সুলায়মান (আঃ)পিপীলিকার ঘটনা কি জানাবেন?
সুলায়মান (আঃ)পিপীলিকার ঘটনা কি জানাবেন?
হযরত
সুলায়মান (আঃ) একদা তাঁর
বিশাল সেনাবাহিনী সহ একটি
এলাকা অতিক্রম করছিলেন। ঐ সময়
তাঁর সাথে জিন, মানুষ পক্ষীকুল
ছিল। যে এলাকা দিয়ে তাঁরা
যাচ্ছিলেন সে এলাকায় বালির
ঢিবি সদৃশ পিপীলিকাদের বহু
বসতঘর ছিল। সুলায়মান
বাহিনীকে আসতে দেখে
পিপীলিকাদের সর্দার
তাদেরকে বলল, তোমরা শীঘ্র
পালাও। নইলে পাদপিষ্ট হয়ে
শেষ হয়ে যাবে। সুলায়মান (আঃ)
পিপীলিকাদের এই বক্তব্য শুনতে
পেলেন। এ বিষয়ে কুরআনী বর্ণনা
নিম্নরূপ:
ﻭَﻭَﺭِﺙَ ﺳُﻠَﻴْﻤَﺎﻥُ ﺩَﺍﻭُﻭﺩَ ﻭَﻗَﺎﻝَ ﻳَﺎ ﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟﻨَّﺎﺱُ ﻋُﻠِّﻤْﻨَﺎ
ﻣَﻨﻄِﻖَ ﺍﻟﻄَّﻴْﺮِ ﻭَﺃُﻭﺗِﻴﻨَﺎ ﻣِﻦ ﻛُﻞِّ ﺷَﻲْﺀٍ ﺇِﻥَّ ﻫَﺬَﺍ ﻟَﻬُﻮَ
ﺍﻟْﻔَﻀْﻞُ ﺍﻟْﻤُﺒِﻴﻦُ – ﻭَﺣُﺸِﺮَ ﻟِﺴُﻠَﻴْﻤَﺎﻥَ ﺟُﻨُﻮﺩُﻩُ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﺠِﻦِّ
ﻭَﺍﻟْﺈِﻧﺲِ ﻭَﺍﻟﻄَّﻴْﺮِ ﻓَﻬُﻢْ ﻳُﻮﺯَﻋُﻮﻥَ- ﺣَﺘَّﻰ ﺇِﺫَﺍ ﺃَﺗَﻮْﺍ ﻋَﻠَﻰ
ﻭَﺍﺩِﻱ ﺍﻟﻨَّﻤْﻞِ ﻗَﺎﻟَﺖْ ﻧَﻤْﻠَﺔٌ ﻳَﺎ ﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟﻨَّﻤْﻞُ ﺍﺩْﺧُﻠُﻮﺍ
ﻣَﺴَﺎﻛِﻨَﻜُﻢْ ﻻَ ﻳَﺤْﻄِﻤَﻨَّﻜُﻢْ ﺳُﻠَﻴْﻤَﺎﻥُ ﻭَﺟُﻨُﻮﺩُﻩُ ﻭَﻫُﻢْ ﻻَ
ﻳَﺸْﻌُﺮُﻭﻥَ- ﻓَﺘَﺒَﺴَّﻢَ ﺿَﺎﺣِﻜﺎً ﻣِّﻦ ﻗَﻮْﻟِﻬَﺎ ﻭَﻗَﺎﻝَ ﺭَﺏِّ
ﺃَﻭْﺯِﻋْﻨِﻲ ﺃَﻥْ ﺃَﺷْﻜُﺮَ ﻧِﻌْﻤَﺘَﻚَ ﺍﻟَّﺘِﻲ ﺃَﻧْﻌَﻤْﺖَ ﻋَﻠَﻲَّ ﻭَﻋَﻠَﻰ
ﻭَﺍﻟِﺪَﻱَّ ﻭَﺃَﻥْ ﺃَﻋْﻤَﻞَ ﺻَﺎﻟِﺤﺎً ﺗَﺮْﺿَﺎﻩُ ﻭَﺃَﺩْﺧِﻠْﻨِﻲ
ﺑِﺮَﺣْﻤَﺘِﻚَ ﻓِﻲ ﻋِﺒَﺎﺩِﻙَ ﺍﻟﺼَّﺎﻟِﺤِﻴﻦَ – (ﻧﻤﻞ ১৬-১৯ )-
‘সুলায়মান দাঊদের
স্থলাভিষিক্ত হ’ল এবং বলল, হে
লোক সকল! আমাদেরকে
পক্ষীকুলের ভাষা শিক্ষা
দেওয়া হয়েছে এবং
আমাদেরকে সবকিছু দেওয়া
হয়েছে। নিশ্চয়ই এটি একটি সুস্পষ্ট
শ্রেষ্ঠত্ব’ (নমল ১৬) । ‘অতঃপর
সুলায়মানের সম্মুখে তার
সোনাবাহিনীকে সমবেত করা
হ’ল জিন, মানুষ ও পক্ষীকুলকে।
তারপর তাদেরকে বিভিন্ন ব্যুহে
বিভক্ত করা হ’ল’ (১৭) । ‘অতঃপর যখন
তারা একটি পিপীলিকা
অধ্যুষিত এলাকায় উপনীত হ’ল, তখন
এক পিপীলিকা বলল, ‘হে
পিপীলিকা দল! তোমরা
তোমাদের গৃহে প্রবেশ কর।
অন্যথায় সুলায়মান ও তার
বাহিনী অজ্ঞাতসারে
তোমদেরকে পিষ্ট করে ফেলবে’
(১৮) । ‘তার কথা শুনে সুলায়মান
মুচকি হাসল এবং বলল, ‘হে আমার
পালনকর্তা! তুমি আমাকে ক্ষমতা
দাও, যেন আমি তোমার নে‘মতের
শুকরিয়া আদায় করতে পারি, যা
তুমি আমাকে ও আমার পিতা-
মাতাকে দান করেছ এবং যাতে
আমি তোমার পসন্দনীয় সৎকর্মাদি
করতে পারি এবং তুমি আমাকে
নিজ অনুগ্রহে তোমার
সৎকর্মশীল বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত
কর’ (নমল ২৭/১৬-১৯) ।
উপরোক্ত আয়াতগুলিতে
প্রমাণিত হয় যে, সুলায়মান (আঃ)
কেবল পাখির ভাষা নয়, বরং সকল
জীবজন্তু এমনকি ক্ষুদ্র পিঁপড়ার
কথাও বুঝতেন। এজন্য তিনি
মোটেই গর্ববোধ না করে বরং
আল্লাহর অনুগ্রহের প্রতি শুকরিয়া
আদায় করেন এবং নিজেকে
যাতে আল্লাহ অন্যান্য
সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত করেন
সে প্রার্থনা করেন। এখানে
আরেকটি বিষয় প্রমাণিত হয় যে,
তিনি কেবল জিন-ইনসানের নয়
বরং তাঁর সময়কার সকল জীবজন্তুরও
নবী ছিলেন। তাঁর নবুঅতকে সবাই
স্বীকার করত এবং সকলে তাঁর
প্রতি আনুগত্য পোষণ করত। যদিও
জিন ও ইনসান ব্যতীত অন্য প্রাণী
শরী‘আত পালনের হকদার নয়।