছিদ্র হয়ে যেত, খুলে আসত বা ফেটে যেত)। তবে তাঁরা কতকগুলি ক্ষেত্রে কনডমকে ভাল বিকল্প বলেছেন। যেমন রোগপ্রতিরোধের ক্ষেত্রে একমাত্র ব্যবহার্য ছিল কনডম।অনেক দেশে কনডম উৎপাদন বা গর্ভনিরোধ ব্যবস্থার প্রসার রোধ করার জন্য আইন পাস করা হয়। কিন্তু এত বাধা সত্ত্বেও ভ্রাম্যমাণ ভাষণ ও সংবাদপত্রের বিজ্ঞাপনের কনডমের কথা প্রচারিত হতে থাকে। যেসকল অঞ্চলে এই জাতীয় বিজ্ঞাপন আইনত নিষিদ্ধ ছিল সেখানে শালীনভাবে কনডমের কথা প্রচারের ব্যবস্থা করা হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে ঘরে কি করে কনডম তৈরি করতে হয় তার নির্দেশিকা বিলি করা হত। সামাজিক ও আইনি প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগে কনডমই হয়ে ওঠে সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় একমাত্র মার্কিন সামরিক বাহিনীয় কনডম ব্যবহারকে সমর্থন করেনি; বরং এই জাতীয় পোস্টারের মাধ্যমে ব্রহ্মচর্য পালনকে উৎসাহিত করা হত।
ঊনবিংশ শতাব্দীর পরার্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যৌনরোগীর সংখ্যা অকস্মাৎ অত্যন্ত বৃদ্ধি পায়। ঐতিহাসিকগণ এর জন্য আমেরিকার গৃহযুদ্ধের প্রভাব ও কমস্টক আইনকর্তৃক প্রচারিত প্রতিরোধ ব্যবস্থাগুলির প্রতি অজ্ঞতাকে দায়ী করেন। এই ক্রমবর্ধমান মহামারীর সঙ্গে যুঝতে সরকারি বিদ্যালয়গুলিতে প্রথম যৌনশিক্ষা পাঠক্রম চালু করা হয়। এই পাঠক্রমের মাধ্যমে বিভিন্ন যৌনব্যাধি ও কেমন করে তা সংক্রমিত হয়, সেই সম্পর্কে জ্ঞান দেওয়া হত। তবে যৌনব্যাধি নিয়ন্ত্রণে কনডমের ব্যবহারকে উৎসাহিত করা হত না। কারণ সেযুগের চিকিৎসক মহল ও নৈতিকতার ধ্বজাধারীগণ মনে করতেন, যৌনরোগ আসলে যৌন অসদাচারের শাস্তি। যৌনরোগে আক্রান্তদের প্রতি বিদ্বেষ এতটাই ছড়িয়ে পড়ে যে অনেক হাসপাতাল সিফিলিজ রোগে আক্রান্তদের চিকিৎসা করতে অস্বীকার করে।এদিকে, ঊনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগ থেকে জার্মান সামরিক বাহিনীতে সেনা জওয়ানদের মধ্যে কনডম ব্যবহারকে উৎসাহ দেওয়া হতে থাকে। বিংশ শতাব্দীর প্রথম ভাগে মার্কিন সামরিক বাহিনী কর্তৃপক্ষ একটি পরীক্ষা চালিয়ে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে কনডম ব্যবহারের ফলে সেনা জওয়ানদের যৌনরোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কম থাকে। তবে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও (কেবলমাত্র যুদ্ধের সূচনাভাগে) ব্রিটেন যুদ্ধের সেনা জওয়ানদের মধ্যে কনডম সরবরাহ বা কনডম ব্যবহার উৎসাহিত করেনি; যা যুদ্ধের অংশগ্রহণকারী অন্যান্য সকল রাষ্ট্রই করেছিল।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরও কয়েক দশক সমগ্র ইউরোপ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কনডম ব্যবহারে সামাজিক ও আইনগত বাধা থেকেই যায়। মনস্তত্ত্ব চর্চার প্রবর্তক সিগমুন্ড ফ্রয়েড এই মর্মে সকল প্রকার জন্মনিয়ন্ত্রক পদ্ধতির বিরোধিতা করেছেন যে সেগুলির ব্যর্থতার হার ছিল সুউচ্চ। ফ্রয়েড বিশেষভাবে কনডম ব্যবহারের বিরোধিতা করেন। কারণ, তিনি মনে করতেন কনডম যৌন উত্তেজনা প্রশমিত করে দেয়। কোনো কোনো নারীবাদীও কনডম সহ সকল প্রকার পুরুষনিয়ন্ত্রিত জন্মনিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার বিরোধিতা করতে থাকেন। ১৯২০ সালে চার্চ অফ ইংল্যান্ডের ল্যামবেথ কনফারেন্সে সকল প্রকার “unnatural means of conception avoidance”-এর বিরোধিতা করা হয়। লন্ডনের বিশপ আর্থার উইনিংটন-ইনগ্রাম অভিযোগ করেন যে গলি ও উদ্যানগুলিতে বিশেষ করে সপ্তাহান্ত ও ছুটির দিনগুলিতে ব্যবহৃত কনডম ছড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
