জীবনে সুখী হওয়ার উপায় কী?

    জীবনে সুখী হওয়ার উপায় কী?

    Train Asked on February 10, 2025 in অনুসরণ.
    Add Comment
    1 Answer(s)

      ১. সুখী হতে পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমান

      গবেষণায় দেখা গেছে, সুস্বাস্থ্য, মস্তিষ্কের কার্যকারিতা এবং মানসিক সুস্থতার জন্য ঘুমের কোন বিকল্প নেই। প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য কমপক্ষে ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুম জরুরি। ভাল ঘুম না হলে আপনার মেজাজ সবসময় খিটখিটে থাকবে। ফলে, মানুষের সাথে আপনার আচরণ খুব একটা ভাল হবে না। মানুষ আপনার থেকে দূরে থাকবে। ফলাফল হিসাবে আপনার মানসিক অস্থিরতা আরও বেশি বৃদ্ধি পাবে।

      ভাল ঘুমের জন্য যে কাজগুলো করতে পারেন –

      • ঘুমানোর এবং ঘুম থেকে উঠার একটি নির্দিষ্ট টাইম সেট করুন। সে সময় সব ধরণের কাজ থেকে বিরত থাকুন।
      • প্রতিদিন একই টাইমে ঘুমানো এবং ঘুম থেকে উঠার চেষ্টা করুন।
      • ভাল ঘুমের জন্য প্রয়োজনে গোসল করে নিন, বই পড়ুন বা এমন কিছু করুন যারা দ্বার আপনি মানসিকভাবে শান্তিতে থাকবেন।
      • রুমের পরিবেশ ঘুমের জন্য উপযুক্ত করে তুলেন। রুম অন্ধকার, ঠাণ্ডা এবং শান্ত রাখার চেষ্টা করুন।

      ২. সুখী থাকতে নিয়মিত ব্যায়াম করুন

      ব্যায়াম কেবল আপনার দেহকে সুস্থ রাখে না, বরং আপনার মনকেও সুস্থ রাখে। প্রতিদিন ব্যায়াম করলে আপনার মানসিক যন্ত্রণা, উদ্বেগ, বিষণ্ণতা ইত্যাদি দূর হয়ে যাবে। রাতে খাবারের পর প্রতিদিন কিছু সময় হাটার চেষ্টা করুন। এছাড়া, সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রতিদিন ব্যায়াম করুন।

      ৩. সুখী থাকতে স্যোশাল মিডিয়ার ব্যবহার বন্ধ করুন

      Guilford Press এর এক গবেষণায় দেখান হয় স্যোশাল মিডিয়া ব্যবহারকারীরা অন্যদের থেকে অনেক বেশি একাকীত্ব অনুভব করে এবং সবসময় ডিপ্রেশনে থাকে। অপর দিকে Sage Journals এর এক গবেষণায় উঠে আসে আরও ভয়ংকর তথ্য।

      স্যোশাল মিডিয়ায় আসক্ত ৮ থেকে ১২ বছর এবং ১৩ থেকে ১৮ বছরের কিশোর কিশোরীদের মধ্যে আত্মহত্যার হার অনেক বেশি। প্রতিবছর ৪০ হাজার আমেরিকান আত্মহত্যা করে শুধু মাত্র এই ডিপ্রেশনের কারণে। আসুন এবার একটু খেয়াল করি স্যোশাল মিডিয়া আমাদের কিভাবে ডিপ্রেশনে রাখে।

      আপনার ফ্রেন্ড লিস্টে হয়তো এমন কিছু ফ্রেন্ড রয়েছে যারা যেকোনো রেস্টুরেন্টে গেলে সে ছবি পোস্ট করে, কোন চাকরি পেলে পোস্ট করে কিংবা তার কোন সফলতা। এখন সারাক্ষণ এসব দেখার ফলে আপনার সবকনশাস মাইন্ডে না পাওয়ার একটা হতাশা কাজ করতে থাকে। আপনি কোন কিছু শো অফ করতে পারছেন না এরকম চিন্তা মনের মধ্যে সারাক্ষণ ঘুরপাক খেতে থাকে। ফলাফল প্রতিনিয়ত ডিপ্রেশন বাড়তে থাকে।

