তাবলীগ জামায়াত ও বিশ্ব ইজতেমা কি?

তাবলীগ জামায়াত ও বিশ্ব ইজতেমা কি?

Add Comment
1 Answer(s)

    তাবলীগ জামায়াত ও
    বিশ্ব ইজতেমা :
    একটি তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ
    -আকরাম হোসাইন
    ভূমিকা :
    বর্তমানে মুসলিম সমাজ শিরক বিদ‘আতের
    সর্দিতে ভুগছে। সস্তা ফযীলতের ধোঁকায়
    পড়ে মুসলিম জাতি আজ দিশেহারা।
    তারা খুঁজে ফিরছে সত্যের সন্ধানে।
    কোথায় পাওয়া যাবে সঠিক পথের দিশা,
    কোথায় পাওয়া যাবে সত্যিকারের আদর্শ?
    কেননা পৃথিবীর সকল মানুষ কোন না কোন
    আদর্শের সাথে সংযুক্ত।
    আওয়ামী লীগের আদর্শ শেখ মুজিবুর
    রহমান, বি.এন.পি’র আদর্শ জিয়াউর রাহমান,
    কমিনিস্টদের আদর্শ মাওসেতুং-লেলিন,
    জামায়াত ইসলামী’র আদর্শ মওদূদী,
    তাবলীগ জামায়াতের আদর্শ হচ্ছেন
    মাওলানা ইলিয়াস! মাযার, খানকা ও
    তরীকা পূজারী মুরীদদের আদর্শ স্ব স্ব
    পীর-ফকীর। যার যার নেতা-আমীরদের
    আদর্শ নিয়ে তারা উৎফুল্ল! কোথায়
    আমাদের রাসূল মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর আদর্শ?
    ইসলাম কারো মনগড়া ধর্ম ও জীবন
    ব্যবস্থা নয়। এটা বিশ্ব প্রতিপালক মহান
    আল্লাহ প্রদত্ত পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা। আর
    এ দ্বীন প্রচারিত হয়েছিল নবী মুহাম্মাদ
    (ছাঃ)-এর মাধ্যমে। এই দ্বীন
    তথা ইসলামের মূল দর্শন হল তাওহীদের
    প্রচার ও প্রতিষ্ঠা দান। মানব
    সমাজে আল্লাহর দ্বীনের
    বার্তা ছড়িয়ে দেয়ার জন্য কুরআন ও
    হাদীছে মুসলিম উম্মাহকে বহুবার দির্দেশ
    প্রদান করা হয়েছে।
    এমনকি যদি একটি আয়াতও কেউ জানে,
    তা প্রচার করার জন্য রাসূল (ছাঃ) নির্দেশ
    দিয়েছেন।[1] সুতরাং দাওয়াত ও
    তাবলীগের কাজ
    থেকে কারো পিছিয়ে থাকার কোন
    সুযোগ নেই। বর্তমানে ফেৎনার
    যে ব্যাপক বিস্তার ঘটেছে এবং সঠিক
    দ্বীন প্রচারকের সংখ্যাও যেহেতু খুবই কম,
    সে কারণে দ্বীনের দাওয়াত প্রদান
    করা এখন ‘ফরযে আইন’ হয়ে পড়েছে।
    সুতরাং কেউ যদি শারঈ ওযর ব্যতীত
    দৈনন্দিন ব্যস্ততার
    অজুহাতে বা অলসতাবশতঃ তাবলীগ
    বা দ্বীনের প্রচার না করে,
    তাহলে সে নিঃসন্দেহে গোনাহগার
    হবে।[2]
    তাবলীগের অন্যতম জনপ্রিয় একটা গ্রুপ হল
    তাবলীগ জামায়াত। এই জামায়াত
    বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে আছে।
    এমনকি শুনা যায় যে, বিশ্বের
    যেখানে সত্যিকারের মুসলিমের প্রবেশ
    নিষেধ সেখানেও এই জামায়াতের অবাধ
    বিচরণ। এই জামা‘আতের দাওয়াতের মূল
    উৎস হল ফাযায়েলে ‘আমাল
    বা তাবলীগী নিছাব। এই বইটি আমাদের
    দেশে খুব পরিচিত। দেশের
    ঘরে ঘরে মসজিদে মসজিদে এই বই
    পাওয়া যায়। আর তাবলীগী ভাইদের
    ক্ষেত্রে তো কোন কথায় নাই। তারা এই
    বই ছাড়া তো কিছুই বুঝে না। এই
    বইটি বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ হয়েছে কিন্তু
    আশ্চর্যের বিষয় হল, আরবীতে অনুবাদ হয়নি।
    এমনকি মুসলিমদের তীর্থস্থান
    সঊদী আরবে এই জামায়াতকে নিষিদ্ধ
    করা হয়েছে। সমস্ত বিশ্বে যেখানে এই
    জামায়াত ও বইয়ের এত সম্মান,
    সেখানে কুরআন ও সুন্নাহর দেশে এই
    জামা‘আত ও বই কেন নিষিদ্ধ? তা হয়ত
    সবারই বোধগোম্য হওয়ার কথা।
    তাবলীগের গুরুত্ব :
    তাবলীগ মুসলিম মিল্লাতের অতি পরিচিত
    একটি শব্দ। যার অর্থ প্রচার ও প্রসার।
    ক্বিয়ামত পর্যন্ত আগত সকল বিশ্ব মানবতার
    দ্বীনের দাওয়াত পৌঁছাবার যে গুরু
    দায়িত্ব মুহাম্মাদ (ছাঃ) কর্তৃক সকল
    উম্মাতে মুহাম্মাদীর উপর অর্পিত হয়েছে,
    সেটিকেই তাবলীগ বলে।
    মূলতঃ রাসূল (ছাঃ) বিশ্ব মানুষের
    কাছে দ্বীনের এ দাওয়াত পৌঁছাবার ও
    প্রচার-প্রসারের মহান দায়িত্ব নিয়েই
    পৃথিবীতে আগমন করেছিলেন। যেমন
    আগমন করেছিলেন রাসূল (ছাঃ)-এর
    পূর্বে অগণিত নবী ও রাসূল। রাসূল (ছাঃ)-
    কে তাবলীগ করার নির্দেশ দিয়ে আল্লাহ
    তা‘আলা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন,
    হে রাসূল! আপনার প্রতিপালকের পক্ষ
    থেকে আপনার উপর যা অবতীর্ণ
    হয়েছে তা আপনি প্রচার করুন।
    যদি আপনি তা না করেন
    তাহলে আপনি আল্লাহর বার্তা প্রচার
    করলেন না (মায়েদা ৬৭) ।
    রাসূল (ছাঃ) হলেন সর্বশেষ নবী। তারপর
    পৃথিবীতে আর কোন নবী আসবে না। তাই
    বিদায় হজ্জের সময় রাসূল (ছাঃ) বজ্র
    কণ্ঠে ঘোষণা, ﻓﻠﻴﺒﻠﻎ ﺍﻟﺸﺎﻫﺪ ﺍﻟﻐﺎﺋﺐ ‘উপস্থিত
    লোকেরা যেন দ্বীনের এ দাওয়াত
    অনুপস্থিত লোকদের কাছে পৌঁছে দেয়’।
    এর মাধ্যমে সমস্ত উম্মাতে মুহাম্মাদীই
    তাবলীগ তথা দ্বীন প্রচারের
    ব্যাপারে দায়িত্বশীল হয়ে যায়। রাসূল
    (ছাঃ) ইরশাদ করেন, ﺑَﻠِّﻐُﻮﺍ ﻋَﻨِّﻲ ﻭَﻟَﻮْ ﺁﻳَﺔً ‘আমার
    পক্ষ থেকে একটি বাণী হলেও (মানুষের
    নিকট) পৌঁছে দাও’।[3] ছাহাবায়ে কেরাম
    রাসূল (ছাঃ)-এর উক্ত নির্দেশের
    বাস্তবায়ন ঘটিয়েছেন যথাযথভাবে।
    পরবর্তীতে সর্বযুগেই ওলামায়ে উম্মাত
    হাদীছের সফল বাস্তবায়নের জন্য জীবন
    বাজী রেখে সংগ্রাম করেছেন।
    উল্লেখিত আয়াত ও হাদীছ ছাড়াও অসংখ্য
    আয়াত ও হাদীছে তাবলীগ তথা দ্বীন
    প্রচার ও প্রসারের প্রতি উদ্বুদ্ধ
    করা হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