১৯০৯ সালে প্রকাশিত মার্কিন পোস্টকার্ডে নিরাপদ যৌনসম্পর্ক স্থাপনের পরোক্ষ আবেদন। যদিও ইউরোপীয় সামরিক বাহিনীগুলি রোগ প্রতিরোধকল্পে নিজ সদস্যদের কনডম সরবরাহ করত। এমনকি যে সব দেশে সাধারণের মধ্য কনডমের ব্যবহার নিষিদ্ধ ছিল, সেই সব দেশেও সেনাবাহিনীতে কনডম ব্যবহার করা যেত। ১৯২০-এর দশকে আকর্ষক নাম ও চকচকে মোড়ক ব্যবহার কনডম ও সিগারেটের মতো পণ্য বিক্রির এক গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়িক কৌশল হয়ে ওঠে। মানপরীক্ষাও প্রচলন লাভ করে। চাপহীনতা পরীক্ষা করার জন্য অন্যান্য সব পদ্ধতির সঙ্গে কনডমে হাওয়া ভরেও পরীক্ষা করা হত। ১৯২০-এর দশকে বিশ্বব্যাপী কনডমের বিক্রি দ্বিগুণ হয়ে যায়।
রবার ও উৎপাদনপ্রক্রিয়ার উন্নতি
১৮৪৪ সালে চার্লস গুডইয়ার তাপপ্রয়োগ করে রবারে গন্ধক মিশিয়ে তা শক্ত করার প্রক্রিয়াটির পেটেন্ট নেন। ১৮৫৫ সালে প্রথম রবার কনডম তৈরি হয়। অনেক দশক ধরে শিশ্নাকৃতি মণ্ডে কাঁচা রবার মাখিয়ে এবং তারপর রবারকে শোধন করার জন্য মণ্ডটিকে রাসায়নিক দ্রবণে ডুবিয়ে কনডম প্রস্তুত করা হত। ১৯১২ সালে জুলিয়াস ফ্রম নামে এক জার্মান কনডম উৎপাদনের একটি নতুন কৌশল আবিষ্কার করেন: তিনি কাঁচা রবারের দ্রবণে কাঁচের মণ্ড ডুবিয়ে কনডম উৎপাদন শুরু করেন। সিমেন্ট ডিপিং নামে পরিচিত এই পদ্ধতিতে রবারকে তরল করতে তার সঙ্গে গ্যাসোলিন বা বেনজিন মেশাতে হত।জলাভেদ্য রবার তরুক্ষীর কনডম আবিষ্কৃত হয় ১৯২০ সালে। সিমেন্ট-ডিপড রবার কনডমের তুলনায় তরুক্ষীর কনডম উৎপাদন প্রক্রিয়া ছিল অনেক সহজ। রবার কনডম ঘষে ঘষে মসৃণ করতে হত। তাছাড়া গ্যাসোলিন ও বেনজিনের বদলে তরুক্ষীর কনডম উৎপাদনে জল ব্যবহারের ফলে কনডম কারখানায় আগুন জ্বালানোর সমস্যার সমাধান হয়। ব্যবহারকারীর ক্ষেত্রেও তরুক্ষীর কনডম অনেক বেশি কার্যকরী: এগুলি রবার কনডমের তুলনায় অনেক শক্ত অথচ পাতলা। ব্যবহার না করা অবস্থায় এগুলি পাঁচ বছর পর্যন্ত রেখে দেওয়া যায়; যেখানে রবার কনডম রাখা যায় মাত্র তিন মাস।
১৯২০-এর দশক পর্যন্ত সকল প্রকার কনডমই অর্ধদক্ষ শ্রমিকদের দ্বারা হাতে তৈরি হত। কিন্তু এই দশকে যন্ত্রের মাধ্যমে কনডম উৎপাদন শুরু হয়। ১৯৩০ সালে প্রথম সম্পূর্ণ যন্ত্রচালিত কনডমের পেটেন্ট নেওয়া হয়। ফলত, বড়ো বড়ো কনডম প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলিই কনডম উৎপাদন চালিয়ে যেতে থাকে, ছোটোখাটো সংস্থাগুলি ব্যবসা গুটিয়ে নেয়। তরুক্ষীর কনডমের চেয়ে অনেক বেশি দামী স্কিন কনডমের বাজারও ছোটো হয়ে আসে।
১৯৩০ থেকে বর্তমান কাল
১৯৩০ সালে অ্যাংলিকান চার্চের ল্যামবেথ কনফারেন্সে বিবাহিত দম্পতির ক্ষেত্রে জন্মনিরোধক ব্যবহারে অনুমোদন জানানো হয়। ১৯৩১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশানাল কাউন্সিল অফ চার্চেস একটি অনুরূপ বক্তব্য জানায়। রোমান ক্যাথলিক চার্চ এর প্রতিক্রিয়ায়Casti Connubii নামে একটি এনসাইক্লিকাল (সমগ্র বিশ্বে রোমান ক্যাথলিক বিশপদের প্রেরিত পোপের চিঠি) জারি করে সকল প্রকার জন্মনিরোধ ব্যবহারের বিরুদ্ধে রোমান ক্যাথলিক চার্চের কড়া অবস্থানের কথা জানিয়ে দেওয়া হয়। এই চার্চ অদ্যাবধি এই অবস্থান থেকে সরে আসেনি।
১৯৩০-এর দশক থেকেই কনডমের উপর থেকে আইনি বিধিনিষেধ শিথিল করা হতে থাকে। তবে ফ্যাসিবাদী ইতালি ও নাৎসি জার্মানিতে কনডমের উপর বিধিনিষেধ বৃদ্ধি করা হয় (যদিও রোগ প্রতিরোধে কনডমের ব্যবহার তখনও অনুমোদিত ছিল)। মহামন্দার সময় স্ক্মিডের কনডম জনপ্রিয়তা অর্জন করে। স্ক্মিড সিমেন্ট-ডিপিং পদ্ধতিতে কনডম প্রস্তুত করত। তরুক্ষীর কনডমের তুলনায় এই জাতীয় কনডমে দুটি অধিক সুবিধা পাওয়া যেত। প্রথমত, সিমেন্ট-ডিপড কনডমের সঙ্গে তৈলমিশ্রিতল্যুব্রিকেন্ট ব্যবহার করা যেত; এবং দ্বিতীয়ত পুরনো রবারের কনডম পুনর্ব্যবহারযোগ্য ছিল, যা সেই মন্দার বাজারে অনেকের ক্ষেত্রে আর্থিকভাবে সুবিধাজনক প্রতিপন্ন হয়। ১৯৩০-এর দশকে মানের দিকটিতেও গুরুত্ব দেওয়া শুরু হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সেদেশে বিক্রিত কনডমের মান নিয়মিত