অলস দুপুরবেলা বলতে কী বোঝায়?
অলস দুপুরবেলা বলতে বুঝায় কর্মব্যস্ততাহীন দুপুরবেলা।
এই অলস দুপুরবেলাকে অনুভব করতে পারেন তাঁরা, যাঁরা দুপুরে খাওয়া দাওয়া করার পর “একটু রেস্ট নিতাছি” বলে, (যদি ও সকাল থেকে কোনো পরিশ্রমের কাজই করা হয় নি) বিছানায় গা এলিয়ে দেন, বা চেয়ার, সোফাতে বসে ঝিমুতে থাকেন, তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়েন, গৃহিণীরা লুডো, দাবা খেলেন অথবা বই পড়েন, পানের বাটা সামনে নিয়ে খোশ গল্পে মেতে উঠেন, টিভি দেখেন ইত্যাদি।
সাহিত্যে, কবিতায় অলস দুপুরবেলাকে বারবারই ধরার চেষ্টা করা হয়েছে।
অলস দুপুরবেলার চিত্রটি এঁকে গেছেন কবি অক্ষয় কুমার বড়াল, তাঁর মধ্যাহ্নে কবিতায়।
” একেলা জগৎ ভুলে পড়ে আছি নদীকূলে
পড়েছে নধর বট হেলে ভাঙা তীরে,
ঝুরু ঝুরু পাতাগুলি কাঁপিছে সমীরে।
চাতক কাতরে ডাকে, চরে বক নদী-বাঁকে
ডাকে কুবো কুব কুব লুকায়ে কোথায়!
গাভী শুয়ে তরুতলে, হংসি ডুবে ওঠে জলে,
ডিঙাখানি বেঁধে কূলে জেলে ঘরে যায়।
দূরেতে পথিক দুটি চলে যায় গুটি গুটি
মেঠো পথ দিয়া।
পাশ দিয়ে নিয়ে জল আঁখি দুটি ঢল ঢল
কুলবধূ দ্রুত গেল লাজে চমকিয়া।
নিঝুম মধ্যাহ্নকাল অলস-স্বপন-জাল
রচিতেছে অন্যমনে হৃদয় ভরিয়া।
দূর মাঠ-পানে চেয়ে চেয়ে চেয়ে শুধু চেয়ে
রয়েছি পড়িয়া।
হৃদয় এলায়ে পড়ে যেন কী স্বপন-ভরে
মুদে আসে আঁখিপাতা যেন কী আরামে।
অন্যমনে চাহি চাহি কত ভাবি, কত গাহি,
পড়িছে গভীর শ্বাস গানের বিরামে।
খসে খসে পড়ে পাতা মনে পড়ে কত গাথা
ছায়া-ছায়া কত ব্যথা ঘুরে ধরাধামে।
“নিঝুম মধ্যাহ্নকাল অলস-স্বপন-জাল….”
” হৃদয় এলায়ে পড়ে যেন কী স্বপন-ভরে
মুদে আসে আঁখিপাতা যেন কী আরামে “
অলস দুপুরবেলা…স্বপ্নময় দুপুরবেলা।