    আপনি আপনার প্রতিপালকের
    দিকে আহবান করুন হিক্বমত
    বা প্রজ্ঞা দ্বারা এবং সুন্দর উপদেশ
    দ্বারা এবং তাদের সাথে উৎকৃষ্টতর
    পদ্ধতিতে বিতর্ক করুন’ (নাহল ১২৫) । মহান
    আল্লাহ বলেন, আর যেন তোমদের
    মধ্যে এমন একটি দল হয়, যারা কল্যাণের
    প্রতি আহবান করবে, ভাল কাজের আদেশ
    দিবে এবং মন্দ কাজ থেকে নিষেধ
    করবে। আর তারাই সফলকাম’ (আলে ইমরান
    ১০৪) । অন্যত্র আল্লাহ তায়ালা বলেন,
    ‘তোমরাই শ্রেষ্ঠ জাতি, মানবজাতির
    (কল্যাণের) জন্য তোমাদের আবির্ভাব
    হয়েছে। তোমরা ন্যায়কার্যে আদেশ
    এবং অন্যায় কার্যে নিষেধ কর
    এবং আল্লাহতে বিশ্বাস কর’ (আলে ইমরান
    ১১০) ।
    সূরা তাওবার ৭১, ১১২ আয়াতে,
    সূরা হজ্জেও ৪১ আয়াতে, সূরা লুকমানের
    ১৭ আয়াতে ও অন্যান্য স্থানেও উল্লেখ
    করা হয়েছে যে, আল্লাহর প্রকৃত মুমিন
    বান্দাদের অন্যতম বৈশিষ্ট হল, সৎকাজের
    আদেশ ও অসৎকাজের নিষেধ। এ
    দায়িত্বপালনকারী মুমিনকেই সর্বোত্তম
    বলে ঘোষণা করা হয়েছে পবিত্র
    কুরআনে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘ঐ
    ব্যক্তি অপেক্ষা কথায় কে উত্তম
    যে আল্লাহর প্রতি মানুষকে আহবান করে,
    সৎকর্ম করে এবং বলে,
    আমি তো মুসলিমদের একজন’ (ফুছ্ছিলাত
    ৩৩) ।
    রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘দ্বীন হল নছীহত।
    ছাহাবীগণ বললেন, কার জন্য?
    তিনি বললেন, আল্লাহর জন্য, তাঁর
    কিতাবের জন্য, তাঁর রাসূল (ছাঃ)-এর জন্য,
    মুসলিম নেতৃবর্গের জন্য এবং সাধারণ
    মুসলিমদের জন্য।[4]
    রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এ নছীহতের জন্য
    ছাহাবীগণের প্রতিজ্ঞা গ্রহণ করতেন।
    মুগীরা ইবনু শু‘বা (রাঃ) বলেন,
    আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর নিকট বায়‘আত
    করেছি ছালাত কায়েম, যাকাত প্রদান ও
    প্রত্যেক মুসলিমের নছীহত (কল্যাণ কামনা)
    করার উপর।[5] এ অর্থে তিনি সৎকাজের
    আদেশ ও অসৎকাজের নিষেধের বায়‘আত
    গ্রহণ করতেন।
    উক্ত আলোচনায় বুঝা গেল যে, কুরআন ও
    হাদীছে তাবলীগের গুরুত্ব অপরিসীম। এ
    থেকে কেউ বিরত থাকতে পারবে না।
    অতএব মুসলিম মাত্রই দ্বীনে ইসলাম কী?
    তা জানতে হবে এবং নিজের
    বাড়িতে তা প্রচার করতে হবে। তারপর
    তা প্রচার করতে হবে নিজ নিজ গ্রামে,
    শহরে, প্রয়োজন হলে অন্য দেশেও।
    তবে প্রচলিত ইলিয়াসী তাবলীগ নয়।
    তাবলীগ জামা‘আতের প্রতিষ্ঠাতার
    পরিচিতি :
    ভারতের উত্তর-পশ্চিম সীমান্তের
    একটি রাজ্যের বর্তমান নাম
    হরিয়ানা এবং সাবেক নাম পাঞ্জাব।
    ভারতের রাজধানী দিল্লীর
    দক্ষিণে হরিয়ানার একটি এলাকার নাম
    মেওয়াত। যার পরিধি দিল্লীর সীমান্ত
    থেকে রাজস্থান রাজ্যের জয়পুরহাট
    যেলা পর্যন্ত বিস্তৃত। এই মেওয়াতে ১৩০৩
    হিজরীতে এক হানাফী ব্যক্তির জন্ম হয়।
    তাঁর নাম ছিল আখতার ইলয়াস। কিন্তু
    পরে তিনি শুধু ইলয়াস নামে পরিচিত হন।
    ইনি ১৩২৬ হিজরীতে দেওবন্দ মাদরাসার
    শাইখুল হাদীছ মাওলানা মাহমুদুল হাসানের
    কাছে বুখারী ও তিরমিযীর দারস গ্রহণ
    করেন। এর দু’বছর পরে ১৩২৮
    হিজরীতে তিনি সাহারানপুরের মাযা-
    হিরুল ‘উলূমের শিক্ষক হন। ১৩৪৪
    হিজরীতে তিনি দ্বিতীয়বারে হজ্বে গমন
    করেন। এই সময় মদীনায় থাকাকালীন
    অবস্থায় তিনি (গায়েবী) নির্দেশ পান
    যে, আমি তোমার দ্বারা কাজ নেব।
    ফলে ১৩৪৫
    হিজরীতে তিনি দেশে ফিরে এসে মেওয়াতের
    একটি গ্রাম নওহে তাবলীগী কাজ শুরু
    করেন। পরিশেষে ১৩৬৩ হিজরীর ২১ রজব
    মোতাবেক ১৩ জুলাই ১৯৪৪
    খৃষ্টাব্দে তিনি ইন্তেকাল করেন।[6]
    ইলায়াসী তাবলীগ বনাম রাসূলের
    তাবলীগ :
    (ক) তারা নিজেরা কুরআন
    বুঝে না অন্যদেরকেও বুঝতে দেয় না।
    কিন্তু রাসূল (ছাঃ) নিজে কুরআন
    শিখিয়েছেন এবং তার প্রচারকও ছিলেন।
    (খ) তাদের দাওয়াতী নিয়ম
    স্বপ্নে প্রাপ্ত।[7] রাসূলের
    দাওয়াতী নিয়ম স্বয়ং আল্লাহ প্রদত্ত
    (মায়েদা ৬৭) ।
    (গ) তাদের দাওয়াতের মধ্যে সপ্তাহে ১
    দিন, মাসে ৩ দিন, বছরে ১ চিল্লা,
    কমপক্ষে জীবনে ৩
    চিল্লা লাগিয়ে দ্বীনি কাজ
    শিখতে হবে।[8] পক্ষান্তরে রাসূলের
    দাওয়াতী কাজ এগুলোর কোন অস্তিত্ব
    নেই।
    (ঘ) তাদের দাওয়াতের মধ্যে ইসলামের
    একটি অপরিহার্য বিধান ও আল্লাহর প্রিয়
    জিহাদ নেই। কিন্তু রাসূলের
    দাওয়াতে জিহাদ একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
    (ঙ) তাদের দাওয়াতে কাফের মুশরিকদের
    কোন বাধা নেই। রাসূল (ছাঃ) যখন দাওয়াত
    দিতেন তখন কাফের মুশরিক বাধা দিত।
    (চ) তাদের দাওয়াতী কাজ শেখার মূল উৎস
    হল ‘ফাযায়েলে আমাল’। কুরআনের
    চেয়েও তারা ফাযায়িলে আমাল-এর
    গুরুত্ব বেশী দেয়। অথচ রাসূলের দাওয়াত
    শেখার মূল উৎস হচ্ছে কুরআন ও ছহীহ
    হাদীছ। আর কুরআনের
    মর্যাদা হচ্ছে সবকিছুর উর্ধ্বে।
    (ছ) তারা রাষ্ট্রপ্রধান বা ক্ষমতাশালীদের
    বিরুদ্ধে কোন কথা বলে না যদিও
    তারা শিরক করে ও ইসলামের
    বিরুদ্ধে বলে। রাসূল তৎকালীন রাষ্টপ্রধান
    ও ক্ষমতাশালীদের
    বিরুদ্ধে কথা বলেছিলেন, শিরক ও ইসলাম
    বিরোধী কাজে বাধা দিয়েছেন।
    (জ) তারা কোন দাওয়াতী কাজ করার সময়
