কিভাবে শাররীক মিলন স্বামী-স্ত্রীর উপকারে আসতে পারে?

কিভাবে শাররীক মিলন স্বামী-স্ত্রীর উপকারে আসতে পারে?

Doctor Asked on June 26, 2015 in যৌনমিলন.
Add Comment
1 Answer(s)

    যখন আপনার মন প্রশান্ত তখন শেষ জিনিস যেটা আপনি ভাবেন তা হল সুস্থ্য শরীর এবং শরীরের সুন্দর একটা শেপ (শরীরের সঠিক ওজন)। ভাল (তৃপ্তি যুক্ত) যৌন মিলন থেকে আপনি অবশ্যই এসব পেতে পারেন। যৌন মিলন বিবিধ ভাবে আপনার শরীরের জন্য উপকারী। নিন্মে তার উল্লেখযোগ্য কিছু দিক বর্ননা করা হল।

     

    ১. যৌন মিলন দুশ্চিন্তা রোধ করে: যৌন মিলনের একটি বড় সুবিদা হল এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রন করে এবং মোটের উপর দুশ্চিন্তা রোধে সহায়তা করে। স্কটল্যান্ড থেকে প্রকাশিত বায়োলজিক্যাল পিজিওলজি জার্নালে প্রকাশিত এক জরিপে এ তথ্য পাওয়া যায়। জরিপে ২৪ জন নারী এবং ২২ জন পুরুষের যৌন কর্মকান্ড লিপিবদ্ধ করা হয়। জরিপ চলা কালে তাদেরকে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি ঝামেলা যুক্ত কাজ দেওয়া হয় (যেমন ফ্রন্ট ডেস্কে কাজ করা ইত্যাদি)। এ অবস্থায় দেখা যায় যারা শাররীক মিলন করেছেন তার অন্যদের তুলনায় কম দুশ্চিন্তা/ঝামেলায় উদ্ভিগ্ন হন।

    একই জার্নলে প্রকাশিত অন্য একটি আর্টিক্যালে জানা যায় নিন্ম রক্তচাপ অনেক ক্ষেত্রে নিয়মিত যৌন মিলনের সাথে সম্পৃক্ত। ডাক্তারগন আলিঙ্গনের সাথে নারীর নিন্ম রক্তচাপের একটা সম্পর্ক পেয়েছেন।

     

    ২. যৌন মিলন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: ভাল যৌন স্বাস্থ্য মানে উন্নত শাররীক স্বাস্থ্য/সুস্থতা। সপ্তাহে একবার কিংবা দুইবার শাররীক মিলনে ইম্যুওনোগ্লোবুলিন-এ (সংক্ষেপে IgA) নামক এন্টিবডি’র স্তর বৃদ্ধি করে, যা আপনাকে ঠান্ডা লাগা/নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করতে সক্ষম।

    উইলকিস্ ইউনিভার্সিটি, পেনসিলভিনিয়া এর বিজ্ঞানীগন সপ্তাহে অন্ততঃ একবার শাররীক মিলন করেন এমন ১১২ জন মানুষের কাছ থেকে হজমে সহায়তাকারী মুখের লালা (saliva) এর নমুনা সংগ্রহ করেন। তারা একই সময় [দল – ২]যারা যৌনমিলন করেন না; [দল – ৩]যারা সপ্তাহে একদিনের চেয়ে কম (দুই সপ্তাহ কিংবা মাসে একবার), এবং [দল – ৪]যারা অনেকবার (সপ্তাহে তিনবার কিংবা তার বেশি) শাররীক মিলন করেন তাদের লালার নমুনা সংগ্রহ এবং পরীক্ষা করে যে তথ্য উৎঘাটন করেন তাতে দেখা যায় – প্রথম দলের (সপ্তাহে ১ বার) মানুষদের IgA এর স্তর অন্য তিন দলের [২,৩ এবং ৪] চেয়ে অনেক উন্নত।

     

    ৩. যৌন মিলনে অতিরিক্ত ক্যালরি দহন হয়ঃ তিরিশ (৩০) মিনিটের শাররীক মিলন ৮৫ ক্যালরি কিংবা তারও বেশি দহন করতে পারে। ৪২ বার আধাঘন্টার মিলনে ৩,৫৭০ ক্যালরি দহন করতে সামর্থ – যা এক পাউন্ড ওজন কমানোর জন্য যথেষ্ট! তার মানে ২১ ঘন্টার মিলনে এক পাউন্ড ওজন কমানো সম্ভব।

    যৌন মিলন একটি ভাল ব্যয়াম। এর সাহায্যে শাররীক এবং শরীরবৃত্তিয় উভয়-ই সংঘটিত হয়।

     

     

     

