কিভাবে মানুষ কম সময়ে তাদের পড়ার ক্ষমতার উন্নতি করতে পারে?
কিভাবে মানুষ কম সময়ে তাদের পড়ার ক্ষমতার উন্নতি করতে পারে?
বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা কলেজ জীবন পর্যন্ত পড়ার ক্ষমতা বলতে পাঠ্যবই-গাইডবই মুখস্থ করে পরীক্ষার খাতায় লেখা।পড়ার যে আপেক্ষিক ক্ষমতা তা নিয়ে স্কুল কলেজে কেউ সম্ভবত মাথা খাটায় না, অন্তত দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে।
আমি ২০১৪ সাল থেকে বই- জীবনের ইউজার ম্যানুয়াল হিসেবে পড়ার চেষ্টা করে যাচ্ছি। শুরুতে কষ্ট হতো, কিছুই বুঝতাম না, কিন্তু এখন একটু একটু বুঝি। আমি কিন্তু নন-ফিকশন বইয়ের কথা বলছি। পড়ার ক্ষমতা আমার কাছে মনে হয়, বই পড়ে তা থেকে ইনসাইটস নিয়ে জীবনে কাজে লাগানোর সুযোগ তৈরি করা। প্রকৌশল কিংবা চিকিৎসা বিজ্ঞানে পড়ুয়ারা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের পড়া শেষে যা পড়ে তা কিন্তু আসলে জীবনে বাস্তবে কাজে লাগানোর চেষ্টায় পড়ে। আমরা সাধারণ মানুষেরা সেই ক্ষমতা ধীরে ধীরে হারিয়ে ফেলি।
কম সময়ে বাচ্চারা পড়ার ক্ষমতা যেভাবে উন্নত করতে পারে:
- কমিক বই পড়তে দেয়া, এতে শিশু বয়সে মনের মধ্যে দৃশ্যপট আঁকার ক্ষমতা তৈরি হয়।
- ঘটনা নির্ভর বই কিংবা কল্পকাহিনীর বই শিশুকে পড়ে শোনানো। এতে সে মনে মনে কল্পনা করতে শেখে।
- বই ভীতি দূর করার দিকে অভিভাবকদের খেয়াল রাখা জরুরী।
বি: দ্র: শো-অফের জন্য হলেও বই পড়ুন!
কম সময় কর্মজীবি বা পড়াশোনা শেষ করা তরুণরা পড়ার ক্ষমতা যেভাবে উন্নত করতে পারে:
- অডিওবুক-কার্যকর একটি উপায় কিন্তু। একটা হ্যারিপটার সিরিজের বইয়ের অডিও বইয়ের সময় ১১ ঘণ্টা। প্রতিদিন রাস্তার যানজটে (বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার ক্ষেত্রে) ১-২ ঘণ্টা করে আপনার সময় দিলেই অডিওবুক শোনা হয়ে যাবে। যদিও অনেকে অডিওবুকের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। আমার কথা হলো, দিন শেষ বইটা পড়ে নিজের কাজে লাগলেই হলো, তা আপনি যেভাবেই পড়েন।
- প্রথম ২০ পৃষ্টা পড়া-আমি কোন বই যদি প্রথম ২০ পৃষ্টা পড়ে যদি কোন দিকনির্দেশনা না পাই তাহলে বই পড়া বাদ দেই। সব বই যে পড়তে হবে, সেটা কোথাও লেখা নেই। ভালো বই ভালো করে পড়তে মন দিতে হবে।
- সামারি বা সারসংক্ষেপ পড়া: কোন বই যদি আমার পড়তে ভালো না লাগে তাহলে আমি তার সামারি পড়তে পছন্দ করি। ১০০০ শব্দের সামারি থেকে বইটার বিস্তারিত বেশ ভালো ভাবে জানতে পারার চেষ্টা করি।
- স্ক্যামিং করে পড়া: বইয়ের সব শব্দ কিংবা বাক্য পড়ে পড়ে যে মাথায় নিতে হবে, সেটা সব সময় প্রযোজ্য নয়। একটি বড় লাইনের ক্রিয়া, বিশেষ্য আর পদের বহুমাত্রিকতা চিন্তা করে স্ক্যামিং করতে হবে।
সর্বশেষ, আমি যে ‘পড়ামর্শ’ (ঠিকই পড়েছেন পড়া নিয়ে পরামর্শকে পড়ামর্শ বলা যায় না?) দিতে চাই,
ইংরেজি বই কখনই বাংলা অনুবাদ পড়া ঠিক না। ইংরেজিতে বই পড়লে একদিকে যেমন ইংরেজি দক্ষতা বাড়ে, তেমনি সেই সাহিত্যের ওপর জোর বাড়ে। এই পরামর্শের প্রেক্ষিত আসলে বাংলাদেশ। যেখানে শিক্ষার্থীরা ইংরেজি ভয় পায়। কাজের বই ইংরেজিতে পড়া শুরু করাই শ্রেয়। প্রথম দিকে হয়তো জড়তা থাকবে, কিছুই বোঝা যাবে না-কিন্তু ধীরে ধীরে সামনে এগিয়ে যাওয়াই আনন্দ।