জীবনে ব্যর্থতার জন্য চরম উপায় কী?
জীবনে ব্যর্থতার জন্য চরম উপায় কী?
মহাজাগতিকভাবে উত্তর সন্ধান করলে বলা যায়, জীবনে যেদিন প্রথম শ্বাস নিতে শিখি আমরা সেদিনই আমাদের প্রথম জয় হয়। লাখ খানেক স্পার্মের মধ্যে দৌড়ে পৃথিবীর আলোর মুখ দেখা তো প্রথম সাফল্য। কতই না শিশু জন্ম থেকেই মারা যায়, সেই বিষয়টার দিকে নজর দেয়া যায়।
জীবনে আরেকটা সাফল্য আসে, যেদিন আমরা হামাগুড়ি দিয়ে হাটা-দৌড়ানো শিখি। অন্যকে ছোট না করেই বলা যায়, কোমড় সোজা করে দাড়ানো কিন্তু আরেকটা সাফল্য।
ধীরে ধীরে আমাদের জীবন খাতায় আরও সাফল্য যোগ হতে থাকে। প্রথম স্কুলে যাওয়া, প্রথম হাতে খড়ি-কতসব প্রথমকে সাফল্য হিসেবে তো মেনে নেয়ার চলই নেই আমাদের সমাজে।
প্রথম পাহাড়ে চড়া, প্রথম সাইকেল চালানো, প্রথম প্রেমের প্রস্তাব-কতই না প্রথম আমাদের সাফল্য সেটা তো মনে আসে না কখনও।
ধীরে ধীরে যখন আমরা কৈশোর পেরিয়ে সামনে এগোই ততই ব্যর্থতা নামের বেলুন আমাদের ঘাড়ে যুক্ত হতে থাকে। ভালো ফল অর্জন না করা, নামী স্কুল বা কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ না পাওয়া, ভালো চাকরি না পাওয়া-উফস, কতই না ভারের ব্যর্থতা।
চরম ব্যর্থ হতে কতই না চেষ্টা আমাদের! অপুর সংসার চলচ্চিত্রটি যারা দেখেছেন, তারা জানেন দরিদ্র অপু কতটাই না চরম ব্যর্থ ছিল। সবার শেষ দৃশ্য দেখে কি আপনি বলতে পারবেন, পুত্র কাজল কি চরম ব্যর্থ অপুর ব্যর্থতা?
প্রতিটি মুহুর্ত শ্বাস নিতে পারাই সাফল্য, পরিবারের সদস্যদের সংগে কথা বলা, আগামীকালের জন্য বেঁচে থাকার আগ্রহই তো সাফল্য; সেখানে বেতনের অংক, সংসারের সমীকরণে কোনভাবে চরম ব্যর্থতা বলে কোন কিছুই নেই। চরম ব্যর্থতা একটি প্যারাডক্স মাত্র!