করতে শুরু করে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন কনডম শুধুমাত্র মার্কিন সামরিক বাহিনীর সেনা জওয়ানদের মধ্যে বিতরণই করা হয় না, বরং চলচ্চিত্র, পোস্টার ও লেকচারের মাধ্যমে কনডমের ব্যবহারকে উৎসাহিত করা হতে থাকে। ইউরোপীয় ও এশীয় সকল পক্ষের সামরিক বাহিনীগুলি যুদ্ধ চলাকালীন আগাগোড়াই সেনাবাহিনীতে কনডমের সরবরাহ অব্যাহত রেখেছিল। এমনকি জার্মানিতে ১৯৪১ সালে সকল নাগরিকের কনডম ব্যবহার নিষিদ্ধ হয়ে গেলেও, সেনা জওয়ানদের কনডম ব্যবহারে ছাড় দেওয়া হয়। অন্যদিকে কনডম সহজলভ্য ছিল বলে সেনারা যৌনসংগম ছাড়াও অন্যান্য কাজে কনডম ব্যবহার করতে শুরু করে। এই রকম কিছু ব্যবহার অদ্যাবধি প্রচলিত রয়েছে।
যুদ্ধের পরেও কনডমের বিক্রি বাড়তে থাকে। ১৯৫৫-১৯৬৫ সময়কালের মধ্যে আমেরিকার প্রজননশীল জনসংখ্যার ৪২ শতাংশই জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য কনডমের উপর নির্ভর করতেন। ১৯৫০-১৯৬০ সময়কালের মধ্যে ব্রিটেনে ৬০ শতাংশ বিবাহিত দম্পতি কনডম ব্যবহার করতেন। ১৯৬০ সালে বাজারে আসার সঙ্গে সঙ্গে জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি জন্মনিয়ন্ত্রণের সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় পন্থায় পরিণত হয়। কিন্তু কনডম শক্তিশালী দ্বিতীয় বিকল্প হয়ে থেকেই যায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশানাল ডেভেলপমেন্ট উন্নয়নশীল দেশগুলিকে “বিশ্ব জনসংখ্যা বৃদ্ধি সমস্যা” সমাধানার্থে কনডম ব্যবহারের দিকে ঠেলে দিতে থাকে। ১৯৭০ সালের মধ্যে ভারতে লক্ষাধিক কনডম প্রতি বছর ব্যবহৃত হতে থাকে। (সাম্প্রতিক দশকগুলিতে এই সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে: ২০০৪ সালে ভারত সরকার পরিবার পরিকল্পনা ক্লিনিকে বিতরণার্থে ১.৯ বিলিয়ন কনডম ক্রয় করে।) ১৯৬০ ও ১৯৭০-এর দশকে মানের ব্যাপারে কড়াকড়ি করা হয়। কনডম ব্যবহারের ক্ষেত্রে আইনি বাধাগুলিও বহুলাংশে অপসারিত হয় এই সময়। ১৯৭৮ সালে আয়ারল্যান্ডে প্রথম আইনসম্মত কনডম বিক্রি হয়। অবশ্য কনডমের বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রে আইনি বাধা কিছু থেকেই যায়। ১৯৫০-এর দশকের শেষভাগে আমেরিকার ন্যাশানাল অ্যাসোসিয়েশন অফ ব্রডকাস্টার্সজাতীয় টেলিভিশনে কনডমের বিজ্ঞাপনের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে; এই নীতি ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত বজায় ছিল।
১৯৮০-এর দশকে জানা যায় যে এইডস একটি যৌনব্যাধিও হতে পারে। এরপর থেকেই এইচআইভি প্রতিরোধকল্পে কনডমের ব্যবহারকে উৎসাহিত করা হতে থাকে। কিছু রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও অন্যান্য ব্যক্তিত্বের বিরোধিতা সত্ত্বেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে জাতীয়স্তরে কনডম ব্যবহারকে উৎসাহ দিতে প্রচারাভিযান চালানো হতে থাকে। এই সকল প্রচারাভিযানের ফলে কনডমের ব্যবহার বৃদ্ধি পায়।
ক্রমবর্ধমান চাহিদা ও বৃহত্তর সামাজিক স্বীকৃতির ফলে বিভিন্ন ধরনের পাইকারে দোকানে কনডম বিক্রি শুরু হয়ে যায়। এই সব দোকানের মধ্যে সুপারমার্কেট ও ওয়াল-মার্টের মতো ডিসকাউন্ট ডিপার্টমেন্ট স্টোর বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত কনডমের ব্যবহার বাড়তে থাকে। এরপরই গণমাধ্যমগুলি এইডস রোগাক্রান্তের সংখ্যাহ্রাসের দিকে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এরপরই রোগ প্রতিরোধক হিসেবে কনডমের ব্যবহার আকস্মিকভাবে হ্রাস পায়। এই ঘটনাকে নিরোধ অবসাদ বা কনডম অবসাদ বলে উল্লেখ করা হয়। পর্যবেক্ষকগণ ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকা উভয় অঞ্চলেই এই কনডম অবসাদের ঘটনাটি প্রত্যক্ষ করেছেন।এরপর থেকেই কনডম উৎপাদকগণ তাদের বিজ্ঞাপনের সুর বদলে ভয়াল বিজ্ঞাপনের বদলে মজার বিজ্ঞাপন প্রচার করতে থাকে। এরপর কনডমের বাজারে কিছু নতুন উন্নতির ঘটনা ঘটে। ১৯৯০-এর দশকে ড্যুরেক্স কনডমের উৎপাদক সংস্থা অবন্তী নামের ব্র্যান্ডে প্রথম পলিআরথিন কনডম বাজারে ছাড়ে। ২০০৩ সালে দেফিট নামে প্রথম কাস্টম সাইজ-টু-ফিট কনডম বাজারে আসে। মনে করা হচ্ছে সারা বিশ্ব কনডমের ব্যবহার বাড়তেই থাকবে। একটি সমীক্ষার মতে ২০১৫ সালে উন্নয়নশীল দেশগুলির ১৮.৬ বিলিয়ন কনডম প্রয়োজন হবে। বর্তমানে কনডম আধুনিক সমাজের একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গে পরিণত হয়েছে।
