যৌন আসক্তি হল একপ্রকার অনিয়ন্ত্রিত যৌন কর্মকান্ড যা না করে থাকাটা বেশ কঠিন হয়ে দাড়ায়। একজন যৌন আসক্ত ব্যক্তি প্রায়শঃ যৌনকর্মে লিপ্ত হবার জন্য জোর প্রয়োগ করে থাকে। যৌন আক্রোশের ফলশ্রুতিতে আসক্ত ব্যক্তি তার ব্যক্তিগত এবং কর্মজীবনে এমনকি সামাজিক জীবনেও সমস্যার সৃষ্টি করেন। এরা অনেক সময় যৌনতাকে পরিবার, বন্ধুবান্ধব এবং কাজের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে।
কিভাবে যৌনতা আসক্তির পর্যায়ে চলে যায়:-
মদ এবং নিষিদ্ধ মাদক যেভাবে আসক্তির দিকে যায় – যৌন অভ্যাসও একই ভাবে আসাক্তির পর্যায়ে চলে যেতে পারে। যৌনক্রিয়ার সময় আমাদের শরীর অনেকগুলো রাসায়নিক পদার্থের ককটেইল নিষ্কৃত করে যা একপ্রকার প্রবল সুখবোধ জন্ম দেয়। কিছু মানুষ সেই সকল রাসায়নিক পদার্থের আসক্তিতে মজে যান এবং মোহিত হয়ে পরবর্তী যৌন অনুভুতির জন্য উমত্ত হয়ে উঠেন! অন্যন্য আসক্তির মত শরীর যৌনক্রিয়াকালীন নিঃস্বরিত রাসায়নিক পদার্থের ব্যপারেও অভ্যস্ত হয়ে যায়, তাই ভুক্তভুগি অতিরিক্ত অনুভুতি অর্জনের লক্ষ্যে যৌনমিলনের মাত্রা ক্রমশঃ বাড়াতে থাকেন।
অনেক যৌন আসক্ত ব্যক্তি বলেন তাদের অস্বাস্থ্যকর যৌন অভ্যাস ক্রমশ আসক্তিতে রূপ নিয়েছে। তাদের যৌন আসস্তি হয়তো শুরু হয়েছে হস্তমৈথুনে আসক্তি, পর্নো ছবি দেখ কিংবা কোন অবৈধ শাররীক সম্পর্ক থেকে যা পরবর্তীতে পর্যাক্রমিক ভয়াবহ আচরনে পরিবর্তিত হয়েছে।
যৌন পিপাসা কম থাকাকালীন যৌন আসক্ত ব্যক্তি লজ্জিত বোধ করেন, পাপের জন্য অনুতপ্ত হন, তীব্র অনুশোচনা বোধ করেন এবং উদ্ভিগ্ন হন। যৌন আসক্তরা অনেক সময় একা, নিঃসঙ্গ এবং শক্তিহীনতায় ভোগেন এবং অভ্যাস পরিবর্তন করতে চান। আবার তারা প্রায়শঃ এসকল কঠিন চিন্তা থেকে মুক্ত হবার উদ্দেশ্যে পুনরায় যৌনাচারে লিপ্ত হয়ে পড়েন। বিষয়টি অনেকটা জালের মত তাদের পেচিয়েঁ ধরে।
যৌন আসক্তির রূপ/আচরন সমুহ:-
- অতিরিক্ত হারে পর্নো ভিডিও দেখা
- বাধ্যগত হস্তমৈথুন করা
- বিলসন কাম (অঙ্গের অশোভনীয় অনাবৃত অবস্থা)
- ঝুকিপুর্ন যৌনমিলন
- ফোন সেক্স
- পতিতাবৃত্তি
- নেট সেক্স
- অনেক জনের সাথে সম্পর্ক করা
- বেনামী যৌন সম্মুখীন হত্তয়া
- যৌন হয়রানী করা
- খুব বেশী ব্যক্তিগত বিজ্ঞাপন মাধ্যমে ডেটিং
যৌন আসক্তির পরিসংখ্যান:-
সেক্স হেল্প ডট কম দ্বারা যৌন আসক্তদের মাঝে পরিচালিত জরিপে প্রাপ্ত তথ্য মতে তাদের আচরন গুলো হলো
- ৭০% আসক্ত ব্যক্তি কঠিন সাংসারিক সমস্যায় পতিত হন।
- ৪০% তাদের সঙ্গীর সাথে সম্পর্কে বিচ্ছেদ ঘটান।
- ২৭% তাদের চাকুরী হারিয়েছেন।
- ৪০% অনাকাঙ্খিত গর্ভধারন/গর্ভপাতের অভিজ্ঞতা প্রাপ্ত হয়েছেন।
- ৭২% আত্মহত্যার প্ররোচক মানসিক বিষন্নতায় ভুগছেন।
- ১৭% একাধিক বার অত্মহননের চেষ্টা করেছেন।
- ৬৮% এসটিডি তথা কোন না কোন যৌনবাহীত রোগে আক্রান্ত হয়েছেন।
যৌন আসক্তির ভয়াবহতার একটি প্রথমিক ধারনা নিশ্চয় এই লেখায় পেয়েছেন। একজন সিগারেট খোর যত সহজে গাজা কিংবা হেরইনে আসক্ত হতে পারে – নন স্মোকার ততটা সহজে অন্য মাদকে আসক্ত হয়না। ঠিক তেমনি যারা হস্তমৈথুন কিংবা পর্নো ছবি দেখেন তারা সহজে যৌন পাপাচারে লিপ্ত হয়ে যেতে পারেন – সেটা অন্যদের ক্ষেত্রে ততটা প্রকটতা পায়না।
হোমিওপ্যাথি চিকিত্সা:-
আসক্ত ব্যক্তির শারীরিক এবং মানুষিক সবগুলি লক্ষণ পর্যবেক্ষণ করে উপযুক্ত ট্রিটমেন্ট দিলে অল্প কিছু দিনের মধ্যেই স্বাভাবিক হয়ে যায়। আমরা নিজেরাই বেশ কয়েকজনকে সম্পূর্ণ সুস্থ করতে পেরেছি। তাই এটাকে লজ্জা ভেবে নিজের ভেতরে ঢেকে রাখবেন না। নিঃসংকোচে আপনার হোমিওপ্যাথকে বিষয়টি জানান এবং চিকিত্সা নিন।