কারিগরি শিক্ষার উপযোগিতা বিষয়ে জনসাধারণকে কিভাবে বুঝানো সম্ভব?
কারিগরি শিক্ষার উপযোগিতা বিষয়ে জনসাধারণকে কিভাবে বুঝানো সম্ভব?
কোন জাতির স্কিল্ড ওয়ার্কার তৈরিতে যেমন উচ্চশিক্ষা জরুরী, তেমনি জরুরী ভোকেশনাল ট্রেনিং (Vocational Education and Training – VET)। পেশাগত অর্থে, ভোকেশনাল শিক্ষাব্যবস্থা (ভেট) হল কাউকে চাকুরী বা কর্মের জন্য উপযুক্ত করে তৈরি করা। সামষ্টিক অর্থে ভেট ট্রেনিং ব্যবস্থা নির্ভর করে কোন দেশের আর্থসামাজিক ও ইনভায়ারনমেন্টাল প্রেক্ষাপটের উপর। এ অর্থে পৃথিবীর যে কোন দেশের চেয়ে আমাদের দেশের ভেট ব্যবস্থা হবে আরো বেশী বিস্তৃত ও সাস্টেনেবল। বিদেশে ভেটে শিক্ষা দেয় ব্যবসায়ে, প্রশাসনে, বিজ্ঞানে, ইঞ্জিনিয়ারিঙে, হেলথসাইন্সে, ইত্যাদি। তাই মাঝে মাঝে ভেট’কে বলা হয় স্বীকৃত টেকনিক্যাল এডুকেশন ব্যবস্থা যার কদর অনেক সময় বিশ্ববিদ্যালয়’কেও ছাড়িয়ে যাই। এ শিক্ষা ব্যবস্থার কদর পশ্চিমাদেশে অপরিসীম যার পরিসর সুদূর ইউরোপ, আমেরিকা থেকে অষ্ট্রেলিয়া। উল্লেখ্য, শুধু অষ্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়াতেই (১ স্টেটেই) ভেট শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য বছরে সরকার খরচ করে ০.৬ বিলিয়ন ডলার (ডিপ্লোমার জন্য মিনিমাম ২ বছর সময় লাগে, ফলে বাজেট লাগে ১.২ মিলিয়ন ডলার)। তাহলে সারা দেশে কত টাকা সরকার খরচ করছে ভকেশনাল ট্রেনিং এ তা সহজেই অনুমেয় কারণ ৮টা স্টেট অষ্ট্রেলিয়াতে! একটি দেশের দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম। বাস্তবতা বিবর্জিত শিক্ষা ব্যবস্থা জাতিকে হতাশায় নিমজ্জিত করে, পক্ষান্তরে শিক্ষা যদি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা যায় তাই ব্যক্তি ও সমাজের জন্য মঙ্গলজনক।কারিগরি শিক্ষায় দক্ষ বা পারদর্শিতার মাধ্যমে নিজেকে আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তোলা যায়। বাংলাদেশের বিকাশমান শিল্প-কলকারখানায় প্রতিনিয়তই বাড়ছে কারিগরি শিক্ষায় দক্ষ কর্মীর চাহিদা। অথচ অনেক ক্ষেত্রেই শিল্প-কলকারখানাগুলো নিজেদের চাহিদামতো কারিগরি শিক্ষায় দক্ষ কর্মী নিয়োগ দিতে পারছে না। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, কারিগরি শিক্ষা যে কোনো দেশের জন্যই অপরিহার্য একটি বিষয় হলেও, আমাদের দেশে তা’ আজও অবহেলিতই থেকে গেছে।