কিভাবে দৃষ্টিশক্তি আনেক বয়স পর্যন্ত ধরে রাখা যায়?
কিভাবে দৃষ্টিশক্তি আনেক বয়স পর্যন্ত ধরে রাখা যায়?
◻◼ দৃষ্টি শক্তি ভালো রাখার সহজ উপায় ◼◻
জন্মের পর থেকে আমাদের দৃষ্টিশক্তি কমছে। ২ বছর বয়সে আপনার দৃষ্টিশক্তি ১০ বছর বয়সের থেকে বেশি ছিল। দৃষ্টিশক্তির এই সূক্ষ্ম পরিবর্তন সাধারণত আপনি চোখ পরীক্ষা না করলে বুঝতে পারবেন না। যদিও দৃষ্টিশক্তির ক্ষয় বয়সের বৃদ্ধির সাথে ঘটবে সেটা অনিবার্য তবে কিছু উপায় অবলম্বন করে আমরা চোখের যত্ন নিতে পারি।
প্রতিদিন এই সহজ কয়টি ব্যায়াম আপনার চোখের স্ট্রেস দূর করবে চমৎকার ভাবে।
সারাক্ষণ স্মার্টফোন, কম্পিউটার, টিভি ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকার কারণে আমাদের চোখে অনেক প্রেসার পড়ে। তাই এই ব্যায়ামগুলো করা খুব জরুরি।
চোখ বন্ধ করে
চোখ বন্ধ করে আঙ্গুলের সাহায্যে করুন এই ব্যায়ামটি। এজন্য
১. চোখ বন্ধ করুন
২. চোখের পাতার উপর এক জোড়া করে আঙ্গুল রাখুন
৩. এরপর ২ সেকেন্ডের জন্য হালকা চাপ দিন
৪. এভাবে ৫ থেকে ১০ বার করুন
৫. ব্যায়াম শেষে ধীরে চোখ খুলুন যাতে আপনার চোখ বাইরের আলোর সাথে সহজে খাপ খাইয়ে নিতে পারে।
চোখ ঘোরান
চোখের যত্নে চোখ ঘোরানো ব্যায়াম করুন। এজন্য যা করতে হবে-
১. বাম দিক থেকে চোখের মণি রাউন্ড করে ঘুরে আবার বামে আনুন
২. এভাবে ৫ থেকে ১০ বার করুন
৩. এবার বিপরীত দিকে অর্থাৎ ডান দিকে ঘোরান
৪. এভাবে ৫ থেকে ১০ বার করুন
পাশে তাকান
আমরা আমাদের চোখের কোন দিয়ে বা আড়চোখে আশপাশের মানুষের দিকে হরহামেশাই তাকাই। এটাই করুন চোখের ব্যায়ামের জন্য। মাথা না নাড়িয়ে করুন এই ব্যায়ামটি-
১. এই ব্যায়ামটির জন্য প্রথমে সোজা হয়ে বসুন বা দাঁড়ান
২. যতদূর সম্ভব সামনের দিকে দেখার চেষ্টা করুন (চোখের ওপর প্রেশার না দিয়ে)
৩. এভাবে ৫ থেকে ১০ সেকেন্ড দৃষ্টি অনড় রাখুন
৪. এবার মাথা না নাড়িয়ে বামে তাকান, সর্বোচ্চ যতটা বামে তাকানো সম্ভব
৫. অপেক্ষা করুন ৫ থেকে ১০ সেকেন্ড
৬. একইভাবে ডানে তাকান
৭. আবার ৫ থেকে ১০ সেকেন্ড অপেক্ষা করুন।
৮. অন্তত ১০ বার করুন ব্যায়ামটি।
**চোখের যত্ন নেওয়ার অন্যান্য উপায় ::
*গাজর খানঃ
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশ রয়েল এয়ার ফোর্সের জন কানিংহাম নামের একজন দক্ষ জঙ্গী পাইলটের একটি গল্প ছড়িয়েছিল যিনি রাতের অন্ধকারে জঙ্গি বিমান চালিয়ে শত্রুদের ঘায়েল করতেন। তিনি গাজর খেতেন তাই তার এই প্রখর দৃষ্টিশক্তি তৈরি হয়। তাকে সবাই ‘বিড়াল চোখ’ নামে ডাকতেন।
