নানাভাবে মানুষের আত্মবিশ্বাস প্রকাশ পায়। তবে সবাই আত্মবিশ্বাস প্রকাশ করলেই তা সত্যিকারের আত্মবিশ্বাসী মানুষের পরিচয় দেয় না। কিছু মানুষ কৃতিম আত্মবিশ্বাস প্রকাশ করেন। কিন্তু সত্যিকার আত্মবিশ্বাসী মানুষের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো, তারা অন্যকে প্রভাবিত করেন এবং তাদের পরিকল্পনা শেষ পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়।

১. এরা সত্যিকার অর্থে সুখী হয়ে থাকেন। কারণ আত্মবিশ্বাসী হতে হলে সুখের প্রয়োজন রয়েছে।

আত্মবিশ্বাসী হয়ে কাজ করতে হলে নিজেকে নিয়ে সুখী থাকতে হবে আপনাকে। নিজের কার্যক্রম নিয়ে মানুষ যাই বলুক, তারা নিজের কাজে তুষ্ট থাকেন।

২. তারা অন্যের মতামত বা রায়ে উত্তীর্ণ হতে অস্থির হয়ে থাকেন না। আত্মবিশ্বাসী হতে তারা অন্যের সহায়তা আশা করেন না।

আবার অন্যকে দমিয়ে নিজে এগিয়ে যাওয়ারও তাগাদা তাদের মধ্যে নেই।

৩. মন থেকে সাঁয় না পাওয়া পর্যন্ত তারা কখনো ‘হ্যাঁ’ বলেন না। আবার যা মন চায় না, তার প্রতি সহজেই ‘না’ বলতে পারেন। কোনো কিছুর প্রতি ‘না’ বলা আপনার কাছে যত কঠিন হবে, তত বেশি মানসিক চাপে থাকবেন আপনি। আত্মবিশ্বাসী মানুষরা কখনো দো-টানায় ভোগেন না।

৪. এরা কথা বলার চেয়ে বেশি শোনেন। অন্যের কথা শোনার আগ্রহ বেশি থাকে কিছু শেখার জন্যে। কথা বলে তারা কিছু প্রমাণের চেষ্টা করেন না।

৫. তারা নিশ্চয়তা দিয়ে কথা বলেন। তাদের কথায় আমতা আমতা ভাব থাকে না। তারা সরাসরি নিজের স্পষ্ট মতামত উত্থাপন করেন।

৬. সত্যিকার আত্মবিশ্বাসী মানুষরা নিজের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিতে পছন্দ করেন। ছোট ছোট বিজয় আসলেও তারা এ কাজটি করে থাকেন। এতে করে তাদের মস্তিষ্ক সফলতার তৃপ্তিবোধে সক্রিয় হয়ে ওঠে।

৭. গবেষণায় বলা হয়, যা সপ্তাহে অন্তত দুইবার করে টানা ১০ সপ্তাহ ব্যায়াম করেন, তারা সামাজিক ও মানসিকভাবে আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠেন। সুঠাম দেহ মনটাকে শক্ত করে দেয়।

৮. তারা মানুষের মনোযোগ কাড়তে ব্যস্ত থাকেন না। অন্যের কাছে নিজের গুরুত্ব তুলে ধরতেও তারা ইচ্ছুক নন। তারা সঠিক পরিস্থিতিতে প্রয়োজনীয় আচরণ করতেই বেশি ভালোবাসেন।

৯. ভুল হওয়া বা ব্যর্থতা নিয়ে তারা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত থাকেন না। কারণ এসব থেকে ভুল সম্পর্কে শিক্ষা পাওয়া যায়। এই শিক্ষা তাদের আরো আত্মবিশ্বাসী হতে সহায়তা করে।

১০. আত্মবিশ্বাসী মানুষ সুযোগ পেলে তা গ্রহণ করতে পছন্দ করেন। খুব নেতিবাচক কিছু না থাকলে তারা চ্যালেঞ্জ গ্রহণে ভয় পান না। ব্যর্থ হলে এর কারণ সম্পর্কে জানতে আগ্রহী থাকেন তারা।

১১. অন্যের সফলতায় তারা আনন্দ পান এবং আন্তরিক ধন্যবাদ দিতে ভোলেন না। কারণ আত্মবিশ্বাসীরা তাদের প্রতিযোগীদের নিয়ে কখনোই ভীত হন না। এ কারণে তারা অন্যের ভালো বিষয় যেমন আগে দেখেন, তেমনি নিজের ভালো বিষয় সম্পর্কেও যথেষ্ট সচেতন থাকেন।

১২. সাহায্য চাওয়া দুর্বলতার পরিচায়ক নয়। আত্মবিশ্বাসীরা প্রয়োজনে অন্যের সাহায্য নিতে ভোলেন না। এগুলো সফলতা অর্জনের এমন উৎস যার কাছ থেকে সম্পদ সংগ্রহ করতে হয়। সত্যিকার আত্মবিশ্বাসীরা নিজের দুর্বলতা এবং ক্ষমতা সম্পর্কে সচেতন। দুর্বল স্থানে তারা অন্য উৎস থেকে শক্তি সংগ্রহ করেন।