আপনি কি নতুন কিছু শেয়ার করতে চান?
আপনি কি নতুন কিছু শেয়ার করতে চান?
শুরু করার পূর্বেই বলেছি আমি কোন শুটার নয় বা কোন এডিটার নয়। আমার উদ্দেশ্য ছবি দেখানো নয় সমাজের কিছু বাস্থব চিত্র তোমাদের সম্মুখে তুলে ধরা।এই লোকটি হলো আমার একজন প্রতিবেশী। তাঁর নাম মুজিবুর রহমান।যে একজন অনেক দুঃখি লোক ছিল।যার বয়স ২৬ বৎসর।এখনো অবিবাহিত।সে একজন ভারতীয়।অসম রাজ্যের করিমগঞ্জ জেলার আছিমগঞ্জ জিপীর ফরিদ কোনা গ্ৰামে তার বাড়ি। আজ সকালে আত্মহত্যা করে।
এই ছবিটা হলো পুলিশ এসে তাকে নিচে নামিয়ে রাখার ছবি।
এই ছবিটা হলো যখন তাকে লোকজন পোস্ট মেডামে নেওয়ার জন্য গাড়িতে তোলছে।তার পরিবারের লোকজন এতো যে কান্নাকাটি করছে কিভাবে বোঝাবো আপনাদের ভেবে পাচ্ছিনা। বিশেষ করে তার মা এতো যে ভেঙ্গে পড়েছেন আপনাদের বোঝানোর মতো আমার কাছে কোনো মুখের ভাষা নেই।যদিও তার মায়ের ছবি দেখতে আপনার যদি ইচ্ছা হয় কিন্তু আমি পারবোনা কারণ এটি একটি মুসলিম পরিবার আর মুসলিম অঞ্চলে মহিলাদের ছবি তুলে কোন কিছুতে পোস্ট করা নিষিদ্ধ।
কিন্তু প্রশ্ন হলো_ সে কেন আত্মহত্যা করলো? চিন্তার কোন কারণ নেই পড়তে থাকো। আসলে এই লোকটি একজন অত্যন্ত শিক্ষিত লোক ছিল। পড়াশোনায় এতো যে মেধাবী ছিল তা মুখে বলার ক্ষমতা আমার নেই।
সে যখন উচ্চতর মাধ্যমিক দ্ধিতীয় বর্ষে ছিল তখন আরিফা নামের একটি মেয়ের সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। ধীরে ধীরে তাদের প্রেম গভীর হতে থাকে যেন দুটি ভিন্ন দেহের একটি প্রাণি। সকালে দেখা করা পার্কে যাওয়া এসব যেন তাদের নিত্য দিনের কর্ম হয়ে উঠে।এভাবে তারা দুই বছর কাটিয়ে দেয়। কিন্তু কথায় আছে যে,অতি সুখ কপালে সয়না।
যখন তারা ফাইনাল ইয়ারে তখন একদিন কলেজ বন্ধ ছিল। সেইদিন আরিফা ফোন করে মুজিবুরকে জানিয়ে দেয় সে আজ দেখা করতে পারবেনা কারণ সে আজ অসুস্থ। দুর্ভাগ্যবশত মুজিবুরকে কোন এক কারণে পার্কে যেতে হয় এবং সেখানে গিয়ে দেখতে পায় আরিফা অন্য একটি ছেলের সাথে বসে আছে। সেইদিন আরিফা মুজিবকে বলেছিল এই সম্পর্ক কন্টিনিউ করা যাবেনা কারণ আরিফা একটি প্রতিষ্ঠিত ছেলে চায়।
এই ঘটনার কয়েকদিন পরে মেয়েটির বিয়ে হয়ে যায় এবং মুজিবুর ডিপ্রেশনে চলে যায়। দিন যেতে থাকে এবং সে আরও ভেঙ্গে পড়তে থাকে। শিক্ষিত ছেলে হওয়ার কারণে নেশা থেকে বিরত থাকার জন্য মোবাইলে free fire game খেলতে শুরু করে।না ঘুম না বিশ্রাম ২৪ ঘন্টার ২৪ ঘন্টা free fire খেলতে শুরু করে।ধীরে ধীরে সে ব্রেইন হারাতে থাকে এবং এক পর্যায়ে পাগলের মতো হয়ে যায়।
লোকজন তাকে নিয়ে মজা করতে শুরু করে। শিশু থেকে যুবক সবাই তাকে নিয়ে টাট্টা করতে শুরু করে। কিন্তু তার পিতা মাতা তার চিকিৎসা করাতে থাকে। প্রতি মাসে তার নিচে খরচ করতো লক্ষ টাকার মতো। ধীরে ধীরে সে সুস্থ হতে থাকে এবং এক পর্যায়ে সে সুস্থ হয়ে যায়।ডিপ্রেশ থেকে বেরিয়ে আসে অতিতকে ভুলে গিয়ে সেই পূরনো মুজিব হয়ে যায়। কিন্তু তার পরেও সমাজ তার পিছু ছাড়েনি।
সে যখন ঘর থেকে বাহির হয়ে রাস্থা দিয়ে হাঁটতো তখন লোকজন তাকে মুজীব নামের পরিবর্তে পাগল বলে ডাকতো।সে যতই তাদের বুঝানোর চেষ্টা করতো যে সে এখন সুস্থ পাগল নয় তারা তাকে নিয়ে আরও মজা করতো।সে যেন গ্ৰাম বাসিদের জন্য খেলনায় পরিণত হয়েছিল।
আপনদের কাছ থেকে সমাজের লোকের কাছ থেকে আঘাত পেতে জীবনের প্রতি বিরক্ত হয়ে যায়।সে সমাজের এই লোকগুলোর কাছ থেকে বাঁচার জন্য আত্মহত্যা করে। কিন্তু সেই সমাজ এখনও তাকে ছাড়ছেনা বলছে সে কুকুরের চাইতেও আরও নিকৃষ্ট কারণ সে আত্মহত্যা করেছে। লোকজন তার পিতা মাতাকে শান্তনা দেওয়ার পরিবর্তে এসে বলে কেন এই কুকুরের জন্য কান্না করছো। যে আত্মহত্যা করে সে আর মানুষ থাকে না।আচ্ছা বলো তাঁর আত্মহত্যা করার সিদ্ধান্তটা কি সঠিক ছিল।মোটেই না _যে সমাজের ভয়ে সে আত্মহত্যা করেছে সেই সমাজ আজও তাকে ছাড়েনি।তার এই জীবন থেকে কে কি শিক্ষা পেলেন বলে যাবেন। ধন্যবাদ।