    কুরআন হাদীছের দলীল পেশ করে না,
    নিজেদের মনগড়া কথা বলে। রাসূল
    নিজে কোন কিছু বলার বা দাওয়াত দেবার
    আগে দলীল পেশ করতেন।
    (ঝ) তারা কোন মতেই কারো সাথে যুদ্ধ
    করতে চায় না। রাসূল যুদ্ধ
    করতে গিয়ে নিজের দাঁতকে শহীদ
    করেছেন।
    (ঞ) তারা শুধু দাওয়াত
    কিভাবে দিবে তা শেখায় যদিও
    তা ইসলামী পদ্ধতিতে নয়; অন্য কোন কিছু
    তারা শিখায় না। রাসূল জীবনের
    প্রতি মুহূর্তে কি করতে হবে, কার
    সাথে কিভাবে চলতে হবে সবকিছু
    শিখিয়েছেন।
    (ট) ইলিয়াসী তাবলীগ বুযুর্গদের সন্তুষ্টির
    জন্য করা হয়।[9] রাসূলের তাবলীগ একমাত্র
    আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য (আন‘আম ১৬;
    বাইয়েনা ৫) ।
    (ঠ) ইলিয়াসী তাবলীগের অলিরা গায়েব
    জানেন।[10] অথচ রাসূল (ছাঃ) গায়েব
    জানতেন না (আন‘আম ৫০; ‘আরাফ ১৮৮) ।
    (ড) ইলিয়াস ছাহেবের আক্বীদায় রাসূল
    (ছাঃ) জীবিত।[11] কিন্তু নবী (ছাঃ)
    ইন্তেকাল করেছেন (যুমার ৩০) ।
    (ঢ) বুযুর্গরা জান্নাত-জাহান্নাম
    দুনিয়াতে দেখেন।[12] জান্নাত এমন যে,
    না কোন চোখ দেখেছে, না কোন কান
    শুনেছে এবং না কোন হৃদয়
    কল্পনা করেছে।[13]
    (ণ) ইলিয়াসী তাবলীগে বুযুর্গদের
    মৃত্যুকে অস্বীকার করা হয়েছে।[14] রাসূল
    (ছাঃ)-এর তাবলীগের প্রত্যেকের মৃত্যু
    সত্য (আল-ইমরান ১৮৫) ।
    (ত) পর্যবেক্ষক ফেরেশতারা আল্লাহ ও
    বান্দার গোপন যিকির
    সম্পর্কে জানতে পারে না।[15]
    ফেরেশতাগণ পর্যবেক্ষণ
    হিসাবে রয়েছেন
    এবং আমরা যা করি তারা সে সব জানেন
    (ইনফিতার ১০ ও ১২) ।
    (থ) ইলিয়াসী তাবলীগের কেন্দ্রস্থল
    ভরতের নিযামুদ্দীন মসজিদের
    ভিতরে মাওলানা ইলিয়াস ছাহেব ও তার
    পুত্রের কবর রয়েছে।[16] নবী (ছাঃ)
    কবরের দিকে ছালাত পড়তে ও
    কবরকে পাকা নিষেধ করেছেন।[17]
    (দ) মাওলানা মুহাম্মাদ ইলিয়াস ছাহেবের
    ইন্তিকালের পর আল্লাহর
    সাথে মিশে গেছেন।[18] নবী করীম
    (ছাঃ) বলেন, আল্লাহর সমতুল্য কেউ নেই,
    তার সাথে কেউ মিশতে পারে না
    (ইখলাস ৪; শূরা ১১) ।
    বিশ্ব বরেণ্য আলেমদের
    দৃষ্টিতে তাবলীগ জামাত ও গ্রন্থসমূহ :
    ১. সঊদী আরবের প্রধান মুফতী ও
    ইসলামী গবেষণা ও ফাতাওয়া অধিদপ্তর
    এর মহাপরিচালক এবং সর্বোচ্চ
    ওলামা পরিষদের প্রধান শায়খ আব্দুল আযীয
    বিন আব্দুল্লাহ বিন বায (রহঃ) বলেন,
    তাবলীগপন্থীদের নিকট
    আকীবদা সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা নেই
    এবং তাদের নিকট রয়েছে কিছু কুসংস্কার,
    বিদ‘আত ও শিরকী কার্যক্রম।
    সুতরাং তাদের সাথে বের হওয়া জায়েয
    নয়। তাদের নিকট ইসলাম
    সম্পর্কে জ্ঞানের ঘাটতি রয়েছে।
    তাদের আরো অধিক ইসলামী শরী‘আহর
    সঠিক জ্ঞানের প্রয়োজন এবং কুরআন ও
    হাদীছ সম্পর্কে বিজ্ঞ আলেমের
    প্রয়োজন,
    যাতে তারা তাদেরকে তাওহীদ ও
    সুন্নাহর জ্ঞানে আলোকিত করবেন।[19]
    ২. সঊদী আরবের সর্বোচ্চ
    ওলামা পরিষদের সদস্য এবং জাতীয়
    ফাতাওয়া বোর্ডের স্থায়ী সদস্য মুহাম্মাদ
    বিন সালেহ আল-উছায়মীন (রহঃ) বলেন,
    ইলিয়াসী তাবলীগ জামায়াত পন্থীদের
    অনুরোধ করছি, তারা যেন তা পরিত্যাগ
    করেন এবং রাসূল (ছাঃ) থেকে প্রমাণিত
    আমল অনুযায়ী আমল করেন। এটাই তাদের
    জন্য উত্তম এবং প্রতিফলও ভাল
    হবে এবং তাদের মধ্যে যারা তাদের
    বানানো ছয় উছূলকে নিজের চলার জন্য
    মূলভিত্তি হিসাবে গ্রহণ করেছে,
    তারা যেন এই চিন্তাধারা পরিবর্তন
    করে ছহীহ হাদীছের দিকে যেন
    ফিরে যায়। তারা যা করছে তা শরী‘আত
    সম্মত নয়। তাদের সহ কোন মানুষের জন্য
    এটা জায়েয হবে না যে, সে ইসলামের
    যে কোন গল্প বলুক বা ওয়ায করুক
    এবং তাতে এমন হাদীছের কথা উল্লেখ
    করে যা সে জানে না। সেটি ছহীহ, যঈফ
    না মওযু। কারো জন্য দুর্বল বা যঈফ হাদীছ
    বর্ণনা করা জায়েয নয়। আল্লাহর নিকট
    প্রার্থনা করছি, তিনি যেন
    তাদেরকে ছিরাতে মুস্তাক্বীমের পথ
    দেখান-আমিন।[20]
    ৩. সঊদী আরবের সাবেক সকল মুফতীদের
    প্রধান ও ইসলামী গবেষণা ও
    ফাতাওয়া অধিদপ্তর-এর মহাপরিচালক
    এবং সর্বোচ্চ ওলামা পরিষদের প্রধান
    শায়খ মুহাম্মাদ বিন ইবরাহীম (রহঃ)
    তাবলীগ জামায়াত সম্পর্কে বলেন, ‘এই
    জামায়াতের কোন ফায়েদা নেই।
    এটি একটি বিদ‘আতী এবং গোমরাহ
    সংগঠন। তাদের তাবলীগী নিছাব
    পড়ে দেখলাম তা গোমরাহী ও
    বিদ‘আতে ভরপুর। এতে কবর
    পূজা এবং শিরকের দিকে আহবান
    করা হয়েছে। বিষয়টি এমনই যে, এ
    ব্যাপারে চুপ থাকা যায় না।[21]
    ৪. বিশ্ববিখ্যাত মুহাদ্দিছ ও মুহাক্কিক
    এবং বিংশ শতাব্দীর সর্বশ্রেষ্ঠ হাদীছ
    বিশারদ শায়খ আল্লামা মুহাম্মাদ
    নাছিরুদ্দীন আলবানী (রহঃ) বলেন,
    তাবলীগ জামা‘আত আল্লাহর কুরআন
    এবং রাসূল (ছাঃ)-এর ছহীহ হাদীছের উপর
    প্রতিষ্ঠিত নয়
    এবং সালফে সালেহীনদের পন্থার উপর
    নয়। (ছাহাবী, তাবেঈ ও তাবে-
    তাবেঈনদের একত্রে সালফে সালেহীন
    বলা হয়)। এই তাবলীগ জামা‘আতের
    সাথে বের হওয়া জায়েয নয়। তাদের
    উচিত আগে ইসলামের সঠিক জ্ঞান
    শিক্ষা নেয়া। তারা কুরআন ও ছহীহ
    হাদীছকে তাদের মূলনীতি হিসাবে গণ্য
