আপনি কি লুকিয়ে কিছু দেখেছেন যা দেখার জন্য প্রস্তুত ছিলেন না?
আপনি কি লুকিয়ে কিছু দেখেছেন যা দেখার জন্য প্রস্তুত ছিলেন না?
প্রশ্নের সাথে জীবনের একটি অধ্যায়ের কথা মনে পড়ে গেলো তাই লিখছি । লুকিয়ে লুকিয়ে দেখিনি তবে কথার আওয়াজ শুনেছি। যার জন্য আমি একেবারেই প্রস্তুত ছিলাম না ।
তখন নারায়ণগঞ্জ ফতুল্লা পোস্ট অফিস রোডের একটি বাসায় মা-বাবা এবং ছোট ভাই সহ ছিলাম। যে বাড়িতে ছিলাম সেই বাড়ির বাড়িওয়ালী আন্টি আমার ভদ্র আচরন দেখে উনারা আমাকে খুব পছন্দ করতো। আন্টির একটি মেয়ে ছিলো। আমি যখন সন্ধ্যার পরে বাসায় আসি,তখন উনাদের অনুরোধে মাঝে মাঝে আন্টির মেয়েকে পড়া দেখিয়ে দিতাম । এমনও দিন ছিলো পড়া দেখিয়ে দিতে দিতে রাত ১১টা কিংবা ১২টা বেজে যেতো । উনাদের আমার উপর বিশ্বাস ছিলো। মেয়েটা আমাকে খুব পছন্দও করতো । আমি মাঝে মাঝে নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকায় বন্ধু কিংবা আত্মীয়দের বাসায় প্রায় বেড়াতে গেলে দুই তিন দিন আসতাম না । আসার পরে যখন তাকে পড়াতে যেতাম, আমাকে সে বলতো-“আপনি এতদিন কিভাবে থাকেন, কাকে নিয়ে থাকেন”। এই রকম অভিমান মূলক কথার কারনে আমার কেনো জানি মেয়েটাকে খুব ভালো লাগতো এবং আমি তার প্রেমে পড়ে যাই, মনে মনে তাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতে শুরু করি। ও আমাকে ভালোবাসতে শুরু করলো। ওর মর্নিং ক্লাশ ছিলো, আমি ভোরে ফজর নামাজ শেষ করার পর, প্রায় সময় আন্টি আমাকে বলতো ওকে স্কুল পর্যন্ত পিছে পিছে ফলো করার জন্য, ও কারো সাথে কথা বলেকিনা দেখার জন্য । আমি যেতে চাইতাম না কিন্তু আন্টি আমাকে বার বার বলাতে আমি দুই একদিন যেতাম, কিন্তু কখনো কারো সাথে কথা বলতে দেখিনি। আন্টির কথাতে আমার কেনো যেনো একটা সন্দেহ হতো। ওর ভালোবাসার তীব্রতা দেখে আমি কার সাথে কথা বলে কি বলেনা ওই সব বিষয় নিয়ে কখনো মাথা ঘামায়নি। এর মধ্যে একটি বায়িং হাউজে আমার চাকরি হয়ে যায়। যার কারনে আমার ঢাকায় থাকতে হতো, প্রতি সাপ্তাহ আমার দুইদিন বন্ধ ছিলো শনিবার আর রবিবার, আমি ঐ দুইদিন নারায়ণগঞ্জ এর বাসায় চলে আসতাম । তার সাথে আমার প্রেম চলছে, কোনো সমস্যা ছিলো না, কিন্তু একদিন আমি আমার রুমে বিকেল বেলা বিশ্রাম নিচ্ছিলাম, হঠাৎ আমার কানে একটি ছেলে আর একটি মেয়ের একটু উচ্চ স্বরে প্রেম সংক্রান্ত আলাপ শুনতে পেলাম, তবে সেই আলাপ ওদের জানালা টু পাশের বাসার জানালা দিয়ে । বাহিরে বের হয়ে ওদের জানালা দিয়ে আরো স্পষ্ট ওর কথা ভেসে আসলো “ জানু ………..”।
সেটা আর নাই বা বলি। যেটা কখনো কল্পনাও করিনি সেটাই আমার কানে ভেসে আসলো । ছেলেটাকে আমি পরে চিনতে পেরেছি এবং ওর মা আমাকে কেনো ওর পিছে পিছে ফলো করতে বলেছে সেটাও বুঝলাম । আমি তার সাথে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছিলাম। তার কিছুদিন পর আমরা বাসা ছেড়ে চলে আসি গাজিপুরে। আমাদের সাথে ওদের ফ্যামেলির যোগাযোগ ছিলো, কিন্তু তার সাথে আমি আর কোনোদিন যোগাযোগ রাখার চেস্টা করিনি ।