অ্যালার্জি কেন হয়?

অ্যালার্জি কেন হয়?

Add Comment
1 Answer(s)

    অ্যালার্জি নিয়ে আমাদের ধারণা পরিষ্কার নয়। শ্বাসকষ্ট, একজিমাসহ বহু চর্মরোগেরই কারণ হচ্ছে অ্যালার্জি। কোনো জিনিস যদি শরীরে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে তবে তাকে অ্যালার্জি বলা হয়। যেসব দ্রব্য অ্যালার্জি সৃষ্টি করে তাকে বলা হয় অ্যালারজেন বা এন্টিজেন এবং এসব দ্রব্য দেহে প্রবেশের ফলে দেহের ভেতরে যে দ্রব্য সৃষ্টি হয় তাকে বলা হয় এন্টিবডি। এন্টিজেন ও এন্টিবডি পরস্পর মিলিত হলে যে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয় তাকে বলা হয় এন্টিজেন-অ্যান্টিবডি বিক্রিয়া। হাঁপানির সঙ্গে অ্যালার্জির গভীর সম্পর্ক আছে। ফুলের পরাগ, দূষিত বাতাস, ধোঁয়া, কাঁচা রঙের গন্ধ, চুনকাম, ঘরের ধুলা, পুরনো ফাইলের ধুলা দেহে অ্যালার্জিক বিক্রিয়া করে হাঁপানির সৃষ্টি করে। কাজেই যাঁরা হাঁপানিতে ভুগছেন তাঁদের এগুলো পরিত্যাগ করতে হবে। ছত্রাক দেহে অ্যালার্জি তথা হাঁপানি সৃষ্টি করে। ছত্রাক হচ্ছে অতি ক্ষুদ্র সরল উদ্ভিদ। ছত্রাক ২০০ থেকে ৩২০ সেন্টিগ্রেড উত্তাপে জন্মে, ভেজা পদার্থে এ ছত্রাক জন্মাতে দেখা যায়। আবার কোনো কোনো খাদ্য ছত্রাক দিয়ে দূষিত হয়। ছত্রাক মিশিয়ে পনির তৈরি করা হয়। কোনো কোনো পাউরুটি ও কেক তৈরি করতেও ইস্ট জাতীয় ছত্রাক ব্যবহার করা হয়। আলু, পেঁয়াজ ও ছত্রাক দ্বারা দূষিত হয়। এ ছত্রাকও অ্যালার্জি সৃষ্টির একটি অন্যতম কারণ। ঘরের ধুলা হাঁপানিজনিত অ্যালার্জির জন্য একটি অন্যতম কারণ। ঘরের ধুলায় একটি ক্ষুদ্র জীবাণু থাকে, যা ‘মাইট’ নামে পরিচিত। যাঁরা হাঁপানিজনিত অ্যালার্জিক সমস্যায় ভোগেন তাঁরা ঘরের ধুলা এড়িয়ে চলবেন। বিশেষ করে ঘর, ঘরের আসবাব, কম্বল, পর্দা, তোশক, বালিশ প্রভৃতি পরিষ্কার করার সময় দূরে থাকতে হবে। খাদ্যে প্রচুর অ্যালার্জির ঝুঁকি থাকে, যেমন দুধে অ্যালার্জি, বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে গরুর দুধে। গরুর দুধে শিশুদের চুলকানি, হাঁপানি ইত্যাদি হতে পারে। এ ছাড়া গম, ডিম ও মাছে অ্যালার্জি হতে দেখা যায়। বাদাম, কলা, আপেল, আঙুর, ব্যাঙের ছাতা, তরমুজ, পেঁয়াজ, রসুন, চকোলেট, এমনকি ঠাণ্ডা পানীয়ও অ্যালার্জি সৃষ্টি করে। পতঙ্গের কামড়ে গায়ে চুলকানি, স্থানটি ফুলে যাওয়া, এমনকি হাঁপানি পর্যন্তও হতে দেখা যায়। মশা-মাছি, মৌমাছি, বোলতা, ভীমরুল প্রভৃতি পতঙ্গের কামড়ের দেহে অ্যালার্জির সৃষ্টি হয়। এ ছাড়াও রোমশ ও পালক বিশিষ্ট জীবজন্তু যেমন_বিড়াল, কুকুর, ঘোড়া প্রভৃতি গৃহপালিত পশু অনেক সময় অ্যালার্জি সৃষ্টির জন্য দায়ী, এমনকি আর্টিকেরিয়া বা আমবাতও অ্যালার্জির অন্যতম প্রকাশ। বেশির ভাগ লোকের জীবনেই কোনো না কোনো সময় এ রোগ হতে দেখা যায়। এ আর্টিকেরিয়া শরীরের কোনো অংশে সীমাবদ্ধ থাকতে পারে অথবা পুরো শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এতে বিভিন্ন আকারের লালচে চাকা চাকা ফোলা দাগ হতে দেখা যায় এবং সেই সঙ্গে চুলকায়। অনেক সময় ওষুধে অ্যালার্জি হতে পারে। এর মধ্যে পেনিসিলিন আর অ্যাসপিরিন অন্যতম। জ্বর, গায়ে ব্যথা, মাথাব্যথা, পাঁচড়া, ফোড়া ইত্যাদির জন্য এ ওষুধ দুটি আমরা ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন ছাড়াই খেয়ে থাকি। কিন্তু মনে রাখতে হবে এর থেকে গায়ে অ্যালার্জিজনিত চুলকানি হতে পারে। এমনকি পেনিসিলিন ব্যবহারের কারণে মৃত্যু পর্যন্তও হতে পারে। এ ছাড়া আরো অসংখ্য ওষুধ আছে, যা খেয়ে গায়ে অ্যালার্জির সৃষ্টি হতে পারে। সুতরাং ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনো ওষুধ কখনোই খাওয়া উচিত নয়। শিশুদের টিকা বা ভ্যাকসিনে ব্যক্তিবিশেষে অ্যালার্জি হতে দেখা যায়। সুতরাং ভ্যাকসিন দেওয়ার পর আপনার শিশুকে যদি চুলকানি বা ঠাণ্ডাজনিত সমস্যায় ভুগতে দেখা যায় তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের কাছে নেওয়া উচিত। অ্যালার্জি একটি প্রতিরোধযোগ্য রোগ। আপনি অ্যালার্জিতে ভুগলে লক্ষ করবেন কোনো খাবারে আপনার অ্যালার্জি হয় কি না? যদি খাবারের সঙ্গে সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া যায়, তবে সেই খাবার অবশ্যই পরিহার করতে হবে।

    Professor Answered on April 26, 2015.
    Add Comment
  • RELATED QUESTIONS

  • POPULAR QUESTIONS

  • LATEST QUESTIONS

  • Your Answer

    By posting your answer, you agree to the privacy policy and terms of service.