    করে না (যার বাস্তব প্রমাণ তাদের
    ফাযায়িলে আমাল সহ অন্যান্য গ্রন্থসমূহ)।
    যদিও তারা মুখে বলে যে, তাদের
    দাওয়াত কুরআন ও ছহীহ হাদীছ ভিত্তিক
    কিন্তু এটা নিছক তাদের মুখের কথা;
    তাদের সঠিক আকীবদা নেই, তাদের
    বিশ্বাস জট পাকানো। এদের স্বচ্ছ
    জ্ঞানের অভাব রয়েছে। এই তাবলীগ
    জামায়াত মূলতঃ ছূফী মতবাদের ধারক ও
    বাহক।[22]
    ৫. সঊদী আরবের সর্বচ্চ ওলামা পরষিদের
    সদস্য আব্দুর রাযযাক আফিফী বলেন,
    বাস্তবে তাবলীগপন্থিরা বিদ‘আতী,
    ইসলাম বিকৃতকারী এবং কাদেরীয়া সহ
    অন্যান্য বাতিল তরীকার অনুসারী।
    তারা আল্লাহর পথে বের
    হয়নি বরং তাদের প্রতিষ্ঠাতা আমীর
    ইলিয়াসের মনগড়া পথে বের হয়েছে;
    তারা কুরআন ও ছহীহ হাদীছের
    দিকে ডাকে না বরং তারা অতি সূক্ষ্মভাবে ইলিয়াসের
    দিকে ডাকে। আমি অনেক দিন
    আগে থেকেই এদের চিনি। এরা মিসর,
    ইসরাঈলে বা আমেরিকায় যে স্থানেই
    থাকুক না কেন, এরা বিদ‘আতী।[23]
    ৬. সঊদী অরবের সর্বোচ্চ ওলামা পরিষদের
    সদস্য শাইখ সালেহ বিন ফাওযান (রহঃ)
    বলেন, দাওয়াতের নাম ব্যবহার
    করে তাবলীগ জামায়াতের
    লোকেরা যা করে তা বিদ‘আত; ছাহাবী,
    তাবেঈ ও তাবে-তাবেঈ অর্থাৎ
    সালফে সালেহীনরা এভাবে দাওয়াত
    দেননি। এদের মাঝে অনেক বিদ‘আত
    এবং ভ্রান্ত কুসংস্কার রয়েছে। এদের
    কর্মনীতি রাসূল (ছাঃ)-এর কর্মসূচী ও
    কর্মনীতির পরিপন্থী ও বিরোধী।
    এটি একটি বিদ‘আতী ছূফী জামায়াত,
    এদের সম্পর্কে সাবধান থাকা অপরিহর্য।
    তারা বিদ‘আতী চিল্লা দেয়। তাদের
    দ্বারা ইসলামের কোন
    ফায়দা হবে না এবং কোন মুসলিমের
    জায়েয হবে না এ জামায়াতের
    সাথে সম্পর্ক রাখা এবং এদের
    সাথে চলা।[24] তাবলীগী নিছাব
    পরিচিতি :
    ইলিয়াসী তাবলীগের প্রতি সাধারণ
    মানুষকে আকৃষ্ট করার জন্য ভারতের উত্তর
    প্রদেশের সাহারানপুর যেলার কান্ধেলাহ
    নিবাসী ও মাযাহিরুল ‘উলূম সাহারানপুরের
    সাবেক শাইখুল হাদীছ
    মাওলানা যাকারিয়াহ্ হানাফী নয়টি বই
    লেখেন উর্দূ ভাষায়। তার নামগুলো হলো :
    ১. হেকায়াতে ছাহাবা; ২.
    ফাযায়েলে নামায; ৩.
    ফাযায়েলে তাবলীগ;
    ৪.ফাযায়েলে রামাযান ৫.
    ফাযায়েলে যিকির; ৬.
    ফাযায়েলে কুরআন; ৭. ফাযায়েলে দরুদ;
    ৮. ফাযায়েলে হাজ্জ; ৯.
    ফাযায়েলে ছাদাক্বাহ।
    তাবলীগ জামায়াত কর্তৃক প্রকাশিত
    বইয়ে শিরক-বিদ‘আতের নমুনা :
    ‘ফাযাযয়লে আমাল’ নামক
    বইটিতে অধিকংশ আলোচনাই শিরক-
    বিদআত, মিথ্যা কিচছা-কাহিনী,
    কুসংস্কার, সূত্রহীন, বানোয়াট জাল ও যঈফ
    হাদীছে পরিপূর্ণ। যেমন,
    (এক) তাবলীগ জামা‘য়াতের
    প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা ইলিয়াস (রহঃ)-এর
    নির্দেশে মাওলানা যাকারিয়াহ্
    ফাযায়েলে তাবলীগ বইটি লেখেন। ঐ
    বইয়ের ভূমিকায় তিনি বলেন,
    ইসলামী মুজাদ্দিদের এক উজ্জ্বল রত্ন
    এবং উলামা ও মাশায়েখদের এক
    চাকচিক্যময় মুক্তার নির্দেশ যে,
    তাবলীগে দ্বীনের প্রয়োজন
    সংক্ষিপ্তভাবে কতিপয় আয়াত ও হাদীস
    লিখে পেশ করি। আমার মত গুনাহগারের
    জন্য এরূপ ব্যক্তিদের সন্তুষ্টিই নাজাতের
    ওয়াসিলা বইটি পেশ করলাম।[25] অথচ
    আল্লাহ তায়ালা বলেন, আপনি বলুন! আমার
    ছালাত, আমার কুরবাণী এবং আমার জীবন
    ও মরণ বিশ্ব প্রতিপালক আল্লাহরই জন্য।
    অর্থাৎ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য (আন‘আম
    ১৬২) । এবার বুঝুন আল্লাহর সন্তুষ্টি বাদ
    দিয়ে মাওলানা যাকারিয়াহ্ ইলিয়াস
    ছাহেবের সন্তুষ্টির অর্জন করতে চাইছে।
    (দুই) ক্ষুধার্ত এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-
    এর কবরের পার্শ্বে গিয়ে খাদ্যের
    আবেদন করে ঘুমিয়ে পড়লেন। সেই
    অবস্থায় তার নিকট রুটি আসল, ঘুমন্ত অবস্থায়
    অর্ধেক রুটি খাওয়ার পর জাগ্রত
    হয়ে অবশিষ্ট রুটি খেলেন।[26]
    (তিন) জনৈকা মহিলা ৩ জন খাদেম কর্তৃক
    মার খাওয়ার পর রাসূলের কবরের পার্শেব
    গিয়ে বিচার প্রার্থনা করলে, আওয়াজ
    আসল ধৈর্য ধর, ফল পাবে। এর পরেই
    অত্যাচারী খাদেমগণ মারা গেল।[27]
    (চার) অর্থাভবে বিপন্ন ব্যক্তি রাসূলের
    কবরের পার্শ্বে হাযির হয়ে সাহায্য
    প্রার্থনা করায় তা মঞ্জুর হল। লোকটি ঘুম
    থেকে জাগ্রত হয়ে দেখতে পেল যে,
    তার হাতে অনেকগুলো দিরহাম।[28]
    (পাঁচ) মদীনায় মসজিদে আযান
    দেওয়া অবস্থায় এক খাদেম
    মুয়াযিযনকে প্রহার করায় রাসূলের
    কবরে মুয়াযিযন কর্তৃক বিচার প্রার্থনা।
    প্রর্থনার ৩ দিন পরেই ঐ খাদেমের মৃত্যু হয়।
    [29]
    (ছয়) জনৈক অসুস্থ ব্যক্তি চিকিৎসায় ব্যর্থ
    হওয়ায় ঐ ব্যক্তির আত্মীয়, ‘করডোভার এক
    মন্ত্রী ‘আরোগ্যের আরয করে রাসূলের
    কবরে পাঠ করার জন্য অসুস্থ
    ব্যক্তিকে পত্রসহ মদীনায় প্রেরণ। কবরের
    পার্শেব পত্র পাঠ করার পরেই রোগীর
    আরোগ্য লাভ।[30]
    (সাত) কোন ব্যক্তি রাসূল (ছাঃ)-এর রওযায়
    আরয করায় রওযা হতে হস্ত মুবারক বের
    হয়ে আসলে উহা চুম্বন করে সে ধন্য হল।
    নববই হাযার লোক তা দেখতে পেল।
    মাহবুবে সোবহানী আব্দুল কাদের
    জিলানীও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।[31]
    (আট) হে আল্লাহর পেয়ারা নবী (ছাঃ)!
