জান্নাতের খাবার দাবার ও পোশাক কি রকম হবে ?

জান্নাতের খাবার দাবার ও পোশাক কি রকম হবে ?

Add Comment
1 Answer(s)

    জান্নাত পার্থিব জীবনে যে সকল মুসলিম আল্লাহর আদেশ নিষেধ মেনে চলবে এবং পরকালীন হিসাবে যার গুনাহর চেয়ে পুণ্যের পাল্লা ভারী হবে ও আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করবে তাদের জন্য আল্লাহ যে সকল জান্নাত প্রস্তুত রেখেছেন।

    আল্লাহ্‌ মানুষের মনের ইচ্ছা দিয়ে সাজিয়েছেন জান্নাত! যেখানে চিরস্হায়ী । তার নায-নেয়ামত, ভোগ-বিলাস ও সকল মন্জিল সকল জান্নাতিরজন্যে প্রতিদান স্বরূপ ।

    আল্লাহ  জান্নাতিদের আহ্বান করবেন, সম্মানিত মেহমানদের ন্যায় তারা সামনে অগ্রসর হবে এবং আল্লাহর দরবারে উপস্থিত হবে। এরশাদ হচ্ছে

    “হে আমার বান্দাগণ, আজ তোমাদের কোন ভয় নাই এবং তোমরা চিন্তিতও হবে না।” [যুখরুফ ৬৮]
    তারা দুনিয়ার ন্যায় সেখানেও তাদের নিজ নিজ বাড়ি-ঘর চিনবে। এরশাদ হচ্ছে :

    “অতঃপর তিনি তাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন, যার পরিচয় তিনি তাদেরকে ইতোপূর্বে দিয়েছেন।” [মুহাম্মদ ৬] সম্মানিত ফেরেশতাগণ তাদেরকে নিরাপদ আগমন ও উত্তম গৃহের সুসংবাদ দিয়ে অভর্্যথনা জানাবে। এরশাদ হচ্ছে :

    • “তার ফলসমূহ খুব নাগালের করে দেয়া হয়েছে।”[দাহর ১৪] আশা করার সাথে সাথেই ফলসমূহ সম্মুখে ঝুঁকে যাবে। এরশাদ হচ্ছে :
    • “রেশমের আস্তর বিশিষ্ট বিছানায় হেলান অবস্থায় থাকবে। উভয় উদ্যানের ফল অবনত থাকবে।” [রাহমান ৪৫]
    • “পানাহার ও সহবাসের ক্ষেত্রে প্রত্যেককে একশত ব্যক্তির শক্তি প্রদান করা হবে।” [তিরমিযি]
    • পানাহার ক্ষুদা নিবারণ কিংবা তৃষ্ণা মিটানোর জন্য নয়, বরং স্বাদ আস্বাদন আর মস্তি করার জন্য।
    • “তোমার জন্য; তুমি এতে ক্ষুদার্ধ হবে না এবং বস্ত্রহীনও হবে না। এবং তুমি এতে পিপাসার্থ হবে না, রৌদ্র কষ্টও পাবে না।” [সূরা ত্বহা ১১৮-১১৯] মুদ্দা কথা জান্নাতে কষ্টদায়ক কোন বস্তু বিদ্যমান থাকবে না।
    • “তারা থুতু ফালাবে না, নাকের শ্লেশা ফালাবে না এবং পায়খানাও করবে না।”[বুখারী-মুসলিম]
    • “তাদের কারো প্রয়োজন হবে শুধু ঢেকুর তোলার, মৃগ নাভী ছিটানোর ন্যায়।”[মুসলিম]

     

    https://i2.wp.com/cdn.theharmonycompany.com/images/healthy-food.jpg?resize=725%2C422

    আল্লাহ বলেন,

    يَٰعِبَادِ لَا خَوۡفٌ عَلَيۡكُمُ ٱلۡيَوۡمَ وَلَآ أَنتُمۡ تَحۡزَنُونَ ٦٨ ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ بِ‍َٔايَٰتِنَا وَكَانُواْ مُسۡلِمِينَ ٦٩ ٱدۡخُلُواْ ٱلۡجَنَّةَ أَنتُمۡ وَأَزۡوَٰجُكُمۡ تُحۡبَرُونَ ٧٠ يُطَافُ عَلَيۡهِم بِصِحَافٖ مِّن ذَهَبٖ وَأَكۡوَابٖۖ وَفِيهَا مَا تَشۡتَهِيهِ ٱلۡأَنفُسُ وَتَلَذُّ ٱلۡأَعۡيُنُۖ وَأَنتُمۡ فِيهَا خَٰلِدُونَ ٧١ وَتِلۡكَ ٱلۡجَنَّةُ ٱلَّتِيٓ أُورِثۡتُمُوهَا بِمَا كُنتُمۡ تَعۡمَلُونَ ٧٢ لَكُمۡ فِيهَا فَٰكِهَةٞ كَثِيرَةٞ مِّنۡهَا تَأۡكُلُونَ ٧٣ #الزخرف: ٦٨، ٧٣

