রাতে সেরা অভ্যাস কী কী?
রাত ৮-৯টার মধ্যেই রাতের খাবার খেয়ে নিন। এর ২-৩ ঘণ্টা পর ঘুমাতে হবে। রাতে হালকা খাবার খাওয়ার অভ্যাস করুন। ভাত ও লাল মাংসজাতীয় খাবার (যেমন গরুর মাংস) এ সময় না খাওয়াই ভালো। রাতে অন্য কোনো ব্যায়াম না করলেও খাওয়ার আধা ঘণ্টা পর অন্তত আধা ঘণ্টা হাঁটুন। ঘরের মধ্যে পায়চারি করতে পারেন, খুব জোরে হাঁটার প্রয়োজন নেই।
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, সঙ্গে চাই সজীবতা
শোয়ার আগে হাত-মুখ ও পা ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিন। গলা ও কাঁধ ভেজা তোয়ালে দিয়ে মুছে নিতে পারেন, বিশেষত যাঁরা বাড়ির বাইরে কাজ করেন, তাঁদের জন্য কাঁধ ও ঘাড় ভিজিয়ে নেওয়া খুবই ভালো অভ্যাস। চাইলে গোসল করে নিতে পারেন। তবে ঘুমানোর আগে চুল শুকিয়ে নিতে হবে। পরিষ্কার করার পর ত্বকের ধরন অনুযায়ী নাইট ক্রিম লাগাতে পারেন। পায়ে ভেসলিন লাগাতে হবে। ঘুমের আগে ত্বক পরিষ্কার করা আবশ্যক।
স্বাভাবিক কিংবা শুষ্ক ত্বকে মেকআপ তোলার আগে মুখে তেল লাগিয়ে নিতে পারেন। জলপাই তেল, নারকেল তেল বা বেবি অয়েল ব্যবহার করা যায়। সঙ্গে ভেজা তুলা দিয়ে মুখ পরিষ্কার করুন। এরপর বেশি পরিমাণ পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। মুছে নেওয়ার পর ময়েশ্চারাইজার ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন।
তৈলাক্ত ত্বক পরিষ্কার করতে ফেসওয়াশ প্রয়োজন। এরপর টোনার লাগাতে পারেন। সবশেষে পানিভিত্তিক ময়েশ্চারাইজার লাগাতে হবে।
সারা দিনে সময় না মিললে সপ্তাহে ২ দিন রাতে স্ক্রাবিং করুন। ১ টেবিল চামচ চালের গুঁড়া, ১ টেবিল চামচ দুধ ও আধা চা-চামচ মধু দিয়ে স্ক্রাব তৈরি করতে পারেন। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য ২ ফোঁটা লেবুর রস যোগ করতে পারেন। মধুতে অ্যালার্জি থাকলে এর পরিবর্তে শসার রস নিন।
ঘুমের আগে চুল আঁচড়ে নিন। বেণি করে ঘুমানো ভালো। পারলে ঘুমানোর আগে মাথার ত্বকে ও চুলে তেল মালিশ করে নিতে পারেন সপ্তাহে ২ দিন।
ত্বকের যত্নে ঘরোয়া পদ্ধতি
৪ টেবিল চামচ ভাত (রান্নার পর স্টিলের চালনিতে চেলে নরম করে নিতে হবে), ১ টেবিল চামচ অ্যালোভেরা জেল, ১টি সেদ্ধ আলু এবং ২টি ভিটামিন ই ক্যাপসুল (ক্যাপসুলের ভেতরের রস) মিশিয়ে একটি ক্রিম তৈরি করতে পারেন। এটি সব ধরনের ত্বকের জন্য ভালো, ক্লিনজার হিসেবেও কাজ করে। ক্রিম লাগিয়ে ২০ মিনিট পর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন এবং এরপর ত্বকের ধরন অনুযায়ী ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন। তবে চাইলে এই ক্রিম সারা রাতও লাগিয়ে রাখা যায়। একবার তৈরি করলে কাচের বয়ামে করে ফ্রিজে রেখে ৭ দিন পর্যন্ত ব্যবহার করতে পারেন। প্রতিদিনই এ ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন। এটি ব্যবহার করলে তৈলাক্ত ত্বকে টোনার ব্যবহারেরও প্রয়োজন পড়ে না।