    মেহেরবানী পূর্বক আপনি একটু দয়া ও
    রহমতের দৃষ্টি নিক্ষেপ করুন।[32]
    (নয়) আপনি সারা বিশ্বের জন্য রহমত স্বরূপ,
    কাজেই আমাদের মত
    দুর্ভাগা হতে আপনি কী করে গাফেল
    থাকতে পারেন।[33] (দশ) আপনি সৌন্দর্য ও
    সৌরভের সারা জাহানকে সঞ্জীবিত
    করিয়া তুলুন এবং ঘুমন্ত নারগিছ ফুলের মত
    জাগ্রত হইয়া সারা বিশ্ববসীকে উদ্ভাসিত
    করুন।
    (এগার ) আমাদের চিন্তাযুক্ত
    রাত্রিসমূহকে আপনি দিন বানাইয়া দিন
    এবং আপনার বিশ্বসুন্দর চেহারার
    ঝলকে আমাদের দ্বীনকে কামিয়াব
    করিয়া দিবেন।[34]
    (বার) দুর্বল ও অসহায়দের সাহায্য করুন আর
    খাঁটি প্রেমিকদের অন্তরে সান্তবনা দান
    করুন।[35]
    (তের ) আমি আপন
    অহংকারী নাফছে আম্মারার ধোকায়
    ভীষণ দুর্বল হইয়া পড়িয়াছি। এমন অসহায়
    দুর্বলদের প্রতি করুণার দৃষ্টি নিক্ষেপ করুন।
    [36]
    (চৌদ্দ) যদি আপনার করুণার দৃষ্টি আমার
    সাহায্যকারী না হয় তবে আমার অঙ্গ
    প্রত্যঙ্গ বেকার ও অবশ হইয়া পড়িবে।[37]
    (পনের) কয়েকজন যুবক নামায
    পড়তে পড়তে কঠোর সাধনা করে ইহলোক
    ত্যাগ করে আল্লাহর দরবারে চলে যাওয়ার
    গল্প।[38]
    (ষোল) কোন বুজুর্গের এশার অযু
    দ্বারা একাধারে ৪০ বছর পর্যন্ত ফজর
    নামাজ পড়ার কল্প-কাহিনী।[39]
    (সতের) জনৈক ব্যক্তি একই অজু দ্বারা ১২
    দিন নামায পড়েছেন।[40]
    (আঠার) আদম (আঃ) দুনিয়াতে এসে ৪০ বছর
    যাবৎ ক্রন্দন করেও ক্ষমা পাননি,
    সর্বশেষে জান্নাতে খোদিত মুহাম্মাদ
    (ছাঃ) এর নামের অসীলায় দো‘আ
    করে ক্ষমা প্রাপ্ত হয়েছেন।[41]
    (ঊনিশ) হে মুহাম্মাদ (ছাঃ)
    আপনাকে সৃষ্টি না করলে বিশ্বজাহানের
    কিছুই সৃষ্টি করতাম না।[42] এটি লোক
    মুখে হাদীছে কুদসী হিসাবে যথেষ্ট
    প্রসিদ্ধ। অথচ হাদীছ বিশেষজ্ঞগণ এ
    ব্যাপারে একমত যে,
    এটি একটি ভিত্তিহীন রেওয়ায়াত,
    মিথ্যুকদের বাননো কথা। রাসূল (ছাঃ)-এর
    হাদীছের সাথে এর সামান্যতম মিল নেই।
    ইমাম ছাগানি, আল্লামা পাটনী,
    মোল্লা আলী কারী, শায়খ আজলুনী,
    আল্লামা কাউকজী, ইমাম শওকানী,
    মুহাদ্দিস ‘আব্দুল্লাহ ইবনু সিদ্দিক আল-
    গুমারী এবং শাহ ‘আব্দুল ‘আযীয মুহাদ্দিছ
    দেহলভী (রহঃ) প্রমুখ মুহাদ্দিসীনে কিরাম
    এটিকে জাল বলেছেন।
    (বিশ) রাসূূূল (ছাঃ) এর মলমূত্র পাক-পবিত্র
    ছিল ও রক্ত হালাল ছিল
    এবং সাহাবায়ে কেরামদের দুইজন
    তা খেয়ে জান্নাতের
    নিশ্চয়তা পেয়েছেন স্বয়ং রাসূল (ছাঃ)
    থেকে।[43] অথচ আল্লাহ তায়ালা বলেন,
    আপনি বলে দিন, যা কিছু বিধান ওহীর
    মাধ্যমে আমার কাছে পৌঁছেছে,
    তন্মধ্যে আমি কোন হারাম খাদ্য
    পাইনা কোন ভক্ষণকারীর জন্যে,
    যা সে ভক্ষণ করে; কিন্তু মৃত
    অথবা প্রবাহিত রক্ত অথবা শুকরের মাংস
    এটা অপবিত্র অথবা অবৈধ; যবেহ করা জন্তু
    যা আল্লাহ ছাড়া অন্যের নামে উৎসর্গ
    করা হয়। অতঃপর যে ক্ষুধায় কাতর
    হয়ে পড়ে এমতবস্থায়
    যে অবাধ্যতা করে না এবং সীমালঙ্ঘন
    করে না, নিশ্চয় আপনার
    পালনকর্তা ক্ষমাশীল দয়ালু (আন‘আম
    ৬/১৪৫) ।
    বিশ্ব ইজতেমা প্রসঙ্গ :
    ‘ইজতেমা’ শব্দের অর্থ সমাবেত করা, সভা-
    সমাবেশ বা সম্মেলন। ধর্মীয় কোন
    কাজের জন্য বহুসংখ্যক মানুষকে একত্র করা,
    কাজের গুরুত্ব বোঝানো,
    কাজটি যথাযথভাবে সম্পন্ন করার জন্য
    সিদ্ধান্ত নেয়া এবং ব্যাপকভাবে এর
    প্রচার-প্রসারের জন্য বলিষ্ঠ পদক্ষেপ গ্রহণ
    করা ইত্যাদি বিষয়কে ইসলামের
    পরিভাষায় ইজতেমা বলা হয়। তাবলীগ
    জামা‘আতের বড় সম্মেলন হচ্ছে ‘বিশ্ব
    ইজতেমা’। ১৯৪৪ সালে প্রথম বিশ্ব
    ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয় ঢাকার কাকরাইল
    মসজিদে। ১৯৪৮ সালে ইজতেমা অনুষ্ঠিত
    হয় চট্টগ্রামের হাজি ক্যাম্পে এবং ১৯৫০
    সালে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে।
    ১৯৬৫ সালে টঙ্গীর পাগার নামক
    স্থানে ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়।
    এগুলো অনুষ্ঠিত হয়েছিল খুব ছোট
    পরিসরে। এরই মধ্যে তাবলীগের কার্যক্রম
    বাংলাদেশের গ্রামে-গঞ্জে, শহর-
    বন্দরে, ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।
    ইজতেমায় দেশি-বিদেশী বহু মানুষের
    উপস্থিতি বেড়ে যায়। ১৯৬৭
    সালে টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে বিশ্ব
    ইজতেমার স্থান নির্ধারণ করা হয়। তখন
    থেকেই বিশ্ব ইজতেমা সর্ববৃহৎ ধর্মীয়
    সমাবেশের পরিণত হয়! ১৯৭২ সালে সরকার
    টঙ্গীর ইজতেমাস্থলের জন্য
    সরকারী জমি প্রদান করেন এবং তখন
    থেকে বিশ্ব ইজতেমার পরিধি আরো বড়
    হয়ে উঠে। ১৯৯৬ সালে তৎকালীন সরকার
    এ জায়গায় ১৬০ একর
    জমি স্থায়ীভাবে ইজতেমার জন্য বরাদ্দ
    দেয় এবং অবকাঠামোগত কিছু উন্নয়ন ঘটায়।
    উক্ত ইজতেমার বিশেষ আকর্ষণ হল এই
    আখেরী মুনাজাত! মানুষ এখন ফরয ছালাত
    আদায়ের
    চাইতে আখেরী মুনাজাতে যোগদান
    করাকেই অধিক গুরুত্ব দেয়।
    আখেরী মুনাজাতে শরীক হবার জন্য
    নামাজী, বে-নামাজী, ঘুষখোর,
    সন্ত্রাসী, বিদ‘আতী,
    দুস্কৃতিকারী দলে দলে ময়দানের
    দিকে ধাবিত হয়। কেউ ট্রেনের ছাদে,
    কেউ বাসের হ্যান্ডেল ধরে, নৌকা,
    পিকআপ প্রভৃতির মাধ্যমে ইজতেমায়
    যোগদান করে। তারা মনে করে সকল
    প্রাপ্তির সেই ময়দান বুঝি টঙ্গির তুরাগ
    নদীর পাড়ে। মানুষ পায়খানা-পেসাব
    পরিষ্কার করেও সেখানে ছওয়াবের
    আশায় থাকেন। এ যেন ঝওয়াবের ছড়া ছড়ি,
    যে যতো কুড়ায়ে থলে ভরতে পারবে তার
    ততোই লাভ। ট্রেনের ছাদের উপর
    মানুষের ঢল দেখে টিভিতে সাংবাদিক
    ভাইবোনগণ মাথায় কাপড় দিয়ে বার বার
    বলেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ আজ তাদের
    পাপের প্রাশ্চিত্ত করতে ছুটে চলছেন
    তুরাগের পাড়ে! পরের দিন বড়
    হেডিং দেখে যারা এবার
    যেতে পারেননি তারা মনে মনে ওয়াদা করে বসবেন
    যে আগামীতে যেতেই হবে।
    তা না হলে পাপীদের তালিকায় নাম
    থেকেই যাবে! এভাবে পঙ্গোপালের
    মতো এদের বাহিনী বড়তে থাকবে।
    এদের আর রুখা যাবে না।
    কেননা স্বয়ং রাষ্ট্রপতি বঙ্গভবনে,
    প্রধানমন্ত্রী গণভবনে, বিরোধীদলিয়
    নেত্রী ও অন্যান্য মন্ত্রীগণও
    সেখানে গিয়ে আঁচল
    পেতে প্রার্থনা করেন।
    টিভিতে সরাসরি মুনাজাত সম্প্রচার
    করা হয়। রেডিও শুনে রাস্তার ট্রাফিকগণও
    হাত তুলে আমিন! আমিন! বলতে থাকে।
    কি সর্বনাশা বিদ‘আত আমাদের
    কুরে কুরে গ্রাস করছে তা আমরাও
    জানি না!
    আরাফার মাঠে হজ্জ এর সময় লক্ষ লক্ষ লোক
    সমাগম হয়। সেখানে কেন সম্মিলিত
    মুনাজাত হয় না? যেখানে আল্লাহ
    নিজে হাযির হতে বলেছেন,
    যেখানে তিনি অগণিত
    মানুষকে ক্ষমা করে দেন। এই প্রশ্নের
    জবাব যারা বুঝতে চেষ্টা করেছে তারাই
    বুঝতে পারবে কেন বিশ্ব
    ইজতেমা বিদ‘আত? সম্মিলিত মুনাজাত এর
    কারণেই বিশ্ব ইজতেমা বিদ‘আত।
    যদি আখেরী মুনাজাত না হত তবে অন্তত
    বলা যেত ইসলামিক আলোচনার জন্য বিশ্ব
    ইজতেমা। তাছাড়া এই
    ইজতেমা বিদ‘আতী কিতাব থেকে বয়ান
    করা হয়।
    অনেকে আবার এই ইজতেমাকে ২য় হজ্জ
    বলে উল্লেখ করেন! (নাঊযুবিল্লাহ)।
    এমনকি ‘চ্যানেল আই’ গণমাধ্যমেও
    এটিকে হজ্জের সাথে তুলনা করেছে!