২০১০ সালের মার্চ মাসে সুইজারল্যান্ড সরকার ঘোষণা করেছে যে তারা ১২-১৪ বছরের ছেলেদের জন্য ছোটো আকারের কনডম প্রস্তুত করবে। এই কনডমের নাম রাখা হয়েছে হটশট। সেদেশের সরকারি গবেষণা থেকে দেখা গেছে, বারো থেকে চোদ্দো বছর বয়সী ছেলেরা যৌনসংগমের সময় যথেষ্ট পরিমাণে প্রতিরোধক ব্যবহারের সুযোগ পায় না। একটি প্রমাণ আকারের কনডমের ব্যাস ২ ইঞ্চি (৫.২ সেন্টিমিটার); কিন্তু হটশটের ব্যাস ১.৭ ইঞ্চি (৪.৫ সেন্টিমিটার)। তবে উভয় প্রকার কনডমের দৈর্ঘ্য একই থাকবে – ৭.৪ ইঞ্চি (১৯ সেন্টিমিটার)। একটি জার্মান সমীক্ষায় দেখা গেছে ১২,৯৭০ জন ১৩ থেকে ২০ বছর বয়সীদের দলে এক চতুর্থাংশেরই বক্তব্য প্রমাণ আকারের কনডম বেশ বড়ো। অন্যদিকে সুইজারল্যান্ডের সরকারি গবেষণা ও বাসেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট পারসোন্যালিটি সাইকোলজির গবেষণা পত্রের ভিত্তিতে পরিবার পরিকল্পনা গোষ্ঠীগুলি এবং সুইস এইডস ফেডারেশন হটশট উৎপাদনের সপক্ষে প্রচার চালায়।[
ব্যবহারে ভুল :
জন্মনিরোধক ব্যবহার করার অন্যতম দুটি কারণ হল, অযাচিত গর্ভধারণ রোধ এবং যৌনবাহিত রোগ থেকে রক্ষা। আর সবচেয়ে কার্যকর নিরোধক হল কনডম। বেশিরভাগই মনে করেন শারীরিক সম্পর্কের সময় ব্যবহার করলেই হল, এর বেশি আর কী জানার আছে।
তবে যখন কনডমের বিষয় আসে তখন বিভিন্ন রকম ভুলের বিষয়গুলোও চলে আসে। কারণ অনেক অজানা কারণে এই গর্ভনিরোধক ঠিকমতো কাজ নাও করতে পারে।
স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে ‘রাবার’ নিরোধক ব্যবহারের ভুলগুলো তুলে ধরা হয়।অনেকদিনের অব্যবহৃত
বহুদিন ফেলে রাখা কনডম ব্যবহার নিরাপদ নাও হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানা ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর সেক্সুয়াল হেল্থ প্রোমোশন সেন্টারের সহযোগী পরিচালক ও অধ্যাপক ডেবি হার্বনিক (পিএইচ ডি) বলেন, “যদি দেখেন আপনার সঙ্গী মানিব্যাগ থেকে কনডম বের করছেন, তবে সেটা বাদ দিয়ে নতুন ব্যবহার করুন। কারণ ঘরে পড়ে থাকা বা মানিব্যাগে থাকা কনডমে অযাচিত ঘষা লাগা এবং গরম তাপমাত্রার কারণে কনডমের কার্যকারিতা হারাতে পারে।”বেশি জায়গা না রাখা
কনডমের সামনের দিকে কিছুটা জায়গা বাড়তি থাকে। যেখানে শরীর থেকে বের হওয়া ‘তরল’ জমা হয়। বেশি আঁটসাঁট করে পরলে সঙ্গমের সময় কনডম ফুটা হয়ে যেতে পারে বা ফেটেও যেতে পারে।
এই দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেতে হার্বনিক পরামর্শ দেন, “কনডমের সামনের সরু প্রান্ত চেপে ধরে তারপর পরিধান করুন। এতে ভেতরে বাতাস আটকে থাকার সম্ভাবনা থাকবে না, এবং যথাযথভাবে দৃঢ়ভাবে আটকে থাকবে।”
ভুল মাপ
“বেশিরভাগ কনডমই যে কোনো পুরুষের ক্ষেত্রে সঠিক মাপের হয়। তবে কারও যৌনাঙ্গ বেশি বড় আবার কারও ছোট হতে পারে। তাদের খেয়াল করতে হবে, যে মাপ ঠিকমতো লাগবে সেটা ব্যবহার করা। কারণ বেশি ঢিলা হলে কনডম সঙ্গমের সময় খুলে যেতে পারে। আর বেশি চেপে থাকলে ফেটে যেতে পারে।” বললেন হার্বনিক।
দেরিতে পরা
সঙ্গমের সময় অনেকেই প্রথম থেকে কনডম ব্যবহার করেন না। তারা মনে করেন একেবারে ‘শেষ পর্যায়ে’ পরে কাজ শেষ করবেন। তবে এই ভুলের কারণে অযাচিত গর্ভধারণ এবং যৌনবাহিত রোগ থেকে রক্ষা পাওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়, জানালেন হার্বনিক।
