ইসলামের বিধান অনুযায়ী ঘুমানোর নিয়ম ও নিয়ত জানতে চাই?

ইসলামের বিধান অনুযায়ী ঘুমানোর নিয়ম ও নিয়ত জানতে চাই?

Vice Professor Asked on August 24, 2015 in ইসলাম ধর্ম.
Add Comment
1 Answer(s)

    রসুল (সা.) সব সময় ডান পাশ হয়ে ডান হাতের তালুর ওপর মুখমণ্ডলের অংশ বিশেষ (গাল) রেখে কিবলামুখী হয়ে শয়ন করতেন। এর কারণ অজানা নয়। বুকের বাম পাশে হৃৎপিণ্ডের অবস্থান। চিকিৎসকরা সব সময় হৃৎপিণ্ডের ওপর চাপ প্রয়োগে নিষেধ করেছেন। সুতরাং কেউ বাম পাশ হয়ে শয়ন করলে স্বাভাবিকভাবেই তার হৃৎপিণ্ডের ওপর চাপ পড়বে। রসুল (সা.) ঘুমানোর আগে এক খণ্ড বস্ত্র দিয়ে তিনবার তার বিছানা পরিষ্কার করে নিতেন যাতে কোনো বিষাক্ত পোকামাকড় তাকে কামড়ানোর সুযোগ না পায়। আমাদের আজ ভাবতে অবাক লাগে ১৪০০ বছর আগে যখন আধুনিক কোনো চিকিৎসা ব্যবস্থা ছিল না তখনকার সময়ে উম্মি নবী (সা.) আমাদের ঘুমানোর আদর্শ পদ্ধতি বাতলে গেছেন। তাঁর উপদেশ ছিল প্রজ্ঞাময় ও রহমতস্বরূপ। রসুল (সা.) এশার নামাজের পর তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে যেতেন এবং রাতের শেষভাগে উঠে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করতেন। আবু হুরায়রা (রা)-এর মতে, ‘রসুল (সা.) এশার নামাজের পর ঘুমাতে পছন্দ করতেন। তিনি এশার পর কথা বলা পছন্দ করতেন না।’ দুর্ভাগ্য, আমাদের দেশের শহরের লোকেরা গভীর রাত পর্যন্ত টিভি দেখে ঘুমাতে যায়, তাদের অনেকেই সূর্য ওঠার আগে ফজরের নামাজই পড়তে পারে না। এশার নামাজ জামাতে পড়ার পর ফজরের নামাজও জামাতে পড়া হলে সারা রাতই নামাজে কেটেছে ধরে নেওয়া হয়। রসুল (সা.) সূর্য ওঠার পর ঘুমানোকে রিজিকের জন্য ক্ষতিকর বলে মনে করতেন। দিন কাজের জন্য আর রাত বিশ্রাম বা আরামের জন্য, রাত নতুন করে শক্তি সঞ্চয়ের জন্য। সময় থাকা সাপেক্ষে দিনের বেলায় দুপুরের আহারের পর একটু বিশ্রাম (কায়লুলাহ) করে নেওয়া যায়। এটা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। এর ফলে রাতের বেলায় আল্লাহর ইবাদতে যে কষ্ট হয় তা লাঘব হয়। এর জন্য গভীর ঘুমের প্রয়োজন হয় না। এর জন্য শুধু বিছানায় শুয়ে একটু বিশ্রাম নিলেই চলে। সাহল ইবন সা’দ (রা) বলেন, ‘আমরা কায়লুলাহ করতাম আর জুমার নামাজের পর আহার করতাম।’ আসলে যারা রাতে ঘুমায় না তারা অজ্ঞ ছাড়া কিছুই নয়। রসুল (সা.) ঘুমাতে যাওয়ার আগে দোয়া করতেন, ‘হে আল্লাহ! আমাকে তোমার শাস্তি হতে রক্ষা কর যেদিন তুমি তোমার বান্দাদের একসাথ করবে বা তোমার বান্দাদের জীবিত করে উঠাবে।’ চিকিৎসা বিজ্ঞানও অতিরিক্ত রাত জাগার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। তাই আসুন আমরা ইসলামী বিধানের আলোকে ঘুমানোর অভ্যাস করি।

