একটা মানুষের আচার-আচরণ তার বন্ধু দ্বারা কতটুকু প্রভাব ফেলতে পারে?
একটা মানুষের আচার-আচরণ তার বন্ধু দ্বারা কতটুকু প্রভাব ফেলতে পারে?
এটা সত্যি যে, মানুষের সঙ্গ আমাদের জীবনে অনেক প্রভাব ফেলে। আর বাংলা প্রবাদটা তো বলেই দেয়, “সঙ্গ দোষে লোহা ভসে।” এর মানে, খারাপ সঙ্গের প্রভাব আমাদের আচরণে আসতেই পারে। আমি নিজেই একটা মজার ঘটনা দিয়ে শেয়ার করতে চাই, যা আমাকে এই প্রবাদটার সত্যতা বোঝাতে সাহায্য করেছে।
ঘটনা: কিছু বছর আগে, আমার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিল, যার নাম ছিল বড়ো স্যার। বড়ো স্যার ছিল একজন খুব ভালো মানুষ, তবে রাগের দিকটা একটু অতিরিক্ত—এমন যে, একদিন অফিসে কফি একটু ঠান্ডা হয়ে গেলে তাকে দেখে মনে হতো, পুরো কোম্পানির আকাশ ভেঙে পড়ছে! প্রথমে আমি ভাবতাম, “এটা তো তার ব্যাপার, আমার কী!”
কিন্তু কিছুদিন পর লক্ষ্য করলাম, তার সাথে মেলামেশা করতে করতে আমি নিজে কিছু আচরণে তার মতো হয়ে যাচ্ছি। একদিন অফিসে আমার সহকর্মী একটা ফাইল হারিয়ে ফেলল। আমি ততটাই রেগে গেলাম, যেন আমার পুরো জীবনটাই চলে গেছে! পরে বুঝতে পারলাম, “আরে, এটা তো আমি ছিলাম না!”
পরিবর্তন: এটা বড়ো স্যারের কাছে বলার পর, তিনি হেসে বললেন, “আপনি তো জানেন, রাগের ব্যাপারটা আসলে খুব গুরুত্বপূর্ণ, রাগ না করলে বস হয়ে কী হবে?!” তখন আমি ভাবলাম, “বস না হলে তো কোনো দাম পাওয়া যায় না!” এরপর আমি নিজের আচরণ নিয়ন্ত্রণ করতে চেষ্টা করলাম। ধীরে ধীরে কিছু ইতিবাচক অভ্যাস গড়ে তুললাম।
আর একদিন, আমার এক বন্ধুর কাছে একটা কথা শুনলাম, যা আমাকে পুরোপুরি ভাবাতে লাগল। সে বলল, “যদি আপনি পাঁচজন পাগলের সঙ্গে ঘোরাঘুরি করেন, তবে আপনি হয়ে যাবেন ছয় নম্বর পাগল। আর যদি পাঁচজন মহাপণ্ডিতের সাথে মিশে থাকেন, তবে আপনি হবেন ষষ্ঠ মহাপণ্ডিত!”
শিক্ষণীয় দিক: এটা আমাকে শিখিয়েছে, যে সঙ্গী আমাদের জীবন এবং আচরণে বিশাল প্রভাব ফেলে। আপনি যদি ভালো সঙ্গ রাখতে পারেন, তাহলে আপনি ভালো হয়ে উঠবেন, আর খারাপ সঙ্গ রাখলে, একদিন দেখবেন, নিজের মধ্যে তার প্রভাব এসে গেছে। “সঙ্গ দোষে লোহা ভসে”—তাই ভালো সঙ্গের সাথে থাকুন, যাতে আপনি কোনো পাগল না হয়ে, একজন মহাপণ্ডিত হতে পারেন!