সম্প্রতি এক জরিপে দেখা গেছে, যেসব যুগল শারীরিক সম্পর্কের নিরাপত্তায় কনডম এবং পিল দুটোই ব্যবহার করেন তাদের মধ্যে ৫৯ শতাংশ পুরুষ সঠিকভাবে কনডম ব্যবহার করেন। বাকিরা হয় খুব দেরিতে পরেন অথবা বেশি আগে খুলে ফেলেন।
তাই হার্বনিকের পরামর্শ হচ্ছে, যদি পূর্ণ নিরাপত্তা চান তবে সঙ্গম শুরুর প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত কনডম ব্যবহার করুন।
মেয়াদোত্তীর্ণ
হার্বনিক বলেন সব পণ্যের মতো কনডমেরও নির্দিষ্ট মেয়াদ থাকে। তবে ব্র্যান্ড ভেদে এক একটির মেয়াদ একেক রকম হয়। আর মেয়াদের মধ্যে থাকলেও সেটা ঠিক থাকবে, তাও নয়।
কিছু কনডমে লুব্রিকেন্টের অন্যতম একটি উপাদান স্পারমিসাইড এছাড়াও থাকে গরম বা ঠাণ্ডা অনুভূতি আনবার উপাদান। এই ধরনের কনডমগুলো অন্যদের তুলনায় একটু আগে মেয়াদ শেষ হয়ে যেতে পারে।
তাই যতটা সম্ভব নতুন কনডম ব্যবহার করে নিরাপদ থাকুন।
- 0 views
- 12521 answers
- 0 votes
স্বপ্ন কি
মানুষ জীবনের ৩৩% সময় ঘুমিয়ে কাটায়। স্বপ্ন মানুষের ঘুমন্ত জীবনের একটি অপরিহার্য অংশ। স্বপ্ন মানুষের একটি মানসিক অবস্থা, যাতে মানুষ ঘুমন্ত অবস্থায় বিভিন্ন কাল্পনিক ঘটনা অবচেতনভাবে অনুভব করে থাকে। ঘটনাগুলি কাল্পনিক হলেও স্বপ্ন দেখার সময় আসল বলে মনে হয়। অধিকাংশ সময়ই দ্রষ্টা নিজে সেই ঘটনায় অংশগ্রহণ করছে বলে মনে করতে থাকে। অনেক সময়ই পুরনো অভিজ্ঞতার টুকরো টুকরো স্মৃতি কল্পনায় বিভিন্ন ভাবে জুড়ে ও পরিবর্তিত হয়ে সম্ভব অসম্ভব সব ঘটনার রূপ নেয়। স্বপ্ন সম্বন্ধে অনেক দর্শন, বিজ্ঞান, কাহিনী ইত্যাদি আছে। স্বপ্নবিজ্ঞানের ইংরেজি নাম Oneirology। কিছু স্বপ্নবিজ্ঞানীর মতে নিদ্রার যে পর্যায়ে কেবল আক্ষিগোলক দ্রুত নড়াচড়া করে কিন্তু বাকি শরীর শিথিল (সাময়িকভাবে প্রায় পক্ষাঘাতগ্রস্ত) হয়ে যায় সেই আরইএম (র্যা পিড আই মুভমেন্ট স্লীপ) দশায় স্বপ্ন হয়। কিন্তু এই বিষয়ে বিতর্ক রয়েছে।
স্বপ্ন হল ধারাবাহিক কতগুলো ছবি ও আবেগের সমষ্টি যা ঘুমের সময় আমাদের মনের মধ্যে আসে। এগুলো আমাদের কল্পনা হতে পারে, অথবা আমাদের অবচেতন মনের কথাও হতে পারে। সাধারনতঃ আমরা অনেক স্বপ্ন দেখি। তবে সবগুলো মনে থাকে না।
মানুষ স্বপ্ন দেখে কেন ?
ঘুমের মধ্যেও ইন্দ্রিয়গণ বাইরের জগত থেকে সংবেদন গ্রহণ করতে পারে। এ সব সংবেদন ইচ্ছামতো প্রতিরূপে রূপান্তরিত হয়ে স্বপ্নদৃশ্যের সৃষ্টি করতে পারে। তবে স্বপ্নের মূল উপাদান তৈরি হয় স্বপ্নদ্রষ্টার দৈনন্দিন জীবনের অভিজ্ঞতা, চিন্তা ও কর্ম থেকে। এবং স্মৃতি থেকে।
মানুষ কখন স্বপ্ন দেখে ?
ক্লান্ত মানুষ প্রথম দুই ঘন্টা ঘুমানোর সময় স্বপ্ন দেখে না। তখন শরীর পূর্ণ বিশ্রাম নেয়। স্বপ্ন দর্শন কালকে rapid eye movement period বলা হয়। নিদ্রাকালে যে সময় মানুষ স্বপ্ন দেখে না সে সময়টাকে non rapid eye movement period বলা হয়। ঘুমের মধ্যে প্রায় প্রত্যেক ৯০ মিনিটে, প্রায় ১০ মিনিট সময় ধরে REM নিদ্রা দেখা যায়। ঘুমের মধ্যে ৪/৫ বার REM নিদ্রা হয়। অর্থাৎ প্রতিদিন মানুষ অন্তত ৪/৫ টি স্বপ্ন দেখে।
স্বপ্নের প্রকারভেদঃ
চরক-সংহিতা সাত প্রকার স্বপ্নের কথা বলেছে। বৌদ্ধ দর্শনে বর্ণিত হয়েছে ছয় প্রকারের স্বপ্ন।
জীবন চলার পথে মানুষ ভয়,
১) দুঃস্বপ্ন,
২) অতীত স্মৃতি,
৩) ইচ্ছাপূরণ,
৪) ভবিষ্যতের বার্তা,
৫) আধ্যাত্মিক নির্দেশনা,
৬) মুর্শিদের উপদেশ,
৭) জ্ঞান লাভ ইত্যাদি নানারকম স্বপ্ন দেখে।আধ্যাত্মিক স্বপ্নঃ
স্বপ্নের সাথে আধ্যাত্মিকতার সম্পর্ক নিবিড়। স্বপ্ন হচ্ছে মুর্শিদের কাছে পৌঁছবার, মুর্শিদ থেকে নির্দেশনা লাভের মহাসড়ক। স্বপ্নে মুর্শিদের সাথে সংযোগ বহুজনের একটা পরীক্ষিত পদ্ধতি। মুর্শিদের সাথে প্রেম থাকলে শিষ্য তাকে স্বপ্নে দেখবে এবং তার কাছ থেকে প্রতিটা বিষয়ে নির্দেশনা প্রাপ্ত হবে, এতে সন্দেহের অবকাশ নেই। স্বপ্নে যে শুধু আধ্যাত্মিক জ্ঞান প্রাপ্তি ঘটে তা নয়, স্বপ্ন সমীক্ষণের মাধ্যমে আধ্যাত্মিক তত্ত্বও বিকশিত হয়।
