আমাদের প্রজন্মের করুণ বাস্তবতা কী?
আমাদের প্রজন্মের করুণ বাস্তবতা কী?
বর্তমান প্রজন্মের সমস্যার শেষ নেই। এদের প্রধান সমস্যা হলো- এরা নিজেকে যোগ্য ও দক্ষ করার আগেই বিয়ে করে ফেলে। তারপর সংসারে অভাব। অভাব থেকে অশান্তি। ফলাফল ডির্ভোস। এই প্রজন্ম সময় ব্যয় করে ফেসবুক, টিকটক, আড্ডা আর ইউটিউব দেখে। নিজেকে যে যোগ্য ও দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে, প্রতিষ্ঠিত করতে হবে সেটা তাঁরা বুঝেই না। এই প্রজন্ম কোনো রকমে লেখাপড়া করলেও কর্মক্ষেত্রে গিয়ে ধাক্কা খায়। অনার্স পাশ করলেও একপাতা দরখাস্ত লিখতে পারে না ইংরেজিতে। অবশ্য ক্ষমতাবান মামা চাচার জোরে অনেকে টিকে যায়। আর যাদের মামা চাচার জোর নাই তাঁরা হায়-আফসোস করে।
এই প্রজন্মের কিছু ছেলেপেলে আছে, তাদের রুচি এতই খারাপ যে- তাঁরা একটা নৌকা ভাড়া করে। সেই নৌকাতে অশ্লীল গান বাজায় আর দুটা পতিতা ভাড়া করে নেয়। তারপর নৌকা চলে, সেই সাথে চলে তাদের নোংরা নাচ গান আর হাতাহাতি। সেগুলো তাঁরা ভিডিও করে। ইউটিউবে দেয়। লাখ লাখ মানুষ সেই ভিডিও দেখে বিনোদন নেয়। এক এলাকার এই ঘটনা দেখে আরেক এলাকার পোলাপান উৎসাহ পায়। তাঁরা চারজন মেয়ে ভাড়া করে। এই প্রজন্মের রুচিবোধ অতি কুৎসিত। এরা জ্ঞানহীন। এরা মগজহীণ। এরাই জাতির জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়াবে। এদের আরেক নাম বখাটে। এরা রাস্তার মোড়ে মোড়ে আড্ডা দেয়। জটলা পাকিয়ে একজন আরেকজনের মোবাইলের দিকে তাকিয়ে থাকে।
টিকটক ক্ষতি করেছে এই প্রজন্মের সবচেয়ে বেশি। নিজেকে জনপ্রিয় করতে গিয়ে এরা সব রকম নোংরামি করতে প্রস্তুত। এরা বিভিন্ন দল করে নিয়েছে। চাঁদা তুলে এরা দলবেঁধে ‘হ্যাংআউট’ নাম দিয়ে বদমাইশি করে। এতটা নির্ল্লজ হয় কি করে মানুষ? এরাই সৃষ্টির সেরা জীব? এদের মাথার ঠিক নেই। এরা রান্নাঘরে, ছাদে, ব্যস্ত রাস্তায়, শপিংমলে, ওয়াশরুমে যে কোনো জায়গায় এরা টিকটক করে। কুৎসিত অঙ্গভঙ্গি করে। এদেরকে জুতা পিটা করা দরকার দুইবেলা। বয়স্ক মহিলা, পুরুষ- এরাও কম যায় না। নোংরামিতে এই প্রজন্ম অনেক এগিয়ে আছে। দশ মিনিট এদের টিকটক দেখলে সেটা পরিস্কার বুঝা যায়। ফেসবুক, টিকটক আর ইউটিউব জুড়ে আছে এই প্রজন্মের নোংরামি। নোংরামি করে দশজন আর সেই নোংরামি দেখে দশ লাখ মানুষ।
