ইসলামে কার কার সঙ্গে বিয়ে হারাম ?

ইসলামে কার কার সঙ্গে বিয়ে হারাম ?

Default Asked on May 12, 2015 in বিয়ে.
Add Comment
1 Answer(s)

    ভাই আপনি সুন্দর একটা প্রশ্ন করছেন। সুরা আন-নিসা রুকু;-৪ আয়াত;-২৩-২৫ )আল্লাহ তালা বলেন

    /حُرِّمَتْ عَلَيْكُمْ أُمَّهَاتُكُمْ وَبَنَاتُكُمْ وَأَخَوَاتُكُمْ وَعَمَّاتُكُمْ وَخَالاَتُكُمْ وَبَنَاتُ الأَخِ وَبَنَاتُ الأُخْتِ وَأُمَّهَاتُكُمُ اللاَّتِي أَرْضَعْنَكُمْ وَأَخَوَاتُكُم مِّنَ الرَّضَاعَةِ وَأُمَّهَاتُ نِسَآئِكُمْ وَرَبَائِبُكُمُ اللاَّتِي فِي حُجُورِكُم مِّن نِّسَآئِكُمُ اللاَّتِي دَخَلْتُم بِهِنَّ فَإِن لَّمْ تَكُونُواْ دَخَلْتُم بِهِنَّ فَلاَ جُنَاحَ عَلَيْكُمْ وَحَلاَئِلُ أَبْنَائِكُمُ الَّذِينَ مِنْ أَصْلاَبِكُمْ وَأَن تَجْمَعُواْ بَيْنَ الأُخْتَيْنِ إَلاَّ مَا قَدْ سَلَفَ إِنَّ اللّهَ كَانَ غَفُورًا رَّحِيمًا
    অর্থাৎ;-তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে তোমাদের মাতা, তোমাদের কন্যা, তোমাদের বোন, তোমাদের ফুফু, তোমাদের খালা, ভ্রাতৃ-কন্যা(ভাইঝি), ভগিনী-কন্যা(ভাগ্নি), তোমাদের সে মাতা, যারা তোমাদেরকে স্তন্য পান করিয়েছে, তোমাদের দুধ-বোন, তোমাদের স্ত্রীদের মাতা(শ্বাশুড়ী), তোমরা যাদের সাথে সহবাস করেছ সে স্ত্রীদের কন্যা, যারা তোমাদের লালন পালনে আছে। যদি তাদের সাথে সহবাস না করে থাক তবে এ বিবাহে তোমাদের কোন গোনাহ নেই, তোমাদের ঔরষজাত পুত্রদের স্ত্রী, দুই বোনকে বিবাহে একত্রি করণ, কিন্তু যা অতীত হয়ে গেছে। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাকারী দয়ালু।

    ভাই বোন নয় অথচ একই নারীর দুধ উভয়ে পান করে থাকলে তাকে দুধ বোন বলে। বিয়ের ক্ষেত্রে নিজের বোন ও দুধ বোন সমান। স্ত্রীর অন্য স্বামীর ঔরষজাত কন্যাকে রাবিবা বলে। সহবাসের আগেই যদি ঐ স্ত্রী বা রাবিবার মায়ের সাথে তালাক হয়ে গিয়ে থাকে তবে, রাবিবাকে বিয়ে করা হারাম নয়। স্ত্রী অবস্থায় এক বোন থাকতে অপর বোনকে বিয়ে করা হারাম। তবে একের মৃত্যু বা তালাক হয়ে গিয়ে থাকলে অন্য টিকে বিয়ে করা হারাম নয়। এ আয়াতের সাথে সঙ্গতি রেখে আরও দুটি দৈত সম্পর্ককে বিয়েতে একত্রীকরণ হারাম করেছেন; তা হল ফুফু ও ভাইঝি আর খালা ও বোনঝি।

    /وَالْمُحْصَنَاتُ مِنَ النِّسَاء إِلاَّ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُكُمْ كِتَابَ اللّهِ عَلَيْكُمْ وَأُحِلَّ لَكُم مَّا وَرَاء ذَلِكُمْ أَن تَبْتَغُواْ بِأَمْوَالِكُم مُّحْصِنِينَ غَيْرَ مُسَافِحِينَ فَمَا اسْتَمْتَعْتُم بِهِ مِنْهُنَّ فَآتُوهُنَّ أُجُورَهُنَّ فَرِيضَةً وَلاَ جُنَاحَ عَلَيْكُمْ فِيمَا تَرَاضَيْتُم بِهِ مِن بَعْدِ الْفَرِيضَةِ إِنَّ اللّهَ كَانَ عَلِيمًا حَكِيمًا
    অর্থাৎ;-তোমাদের স্বত্বাধীন যেসব দাসী রয়েছে তাদের ছাড়া সকল সধবা নারীকে তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে। এ হল আল্লাহর বিধান। এদের ছাড়া অন্য সকল নারীকে তোমাদের জন্য হালাল করা হয়েছে। এ শর্তে যে তোমরা তাদের অর্থের বিনিময়ে তলব করবে। ঘর-সংসার করার জন্য, আনন্দ-ফূর্তী করার জন্য নয়। বিয়ের মাধ্যমে তোমরা যে নারীদের সম্ভোগ করবে, তাদের নির্ধারিত মোহর দিয়ে দেবে। আর তোমাদের কোন গোনাহ হবেনা যদি মোহর নির্ধারণের পর কোন বিষয়ে পরষ্পর সম্মত হও। নিশ্চয় আল্লাহ হলেন সর্বোজ্ঞ হেকমত ওয়ালা।