স্বপ্নে ভবিষ্যতের বার্তাঃ
স্বপ্ন ভবিষ্যতের বার্তা বহন করতে পারে। পতঙ্গের গুরুমস্তিষ্ক থাকে না কিন্তু পতঙ্গেরা নার্ভক্রিয়ার সাহায্যে ভূমিকম্প, সূর্যগ্রহণ, আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাত এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক দুযোর্গের পূর্বাভাস পেয়ে থাকে। যন্ত্রের যন্ত্রনায় মানুষের মধ্যে ভবিষ্যতের পূর্বভাস পাবার শক্তিগুলো নিস্ক্রিয় হয়ে যায়। ঘুমের সময় গুরু মস্তিষ্কের কর্মকান্ড স্তিমিত হয়ে গেলে স্বতন্ত্র নার্ভক্রিয়া সক্রিয় হয়ে ভবিষ্যৎ বাণী পাঠায়। “বিভূতিযোগ” চর্চা করে যোগীরা স্বতন্ত্র নার্ভক্রিয়াকে সক্রিয় করতে পারেন।
স্বপ্নে ইচ্ছাপূরণঃ
স্বপ্নের গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য – ইচ্ছাপূরণ । মানুষ অনেক কিছুই চায় কিন্তু পায় না। এমনও হয়, মানুষ আসলে কি চায় তাই সে জানে না। স্বপ্নে একদিকে চেয়ে না পাওয়া বস্তুগুলো পেয়ে তার ইচ্ছাপূরণ হয় অন্যদিকে স্বপ্ন দ্রষ্টা জানতে পারে আসলে সে কি চায়।
স্বপ্ন দেখার প্রয়োজনীয়তাঃ
স্বপ্ন দেখার জন্যই মানুষকে ৬ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমাতে হয়। তা না হলে মানুষের শারিরীক বিশ্রামের জন্য ২/৩ ঘন্টা ঘুমই যথেষ্ট। সাধারণ মানুষের জন্য স্বপ্ন দেখা ঘুমের মতোই প্রয়োজন। কিন্তু আধ্যাত্মিক সাধনার একটা স্তরে উপনীত হলে স্বপ্ন দেখার কোন প্রয়োজন থাকে না বলে কোন কোন সাধক মন্তব্য করেছেন।
ঘটনা এবং স্বপ্ন একই সময়ে সংগঠিত হওয়াঃ
অনেক সময় এমন স্বপ্নও মানুষ দেখে থাকে যখন স্বপ্ন দেখার সময়ই ঘটনাটা ঘটছে। এমন ঘটনাও ঘটেছে – ছেলে বিদেশে থাকে, যে সময়ে সে স্বপ্নে তার বাবার মৃত্যু দেখেছে ঠিক সে সময়েই বাস্তবে তার বাবা ইন্তেকাল করেছেন। টেলিপ্যাথি ছাড়া অন্য কোনভাবে এমন ঘটনার ব্যাখ্যা করা যায় না।
স্বপ্ন স্মরণঃ
ঘুম থেকে জেগে উঠার পর অধিকাংশ স্বপ্নই ঠিকঠাক মনে থাকে না। অনেক সময় ঘুম ভাঙ্গার পর পর স্বপ্ন মনে থাকে কিন্তু যতই সময় যেতে থাকে স্বপ্ন ততই বিষ্মৃতিতে চলে যায়। কিন্তু কিছু স্বপ্ন আছে যা বাস্তব ঘটনার চেয়েও বেশি স্পষ্ট এবং উজ্জ্বল। এসব স্বপ্ন জীবনে কখনোই ভুলা যায় না।
স্বপ্ন বর্ণনায় মিথ্যাচারঃ
ঘুম ভাঙ্গার পর দেখা স্বপ্ন মানুষ যখন অন্যের কাছে বর্ণনা করে তখন সাধারণত মানুষ মিথ্যাচারের আশ্রয় নেয়। কারণ, স্বপ্ন বর্ণনার সময় জাগ্রত অবস্থার মনোভাব দেখা স্বপ্নের উপর প্রভাব ফেলে। স্বপ্ন এতটা সাজানো গোছানো থাকে না যতটা সাজিয়ে গোছিয়ে মানুষ তা বর্ণনা করে।
স্বপ্নব্যাখ্যাঃ
আদিকাল থেকেই স্বপ্নব্যাখ্যার প্রচেষ্টা করা হচ্ছে। আরটেমিডোরাস তার বিখ্যাত অনিরো ক্রিটিকন বইয়ে স্বপ্নে আদিষ্ট হয়ে প্রথম স্বপ্ন ব্যাখ্যার রীতি লিপিবদ্ধ করেন। স্বপ্নের উৎস, প্রক্রিয়া, তাৎপর্য ও ব্যাখ্যার পদ্ধতি সম্বন্ধে ফ্রয়েডের আবিষ্কার মনঃসমীক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বাংলাদেশেও খাবনামা জাতীয় বইয়ের কাটতি কম নয়। স্বপ্নের ব্যাখ্যা কোন বইয়ে থাকতে পারে না। স্বপ্নের সঠিক ব্যাখ্যা কেবল জানতে পারে স্বপ্নদ্রষ্টা নিজে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে অধিকাংশ স্বপ্ন দ্রষ্টা এটাই জানে না যে সে সঠিক ব্যাখ্যাটা জানে। নিজেদের স্বপ্নকে নিজেরা ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করলে অনেক তথ্য ও তত্ত্ব আবিষকৃত হয়। কিন্তু এজন্য প্রথমে স্বপ্ন স্মরণ রাখার অনুশীলন করতে হয়।
স্বপ্ন স্মরণ রাখার অনুশীলনঃ