    আল্লাহ তা‘আলা কাবা ঘর ছাড়া অন্য
    কোথাও ২য় হজ্জ করতে বলেন নি। এমন
    কাজ সওয়াবের আশায় করলে আল্লাহর
    দেয়া নির্ধারিত বিধানের সীমালঙ্ঘন
    করা হবে। আর আল্লাহর দেয়া সীমালঙ্ঘন
    করলে তার পরিণাম হবে ভয়াবহ। আল্লাহ
    তায়ালা বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ ও
    রাসূলের অবাধ্য হয়ে আল্লাহর সীমালঙ্ঘন
    করে, আল্লাহ
    তাকে জাহান্নামে ঢুকাবেন,
    সেখানে সে চিরকাল থাকবে আর তার
    জন্য রয়েছে লাঞ্চনাদায়ক শাস্তি
    (নিসা ১৪) ।
    ইসলামের সঠিক ব্যাখ্যা প্রদান ও প্রচার
    করার লক্ষ্যে যেকোন মাহফিল
    বা ইজতেমার আয়োজন করা ও
    সেখানে যোগদান করা যায়। কিন্তু
    যদি ইসলামের নামে জাল, যঈফ ও
    বানোয়াট হাদীছের এবং ভিত্তিহীন
    ফাযায়েল ও কেচ্ছা-কাহিনী শোনার
    দাওয়াত দেয়া হয়, বিদ‘আতী আক্বীদা ও
    আমল প্রচার করা হয়,
    তাহলে সেখানে যোগদান করা যাবেনা।
    চাই সেটা বিশ্ব ইজতেম হোক বা অন্য
    কোন ইজতেমা হোক। কারণ বিদ‘আতীদের
    সঙ্গ দিতে নিষেধ করা হয়েছে।
    বিদ‘আতী লোকেরা ক্বিয়ামতের দিন
    হাউয কাওছারের পানি পান
    করতে পারবে না।[44]
    বিদ‘আতের তিনটি মৌলিক নীতিমালা :
    ১.এমন আমলের মাধ্যমে আল্লাহর নিকট
    ছওয়াবের আশা করা, যা শরী‘আত সিদ্ধ নয়।
    কেননা শরী‘আতের স্বতঃসিদ্ধ নিয়ম হল
    এমন আমল দ্বারা আল্লাহর নিকট ছওয়াবের
    আশা করতে হবে যা কুরআনে আল্লাহ
    নিজে কিংবা ছহীহ হাদীছে তাঁর রাসূল
    মুহাম্মাদ (ছাঃ) অনুমোদন করেছেন।
    তাহলেই কাজটি ইবাদত বলে গণ্য হবে।
    পক্ষান্তরে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (ছাঃ)
    যে আমল অনুমোদন করেননি সে আমলের
    মাধ্যমে আল্লাহর ইবাদত
    করা হবে বিদ‘আত।
    ২. দ্বীনের অনুমোদিত ব্যবস্থা ও পদ্ধতির
    বাইরে অন্য ব্যবস্থার অনুসরণ ও
    স্বীকৃতি প্রদান। ইসলামে একথা স্বতঃসিদ্ধ
    যে, শরীয়তের বেঁধে দেয়া পদ্ধতি ও
    বিধাণের মধ্যে থাকা ওয়াজিব।
    যে ব্যক্তি ইসলামী শরিয়ত ব্যতিত অন্য
    বিধান ও পদ্ধতি অনুসরণ করল ও তার
    প্রতি আনুগত্যের স্বীকৃতি প্রদান করল
    সে বিদ’আতে লিপ্ত হল।
    ৩. যে সকল কর্মকান্ড সরাসরী বিদ’আত
    না হলেও বিদ’আতের দিকে পরিচালিত
    করে এবং পরিশেষে মানুষকে বিদ’আতে লিপ্ত
    করে, সেগুলোর হুকুম বিদ’আতেরই অনুরূপ।
    সুতরাং যারা আল্লাহর রাসূলের ছহীহ
    হাদীছকে জেনে বুঝে স্বেচ্ছায়
    সজ্ঞানে পরিত্যাগ করে কারো কল্পিত
    রায় ক্বিয়াসের অনুসরণ
    করে তারা আল্লাহর রাসুলের অবাধ্য।
    বিদ’আতী কাজের পরিণতি :
    ১. ঐ বিদ ‘আতী কাজ আল্লাহর
    দরবারে গৃহীত হবে না।
    ২. বিদ‘আতী কাজের ফলে মুসলিম
    সমাজে গোমরাহীর ব্যাপকতা লাভ করে।
    ৩. আর এই গোমরাহীর
    ফলে বিদ‘আতীকে জাহান্নাম ভোগ
    করতে হবে।
    রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,
    যে ব্যক্তি আমাদের শরী‘আতে এমন কিছু
    নতুন সৃষ্টি করল, যা তার মধ্যে নেই,
    তা প্রত্যাখ্যাত।[45]
    তাবলীগ জামায়াতের প্রতি আমাদের
    আহবান :
    যদি আপনারা প্রকৃত তাবলীগ করতে চান
    তাহলে টঙ্গী থেকে ঘোষণা দিন
    (ক) আসুন! পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের
    প্রতি আমল করি।
    (খ) মূর্তিপুজা হারাম, যে লোক
    নিজে ছালাত পড়ে ও মূর্তিপুজাকে নীরব
    সমর্থন
    করে সে প্রকারান্তে মূর্তিপুজা করে।
    (গ) ফাযায়েলে আমাল নয়, আল-কুরআনই
    মুসলিমদের একমাত্র সংবিধান।
    (ঘ) মুরুববী, হুজুর, আকাবীর, বুযুর্গদের স্বপ্ন ও
    বিদ‘আতী আমল আর নয়, আজ
    থেকে সুন্নাতের অনুসারী হোন।
    (ঙ) পান, জর্দা, তামাক, গুল সহ সকল
    নেশাদার দ্রব্য হারাম। (চ) নির্ভয়ে বলুন!
    মাযারে পুস্পস্তবক অর্পণ করা, জীবিত ও মৃত
    মানুষদের সম্মানে দাঁড়ানো,
    শিখা চিরন্তন, শিখা অনির্বাণ সহ যাবতীয়
    শিরকী কর্মকান্ড বন্ধ করুন।
    (ছ) সকল ধর্মের লোকের বাৎসরিক
    মুনাজাতে অংশ নেওয়ার
    আগে কালেমা পড়ে মুসলিম হতে হবে।
    অন্যথায় এ ধরনের
    ইজতেমাকে ইসলামী বলা যায় কিভাবে?
    যদিও ফরয ছালাতের পর সম্মিলিত হাত
    তুলে দু‘আ করা বিদ‘আত।
    হিন্দুরা গঙ্গায় সণান করে। একটা মন্ত্র
    পড়ে সকল পাপ মোচন করে ফিরে আসে।
    আর ইলিয়াসী জামায়াতের
    ভাইয়েরা টঙ্গী ইজতেমায়
    গিয়ে একখানা আখেরী মুনাজাত
    দিয়ে গুনাহ মোচন করে ফিরে আসে!
    অতএব আসুন, ফাযায়েলে আমলকে তুরাগ
    নদীতে বিসর্জন দিয়ে পবিত্র কুরআন ও
    ছহীহ হাদিছ ভিত্তিক আমল করার
    চেষ্টা করি।
    উপসংহার :
    মুসলিম সমাজে ক্রমশঃ আল্লাহ প্রদত্ত
    পবিত্র কুরআন ও সুন্নাতে নববীর নির্ধারিত
    দ্বীনের পরিবর্তে কিছু মনগড়া নবাবিস্কৃত
    আদর্শ ও নীতি অনুপ্রবেশ করছে।
    ফলশ্রুতিতে আমরা প্রকৃত ইসলাম
    থেকে দূরে সরে যাচ্ছি। আমাদের
    মধ্যে তাওহীদ ও সুন্নাহর পরিবর্তে শিরক
    বিদ‘আতের প্রাদুর্ভাব ঘটছে।
    তাবলীগপন্থীদের টুপি, পাগরী,
    লম্বা পোশাকের বাহ্যিক রূপ
    দেখে অনেকে মনে করেন এরাই সঠিক
    পথে আছে। বহু
    মসজিদে তাদেরকে দেখতে পাবেন,
    ‘বাকি নামাজ বাদ ঈমান ও আমলের
    কথা হবে আমরা সবাই বসি বহুত
    ফায়দা হবে’।
    আসলে প্রকৃতপক্ষেই ঐসব শিরক-
    বিদ‘আতীদের
    মজলিসে আপনি বসলে ঈমান ও
    আমলে ফায়দা তো দূরের কথা বরং ঈমান ও
    আমল দু’টিই হারাবেন। কারণ আক্বীদা শুদ্ধ
    না হলে আমল বেকার হয়ে যাবে।
    একথা অনস্বীকার্য যে,
    ইলিয়াসী তাবলীগের সাহচর্যে বেশ
    কিছুলোক ছালাত-ছিয়াম ধরেছেন। কিন্তু
    সেই সাথে তারা মাকাল ফলরূপী জাল ও
    যঈফ হাদীছের ঘূর্ণিপাকে ঘুরপাকও
    খাচ্ছেন এবং বহু কাল্পনিক ঘটনার
    ঘোরে মজে রয়েছেন। এমতাবস্থায়
    তাদের সামনে বাহ্যিক আকর্ষণহীন ছহীহ
    হাদীছে পেশ করলে তারা মাকাল ফলের
    মত আকৃষ্ট হন না এবং সত্য
    ঘটনা শুনে মজা পান না। তাই তারা জাল-
    হাদীছ ও মিথ্যা তথ্য
    পেশকারীদেরকে পরম
    হিতাকাঙ্খী মনে করে। আর ছহীহ তথ্য
    পেশকারীদেরকে চরম শত্রু ভাবছেন
    এবং কিছু ইলিয়াসী তাবলিগী মুবাল্লিগ
    তাদেরকে নাচাচ্ছেন। ফলে কোন কোন
    জায়গায় ছহীহ ও জাল হাদীছ ওয়ালাদের
    মধ্যে সংঘর্ষ দেখা দিচ্ছে।
    ‘ফাযায়েলে আমাল’ বইটিতে কুরআন ও
    হাদীছের পরিপন্থী অনেক কথা আছে।
    আবার পবিত্র কুরআনের কিছু সঠিক ব্যাখ্যাও
    আছে। যঈফ ও জাল হাদীছের সাথে কিছু
    সঠিক হাদীছও আছে। সত্য-মিথ্যার
    সংমিশ্রিত কিতাব তাবলীগী নিছাব
    তথা ফাযায়েলে আমাল পাঠাভ্যাস ও
    শ্রবণ বর্জন করা উচিত। কারণ মদ ও
    জুয়া সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ঐ
    দু’টির মধ্যে বড় পাপ আছে এবং লোকদের
    জন্য লাভও আছে। তবে ওদের
    পাপটা ওদের লাভের চেয়ে বেশী বড়’
    (বাক্বারাহ ২/) । এমতাবস্থায় আল্লাহ
    তা‘আলা যাদের রব, মুহাম্মাদ (ছাঃ)
    যাদের আদর্শ, কুরআন যাদের সংবিধান,
    তাওহীদ, রেসালাত এবং আখেরাত
    যাদের ঈমানের মূল বিষয়, তাক্বওয়া ও
    আল্লাহর সন্তুষ্টি যাদের কাম্য তাদের
    নিকট ঐ ভুল কিতাবটি অবশ্যই পরিহার
    করা উচিত। আল্লাহ আমাদের সহায় হোন।
    আমীন!