চোখের নিচে কালচে দাগ হলে
গোলাপের পাপড়িবাটা ১ টেবিল চামচ, ভেসলিন ১ চা-চামচ এবং গ্লিসারিন ১ চা-চামচ পরিমাণ নিয়ে চোখের ক্রিম তৈরি করতে পারেন। কাচের বয়ামে করে ফ্রিজে ৭-১০ দিন পর্যন্ত রেখে দেওয়া যায়। প্রতিদিন শোয়ার সময় চোখের নিচে লাগিয়ে নিন। ভোরবেলা মুখ ধোয়ার আগে এ ক্রিম ওঠানোর প্রয়োজন নেই।
ঘুমের প্রস্তুতি
পাটভাঙা কাপড় (নতুন নয়) পরে ঘুমাতে পারেন। ইস্তিরি করা, পরিচ্ছন্ন ও নরম একটি কাপড় পরে ঘুমালে সতেজ অনুভব করবেন। পারলে ডিওডোরেন্ট ব্যবহার করুন। সুগন্ধে ভালো ঘুম হবে। টেবিল ল্যাম্পে হালকা আলো জ্বালিয়ে রাখতে পারেন। রজনীগন্ধা ও বেলি ফুলের মতো ফুল প্রাকৃতিক অ্যারোমার কাজ করে।
একটি ভাল রাতের ঘুম আমাদের শারীরিক এবং মানসিক উভয় স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি আমাদের শরীরকে মেরামত করতে, আমাদের মেজাজ উন্নত করতে এবং আমাদের মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে। যাইহোক, আমাদের মধ্যে অনেকেই বিভিন্ন কারণে পর্যাপ্ত মানের ঘুম পেতে লড়াই করে থাকি।
একটি সামঞ্জস্যপূর্ণ ঘুমের সময়সূচী স্থাপন করুন
বিছানায় যাওয়া এবং প্রতিদিন একই সময়ে ঘুম থেকে ওঠা আপনার ঘুমের গুণমানকে ব্যাপকভাবে উন্নত করতে পারে। এই অভ্যাসটি আপনার শরীরের অভ্যন্তরীণ ঘড়ি নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে, এটি স্বাভাবিকভাবে ঘুমিয়ে পড়া এবং জেগে ওঠা সহজ করে তোলে। আপনার ঘুমের চক্র সামঞ্জস্যপূর্ণ রাখতে সপ্তাহান্তে এমনকি আপনার ঘুমের সময়সূচী বজায় রাখার চেষ্টা করুন।
শিথিলকরণ কৌশল অনুশীলন করুন
ঘুমানোর আগে শান্ত ক্রিয়াকলাপে নিযুক্ত করা আপনার শরীরকে সংকেত দিতে সাহায্য করতে পারে যে এটি শান্ত হওয়ার সময়। এর মধ্যে একটি বই পড়া, উষ্ণ স্নান করা, বা গভীর শ্বাস বা ধ্যানের মতো শিথিলতা অনুশীলন করা অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। উত্তেজনা বা চাপ সৃষ্টি করতে পারে এমন কার্যকলাপগুলি এড়িয়ে চলুন, কারণ তারা ঘুমিয়ে পড়া কঠিন করে তুলতে পারে।
নিয়মিত ব্যায়াম করুন
নিয়মিত শারীরিক কার্যকলাপ আপনাকে দ্রুত ঘুমিয়ে পড়তে এবং গভীর ঘুম উপভোগ করতে সাহায্য করতে পারে। যাইহোক, শোবার সময় খুব কাছাকাছি ব্যায়াম করা আপনাকে ঘুমিয়ে পড়ার জন্য খুব বেশি শক্তি দিতে পারে। আপনি বিছানায় যাওয়ার পরিকল্পনা করার অন্তত তিন ঘন্টা আগে যেকোনো জোরালো ব্যায়াম সম্পূর্ণ করার লক্ষ্য রাখুন।