রাতে ঘুমাবার আগে ২১ বার বলতে হবে – আজ রাতে আমি যে সব স্বপ্ন দেখবো তার প্রত্যেকটি স্বপ্ন মনে রাখবো এবং ঘুম ভাঙ্গার সাথে সাথে তা লিখে রাখবো। এভাবে ২১ দিন চেষ্টা করলে সব স্বপ্ন মনে রাখা যায়। নিজেকে জানার জন্য স্বপ্নকে স্মরণ রাখার এবং স্বপ্ন বিশ্লেষণের গুরুত্ব অপরিসীম। যে জ্ঞান স্বপ্নদ্রষ্টার আছে কিন্তু যার অস্তিত্ব সম্পর্কে স্বপ্নদ্রষ্টা সচেতন নয় স্বপ্নে সেসব জ্ঞান প্রকাশিত হয়। কিন্তু স্বপ্নদ্রষ্টার সচেতন প্রচেষ্টা ব্যতিত তা সম্ভব নয়।
ইচ্ছা স্বপ্ন দেখাঃ
মানুষ ইচ্ছা স্বপ্নের সৃষ্টি করতে পারে। প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে যাকে বা যে বিষয়ে স্বপ্ন দেখতে চায় সে বিষয়ে মনোনিবেশ করলে ইচ্ছা স্বপ্ন দেখা যায়।
স্বপ্নের তাৎপর্যঃ
যে যেমন মানুষ সে তেমন স্বপ্ন দেখে। স্বপ্নের তাৎপর্য নির্ভর করে স্বপ্নদ্রষ্টার চিন্তা ও দৃষ্টিভঙ্গির উপর। যে সব মানুষের জাগ্রত অবস্থায়ই কর্মকান্ডের কোন তাৎপর্য নেই তার স্বপ্নেরও কোন তাৎপর্য নেই। স্বপ্ন তাৎপর্যপূর্ণ হয় যখন জাগ্রত অবস্থায় মানুষ তাৎপর্যপূর্ণ কাজ করে। রবীন্দ্রনাথ তাঁর রাজষির্ নাটকের কাহিনী স্বপ্নে পেয়েছেন, ইংরেজ কবি কোলরিজ তাঁর বিখ্যাত কোবলা খান কবিতাটি স্বপ্ন দেখে লিখেছেন, বিজ্ঞানী নিলস বোর পরমাণুর গঠন স্বপ্নে দেখেছেন, বিজ্ঞানী কেকুলে বেনজিনের গঠন-তত্ত্বটি স্বপ্নে দেখেন অর্থাৎ এক চিন্তা তাৎপর্যপূর্ণ স্বপ্ন সৃষ্টি করে।
স্বপ্ন প্রতীকঃ
আদি কাল থেকেই মানুষ স্বপ্ন প্রতীকের কথা ভেবে আসছে। লাঠি, সাপ, পিস্তল, গর্ত, ঘর, কাগজ, গহনা, ঘোড়ায় চড়া, চাবি, নদী, সমূদ্র ইত্যাদি নানা রকমের স্বপ্ন প্রতীকের ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। ওড়ার স্বপ্ন, পড়ে যাবার স্বপ্ন, নিজেকে উলঙ্গ দেখার স্বপ্ন, পরীক্ষার স্বপ্ন, চোর ডাকাতের স্বপ্ন, পানিতে পড়ে যাবার স্বপ্ন, প্রিয়জনের মৃত্যুর স্বপ্ন ইত্যাদি স্বপ্নও প্রতিকী। স্বপ্ন প্রতীকের অভিধান আছে। প্রথম অভিধানটি প্রকাশিত হয় মিশরে। মুসলিম রাজাদের দরবারে স্বপ্নব্যাখ্যাদাতাগণ একসময় খুব সমাদৃত ছিলেন। বাইবেলের সুবিখ্যাত স্বপ্নগুলোর ব্যাখ্যাদাতা জোসেফের কথা আমাদের সবারই জানা। বাইবেলে অধিকাংশ শব্দই কুমন্ত্রণাদাতার সৃষ্টি এ রকম একটা আয়াত আছে।
স্বপ্ন ও লক্ষ্যঃ
স্বপ্ন ও লক্ষ্য এক নয়। লক্ষ্য, স্বপ্নের মতো কল্পনা আশ্রিত নয়। লক্ষ্য সুনির্দিষ্ট এবং স্পষ্ট। স্বপ্ন স্পষ্ট হতে পারে কিন্তু সুনির্দিষ্ট নয়। লক্ষ্য সংক্ষিপ্ত। স্বপ্ন বিস্তারিত।
চিন্তা ও স্বপ্নঃ
চিন্তা স্বপ্নকে প্রভাবিত করে কিন্তু চিন্তার তুলনায় স্বপ্নের বিচরণ ক্ষেত্র অনেক বেশি প্রশস্ত। স্বপ্ন যুক্তির গন্ডিতে আবদ্ধ থাকে না কিন্তু চিন্তা যুক্তির গন্ডিতে আবদ্ধ থাকে। পরিবেশ, রীতি-নীতি, ভাল-মন্দ, বিবেক ইত্যাদি চিন্তার স্বাধীন গতিকে বাধাগ্রস্থ করে। স্বপ্নের জগতে এসব বাধা নেই। তাই জাগ্রত অবস্থায় কোন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার চাইতে স্বপ্নে সিদ্ধান্ত নিতে পারলে সিদ্ধান্তটি নির্ভুল হবে।
দিবাস্বপ্নঃ
ভবিষ্যৎ নিয়ে মানুষের কল্পনা ও আকাঙ্খাকে দিবাস্বপ্ন বলা হয়। দিবাস্বপ্ন বস্তুগত প্রাপ্তির ক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে। বস্তুজীবনে সঠিক ব্যবহারে দিবাস্বপ্ন অতীতের পরিসমাপ্তি ঘটায়, বর্তমানকে সুগঠিত করে এবং ভবিষ্যৎ জীবনের নতুন পথের সন্ধান দেয়। দিবাস্বপ্ন ভবিষ্যতের ছবি দেখিয়ে ব্যক্তিকে শক্তি ও সাহস যোগাতে পারে। সঠিক ব্যবহার জানলে দিবাস্বপ্ন শিল্প, সাহিত্য, সঙ্গীত ও নব নব আবিষ্কারের দ্বার উন্মোচন করে। কিন্তু অধিকাংশ মানুষই দিবাস্বপ্নকে সৃষ্টিশীলতায় ব্যবহার করে না অথচ প্রায় সারাক্ষণই তাৎপর্যহীন দিবাস্বপ্ন দেখে। দিবাস্বপ্নকে দিবাস্বপ্ন বলা হয় কারণ, সাধারণ মানুষের কাছে দিবাস্বপ্নের বিষয়বস্তুও বাস্তবের মতো বাস্তব নয়। আধ্যাত্মিক সাধনায় দিবাস্বপ্ন সহায়ক। মুর্শিদ স্মরণ, নিজেকে জানা এবং আমি’র মধ্যে থাকতে দিবাস্বপ্ন বাধা দেয় না। দিবাস্বপ্ন সাধারণ মানুষকে বর্তমানে থাকতে দেয় না। এজন্যই সাধকেরা সিদ্ধি লাভকে জীবনের স্বপ্ন থেকে জাগরণ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