    [1]. বুখারী, মিশকাত হা/১৯৮।
    [2]. তিরমিযী, মিশকাত হা/৫১৪০, সনদ
    হাসান।
    [3]. বুখারী হা/৩২৭৪, তিরমিযী হা/২৬৬৯ ।
    [4]. মুসলিম হা/২০৫ ।
    [5]. বুখারী হা/৫৭ ।
    [6]. মাওলানা আবুল হাসান ‘আলী রচিত
    মাওলানা ইলয়াস
    রাহমাতুল্লাহি ‘আলাইহি আওর
    উনকি দ্বীনী দা‘ওয়াত- ৪৮, ৫৭, ৬১, ১৯৩
    পৃষ্ঠা এবং রববানী বুক ডিপো প্রকাশিত
    তাবলীগী নিসাব-এর ভূমিকা পৃষ্ঠ দ্রষ্টব্য।
    [7]. মালফূযাতে মাওলানা মুহাম্মাদ
    ইলিয়াস, পৃঃ ৫১ ।
    [8]. মালফূযাতে মাওলানা মুহাম্মাদ
    ইলিয়াস, পৃঃ ৫১ ।
    [9]. ফাযায়েলে আমাল, ভূমিকা, ১ম পৃষ্ঠা ।
    [10]. যাকারিয়া সাহারানপুরী, অনুবাদ :
    মোহাম্মাদ সাখাওাত উল্লাহ,
    ফাযায়েলে ছাদাকাত,
    (তাবলিগী কুতুবখানা ১৪২৬ হিজরী) ২য়
    খন্ড, পৃষ্ঠা : ২৭ ।
    [11]. ফাযায়েলে হাজ্জ, পৃঃ ১৩০-১৩১ ।
    [12]. শায়খুল হাদীছ মাওলানা মুহাম্মাদ
    যাকারিয়া ছাহেব কান্ধলভী (রহঃ);
    অনুবাদ : মুফতী মুহাম্মাদ উবাইদুল্লাহ,
    ফাযায়েলে যিকির, (দারুল কিতাব :
    বাংলাবাজার, ঢাকা; অক্টোবর, ২০০১ ইং),
    পৃঃ ১৩৫ ।
    [13]. মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৫৬১২ ।
    [14]. ফাযায়েলে ছাদাকাত ২/২৭ ।
    [15]. ফাযায়েলে যিকির, পৃঃ ৭০ ।
    [16]. আকফাতুন মাঅ জামায়াতিত তাবলীগ,
    পৃঃ ৫৯ ।
    [17]. মুসলিম, মিশকাত-১৪২ ।
    [18]. মালফূযাতে মাওলানা মুহাম্মাদ
    ইলিয়াস, শেষ পৃষ্ঠা।
    [19]. তারিখ: ৬/১২/১৪১৬ হিজরী, মক্কা,
    ফাতাওয়া ও চিঠিপত্র বিভাগ, গ্রান্ড
    মুফতী শায়খ আব্দুল আযীয বিন বায,
    সঊদী আরব ।
    [20]. শায়খ মুহাম্মাদ বিন ছালেহ আল
    উছায়মীন (র:) কর্তৃক স্বাক্ষরিত ফতওয়া,
    ফাতাওয়া ও চিঠিপত্র বিভাগ, সঊদী আরব ।
    [21]. তারিখ: ১৯/১/১৩৮২ হিজরী, ফতওয়া ও
    চিঠিপত্র, গ্র্যান্ড মুফতী শাইখ মুহাম্মাদ বিন
    ইবরাহীম, খন্ড ১, পৃষ্ঠা ২৬৭-২৬৮, স্মারক
    নং ৩৭/৮/৫ ডি. ২১/১/১৩৮২ সঊদী আরব ।
    [22]. ইমারতী ফাতাওয়া,
    আল্লামা নাসিরুদ্দীন আলবানী, পৃষ্ঠা-৩৮ ।
    [23]. ফাতাওয়া ও চিঠিপত্র বিভাগ, শাইখ
    আব্দুর রাযযাক আফিফী ফাতাওয়া, খন্ড ১,
    পৃষ্ঠা ১৭৪, সঊদী আরব ।
    [24]. তারিখ: ১৩/৫/১৪১৭ হিজরী,
    ফাতাওয়া ও চিঠিপত্র, শাইখ সালহ বিন
    ফাওযান (রহ:), সঊদী আরব এবং দাওয়াত ও
    ইলমের ব্যাপারে তিনটি বক্তব্য-শায়েখ
    ফাওযান ।
    [25]. ফাযায়েলে আমাল- ভূমিকায় ১ম পৃষ্ঠা

    [26]. ফাযায়েলে হজ্জ, পৃঃ ১৫৫-১৫৬ ।
    [27]. ফাযায়েলে হজ্জ, পৃঃ ১৫৯ ।
    [28]. ফাযায়েলে হজ্জ, পৃঃ ১৬২-১৬৩ ।
    [29]. ফাযায়েলে হজ্জ, পৃঃ ১৬২-১৬৩ ।
    [30]. ফাযায়েলে হজ্জ, পৃঃ ১৬৭ ।
    [31]. ফাযায়েলে হজ্জ, পৃঃ ১৫৯ ।
    [32]. ফাযায়েলে দরুদ, পৃঃ ১৪২ ।
    [33]. ফাযায়েলে দরুদ, পৃঃ ১৪২ ।
    [34]. ফাযায়েলে দরুদ, পৃঃ ১৪৩ ।
    [35]. ফাযায়েলে দরুদ, পৃঃ ১৪৩ ।
    [36]. ফযায়িলে দরুদ, পৃঃ ১৪৪ ।
    [37]. ফযায়িলে দরুদ, পৃঃ ১৪৪ ।
    [38]. ফাযায়েলে নামায, পৃঃ ৩৪-৩৫ ।
    [39]. ফাযায়েলে নামায, পৃঃ ৯৪, ১০২ ।
    [40]. ফাযায়েলে নামায, পৃঃ ৯৮ ।
    [41]. ফাযায়েলে যিকির, পৃঃ ১৫৩-১৫৪ ।
    [42]. ফাযায়েলে যিকির, পৃঃ ১৫৩ ।
    [43]. হেকায়াতে সাহাবা, পৃঃ ২৬২-২৬৩ ।
    [44]. মুসলিম, হা/৪২৪৩ ।
    [45]. মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/১৪০।

    Professor Answered on March 27, 2015.
    Add Comment
  • RELATED QUESTIONS

  • POPULAR QUESTIONS

  • LATEST QUESTIONS

  • Your Answer

    By posting your answer, you agree to the privacy policy and terms of service.