কিভাবে অন্যের দেয়া কষ্ট ভুলে থাকব?

    কিভাবে অন্যের দেয়া কষ্ট ভুলে থাকব?

    Train Asked on October 23, 2024 in অনুসরণ.
    Add Comment
    1 Answer(s)

      আমি সহজে রাগ করি না। আমি সহজ সরল জীবনযাপন করি। যখন কেউ খুব বেশি অন্যায় করে, তখন রাগ না করে পারি না। এই শহরে মন্দ মানুষের অভাব নেই। তাঁরা এমন সব কাজ করে যে না রাগ করে উপায় নেই। আমি নিজেকে কন্টোল করতে চেষ্টা করি। রাগ হলেও করার কিছু নেই। অন্যায়কারী কোনোদিনও তার দোষ বা অন্যায়টা বুঝতে চায় না। মানুষ এখন এতটাই ‘ইতর’ হয়েছে যে একজন সহজ সরল মানুষ পর্যন্ত রেগে যাবেই। একজন সাংসারিক মানুষও যখন ঘর থেকে বাইরে বের হয়- সে কেমন অমানবিক ও হৃদয়হীন হয়ে যায়। একসময় বাসে কোনো নারী দাড়িয়ে থাকলে কেউ না কেউ উঠে সিট দিয়ে দিতো। এখন মায়ের সমান মহিলাকে কেউ সিট ছেড়ে দেয় না। বরং বৃদ্ধা মহিলা দাড়িয়ে থাকেন- সিটে বসা ছেলেটা মোবাইল টিপতে থাকে।

      দুই একটা উদাহরন দেওয়া যেতে পারে। ফুটপাত দিয়ে হেঁটে যাচ্ছি- একলোক বাইক উঠিয়ে দিয়েছে ফুটপাতে। তার দেখাদেখি আরো কয়েকজন। বাইকওলা সমানে ফুটপাতে উঠে হর্ন দিচ্ছে। তার কোনো সংকোচবোধ নেই। কোনো লজ্জা নেই। ফুটপাতে বাইক উঠিয়ে সে অন্যায় করেছে এই সহজ হিসাবটা সে বুঝতে পারছে না। বাইকওলা আমার সামনে এসে বলল, হর্ন কানে যায় না। আমি বললাম, কানে গিয়েছে কিন্তু আমার সামনে লোক আছে, সে না সরলে আমি কিভাবে আপনাকে সাইট দিবো? বাইকওলা আমার উপর রেগে গেলো। বলল, গাড়ে গর্দানে কয়েকটা দিলেই সাইট দিতে পারবি। এর আগেও একবার এক চ্যাংড়া পোলা ফুটপাতে বাইক উঠিয়ে ছিলো। তাকে নিষেধ করেছিলাম। সে বলল, সে ছাত্রলীগ করে। আমাকে ধরে নিয়ে যাবে ক্লাবে। তারপর আমাকে মারবে। সে ফোন করলো। কিছুক্ষন পর অনেক গুলো চ্যাংড়া পোলাপান চলে এলো।

      ব্যস্ত রাস্তায় একলোক গাড়ি পার্ক করে রেখেছে। এদিকে রংসাইট দিয়ে আরেকটা গাড়ি চলে এসেছে। ফলাফল লেগে গেছে ভয়াবহ যানজট। আমি ড্রাইভারকে বললাম, দেখেছেন আপনি গাড়িটা এভাবে পার্ক করার জন্য জ্যাম লেগে গেছে। ড্রাইভার আমার উপর রেগে গেলো, বলল- এটা কার গাড়ি জানেন? বললে তো প্যান্ট নষ্ট করে দিবেন। আমি বললাম, যার গাড়িই হোক, আপনি কি গাড়িটা এখানে রেখে অন্যায় করেন নি? ড্রাইভার বলল, যে গাড়িটা রং সাইট দিয়ে আসছে, সেটা কি দেখেন নাই? আমি বললাম, আপনারা দুজনেই অন্যায় করেছেন। ড্রাইভার বলল, পাকনামি বন্ধ করে কাজে যান। নইলে কপালে খারাবি আছে। দুষ্ট লোকের কথায় আমাকে মাথা নত করে ফিরে আসতে হয়। অথচ আমি কোনো অন্যায় করিনি।

      গলির মোড়ে বখাটে ছেলেরা আড্ডা দেয়। কোনো মেয়ে যখন হেটে যায়, তখন বখাটেরা বাজে কমেন্ট করে। আর কুৎসিত ভাবে হাসে। আজকের একটা ঘটনা বলি- আমি বাজার করে বাসায় ফিরছি। দুই মেয়ে কোচিং শেষ করে বাসায় যাচ্ছে। মেয়ে দুটার বয়স ১৪/১৫ বছর হবে। বখাটেরা দুটা মেয়েকে খুবই বাজে একটা মন্তব্য করলো। আমার প্রচন্ড রাগ হলো। বললাম, তোমাদের পরিরবার থেকে কি এই শিক্ষা দেওয়া হয়েছে? এই জন্য কি তোমাদের বাবা মা তোমাদের জন্ম দিয়েছে? তোমাদের বাবা মা কি জানেন তোমরা রাস্তায় এভাবে মেয়েদের বিরক্ত করো। ছেলে গুলো আমার উপর রেগে গেলো। একজন আমার কলার চেপে ধরলো। খুবই কুৎসিত কিছু গালি দিলো আমাকে। একজন বলল, ষ্ট্যাম্প নিয়ে আয়- চুতমাররানি পোলার পা টা ভেঙ্গে দেই।

      রাস্তায় বের হলেই অনেক রকম অন্যায় দেখি। আমার কিছু করার নেই। হাতে ক্ষমতা না থাকলে রাগ দেখানো বোকামি। আমি চুপ থাকি। কিন্তু আমার খুব কষ্ট হয়। ইচ্ছা করে একটা চাবুক নিয়ে রাস্তায় বেড়িয়ে পড়ি। যখন যেখানে কোনো অন্যায় দেখবো- লাগাবো দুই ঘা করে চাবুক। এই সমাজের মানুষজন এত বেশি ইতর হয়ে গেছে যে এরা মুখের কথায় ভালো হবে না। চাবুক চালাতে হবে। যেহেতু আমার হাতে কোনো ক্ষমতা নেই- তাই রাগ দেখাই না। শত অন্যায় দেখেও চুপ থাকি। অথচ ভিতরে ভিতরে ফুঁসতে থাকি। প্রচন্ড রাগ হয় তাই মন খারাপ করে রাস্তায় হাটি। অন্যায় দেখেও প্রতিরোধ করতে পারি না। তীব্র যন্ত্রনা হয়, কষ্ট হয়। আমার ভাগ্যটা এমনই খারাপ যে সকল অন্যায় বারবার আমার চোখের পড়ে।

      Professor Answered on October 23, 2024.
      Add Comment
    • RELATED QUESTIONS

    • POPULAR QUESTIONS

    • LATEST QUESTIONS

    • Your Answer

      By posting your answer, you agree to the privacy policy and terms of service.