সংগৃহীত
- 647 views
- 1 answers
- 0 votes
আমাদের ঘুমের মধ্যে ২টা পর্যায় আছে।
এগুলো হল-১) REM (Rapid Eye Movement) বা কম্পাক্ষি নিদ্রা
২) Non REM (Non Rapid Eye Movement)বা স্থিরাক্ষি নিদ্রা।
ঘুমের সময় আমাদের মস্তিষ্ক নিষ্ক্রিয় থাকে, তবে শরীর নড়াচড়া করতে পারে। এই সময় হরমোন নি:সৃত হয় এবং দিনের ক্লান্তি দূর হয়ে শরীর আবার সতেজ হয়ে ওঠে।
মানুষ ঘুমের মধ্যে কথা বলে, কান্না করে ইত্যাদি একে ইংরেজিতে বলে সমনামবিউলিজম (somnambulism or noctambulism), বাংলায় বলে স্বপ্নচারিতা। সাধারণত ঘুমের NREM পর্যায়ের ‘স্লো ওয়েভ ঘুম’ স্তরে অনেকের মধ্যেই এটা দেখা যায়। ঘুমের মধ্যে নিজের অজান্তেই অনেকে উঠে বসেন, বিছানা ছেড়ে নামেন, দরজা খুলে রাস্তায় বেরিয়েও পড়েন। স্বপ্নচারীদের মন ঘুমিয়ে থাকলেও দেহ অতিমাত্রায় সক্রিয় থাকে, তার সমস্ত আচার-আচরণ নিয়ন্ত্রিত হয় স্বপ্ন দ্বারাই। বেশি মাত্রায় না হলেও অল্পমাত্রায় স্বপ্নচারী আমরা অনেকেই। মেডিকেল সাইন্স অবশ্য এর কিছু কারণও খুজে বের করেছে।কারণ :
১। সারাদিন অধিক পরিশ্রমের কাজ করে ক্লান্ত দেহে বিছানায় ঘুমাতে গেলে
২। ভয়, মানসিক অস্থিরতা ও উত্তেজনা থাকলে
৩। অনিয়মিত ঘুম ও অপর্যাপ্ত ঘুম
৪। ঘুমের মাঝে বিশেষ ধরনের শ্বাস-প্রশ্বাসে বাধা পেলে
৫। ঔষুধ সেবনের ফলেও এ ধরনের সমস্যা হতে পারে
৬। এছাড়া বংশগত কারণেও এ ধরনের সমস্যা হতে পারে।- 675 views
- 1 answers
- 0 votes
মানুষের মস্তিষ্ক মোটামুটিভাবে চার ধরনের হয়ে থাকে। যেমন :
SS
: অর্থাৎ Short short. এই ধরনের মস্তিষ্ক কোনো একটি বিষয় শর্ট সময়ে অনুশীলন করে শর্ট টাইম মনে রাখতে পারে।
SL
: অর্থাৎ Short Long. এই ধরনের মস্তিষ্ক অল্প সময়ের অনুশীলনে একটি বিষয় দীর্ঘক্ষণ মনে রাখতে পারে। এটি সবচেয়ে ভালো এক ধরনের মস্তিষ্কের উদাহরণ।
LS
: অর্থাৎ Long Short. এই মস্তিষ্ক দীর্ঘক্ষণ অনুশীলনে অল্পসময় মনে রাখতে পারে। এটি সবচেয়ে খারাপ প্রকৃতির মস্তিষ্ক।
LL
: অর্থাৎ Long Long. সর্বশেষ এই ধরনের মস্তিষ্ক দীর্ঘসময় অনুশীলনে দীর্ঘদিন কোনো বিষয় মনে রাখতে পারে।
সুতরাং দেখা যায় মানুষের মস্তিষ্কের এই ধরনের পার্থক্যের কারণে বিভিন্ন মানুষের ব্রেন বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। যারা খুব কম সময়ের জন্য কোনো বিষয় মনে রাখতে পারেন তারা SS বা LS মস্তিষ্কের আওতাভুক্ত। ফলে তারা মনে রাখতে পারেন না।
তাছাড়া মানুষের মস্তিষ্ক কম্পিউটারের মত। কম্পিউটার যেমন একটি নির্দিষ্ট জায়গা পর্যন্ত ডক্যুমেন্ট ধারণ করতে পারে, বেশি হলে ডিলিট করে জায়গা খালি করতে হয় ঠিক একইভাবে মানুষের মস্তিষ্কও একটি নির্দিষ্ট ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে মেরোরি ফুল হয়ে গেলে তা অটোডিলিট করে ফেলে যে বিষয়গুলো তার জন্য কম গুরুত্বপূর্ণ।
আবার এমনও হতে পারে যে কেউ যদি কোনো একটি বিষয় শোনার সময়ে মনোযোগ অন্য দিকে দিয়ে থাকেন তাহলে বিষয়টি তার মস্তিষ্ক সঠিকভাবে ধারণ করতেই পারে না। ফলে তিনি বিষয়টি সীমিত সময়ের জন্য মনে রেখে পরবর্তীতে তা ভুলে যান।
- 533 views
- 1 answers
- 0 votes
আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র কিংবা পাসপোর্টের স্ক্যান কপি পাঠিয়ে দিন। তাহলেই আপনার অ্যাকাউন্ট ফিরে পাবেন।
- 531 views
- 1 answers
- 0 votes
ভালো থাকতে গেলে যে সূত্রটি প্রয়োজন,নিজের মন মানুষিকতা এবং আনন্দঘন মূহুর্তকে বেশি মনে করার চেষ্টা. পাশাপাশি নিজেকে তখন সবচেয়ে সুখী এবং কষ্টকে ভুলে থাকা. আর আমরা সবাই অর্থ দ্বারা সুখে থাকার চেষ্টা করলেও সেটা কখনোই সম্ভব না.মনের পাশবিক যন্ত্রনা থেকে দুরে থাকাটাই সুখে থাকার মূলমন্ত্র.
- 694 views
- 1 answers
- 0 votes