টেনশনের সাথে চুল পাকার সম্পর্ক কি?
চুল কেরাটিন নামের একরকম প্রোটিন দিয়ে তৈরি হয়। চুলে ৯৭ ভাগ প্রোটিন ও ৩ ভাগ পানি রয়েছে। চুলের যেটুকু আমরা দেখি সেটি মৃত কোষ। কারণ এতে অনুভূতিশীল কোনো কোষ নেই। আমাদের ত্বকে মেলানোসাইট নামে এক ধরনের কোষ থাকে, যা মেলানিন উৎপাদন করে। যাদের কম মেলানিন উৎপাদন হয় তাদের গায়ের রঙ সাদা হয় এবং বেশি উৎপাদন হলে গায়ের রঙ কালো হয়। চুলের ক্ষেত্রেও একই কথা বলা যায়। যদি কোনো কারণে চুলের গোড়ার মেলানোসাইট কোষ নিষ্ক্রিয় হয়ে মেলানিনের উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়- ফল স্বরূপ চুলের রঙ সাদা হয় যাকে আমরা চুল পাকা বলি। এটা যে কোনো বয়সেই ঘটতে পারে।
গবেষণায় দেখা গেছে, বংশগত কারণে অনেকের মধ্যে এ সমস্যাটি ঘটে। অল্প বয়সে যাদের চুল পাকে তাদের কারও কারও মধ্যে অটোইমিউন ডিজিজের কারণে মেলানোসাইট কোষ নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়। ফলে চুলে মেলানিন না পৌছানোর কারণে চুল পাকে। এই অটোইমিউন ডিজিজে ত্বকে মেলানোসাইটের বিরুদ্ধে অ্যান্টি মেলানোসাইট অ্যান্টিবডি তৈরি হয় , যা মেলানোসাইট কোষকে ধ্বংস করে দেয়। গবেষনায় দেখে দেছে, খুব বেশি জ্বর, দীর্ঘমেয়াদি কোনো অসুখ এবং মানসিক দুশ্চিন্তায় অল্প বয়সে চুল পাকার কারণ কারন হতে পারে।
এছাড়া চুলে পর্যাপ্ত প্রোটিনের অভাব হলে চুল পাকা শুরু করে। চুলের রংয়ের পিগমেন্ট কোষ চুলের গোড়ায় থেকে প্রতিটি চুলের স্বাভাবিক রং বজায় রাখে। কিন্তু মধ্যবয়সে চলে যাবার পর থেকে বয়স বাড়ার সাথে সাথে চুলের পিগমেন্ট কোষগুলো মারা যেতে থাকে এবং একটি একটি করে চুলের রং বদলে যেতে থাকে। আর এভাবেই ধীরে ধীরে সমস্ত চুল কালো থেকে ধূসর বা সম্পূর্ণ সাদা রংয়ে রূপ নেয়।
চুল পাকাতে দায়ী বিভিন্ন হরমোন মানুষ যখন বেশি টেনশন করে থাকেন তখন বেশি করে নিঃসৃত হয়। আর এজন্য টেনশনের কারণে একজনের চুল পাকতে পারে।