      ৪. সুখী থাকতে স্বাস্থ্যকর খাবার খান

      স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল। আপনার স্বাস্থ্য যদি ভাল না থাকে, তাহলে আপনি যত কোটি টাকার মালিক হন কিংবা যত সফলতাই আসুক সুখী হতে পরবেন না। সুস্বাস্থ্যের জন্য ভাল খাবারের কোন বিকল্প নেই। আর যদি মদ ও ধূমপানে আসক্ত থাকেন তাহলে তা পরিহার করুন। জেনে নিন, যে ৭টি কারণে আপনার ধূমপান ত্যাগ করা উচিত।

      আপনার খাবার আপনার দেহের উপর প্রভাব ফেলে। খাবার আপনার মনের মধ্যেও প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম। যেমন –

      • কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার – এ জাতীয় খাবারে সেরোটোনিন উপাদান রয়েছে। এই উপাদান “ভাল লাগার” হরমোন নিঃসৃত হয়।
      • প্রোটিন – প্রোটিনে ডোপামিন এবং নোরপাইনফ্রিন রয়েছে। ডোপামিন আমাদের মস্তিষ্কের সাথে দেহের সংযোগ স্থাপন করে। ডোপামিন হরমোন আমাদের আনন্দ ও খুশি-ভাব উৎপন্ন করে। চর্বিযুক্ত মাংস, হাঁস, ডাল এবং দুধে অনেক প্রোটিন থাকে।
      • ভাজা খাবার – ভাল থাকতে হলে ভাজা পোড়া খাবার পরিহার করুন। এ-সব খাবার আপনার হতাশার একটি কারণ।

      ৫. সুখী হতে হলে তুলনা করা বন্ধ করুন

      আপনি যতদিন নিজেকে অন্যের সাথে তুলনা করবেন তত দিন আপনি অসুখী থাকবেন। আপনার মধ্যে যা আছে তাই নিয়ে খুশি থাকার চেষ্টা করুন। পৃথিবীতে এমন অনেক ব্যক্তি আছে যাদের দুটি চোখ অন্ধ কিন্তু তারপরেও তারা সুখী। আবার অনেকের এই মূল্যবান দুটি চোখ থাকা সত্ত্বে সে চোখ দিয়ে শুধু দুখের অশ্রু ঝরে।

      অন্যের সাথে নিজেকে তুলনা না করে, আপনার নিজের মধ্যে যা আছে তা দিয়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যান। পৃথিবীর সকল সফল ব্যক্তিরা পরিশ্রমের মাধ্যমেই সফলতা পেয়েছে।

      ৬. পরিবার ও প্রকৃতির সাথে সময় ব্যয় করুন

      ২০১৬ সালের এক গবেষণায় দেখা যায়, সবুজ প্রকৃতির সাথে ৩০ মিনিট সময় ব্যয় করার দ্বারা ব্লাড প্রেশার কমার পাশাপাশি ডিপ্রেশনও কমে যায়। সবুজ প্রকৃতির জন্য প্রয়োজনে আপনার বাড়ির ছাদ কিংবা বারান্দাকেও বেছে নিতে পারেন। তবে, সেখানে যেন গাছ এবং মুক্ত বাতাসের সংস্পর্শ থাকে।

      প্রকৃতির পাশাপাশি নিজের পরিবারের সাথে সময় কাটান। পরিবারের সাথে সময় কাটানোর দ্বারা পরিবারের সাথে আপনার সম্পর্ক বৃদ্ধি পাবে। আপনার মাঝে থাকা হতাশা কেটে যাবে। পশ্চিমা সমাজে বর্তমানে হতাশা আর আত্মহত্যার অন্যতম একটি কারণ এই পরিবার-হীনতা।

      ৭. লক্ষ্য ঠিক করুন

      লক্ষ্য ঠিক করার দ্বারা আপনি আপনার জীবনের একটি অর্থ ঠিক করলেন। অনেকে বেচে থাকার কোন অর্থ খুঁজে পায় না। কিন্তু আপনি যখন লক্ষ্য ঠিক করবেন তখন বেচে থাকার অর্থ খুঁজে পাবেন।

      Professor Answered on February 10, 2025.
      Add Comment
    • RELATED QUESTIONS

    • POPULAR QUESTIONS

    • LATEST QUESTIONS

    • Your Answer

      By posting your answer, you agree to the privacy policy and terms of service.