এটি যদিও এটি পুরনো গল্প, বাস্তবিক পক্ষে চিকিৎসকরা জানান গাজরে দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধির জন্য কার্যকরী উপাদান রয়েছে। গাজরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ, ভিটামিন এ আপনার দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে।
*ভিটামিন এ, সি, ই ও জিংক খানঃ
আপনি যদি গাজর, অন্যান্য ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার খেতে না চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে এসব ভিটামিন সমৃদ্ধ ক্যাপসুল খেতে হবে। এসব ভিটামিন আপনার দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দিবেনা তবে আরও খারাপ হওয়া কে বাধা দিবে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন ভিটামিন এ, ই , সি ও জিংক চোখের দৃষ্টিশক্তি ভাল রাখার জন্য খুবি কার্যকরী।
*UV রশ্মি থেকে সুরক্ষা দেয় এমন সানগ্লাস ব্যাবহার করুনঃ প্রখর সূর্যালোক এবং এর সাথে থাকা আল্ট্রা ভায়লেট রশ্মি আপনার চোখের খুব ক্ষতি সাধন করতে পারে। এ রশ্মি চোখের টিস্যু ড্যামেজ করা সহ কর্নিয়ার অনেক ক্ষতি সাধন করে। এ কারনে যখনই রোদে বাহির হবেন চোখে সানগ্লাস লাগাতে ভুলবেন না।
*সঠিক পরিমাণ আলোতে কাজ করুণঃ
আপনি যখন কোন কাজ করেন বা পড়ালিখা করেন তা যদি অপর্যাপ্ত আলোতে করেন তাহলে আপনার চোখের পরিশ্রম অনেক হয়। যার ফলে চোখের উপর চাপ পড়ে। অন্যদিকে অতিরিক্ত আলোতে কাজ করাও চোখের জন্য ক্ষতিকর। এর ফলে চোখ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। আলোর এসব কমবেশির ফলে যে চাপের সৃষ্টি হয় এ চপ কমাতে সব সময় চেষ্টা করবেন পর্যাপ্ত আলোতে কাজ করতে।
*আপনার কম্পিউটার মনিটরের আলোর পরিমাণ সঠিক রাখুনঃ
এখন প্রযুক্তির যুগ। প্রায় সব জায়গায় কম্পিউটার ব্যাবহার হচ্ছে। হয়ত আপনাকে কাজের তাগিতে ঘন্টার পর ঘণ্টা কম্পিউটারে কাজ করে যেতে হচ্ছে এর ফলে একটানা কম্পিউটারের মনিটরের দিকে তাকিয়ে থাকার ফলে দৃষ্টিশক্তির উপর প্রভাব পড়ছে। এ প্রভাব এড়াতে আপনি আপনার কম্পিউটারের মনিটরটির আলো সহনীয় পর্যায়ে রাখুন। আপনি যদি আপনার কম্পিউটারের আলো বাড়াতে বা কমাতে বিরক্তি বোধ করেন তাহলে আপনি চাইলে এর জন্য f.lux নামের ফ্রি সফটওয়্যারটি ডাউনলোড করে নিতে পারেন। এটি দিনের বেলা ও রাতের বেলা নিজে থেকে আপনার কম্পিউটার মনিটরের আলো সঠিক পরিমানে রাখবে। এর ফলে চোখের উপর প্রভাব টা কমবে এবং দীর্ঘক্ষণ কাজ করার ফলে চোখে যে জ্বালা পোড়া করে তাও কমে যাবে।
মনে রাখবেন আপনি কেবল আপনার দৃষ্টিশক্তি ঠিক রাখতে পারেন, তাই এখনই সাবধান না হলে পরে পস্তাতে হবে আপনাকেই।
ভালো লাগলে আপডেট ও শেয়ার দেবেন । আপনাদের আপডেট ও শেয়ার আমার মতো ক্ষুদ্র লেখকদের উৎসাহ প্রদান করে ।