আজকে নতুন কী শিখতে পারি?
ধরুন আমি আপনাকে বলেছি আমি ব্যস্ত আছি, এবং আপনি দেখেছেন ওই সময়টাতে আমি ঘুরে বেড়াচ্ছি। এতে আপনার কেন মনে হবে যে আমি আপনাকে মিথ্যে বলেছি? ঘুরে বেড়ানো কি ব্যস্ততা হতে পারেনা? আমাদের সমস্যা কি জানেন? আমরা অন্যের জন্যে গাধার খাটনি খাটা বাদে কোনো বিষয়কে গুরুত্বপূর্ণ মনে করতে শিখিনি এখনো।
আমরা জানিনা আমাদের জীবনে কোন বিষয়টা ঠিক গুরুত্বপূর্ণ, কোনটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। কেউ যদি ব্যস্ততার কথা বলে বিছানায় শুয়ে থাকে সারাদিন, জানবেন যে ওই শুয়ে থাকাটাই তার জন্যে গুরুত্বপূর্ণ ছিলো, ওটাই তার ব্যস্ততা। কেউ যদি ব্যস্ত আছে জানিয়ে আপনাকে সময় না দিয়ে একলা বসে থাকে নিজের ঘরে, বোঝার চেষ্টা করবেন যে ওই মুহুর্তে তার নিজেকে সময় দেয়াটা প্রয়োজন ছিলো অন্য যে কোনো কাজের চাইতে বেশি।
কেবলমাত্র অফিসের মিটিং, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস আর ডেডলাইনের তাড়া, সংসারের চাল নুনের হিসেব কিংবা যোগাড় করাটাই ব্যস্ততা না। ঘুরতে যাওয়া ব্যস্ততা, গান শোনাটাও ব্যস্ততা, কবিতা পড়াও ব্যস্ততা, নিজের ঘরে বাতি নিভিয়ে শুয়ে থাকাটাও ব্যস্ততা। পৃথিবীতে সবার জন্যে ব্যস্ত থাকার উপায় একই হতে হবে এরকম কথা নেই কোনো।
কেউ একজন যদি আপনাকে বলে থাকে যে সে ব্যস্ত আছে, তার ব্যস্ততার কারণ খতিয়ে দেখতে যাবার খুব প্রয়োজন নেই, আপনি লালবাজারের টিকটিকি না। একটা কোনো সাধারণ কাজের অজুহাতে আপনাকে মানুষটা সময় দেয়নি কাজেই আপনাকে সে অবহেলা করছে এতদূর ভাববার প্রয়োজন নেই। যেহেতু মানুষটা বলেছে সে ব্যস্ত আছে, অবশ্যই ওই পার্টিকুলার সময়ে আপনাকে সঙ্গ দেওয়া তার পক্ষে সম্ভব হচ্ছেনা, তার মানে এই না যে তার সঙ্গে আপনার সম্পর্ক মিথ্যে হয়ে গেছে। ঠিক ওই মুহুর্তে ওই অন্য কাজটা করা তার জন্যে হয়ত আরও অনেক বেশি প্রয়োজন৷
‘তুমি না বললে তুমি ব্যস্ত? তোমাকে তো দেখলাম ঘুরে বেড়ালে সারাদিন!’ জাতীয় অপরিপক্ক কথাবার্তা, যতই বন্ধু হোক না কেন আপনার, কোনো মানুষকেই না বলা ভালো। অন্য কারও জীবনের প্রায়োরিটি লিস্ট ঠিক করে দেওয়ার আপনি আমি কেউ না। যদি দু’দন্ড নিজের সাথে কেউ একা থাকতে চায়, তাকে শান্তিতে থাকতে দিন। অন্যের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যে হুমকি হয়ে দাঁড়াবেন না, এটা না করে যে সময়টা বাঁচবে সেই সময়টা নিজেকে দিলে দেখবেন নিজেও মানসিকভাবে তুলনামূলকভাবে সুস্থ থাকতে পারছেন।