কিডনিতে পাথর কেন হয়?
অস্থির জীবনযাপন আর ভেজাল ও কৃত্রিম খাবারের এই যুগে বড় একটি সমস্যা হলো কিডনিতে পাথর তৈরি হওয়া। কিডনিতে পাথর কেন হয়? – প্রস্রাবে থাকা ক্যালসিয়াম, অক্সালেট, ইউরিক এসিড ও ইউরেট, সিসটিন ইত্যাদির ঘনত্ব বাড়লে। – প্রস্রাবে এসিড ও ক্ষারের ভারসাম্য নস্ট হলে। – সাইট্রেট, পাইরোফসফেট, ম্যাগনেসিয়াম কিডনিতে পাথর তৈরিতে বাধা দেয়। এগুলো কমে গেলে কিডনিতে পাথর হয়। – পানি কম পান করলে। – কিডনি থেকে মূত্রথলি পর্যন্ত যেকোনো স্থানে জীবাণু সংক্রমণ হলে। উপসর্গ এটা দীর্ঘদিন উপসর্গবিহীন থাকতে পারে। সাধারণ লক্ষণগুলো নিম্নরূপ_ – তীব্র ব্যথা হঠাৎ শুরু হয় এবং এই ব্যথা মেরুদণ্ডের পাশে বুকের খাঁচার নিচে অনুভূত হয়। এই ব্যথা পেটের সামনের দিকেও অনুভূত হতে পারে। আবার পাথরের অবস্থানের তারতম্যের জন্য অনুভবের স্থানেরও তারতম্য হয়। যেমন পাথর বৃক্কনালির ওপর বা মধ্য থাকলে ব্যথা কিডনি বরাবর জায়গা থেকে শুরু হয়ে পেটের নিচের দিকে অনুভূত হতে থাকে। তেমনি পাথর বৃক্কনালির নিচের দিকে থাকলে ব্যথা অনুভূত হয়। পুরুষের ক্ষেত্রে অণ্ডকোষে এবং স্ত্রীলোকের ক্ষেত্রে ল্যাবিয়া মোজোরাতে। – প্রস্রাবের সঙ্গে অথবা প্রস্রাবের শেষে ফোঁটা ফোঁটা তাজা রক্ত পড়া। খালি চোখে এই রক্ত নও দেখা যেতে পারে। – ঘনঘন প্রস্রাব, জ্বর বা প্রস্রাবের জ্বালা-যন্ত্রণা নিয়ে অনেকে আসতে পারেন। – মূত্রথলি সম্পূর্ণ খালি না হওয়ার অনুভূতি হওয়া। – সাধারণত প্রস্রাবের শেষে ব্যথা অনুভূত হওয়া। নড়াচড়া করলে ব্যথা বেড়ে যাওয়া। – প্রস্রাব করার সময় প্রস্রাবের ধারা মাঝেমধ্যে হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাওয়া। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শরীরের কোথাও পাথর আছে কি না তা নিরূপণ করার জন্য বিভিন্ন রকম পরীক্ষার ব্যবস্থা আছে। সাধারণত রক্তের ও প্রস্রাবের বিভিন্ন পরীক্ষা, এঙ্-রে, আল্ট্রাসনোগ্রাম, সিটি স্ক্যান, ম্যাগনেটিক রিজোন্যান্স ইমেজিংয়ের মাধ্যমে এই রোগ সহজেই নির্ধারণ করা যায়। এ ছাড়া কিডনি, বৃক্কনালি বা মূত্রথলিতে আগে পাথর হয়ে থাকলে সেই পাথরের বিশ্লেষণ করার প্রয়োজন হতে পারে। চিকিৎসা কিডনির পাথর অনেক ক্ষেত্রে এমনিতে বের হয়ে যায়। কিডনির পাথর চিকিৎসায় পাথরের আকার, আকৃতি ও অবস্থানের ওপর নির্ভর করে শরীরের বাইরের থেকে শকওয়েভ দিয়ে ভেঙে বের করে আনা যায় কিংবা অস্ত্রপচার করে পাথর বের করা যায়। Extracorporeal Shock Wave Lithotripsy (ESWL) এমন একটা পদ্ধতি, যা দ্বারা শরীরের বাহির থেকে যন্ত্রের সাহায্যে শকওয়েভ পাঠিয়ে পাথর ভেঙে ফেলা হয়। বৃক্কনালি এবং মূত্রাশয়ের পাথর আকার ও আকৃতির ওপর নিভর করে মূত্রনালির ভেতর দিয়ে যন্ত্রের সাহায্যে ভেঙে বের করে আনা যায় বা অপারেশন করে বের করে আনা যায়। ডা. জিয়াউল হক রেসিডেন্ট বিএসএমএমইউ, ঢাকা