আজ আপনার থেকে কী শিখতে পারি?
১. আমরা বেচে থাকি শুধুমাত্র বিভিন্ন লক্ষ পুরনের জন্য। একটা লক্ষ পুরণ হয়ে গেলে আর একটা লক্ষ এসে সামনে হাজির হয়। যখন ভাবতে বসি তখন খুজে পাই সব লক্ষ্য পুরণ ই অলাভজনক। আমি যত কষ্ট করে আজকের এই অবস্থায় এসেছি তা অনেক পাওয়া কিন্তু এরজন্য আমাকে যা যা ছাড়তে হয়েছে তার মূল্য এর চেয়ে অনেক বেশী। সে জন্য মনেহয় বেচে থাকাটা শুধুমাত্র মরে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করা। লক্ষ অর্জণ মাঝখানে শুধু শুধু বশে না থেকে কিছু করা। বসে বসে মরার অপেক্ষা তো করা যায় না তাই।
২. আমি লাইফ থেকে যেই বিষয়টা শিখতে পেরেছি তা হল যেচে কাউকে উপকার করতে নাই অর্থাৎ কেউ না চাইলে তাকে আগ বাড়িয়ে উপকার করতে নেই তাহলে আপনি নিজেই বিপদে পরবেন …তাছাড়া আপনি নিজ থেকে আগ বাড়িয়ে যতো উপকার করেন না কেন সেইটা সে মনে রাখবে না এবং মূল্যও দিবে না … বরঞ্চ তার প্রয়োজনে যে উপকার করবেন সেটাই সে সারা জীবন মনে রাখবে … ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করবে। আর তার প্রয়োজনে যদি কোন কারণে আপনি তাকে সহযোগিতা করতে না পারেন তাহলে সেটাই সারা জীবন মনে রাখবে … সেইটাই আপনাকে সবসময় দেখিয়ে দিবে এবং আপনার পূর্বের অসংখ্য আগ বাড়িয়ে উপকার সে ভুলে যাবে … এটাই স্বাভাবিক [ এই ব্যাপারটা সবার ক্ষেত্রে নয় তবে অধিকাংশ মানুষের ক্ষেত্রে ঘটে ]
৩. কাউকে দৌড়ানি দিতে হলে প্রথমে নিজে ভাল করে শিখে নিতে হয় কিভাবে দৌড়াতে হয় তা না হলে দৌড়ানি দিতে গিয়ে দৌড়ানি খেয়ে আসার সম্ভবনা থাকে।
৪. জীবন তো একটাই , এই এক জীবন যদি টাকা ইনকাম আর খাওয়ার পিছনে ব্যয় করে দেই তাহলে লাইফে আর থাকল কি…অন্য সাধারন মানুষের মত ভালো জব করে ভালো টাকা ইনকাম করে নিজের বউ , ছেলে , মেয়ে কে আরামদায়ক ও অলস জিবন দিলাম …কিন্তু এতে আমার লাভ কি হল …বরঞ্চ আমি আমার ছেলে মেয়েকে পরনির্ভরশীল করে দিলাম। একদিন আমি ঠিকই মারা যাব … গুটি কিছু কাছের লোক ছাড়া আমার বেঁচে থাকার প্রয়োজনীয়তা কেউ অনুভব করল না …তাহলে কি এই জীবনের কোন মানে আছে !!!!!!
৫. যা হয়েছে তা ভালই হয়েছে , যা হচ্ছে তা ভালই হচ্ছে , যা হবে তাও ভালই হবে। তোমার কি হারিয়েছে , যে তুমি কাঁদছ ? তুমি কি নিয়ে এসেছিলে , যা তুমি হারিয়েছ ? তুমি কি সৃষ্টি করেছ , যা নষ্ট হয়ে গেছে ? তুমি যা নিয়েছ , এখান থেকেই নিয়েছ , যা দিয়েছ এখানেই দিয়েছ। তোমার আজ যা আছে কাল তা অন্যকারো ছিল , পরশু সেটা অন্যকারো হয়ে যাবে। পরিবর্তনই সংসার এর নিয়ম।
৬. কয়লা ধুইলে কয়লার ময়লা যাবেনা ঠিকই কিন্তু কয়লা ক্ষয়েক্ষয়ে নিঃশেষ হওয়ার সুযোগ থাকে। আর আমাদের সবার সে সুযোগটা নেয়া উচিত।
৭. মানুষের জীবন ক্ষরস্রোত নদীর মত। পাথরের আঘাতে আঘাতে যেমন নদী সৃষ্টি তেমনি মানুষের বাধ আর আঘাতে আঘাতে পরিপূর্নতা আসে। অভিজ্ঞতা অর্জিত হয়ে । যা খেয়ে খেয়ে সে জীবনকে বুঝতে শিখে চিনতে শেখে। পাথরের আঘাতে আঘাতে যেমন নদী আকাঁ বাকাঁ হয় তেমনি মানুষের জীবনেও দেখা যায় একটি পথে পা বাড়াল কিন্তু পথটি বন্দ বাধা পেয়ে সে অন্য পথে পা বাড়ায়। একসময় ঠিকই তার পথ পেয়ে যায়। এভাবে মানুষের জীবন সৃষ্টি হয়। নদীতে যেমন ঢেউ উঠে মানুষের জীবনেও তেমনি দুঃখ , কষ্ট , শূন্যতার ঝড় উঠে। সময়ের বিবর্তনে যেমন নদীর ঢেউ থেমে যায় । তেমনি জীবনের ঢেউও থেমে যায়। তাই ঢেউ যখন উঠেছে শান্ত হতে সময়তো লাগবেই।
