ইসলামে যঈফ হাদীসের গ্রহণযোগ্যতা কতটুকু?
ইসলামে যঈফ হাদীসের গ্রহণযোগ্যতা কতটুকু?
রাবীর বা বক্তার ‘জোফ’ বা দুর্বলতার কারণেই কোনো হাদীসকে জঈফ বলা হয়, অন্যথায় (নাওজুবিল্লাহ্) হযরত মুহাম্মদ সা. – এর কোনো কথাই জঈফ নয়।
জঈফ হাদীসের’জোফ’ বা দুর্বলতা কম ও বেশী হতে পারে। খুব কম হলে উহা হাছানের নিকটবর্তী থাকে।
আর বেশী হতে হতে উহা একেবারে ‘মাওজু’তে’ পরিণত হতে পারে। প্রথম পর্যায়ের জঈফ হাদীস আমলের ফযীলত বা আইনের উপকারিতার বর্ণনায় ব্যাবহার করা যাইতে পারে, আইন প্রণয়নে নয়।
সূত্রঃ মেশকাত শরীফ
জঈফ হাদীসের কোনটি গ্রহণযোগ্য এবং কোনটি না, সেটা নির্ধারণ করার এখতিয়ার একমাত্র ফিকাহবিদ এবং হাদীস বিশেষজ্ঞদেরই থাকবে, কোনো সধারণ মানুষের এতে কথা বলার অধিকার নেই।
হাদীছের বিশুদ্ধতার মাপকাঠি হলো সনদ। সুতারাং কোন হাদীছ বুখারী, মুসলিম বা সিহাহ্ সিত্তাহ্য় বর্ণিত না হলেও সনদগত বিশুদ্ধতা প্রমাণিত হলে অবশ্যই তা গ্রহণ করতে হবে।
হানাফী ফিকাহ্র ক্ষেত্রে এটাই ঘটেছে। ইমাম আবূ হানীফা (রাঃ) -এর ইজতিহাদী দৃষ্টিকোণ এই যে, একটি বিষয়ের সমগ্র হাদীছের উপর তিনি আমল করতে চান।
এজন্য প্রয়োজনে তিনি সনদগত বিচারে অপেক্ষাকৃত দুর্বল হাদীছ মূল ধরে বিশুদ্ধ হাদীছের গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা পেশ করে থাকেন।
পক্ষান্তরে অন্য মুজতাহিদগণ একটি মাত্র হাদীছকে আমলে এনে অন্যগুলোকে “যঈফ” বলে এড়িয়ে যান।
বলাবাহুল্য যে, মূলনীতি অনুসরণের ক্ষেত্রে প্রত্রেক ইমামেরই শরীআত সম্মত দলীল রয়েছে।
সূত্রঃ
গ্রন্থঃ আল-হিদায়া,
প্রকাশকালঃ জানুয়ারী ১৯৯৮
লেখকঃ বুরহান উদ্দীন আলী ইব্ন আবূ বকর (রা.)
তরজমাঃ মাওলানা আবূ তাহের মেছবাহ্
প্রকাশকঃ ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ
আবার এমনও দেখা গেছে কোন একটি বিষয়ে শুধুমাত্র “জঈফ” হাদিস আছে । কোনো সহীহ হাদিস নেই । কিন্তু দেখা গেছে “সাহাবীদের (রা:) ” মধ্যে এই আমল প্রচলিত আছে । এতে মুজতাহিদ ঈমামগন বা যারা ফকীহ তারা সিদ্ধান্তে এসেছেন এই আমল নিশ্চয়ই রসুলুল্লাহ(সা:) থেকে এসেছে যেহেতু সাহাবীদের মধ্যে এটা এখনও প্রচলিত আছে। তাই রাবীর কারনে হাদিসটি জঈফ হতে পারে কিন্তু হাদিসটির মুলত গ্রাউন্ড আছে। এবং এই পরিস্হিতিতে এই জঈফ হাদিসের উপর বেস করে আমলটি সম্পূর্ন গ্রহনযোগ্য । সুতরাং এতে আমরা এই সিদ্ধান্তে আসতে পারি , জঈফ হাদিস দেখে কেউ যদি বলে এর ওপর আমল করা যাবে না তাহলে সবসময় সেটা সত্য নাও হতে পারে । যেহেতু সাপোর্টিং হিসেবে সাহাবীদের মধ্যে এই আমল প্রচলিত আছে ( যেটাকে কেউ হাদিস বা কেউ “আছারে সাহাবা” বলে থাকেন )।
সূত্রঃ
লেখকঃ ব্লগার – দেশে-বিদেশে
https://www.shodalap.org/deshebideshe/12492