    মহানবী হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের দৈনন্দিন জীবনে কিছু দোয়া পড়তে বলছেন যা পড়ার ফজিলত অনেক। আসুন আমরা কিছু গুরুত্বপূর্ন দোয়া জেনে নিই।

    ঘুমাতে যাওয়ার সময় দোয়া

    আসতাগফিরুল লাহাল লাজি লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাই’য়ুল কাই’ইয়ু’মু ওয়া আতুবু ইলাহ

    রাসূলে পাক বলেছেন, যে ব্যাক্তি ঘুমাতে যাওয়ার আগে এই দোয়া তিনবার পড়ে ঘুমাবে সে ঘুম থেকে নিষ্পাপ হয়ে উঠবে।
    ঘুম থেকে উঠার পরে দোয়া

    আলহামদুলিল্লাহিল লাজি আহইয়া নাফছি বা’দা মা আমাতাহা ওয়া ইলাইহিন নুশুর

    রাসূল ঘুম থেকে উঠেই এই দোয়া পড়তেন। এই দোয়া পড়লে সারাদিন ভালো কাটবে।

    টয়লেটে যাওয়ার আগে দোয়া

    আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল খুবথি ওয়াল খাবায়ি’থ

    এই দোয়া পড়ে রাসূল টয়লেটে ঢুকতেন। টয়লেটে ঢুকার আগে এই দোয়া পড়তে বলেছেন।
    ঘর থেকে বের হওয়ার সময়ের দোয়া

    বিসমিল্লাহি তাওয়াক’কালতু আলাল্লাহি ওয়ালা হাওলা ওয়ালা কু’ওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ

    রাসূল বলেছেন যে ব্যাক্তি এই দোয়া পড়ে ঘর থেকে বেরোবে সকল বিপদ থেকে সে নিরাপদে থাকবে ও ইবলিশ শয়তান তার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না।

    দেনাগ্রস্থতা থেকে মুক্তির দোয়া

    আল্লাহুম্মা আকফিনি বি হালালিকা আ’ন হারামিকা আগনিনি বি ফাদলিকা আম্মান সিওয়াকা

    হযরত আলী (রাঃ) বলেছেন, যে ব্যাক্তি এই দোয়া পড়বে সে যদি পাহাড়ের সমানও দেনাগ্রস্থ হয়ে থাকে তবুও তার জন্য দেনা পরিশোধ সহজ করে দেয়া হবে।

    প্রাকৃতিক দূর্যোগ থেকে হেফাজতে থাকার দোয়া

    বিসমিল্লাহিল লাজি লা ইয়াদূর’রু মা’আস মিহি শাইয়ুন ফিল আরদি ওয়ালা ফিস সামি’ই ওয়াহুয়া সামি’য়ুল আলিম

    রাসূল (সাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি এই দোয়া তিনবার পড়বে সে ভূমি ও আকাশের দূর্যোগ থেকে হেফাজতে থাকবে।

    রোগ থেকে দ্রুত আরোগ্য প্রাপ্তির দোয়া

    আল্লাহুম্মা রাব্বান নাছি মুযহিবাল বাছি – ইশফি আনতা শাফি – লা শাফি ইল্লা আনতা শিফা’ন লা ইয়োগাদিরু সুকমা

    আনাস (রাঃ) বলেছেন, রাসূল (সাঃ) অসুস্থ ব্যাক্তিদের উপর এই দোয়া পড়ে ফু দিতেন। অসুস্থ ব্যাক্তি দ্রুত আরোগ্য লাভ করতো।

    ব্যাথা উপশমের দোয়া

    আউযুবি ইজ্জাতিল্লাহি ওয়া কুদরাতিহি মিন শার’রি মা আজিদু

    হযরত উসমান (রাঃ) একবার ব্যাথার যন্ত্রনায় কাতড়াচ্ছিলেন। রাসূল বললেন, আপনি ডান হাত দিয়ে ব্যাথার স্থান বুলানোর সময় এই দোয়া সাতবার পড়ুন। ব্যাথা ধীরে ধীরে কমে যাবে।

    Professor Answered on August 24, 2015.
    Add Comment
  • RELATED QUESTIONS

  • POPULAR QUESTIONS

  • LATEST QUESTIONS

  • Your Answer

    By posting your answer, you agree to the privacy policy and terms of service.