    الْمُحْصَنَاتُ শব্দটি এ আয়াতে অন্যের স্ত্রী যিনি স্বামীর আয়ত্বে আছেন, যাকে সধবা বলা হয়েছে। অন্যের বিবাহীত স্ত্রী বিয়ের পাত্রী হিসাবে হারাম। তবে মোহার্রামাতে আবাদী নয়, আরজি বলে। তৎকালীন সামাজিক অবস্থার প্রেক্ষিতে স্বত্বাধিকারী দাসীদের কথাটি এসেছে। পবিত্র কোরআন চলমান অবস্থা হতে সহনশীলতার মাধ্যমে ইসলামী শরিয়তকে বহাল করেছে। তাই একদা যা ছিল এখন যদি তা না থাকে, তাকে নতুন করে সৃষ্টি করতে কোথাও বলা হয়নি। অযথা তর্কেরও অবকাশ থাকেনা।

    বিয়ে হতে হবে সংসার করার জন্য, অভিসার বা ফূর্তী করার জন্য নয়, তাই প্রকাশ্যেই হতে হবে। মোহর ও আদায় করতে হবে। আয়াতের শেষে বলা হয়েছে, মোহর নির্ধারণের পর স্বামী স্ত্রী উভয়ে সম্মত হয়ে যদি মোহরে কমবেশী বা পুনঃনির্ধারণ করে তাতে দোষের কিছু নেই।

    /وَمَن لَّمْ يَسْتَطِعْ مِنكُمْ طَوْلاً أَن يَنكِحَ الْمُحْصَنَاتِ الْمُؤْمِنَاتِ فَمِن مِّا مَلَكَتْ أَيْمَانُكُم مِّن فَتَيَاتِكُمُ الْمُؤْمِنَاتِ وَاللّهُ أَعْلَمُ بِإِيمَانِكُمْ بَعْضُكُم مِّن بَعْضٍ فَانكِحُوهُنَّ بِإِذْنِ أَهْلِهِنَّ وَآتُوهُنَّ أُجُورَهُنَّ بِالْمَعْرُوفِ مُحْصَنَاتٍ غَيْرَ مُسَافِحَاتٍ وَلاَ مُتَّخِذَاتِ أَخْدَانٍ فَإِذَا أُحْصِنَّ فَإِنْ أَتَيْنَ بِفَاحِشَةٍ فَعَلَيْهِنَّ نِصْفُ مَا عَلَى الْمُحْصَنَاتِ مِنَ الْعَذَابِ ذَلِكَ لِمَنْ خَشِيَ الْعَنَتَ مِنْكُمْ وَأَن تَصْبِرُواْ خَيْرٌ لَّكُمْ وَاللّهُ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
    অর্থাৎ;-তোমাদের মধ্যে যাদের পুরো সংগতি নেই যা দিয়ে সম্ভ্রান্ত মুমিন মেয়েদের বিয়ে করতে পারে, তারা নিজেদের মুমিন বাঁদীদের মধ্যে কাউকে বিয়ে করবে। আল্লাহ তোমাদের ইমান সম্পর্কে ভাল ভাবে জ্ঞাত রয়েছেন। তোমরা পরষ্পর অভিন্ন, সুতরাং তাদেরকে তাদের মালিকের অনুমতি ক্রমে বিয়ে কর এবং নিয়মানুযায়ী তাদের মোহর প্রদান কর। যেন স্ত্রী হিসেবে বসবাসকারিনী হয়, প্রকাশ্য অনাচারিনী কিংবা গোপন অভিসারিনী না হয়। বিয়ের বেষ্টনিতে আসার পর যদি তারা ব্যভিচার করে, তবে তাদের শাস্তি হবে সম্ভ্রান্ত নারীদের অর্ধেক। এব্যবস্থা তাদের জন্য যারা ব্যভিচারে জড়িয়ে পড়ার আশংকা করে। আর যদি সবর কর তবে তা তোমাদের জন্য উত্তম। আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুণাময়।

    এ আয়াতে মুহসানাত শব্দটি সম্ভ্রান্ত ঘরের মেয়েদের বলা হয়েছে। সম্ভ্রান্ত মেয়েদের বিয়ে করার যোগ্যতা বলতে এখানে মোহরের স্বল্পতাকেই বোঝানো হয়েছে। যথেষ্ট সামর্থ নেই আবার ব্যভিচার বা অসামাজিক কাজে জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা যথেষ্ট আছে, এমত অবস্থায় যাকে মুমিন বলে সবাইজানে এমন দাসীকে তার মালিকের অনুমতি ক্রমে বিয়ে করতে বলা হয়েছে। তবে সামর্থ অর্জন করা পর্যন্ত ধৈর্যধারণকেই উত্তম বলা হয়েছে। দাসীকে বিয়ে সাময়ীক মৌজ করার জন্য না হয়ে সংসার করার জন্যই যেমন হতেহবে তেমনই দাসীও অনাচারিনী বা গোপন অভিসারিনী হতে পারবেনা। যদি এমন কোন অপরাধ করেই বসে তবে তার শাস্তি সম্ভ্রান্ত ঘরের মেয়েদের শাস্তির অর্ধেক ধার্য হবে। যদিও এখনও শরিয়তের শাস্তি চুড়ান্ত বিধান আসেনি, তাই সমসাময়ীক শাস্তিই বর্তাবে।

    Professor Answered on May 12, 2015.
    Add Comment
  • RELATED QUESTIONS

  • POPULAR QUESTIONS

  • LATEST QUESTIONS

  • Your Answer

    By posting your answer, you agree to the privacy policy and terms of service.