ইসলামে ফেরেশতা শব্দের ব্যাখ্যা কী?
ইসলামে ফেরেশতা শব্দের ব্যাখ্যা কী?
ফেরেশতা আল্লাহ মহানের সৃষ্টি। এদের সংখ্যা বা আকৃতি সম্পর্কে তেমন কোনো বর্ণনা পাওয়া যায় না। তবে বেশ কিছু সহীহ হাদিসের মধ্যে হজরত জিব্রাইল [আ.]-এর আকৃতিগত বর্ণনা পাওয়া যায়। হজরত জিব্রাইল [আ.] হলেন ফেরেশতাকুলের সরদার। ধরাতে প্রেরিত সব নবি-রাসুলের বার্তাবাহক ছিলেন তিনি। পবিত্র কোরানে হজরত জিব্রাইলকে রূহ নামে অভিহিত করেছেন আল্লাহ মহান। যা হোক একজন মানুষ হিসেবে, একজন খাঁটি মুসলমান হিসেবে হজরত জিব্রাইল [আ.]সহ প্রত্যেক ফেরেশতার প্রতি আমাদের কিছু হক রয়েছে। নিজ উদ্যোগে, সচেতনভাবে আমাদের সেসব হক আদায় করা উচিত।
এক. ফেরেশতাদের প্রতি বিশ্বাস রাখা। অর্থাৎ ফেরেশতারাও যে আল্লাহ মহানের সৃষ্টি, এমন বিশ্বাস স্থাপন করা এবং ফেরেশতাদের প্রতি এই বিশ্বাসের বিষয়টি ইমানের অংশ। কোনো মুসলিম ইমানদার হতে পারবে না যদি সে আল্লাহ মহান সৃষ্ট ফেরেশতাকুলের ওপর বিশ্বাস না রাখে। দুই. ফেরেশতাদের নিষ্পাপ বলে ধারণা পোষণ করা। গোনাহ বা পাপের হিসাব-নিকাশের বাইরে ফেরেশতাদের অবস্থান। এরা কেবলই আল্লাহ মহানের হুকমের গোলাম। মানব জাতির মতো নিজস্ব কোনো চালিকাবোধ নেই এদের। তাই এরা পাপ বা গোনাহের আওতাভুক্ত নয়। তিন. যে কোনো ফেরেশতার নাম শোনার পর আলাইহিস সালাম পাঠ করা। ইসলামের বিশেষ একটি নিয়ম এটি। এভাবে বিভিন্ন দোয়ামূলক শাব্দিক উচ্চারণের মাধ্যমে বিভিন্ন স্তরের মানুষ ও সৃষ্টিকে সম্মান প্রদর্শন করাই এই বিধির মূল উদ্দেশ্য। চার. ফেরেশতারা কষ্ট পায় এমন সব কাজ থেকে বেঁচে থাকা। পৃথিবীর শুরু থেকে আজ পর্যন্ত আল্লাহ মহানের নির্দেশ মোতাবিক বিভিন্ন সময়, নানাবিধ কাজে ধরাধামে আগমন ঘটে ফেরেশতাদের। সহীহ হাদিসের বর্ণনা অনুযায়ী, পৃথিবীতে অবস্থিত আল্লাহর ঘর মসজিদগুলোতে প্রতিনিয়তই ফেরেশতারা আগমন করেন। তাই দুর্গন্ধযুক্ত বস্তু বা খাবার [ যেমন : পেয়াজ, রসুন, মুলা, বিড়ি-সিগারেট ও তামাক] খেয়ে মসজিদে প্রবেশ করা নিষেধ।
এছাড়াও বিভিন্ন সময় মুসলিম পরিবারে রহমতের ফেরেশতাদের আগমন ঘটে। ঘরে কোনো প্রাণীর ছবি লটকানো থাকলে, শরিয়ত অনুমোদিত কারণ ছাড়া কুকুর পালন করলে, মিথ্যা কথা বললে, অলসতা বশত ফরজ গোসল আদায়ে দেরি করলে এবং অতি প্রয়োজনীয় কোনো কারণ ছাড়া উলঙ্গ হলে ঘর থেকে রহমতের ফেরেশতারা চলে যায়। আল্লাহ আমাদের সবাইকে ফেরেশতাদের হকগুলো সঠিকভাবে আদায় করার তাওফিক দান করুন।