ইতিকাফ এবং ইতিকাফকারীর বিধান কি?

ইতিকাফ এবং ইতিকাফকারীর বিধান কি?

Add Comment
1 Answer(s)

    এ‘তেকাফ হচ্ছে নিঃসঙ্গ অবস্থায় আল্লাহ্‌র আনুগত্য করার জন্য মসজিদে অবস্থান করা। লায়লাতুল কদর অনুসন্ধান করার জন্য এ‘তেকাফ করা সুন্নাত। আল্লাহ্‌ তা’আলা পবিত্র কুরআনে এদিকে ইঙ্গিত করে এরশাদ করেন,

    وَلَا تُبَاشِرُوهُنَّ وَأَنْتُمْ عَاكِفُونَ فِي الْمَسَاجِدِ

    “মসজিদে এ‘তেকাফ করা অবস্থায় তোমরা স্ত্রীদের সাথে সহবাস করো না।” (সূরা বাক্বারাঃ ১৮৭) ছহীহ্‌ বুখারীতে প্রমাণিত আছে, নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ‘তেকাফ করেছেন, তাঁর সাথে ছাহাবায়ে কেরামও এ‘তেকাফ করেছেন। এ‘তেকাফের এই বিধান শরীয়ত সম্মত। তা রহিত হয়ে যায়নি। ছহীহ্‌ বুখারী ও মুসলিমে আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন, “নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রামাযানের শেষ দশকে এ‘তেকাফ করেছেন, এমনকি আল্লাহ্‌ তাকে মৃত্যু দান করেছেন। মৃত্যুর পর তাঁর স্ত্রীরা এ‘তেকাফ করেছেন।”

    ছহীহ্‌ মুসলিমে আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রামাযানের প্রথম দশকে এ‘তেকাফ করেছেন। তারপর দ্বিতীয় দশকে এ‘তেকাফ করেছেন। অতঃপর বলেন,

    إِنِّي اعْتَكَفْتُ الْعَشْرَ الأَوَّلَ أَلْتَمِسُ هَذِهِ اللَّيْلَةَ ثُمَّ اعْتَكَفْتُ الْعَشْرَ الأَوْسَطَ ثُمَّ أُتِيتُ فَقِيلَ لِي إِنَّهَا فِي الْعَشْرِ الأَوَاخِرِ فَمَنْ أَحَبَّ مِنْكُمْ أَنْ يَعْتَكِفَ فَلْيَعْتَكِفْ

    “নিশ্চয় আমি রামাযানের প্রথম দশকে এ‘তেকাফ করে এই রাত্রি (লায়লাতুল কদর) অনুসন্ধান করেছি। তারপর দ্বিতীয় দশকে এ‘তেকাফ করেছি। অতঃপর ঐশী আগন’ক কর্তৃক আমাকে বলা হয়েছে, নিশ্চয় উহা শেষ দশকে। তোমাদের মধ্যে কেউ যদি এ‘তেকাফ করতে চায়, সে যেন এ‘তেকাফ করে।” অতঃপর লোকেরা তাঁর সাথে এ‘তেকাফ করেছে। ইমাম আহমাদ (রহঃ) বলেন, ‘এ‘তেকাফ করা যে সুন্নাত সে সম্পর্কে আলেমদের মধ্যে কোন মতবিরোধ আমার জানা নেই।’

    তাই কুরআন সুন্নাহ্‌ ও ইজমার দলীলের ভিত্তিতে এ‘তেকাফ করা সুন্নাত।

    এ‘তেকাফ করার স্থান হচ্ছে, যে কোন শহরে অবসি’ত মসজিদ। যেখানে জামাতে নামায অনুষ্ঠিত হয়। কেননা আল্লাহ্‌ বলেছেনঃ “মসজিদ সমূহে ই‘তেকাফ করা অবস্থায়..।” উত্তম হচ্ছে জুমআর মসজিদে এ‘তেকাফ করা। যাতে করে জুমআ আদায় করার জন্য বের হতে না হয়। অন্য মসজিদে এ‘তেকাফ করলেও কোন অসুবিধা নেই, তবে জুমআর জন্য আগে ভাগে মসজিদে চলে যাবে।

    এ‘তেকাফ কারীর জন্য সুন্নাত হচ্ছে, আল্লাহ্‌র আনুগত্যপূর্ণ কাজ তথা কুরআন তেলাওয়াত, যিকির, নফল নামায প্রভৃতিতে মাশগুল থাকা। কেননা এ‘তেকাফের উদ্দেশ্যই হচ্ছে এটা। মানুষের সামান্য কথাবার্তায় কোন অসুবিধা নেই বিশেষ করে কথা যদি উপকারী হয়।

    এ‘তেকাফকারীর জন্য স্ত্রী সহবাস ও স্ত্রী সোহাগ বা শৃঙ্গার প্রভৃতি হারাম। মসজিদ থেকে বের হওয়া তিন ভাগে বিভক্তঃ

    ১)      জায়েয। শরীয়ত অনুমদিত ও অভ্যাসগত যরূরী কাজে বের হওয়া। যেমন জুমআর নামাযের জন্য বের হওয়া, পানাহার নিয়ে আসার কেউ না থাকলে সে উদ্দেশ্যে বের হওয়া। ওযু, ফরয গোসল, পেশাব-পায়খানার জন্য বের হওয়া।

    ২)      ওয়াজিব নয় এমন নেকীর কাজে বের হওয়া। যেমন, রোগী দেখতে যাওয়া, জানাযায় শরীক হওয়া। তবে এ‘তেকাফ শুরু করার সময় এসমস্ত কাজের জন্য বের হওয়ার যদি শর্ত করে নেয়, তবে জায়েয হবে। অন্যথায় নয়।

    ৩)      এ‘তেকাফের বিরোধী কাজে বের হওয়া। যেমন বাড়ী যাওয়া বা কেনা-বেচার জন্য বের হওয়া। স্ত্রী সহবাস করা। এ সমস্ত কাজ কোনভাবেই এ‘তেকাফকারীর জন্য জায়েয নয়।

    Professor Answered on June 9, 2015.
    Add Comment
  • RELATED QUESTIONS

  • POPULAR QUESTIONS

  • LATEST QUESTIONS

  • Your Answer

    By posting your answer, you agree to the privacy policy and terms of service.