জ্ঞান অর্জন নিয়ে এদের কোনো মাতামাতি নেই। সরকারও এদের বিরুদ্ধে কোনোও ব্যবস্থা নিচ্ছে না। আরেক শ্রেনীর প্রজন্ম আছে তাঁরা মেয়ে পাগল। এরা দল বেঁধে বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে নিয়মিত যায়। সেক্স করে। এটাই তাদের কাছে আধুনিকতা। আরেক শ্রেনীর প্রজন্ম মজেছে নেশায়। মাদক ছাড়া তাদের চলেই না। হোক সেটা গাঁজা, ইয়াবা অথবা মদ। প্রতিদিন খেতেই হবে। এটাই তাদের ফ্যাশন। এটাই তাদের স্টাইল। প্রতিটা এলাকায় যেমন মাদক পাওয়া যায় ঠিক তেমনি প্রতিটা এলাকায় আছে কিশোর গ্যাং। কিশোর গ্যাং হচ্ছে ছাত্রলীগের প্রতিচ্ছায়া। প্রায়ই এরা দা, চাপাটি নিয়ে ধাওয়া করে। এই প্রজন্ম বই পড়ে না। স্কুল কলেজের লেখাপড়ায় তাদের মন নেই। তাঁরা জানে সরকার কাউকে ফেল করাবে না। পরীক্ষা দিলেই পাশ।
প্রেম ভালোবাসা এই প্রজন্মের মাথা খেয়ে ফেলেছে। স্কুল পড়ুয়া ছোট ছোট ছেলেমেয়ে প্রেম ভালোবাসা করছে। তাদের প্রেম ভালোবাসার মধ্যে সুন্দর কিছু নেই। স্কুল ইউনিফর্ম পড়েই পার্কে যাচ্ছে, ফাস্টফুডের দোকান অথবা চলন্ত রিকশার মধ্যেই চুম্মাচাট্রি করছে। কোনো লজ্জা শরম নেই। কোনো বিকার নেই। কোনো দ্বিধা নেই। এইসব ছেলেমেয়েদের কি বাবা মা নেই? তাঁরা কেন তাদের ছেলেমেয়ের খোজ নিচ্ছে না? বাবা মা জন্ম দিয়ে ছেড়ে দিয়েছে। ছেলেমেয়ে নোংরামি করে বেড়াচ্ছে। এদের বাবা মায়ের শাস্তি হওয়া উচিৎ সবার আগে। জন্ম নেওয়া সহজ। কিন্তু জন্ম দিয়ে সঠিক ভাবে শিক্ষা দিয়ে বড় করা সহজ নয়। এই প্রজন্ম হচ্ছে অশ্লীল প্রজন্ম। এদের কর্মকান্ড দেখে বিনা দ্বিধায় বলা যেতে পারে- বেজন্মা প্রজন্ম।
এই প্রজন্মের মুখের ভাষা অনেক খারাপ। এরা কুৎসিত গালি ছাড়া কথাই বলতে পারে না। হাতে হাতে মোবাইল। আছে ইন্টারনেট। রাত জেগে এরা পর্ণ ভিডিও দেখে। বিনা দ্বিধায় বলা যেতে পারে এই প্রজন্ম পঙ্গু প্রজন্ম। মেয়ে গুলো রাস্তায় দাঁড়িয়ে সিগারেট খায়। এই প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের দেখলে মনে হয় লজ্জা শরম দুনিয়া থেকে উঠেই গেছে। মূলত স্মার্ট ফোন, ইন্টারনেট এই প্রজন্মকে জাহান্নামে নিয়ে গেছে। প্রতিটা এলাকার চ্যাংড়া চ্যাংড়া পোলাপান রাজনীতি করে, অমুক ভাইয়ের আণ্ডারে। বড় ভাইরা তাদের সাহস দেয়, ভরসা দেয়। সব কিছু মিলিয়ে এই প্রজন্ম অন্ধকারে যাচ্ছে। এজন্য দায়ী তাদের বাবা মা এবং অবশ্যই সরকার।