আপনার কাছে সুন্দরের সংজ্ঞা কী?
আমি সুন্দর হবো সুন্দর হবো
একটু একটু করে
নেবো এই পৃথিবীর সব সুন্দর
আমার দু’চোখ ভরে।
সৌন্দর্যের বিষয়টি একাডেমিকভাবে নন্দনতত্ত্বে আলোচিত হয়। এই কোর্সের ক্লাসটি আমাদের এক ম্যাম নিতেন। তিনি সবসময় শাড়ী পড়েই ক্যাম্পাসে আসেন। সত্যি বলতে কি তার ক্লাসে আমি নন্দনতত্ত্বের কিছুই বুঝে উঠতে পারিনি। তিনি সুধীর কুমার নন্দী সাহেবের বই থেকে আলোচনা করতেন। এই বইয়ের ভাষা না ম্যাম বুঝতেন, না ম্যামের লেকচার শুনে আমি বুঝতাম। তবে ক্লাসের অন্যান্য ছেলেরা বলত ম্যামের দিকে তাকালেই নাকি তারা নন্দনতত্ত্ব বুঝে যায়! আর এদিকে পুরো ক্লাসের সময়টা আমার কাটত যন্ত্রণার মধ্যে।
তত্ত্বকথা বাদ দিলে আমার কাছে যা ভালো লাগে তাই সুন্দর, যা সুন্দর তা-ই ভালো লাগে।
যদি একটা গল্প/উপন্যাস/কবিতা পড়ে ভালো লাগার অনুভূতির সৃষ্টি হয় তবে বুঝতে হবে আমি লেখাটার সৌন্দর্য উপলব্ধি করতে সক্ষম হয়েছি। যেমন—শরৎচন্দ্র ও হুমায়ুন আহমেদের লেখা আমার তেমন ভালো লাগে না। কারণ তাদের লেখার সৌন্দর্য আবিস্কারে আমি ব্যর্থ।
অনুরূপভাবে প্রচলিত বাণিজ্যিক সিনেমা বা গান আমার তেমন ভালো লাগে না। কারণ এগুলোর নান্দনিক দিক আমার কাছে ধরা পড়ে না।
তেমনিভাবে সব মানুষকেই আমার ভালো লাগে না। কারণ তাদের মধ্যে থাকা সৌন্দর্য আমি বুঝতে পারনি।
এজন্য সৌন্দর্যের বিষয়টা একেকজনের কাছে একেকভাবে একেকভাবে ফুঁটে ওঠে। রবিঠাকুরের কাছে সৌন্দর্য এভাবে ধরা পড়েছিল-
আমারই চেতনার রঙে
চুনি উঠল রাঙা হয়ে।
আমি চোখ মেললুম আকাশে,
জ্বলে উঠল আলো
পুবে পশ্চিমে।
গোলাপের দিকে চেয়ে বললুম “সুন্দর’,
সুন্দর হল সে।
সৌন্দর্যের সাথে মূল্যবোধ ও সংস্কৃতির নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। আপনি যে সাংস্কৃতিক মূল্যবোধে বড় হয়েছেন সেই সাংস্কৃতিক তার উপর অনেক কিছুই নির্ভর করে। যেমন বাংলাদেশ-ভারতের অনেক পুরুষ নারীদের শাড়ী পরিহিত অবস্থায় দেখতে পছন্দ করেন। বাংলায় তো একটা কথা প্রচলিত আছে শাড়ীতেই নারী।
রাহুল-রহিমদের কাছে শাড়ী পছন্দ হতে পারে। কিন্তু মাইকেল-ডেভিডরা হয়তো নারীদের সৌন্দর্য অন্য কোনো পোশাকে পেয়ে থাকেন-
অর্থাৎ সৌন্দর্যের বিষয়টি সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের সাথে সম্পর্কযুক্ত।
আমার কাছে কিন্তু প্রায় সবকিছুই ভালো লাগে।
এজন্য আমি সারাদিন যেকোনো যায়গা থেকে হেঁটে যেতে পছন্দ করি। হাঁটলে অনেক কিছু চোখে পড়ে। ভাললাগার অনুভূতির সৃষ্টি হয়। আপনি চাইলে আমার সাথেও সারাদিন হেঁটে বেড়াতে পারেন, আমি একটুও বিরক্ত হব না।