আপনার জীবনের কোন মুহূর্তে আপনি বাকরুদ্ধ হয়ে গেছিলেন?
আপনার জীবনের কোন মুহূর্তে আপনি বাকরুদ্ধ হয়ে গেছিলেন?
প্রত্যেক দিন আমার মায়ের সঙ্গে ঝগড়া লাগে ভাত খাওয়া নিয়ে। আমার বক্তব্য থাকে যে মা আমাকে বেশি ভাত খাওয়ানোর চেষ্টা করছে এবং আমার মা বলতে থাকেন যে ভাত কম খেলে কেউ রোগা হয় না। বহুদিনই ভাত নষ্ট করে উঠে যাই। মা ভাত নষ্ট করা একদমই পছন্দ করে না। এই নিয়ে রোজই দু বেলাই আমাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি লেগেই থাকে।
নিত্য দিন যাতায়াতের পথে অনেক ফুটপাথবাসী চোখে পড়ে। কিন্তু এই দৃশ্য এতোই পরিচিত যে আলাদা করে মনে দাগ কাটে না।
বাসটা সেদিন জ্যামে আটকে ছিল। জানলা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে ছিলাম। হঠাৎ চোখে পড়লো একটি শতছিদ্র কাপড় পরিহিত মহিলা হাঁড়িতে ভাত বসিয়েছেন। দুটো বাচ্চা দেখছিলাম যে অনেকক্ষণ ধরে ঘ্যান ঘ্যান করে ঘুরে বেড়াচ্ছে। ভাত তৈরি হতেই মহিলা বাচ্চা দুটি কে একটি থালাতে ভাত দিলেন। বাচ্চাগুলোর শুকনো ভাত খাওয়া দেখে আমি সেইদিন বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। তারা যে আনন্দে সেই ভাত খাচ্ছিলো, আমি সারা জীবনে অত আনন্দ কিচ্ছু তে পাইনি।
সেইদিন আমি বুঝেছিলাম আমি কত ভাগ্যবান যে কোনোকিছু চাওয়ার আগেই আমি সব কিছুই পেয়ে যাই।রোজ খাওয়ার নষ্ট করেও পরের দিন ঠিক খাওয়ার পেয়ে যাবো। কোনদিনই অভুক্ত থেকে ঘুমাতে হয়নি। মায়ের কথাগুলোর মর্ম উপলব্ধি করেছিলাম সেইদিন।
কথায় আছে যে দাঁত থাকতে দাঁতের মর্ম আমরা বুঝি না। কথাটার অর্থ আমি সেইদিন বুঝতে পেরেছিলাম।