একেক মানুষ এই গন্ধটিকে একেকভাবে ব্যাখ্যা করে থাকেন। কারো কাছে এটি শুধুই পুরনো কাগজের গন্ধ। কারো কাছে এই গন্ধ বয়ে নিয়ে আসে পুরনো স্মৃতি। কিন্তু বিজ্ঞান কি বলে? এই সুগন্ধের পেছনে রয়েছে শত শত জৈবিক উদ্বায়ী (volatile organic compound, VOC) পদার্থ। বইয়ের কাগজ, কালি, আঠা সবকিছুর মাঝে থাকে এসব উদ্বায়ী পদার্থ। সময়ের সাথে সাথে এসব রাসায়নিক ভাংতে থাকে আর বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে বিশেষ সেই গন্ধ। নতুন বইয়ের মাঝেও কিন্তু এক ধরণের গন্ধ থাকে। বই কেনার পর এর পাতায় নাক ডুবিয়ে দেখতে পারেন। কিন্তু তার সাথে পুরনো বইয়ের গন্ধের বিস্তর ফারাক। আবার বিভিন্ন ধরণের VOC ব্যবহার করে বই তৈরি করলে তাতে গন্ধটাও আলাদা হবে বই কি।
বই তৈরিতে যদি ব্যবহৃত হয় বেনজালডিহাইড, তবে তার সুগন্ধটা হবে অনেকটা কাঠবাদামের মতো, ভ্যানিলিন ব্যবহার করলে হবে ভ্যানিলার মতো। মিষ্টি গন্ধ আসে টলুইন এবং ইথাইল বেনজিন থেকে, আর ২-ইথাইল হেক্সানল থেকে আসে ফুলেল সুবাস। শুধু তাই নয়, বইটি যদি কখনো বৃষ্টিতে ভিজে থাকে, আগুনের ধোঁয়ার মাঝে পড়ে থাকে অথবা এর মাঝে রেখে শুকানো হয় ফুল-লতাপাতা, তাহলে এর গন্ধটি হবে একেবারেই অন্যরকম।
নিছক জানার জন্য জানা নয়, কি কারণে বইয়ের গন্ধ অন্যরকম হয় তা জেনে রাখার পেছনে কিন্তু উপকারিতাও আছে। গন্ধ থেকে বোঝা যেতে পারে পুরনো বইটি দ্রুত নষ্ট হয়ে যাবার কোনো ভয় আছে কিনা। একটি গবেষণায় জানা যায় এমন ১৫ টি VOC আছে যাদের কারণে বই খুব দ্রুত নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
(মূল: IFLScience)