৮. মানুষের মৃত্যু দিন হচ্ছে তার সত্যিকার জন্মদিন। কারণ , জন্ম থেকে শুরু হওয়া সার্কিটটা সম্পূর্ণ হয় মৃত্যুতে এসে। মৃত্যুর পর একজন মানুষের পোর্টেটটা সামনে দৃশ্যমান হয়। তাই মৃত্যুই তার আসল জন্মদিন।
৯. মৃত্যুদণ্ড খুবই নিম্নমানের একটা শাস্তি। কারণ সেটা অপরাধীকে মুক্তি দেয় আর শাস্তি দেয় কিছু নিরপরাধ মানুষদের ( যেমনমা , বাবা ভাই , বোন , বউ , ছেলেমেয়ে আত্মীয়স্বজন।
১০. পৃথিবীতে প্রত্যেকটি মানুষের কাছে জীবনের অর্থ আলাদা। আমার জীবনের অর্থ যেমন সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে বদলায় তেমনি আমার মনে হয় প্রত্যেকটি মানুষ তার জীবনকে ভিন্ন সময়ে ভিন্ন অর্থে খুঁজে পায়। কোন কোন মানুষের জন্য এই সুন্দর পৃথিবীতে বেঁচে থাকার নামই জীবন। আবার কেউ কেউ শুধু বাঁচাটাকে জীবনের অর্থ মনে করে না , তারা জীবনে সুখ খুঁজে পাওয়াটাকে মনে করে জীবন। কিছু মানুষ মনে করেন অনেক টাকা পয়সা এবং সম্পত্তির মালিক হতে পারলেই জীবনের আসল অর্থ খুঁজে পাওয়া সম্ভব। আসলে 0জীবন হলঃ একটি সুন্দর সকালের শুরু মানে জীবন … প্রতিটি মুহুর্তটিকে আনন্দের সাথে কাটানোর মানে জীবন , আত্নসন্তুষ্টি লাভ করার মানে জীবন , সবরকমের যন্ত্রণাকে লাঘব করার মানে জীবন , সব দুঃখ কষ্টকে জয় করে … প্রতিটি নিজের ইচ্ছায় চলা এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর নামই জীবন।
১২. ‘ জীবন প্রবহমান এক গতিধারা। কখনো তরঙ্গময় , কখনো নিস্তরঙ্গ। ক্ষণিকের যাত্রা হয়তো। আর কিছু না। বেঁচে থাকাই যেন বিস্ময় , তবে ভালো কাজের মাধ্যমে জীবনকে উপভোগ করাটাই মানুষের জীবনের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত। যাতে মৃত্যুর পরও মানুষ বেঁচে থাকার সময়ে যে কাজ করা হয় তা নিয়ে আলোচনায় মেতে থাকে। জীবন যাতে মানবকল্যাণে , দেশের কল্যাণে নিবেদিত থাকে । আমি এই প্রজন্মকে কী দিতে পারি আমি কেউ নই , কিছু নই। আমি শুধু দিতে পারি আমার জীবনটাকে।
১৩. ‘ জীবন বোঝার সবচেয়ে বড় উপায় হচ্ছে জীবনকে বাঁচিয়ে রাখা , নিজের মতো করে জীবনটা যাপন করা।
১৪ . “ আমার সব সমস্যা তুমি ” দাঁড়াও , এটুকু শুনেই চলে যেও না। পুরো বাক্যটা তো “ আমার সব সমস্যা তুমি আসার পর মিটে গেছে ” – হতে পারে।
১৫. * পূর্ব পরিকল্পনা করে সময় নষ্ট না করে। যখনকার পরিকল্পনা তখন নিতে হবে … কেননা কোন ঘটনা যে পূর্বপরিকল্পনার মত ঘটবে তার তো কোন নিয়শ্চয়তা নেই তাহলে কেন আমি পূর্বপরিকল্পনা করে সময় এবং ব্রেন দুটোরই অপচয় করব।
১৬. অতি প্রত্যাশা সব সময় হতাশায় পরিনত হয়। কখনো অতি প্রত্যাশা করবেন না। প্রত্যাশা করার আগে নিজের যোগ্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হোন। তারপর যোগ্যতা অনুযায়ী প্রত্যাশা করুন। প্রত্যাশানুযায়ী কোন কিছু না পেলে স্বাভাবিক ভাবেই হতাশা এসে মনের মধ্যে ভর করে। কাজেই প্রত্যাশা করার পূর্বে বাস্তবতা চিন্তা করুন। অবাস্তব কোন কিছুর পেছনে ছুটলে জীবন থেকে যেমন মূল্যবান সময় চলে যায় তেমনি জীবনের দৈর্ঘ্য কমে যায়। তাই যা করতে সফল হয়েছেন তার জন্য আনন্দবোধ করুন।