আমার বন্ধুটি প্রকৃত কি না বুঝব কীভাবে?
আমার বন্ধুটি প্রকৃত কি না বুঝব কীভাবে?
বন্ধু জীবনের আশীর্বাদ নিঃসন্দেহে। এতবড় এই পৃথিবীতে কেবল রক্তের সম্পর্কগুলো দিয়ে জীবন চলতে পারে না, প্রত্যেক পদে পদে প্রয়োজন হয় বন্ধুর। বন্ধু সেই আপনজন, যাদেরকে অবলম্বন করে মানুষ হিসাবে আমরা নিজেকে বিস্তৃত করি। কিন্তু এই আশীর্বাদটাই অভিশাপ হয়ে যেতে সময় লাগে না , যদি কিনা বন্ধু নির্বাচন হয়ে যায় ভুল। কেননা একজন কাছের বন্ধু কেবলমাত্র পারে সবচাইতে জঘন্য শত্রু হতে। আর তাই, আপনার বয়স যেমনই হোক না কেন বন্ধু নির্বাচনে সর্বদা চাই বিশেষ সতর্কতা।
১) ভেবে দেখুন তো খুব দুঃসময়ে আপনাকে একটু প্রশান্তি দিতে ছায়া হয়ে পাশে দাঁড়িয়েছেন একজন। বুঝে নিন সেই মানুষটিই আপনার প্রিয় বন্ধু। তার হয়তো প্রতিটি ছুটির দিনে আপনার সাথে বসে চা খাওয়ার বা আপনার সাথে চ্যাট করার সময় হয় না, কিন্তু বিপদে তার সহায়তা মোটেও মিস হয় না। সুখের বন্ধুদের বিপদে আপনি মোটেও পাবেন না।
২)কোন কারণে বন্ধুর সাথে করে বসলেন খারাপ ব্যবহার। কিন্তু পরদিন নিজের ভুল বুঝতে পেরে তার কাছে আন্তরিক ক্ষমা চাইতেই যদি সে আপনার অবস্থাটা বুঝতে পারে, ক্ষমা করে দেয়- তাহলে মেনে নিন সেই আপনার সঠিক বন্ধু।
৩) পছন্দের মানুষটির সাথে ঝামেলা। হৃদয় ভেঙে যাওয়ায় আপনার মন বলছে ‘চাই একাকীত্ব।’ ভুলভাল সিধান্ত নেয়াও অসম্ভব নয় এসময়। দেখবেন এই ক্রান্তিকালেও আপনি তাকে পাশে পাবেন যে সত্যিই আপনাকে ভালো বন্ধু মনে করে। আর তার সঙ্গ আপনি ততক্ষণ পাবেন যতোক্ষণ না আপনি পুরোপুরি ঠিক হয়ে যান।
৪) হতে পারে ব্যস্ত জীবনে তারও দম ফেলার ফুরসত নেই। কিন্তু কথাটা যদি হয় আপনার কোনো বিষয়ে পরামর্শ দরকার দেখবেন তার সম্পূর্ণ মনোযোগ তখন আপনারই দিকে। বলে দিতে হবে না নিশ্চয়ই যে তিনি আপনার প্রকৃত বন্ধু।
৫) ভেবে দেখুন তো আপনার বন্ধুদের মধ্যে এমন কেউ আছে কি যে সারাদিন নিজের কাজ, চাপ, ঝামেলা নিয়ে ব্যস্ত থাকে বটে। কিন্তু দিনশেষে একটু সময় আপনার জন্যে রেখেই দেয় বন্ধুত্বেও বাঁধনটা আর একটু জোড়দার করতে?
৬)যেই না কেউ আপনার দিকে আঙুল তুলে কথা বলে, আঘাত করে। তখনই পাশে এসে দাঁড়ায় কে? কে সাহায্য করে ঝামেলা থেকে বেরিয়ে আসতে? যিনি করেন বুঝতে হবে তিনি আপনার প্রকৃত বন্ধু।
৭) হয়তো কোনো কারনে আপনাকে সঙ্গ দিতে পারলো না আপনার বন্ধুটি। তবে পরদিন দেখা হতেই সে যেমন সেটার জন্যে সরি বললো, তেমন কোনো না কোনোভাবে আর একটু সঙ্গ দিয়ে আপনাকে ভালো রাখার চেষ্টা করলো। তাহলে বুঝতে হবে আপনার সামনেই দাড়িয়ে আছেন আপনার প্রকৃত বন্ধু।
৮) আস্থা আর বিশ্বাসই বন্ধুত্বের প্রথম শর্ত। তাই যেখানে বিশ্বাস নেই সেটা ভালো বন্ধুত্ব হতে পারে না। আপনার প্রকৃত বন্ধু যেমন আপনার ওপর বিশ্বাস হারাবে না তেমন আপনার বিশ্বাসটা নষ্ট হোক এমন কোনো কাজও করবে না।
৯) যদি দেখেন যে আপনার বন্ধুটির আপনার সাথে বন্ধুত্ব সারাজীবন রাখার জন্যে নিজের সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে। তাহলে বুঝে নিন সেই আপনার প্রকৃত বন্ধু।
১০) টুকটাক ঝগড়া মানেই সম্পর্ক শেষ তা নয় বলেই বিশ্বাস করে। সেই হচ্ছে আপনার প্রকৃত বন্ধু।
১১) আপনার প্রকৃত বন্ধু যেমন আপনার সুখের সময় আপনার আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে আপনার পাশে থাকবে। জমিয়ে মজা করবে। তেমন বিপদের সময়ও তার ছায়া আপনি পাবেন। যেকোনো সমস্যার সমাধানে আপনি পরামর্শ পাবেন তারই কাছ থেকে।
১৩) আপনার জন্যে ক্ষতিকর সেটা বর্তমানে হোক বা পরবর্তী জীবনে সেটা সে কখনোই আপনাকে করতে বলবে না। বিপথে পা বাড়ালেও তার সহায়তায় আপনি আবার ঠিক পথে ফিরে আসবেন। তাহলে বুঝবেন যে মানুষটি আপনাকে ফিরিয়েছে নির্ঘাত ধ্বংসের হাত থেকে সেই আপনার প্রকৃত বন্ধু।
এছাড়া :
৫টি উপায়ে চিনে নিন নকল বন্ধুকে : বন্ধুত্ব কি সব সময়েই আশীর্বাদ? নাকি বন্ধুত্বেরও আছে কিছু ঝুঁকি? বন্ধু ছাড়া যেমন কারো জীবন কাটানো সম্ভব না, ঠিক তেমনই বন্ধুর কারনেও হয়ে যেতে পারে আপনার বড় কোনো ক্ষতি। বন্ধু সেজে ক্ষতি করাটাও বেশ সোজা। কারণ বন্ধুকে মানুষ অন্ধের মত বিশ্বাস করে। আর এই এই সরল বিশ্বাসের সুযোগ নেয় বন্ধুরূপী শত্রুরা। তাই বলে কি সব বন্ধুকেই অবিশ্বাস করা যায়? মনে অবিশ্বাস নিয়ে তো আর বন্ধুত্ব করা যায় না। নকল বন্ধুকে চেনার আছে কিছু সহজ উপায়। আসুন জেনে নেয়া যাক আপনার জন্য ক্ষতিকর নকল বন্ধু চেনার ৫টি উপায়।