    “হে আমার বান্দাগণ, তোমাদের আজ কোনো ভয় নেই এবং তোমরা দুঃখিত ও পেরেশান হবে না। তোমরা আমার আয়াতসমূহের বিশ্বাস স্থাপন করেছিলে এবং তোমরা আমার আজ্ঞাবহ ছিল। জান্নাতে প্রবেশ করো তোমরা এবং তোমাদের বিবিগণ সানন্দে। তাদের কাছে সোনার তৈরি ডিশ ও পানপাত্র পেশ করা হবে এবং সেখানে রয়েছে মন যা চায় এবং নয়ন যাতে তৃপ্ত হয়। তোমরা সেখানে চিরকাল থাকবে। এই যে জান্নাতের তোমরা উত্তরাধিকারী হয়েছো, এটা তোমাদের কর্মের ফল। সেখানে তোমাদের জন্য আছে প্রচুর ফল-মূল, তা থেকে তোমরা খাবে।” (সূরা যুমার: ৬৮-৭৩)

    সুপ্রিয় বন্ধুরা, আপনাদের যদি প্রশ্ন করা হয় তোমরা কে কে জান্নাতে যেতে চাও? নিশ্চয়ই আপনারা একবাক্যে বলবে আমরা সবাই জান্নাতে যেতে চাই। শুধু জান্নাতে যাওয়া কেন? চিরকাল জান্নাতের অধিবাসী হতে চাই। বেহেশতে যেতে চায় না এমন মানুষ পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়া মুশকিল। একজন মানুষ যতই পাপ করুক না কেন সে জান্নাতে যেতে চায়। জান্নাতের নাজ-নিয়ামত ভোগ করতে চায়। যারা আল্লাহর হুকুম অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করবে এবং রাসূল (সা) এর নির্দেশিত পথে চলবে আল্লাহ তা’য়ালা তাদেরকে জান্নাত দান করবেন। তাদেরকে তিনি এমন জান্নাত দান করবেন যার তলদেশ দিয়ে ঝরনাধারা প্রবাহিত। যারা সাফল্য লাভ করবে তাদের জন্য এটা আল্লাহর ওয়াদা। মুত্তাকি লোকদের জন্য আল্লাহ তা’য়ালা জান্নাতের বর্ণনা এভাবে দিয়েছেন- ‘তাতে রয়েছে পানির ঝর্ণাসমূহ, চির সুস্বাদু দুধের প্রবাহ এবং পানকারীদের জন্য বিশেষ স্বাদযুক্ত পানীয়ের প্রবাহ এবং বিশুদ্ধ নহরসমূহ। ঝরনাধারা প্রবহমান হবে স্বচ্ছ পরিচ্ছন্ন মধুর।’ সেখানে তারা যা খেতে চাইবে তাই পাবে।
    পার্থিব জীবনে আমাদের খাওয়া-দাওয়ার পর তা আবার শরীর থেকে বেরিয়ে না গেলে আমরা খাবার গ্রহণ করতে পারি না। এটি আমাদের নিয়মিত কাজের অংশ কিংবা অভ্যাসও বটে। কিন্তু যারা জান্নাতবাসী হবে তাদের এমন কোন প্রয়োজনীয়তা দেখা দেবে না। জান্নাতবাসীরা খাবার গ্রহণের পর যখন হজম হবে তখন ঢেঁকুরের মাধ্যমে তা নিঃশেষ হয়ে যাবে। পুনরায় তারা খেতে চাইবে, তাদেরকে খেতে দেয়া হবে। এভাবে দিনের পর দিন চলবে। কিন্তু কোন টয়লেট কিংবা প্রাকৃতিক কাজের প্রয়োজন হবে না। আলোচ্য হাদিস অনুযায়ী ঢেঁকুর ও পরিছন্নতার মাধ্যমে তা বের হয়ে যাবে। তাদের এ ঢেঁকুরের সাথে যে গন্ধ বের হবে তা মেশকের সুগন্ধযুক্ত হবে। আল্লাহ তা’য়ালা জন্নাতবাসীদের জন্য এমন ব্যবস্থা করে রেখেছেন যা দুনিয়ার কোন ব্যবস্থাপনার সাথে মিলবে না। এত সুন্দর নাজ নিয়ামত ভোগ করার আগ্রহ কার না জাগে? আমরা সবাই চাই এমন একটি সুন্দর জান্নাতের চিরস্থায়ী অধিবাসী হতে।

    জান্নাতে সকল প্রকার ফল-মূল পাওয়া যাবে তারা দাঁড়িয়ে, বসে ও শুয়ে যখনই ইচ্ছা করবে, তখনই খেতে পারবে।

    সবশেষে এইটুকু বলবো আসুন আমরা আল্লাহ্‌ প্রতি রাসুলের প্রতি ইমান আনি। এখানে বর্ণিত একটা কথাও মিথ্যা বা সপ্ন নয়! সব সত্যি!

    আসুন আমরা নামাজ পড়ি নামাজ কায়েম করি । আল্লাহ্‌ আদেশ মেনে চলি , নবী সাঃ কে ভালোবাসি। বিশ্ব কে ভালোবাসি । আল্লাহ্‌র সকল জিব কে ভালোবাসি।

    Professor Answered on July 14, 2015.
    Add Comment
  • RELATED QUESTIONS

  • POPULAR QUESTIONS

  • LATEST QUESTIONS

  • Your Answer

    By posting your answer, you agree to the privacy policy and terms of service.