    ৪. শাররীক মিলন হৃদপিন্ডের স্বাস্থ্য ভাল রাখেঃ অনেক বয়স্ক পুরুষ মনে করেন যৌনমিলন করলে ষ্ট্রোক হবার সম্ভাবনা থাকে। এটি সবসময় সত্য নয়। জার্নাল অব ইপিডিমিউলোজি এন্ড কমিউনিটি হেল্থ এ প্রকাশিত এক গবেষনা পত্রে বলা হয় ৯১৪ জন মানুষকে ২০ বছর যাবৎ পর্যবেক্ষন করে যৌন মিলনের সাথে ষ্ট্রোক এর কোন সমপ্রিক্ততা পাওয়া যায়নি।

    যৌনমিলনে হৃদপিন্ডের ভাল দিকগুলোর এখানেই সমাপ্তি নয়। উক্ত গবেষনায় আরোও জানা যায়, সপ্তাহে কমপক্ষে দুইবার অথবা ততোধিক শাররীক মিলনের ফলে প্রাণনাশক হার্ট এ্যাটাকের সম্ভাবনা/মাত্রা প্রায় অর্ধেকে নামিয়ে আনে; যারা সপ্তাহে একবারের কম শাররীক মিলন করে থাকেন তাদের তুলনায়।

     

    ৫. যৌনমিলন পারষ্পরিক আন্তরিকতা বৃদ্ধি করেঃ যৌনমিলন করা এবং যৌনমিলনে পুর্নতৃপ্তি অর্জনে মানবদেহের অক্সিটসিন (oxytocin) হরমোনের স্তর বৃদ্ধি করে। অক্সিটসিন হরমোনকে লাভ-হরমোনও বলা হয়ে থাকে। অক্সিটসিন হরমোন স্বামী-স্ত্রী পরষ্পরের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন এবং ভালবাসা শক্তিশালী করে। ইউনিভার্সিটি অব পিটার্সবার্গ এবং ইউনিভার্সিটি অব নর্থ ক্যারলিনা’র এক যৌথ গবেষনায় ৫৯ জন ঋজচক্র সক্রিয় আছে এমন নারীর তাদের স্বামীর সাথে উষ্ণ আলিঙ্গনের পুর্বে এবং পরের অবস্থা মুল্যায়ন করেন। ফলাফলে তারা পায়, “যত বেশি সংষ্পর্শ – তত বেশি অক্সিটসিন হরমোনের স্তর”!

    “অক্সিটসিন প্রকিতিকে সনিবন্ধ অনুরোধ করে আরো বেশি আন্তরিক বন্ধনের জন্য,” বিট্টন বলেন।

    উচ্চ মাত্রার অক্সিটসিনের সাথে সঙ্গীর প্রতি “উদার” অনুভুত হবার সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। তাই যদি মাঝে মাঝে আপনি আপনার সঙ্গীর প্রতি উদার মনোভাবের অনুভতি অনুভব করেন তবে তার কৃতিত্ব কিন্তু এই অক্সিটসিন তথা লাভ-হরমোন এর!

     

    ৬. শাররীক মিলন আত্মসম্মানবোধের উন্নতি সাধন করেঃ যৌনমিলনের ২৩৭ টি কারনের মধ্যে আত্মসম্মানবোধের উন্নয়নও মিলনের একটি উল্ল‌্যেখযোগ্য কারন – ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাসের গবেষক দলের উদ্ভাবিত “আর্কাইভ অব সেক্সুয়াল বিহেভিয়্যর” জার্নালে প্রকাশিত এক আর্টিক্যালে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়।

    জিনা অগডোন (পিএইচডি) নামের ক্যামব্রিজের একজন সেক্স থেরাপিষ্ট বলেন, যেসব মানুষের আত্মসম্মানবোধ অন্যের তুলনায় ভাল – তারাও অনেকসময় আরো বেশি মানসিক প্রশান্তির প্রত্যাশায় মিলন করে থাকেন। তার মতে ভাল মানের যৌনমিলনের শুরুই হয় আত্মসম্মানবোধের দৃড়তার ভিত্তিতে, এবং এটার ক্রমঃউন্নয়ন হয় – যদি শাররীক মিলনের সাথে ভালবাসার সংযুক্তি থাকে। তিনি আরোও বলেন – অনেক মানুষ তার সাথে আলোচনায় উল্ল্যেখ করেন যে নিজের সম্পর্কে পজেটিভ ধারনা জাগানোর লক্ষ্যে তারা অনেক সময় মানুষ যৌনমিলন করে থাকে।

     

    ৭. যৌনমিলন ব্যথা নিরাময় করেঃ অন্তরঙ্গতার ফলে যখন অক্সিটসিন (oxytocin) হরমোন প্রচন্ড তরাঙ্গায়ীত হয় তখন ইনড্রোপিন হরমোনের উৎপাদন বৃদ্ধি পায়, ইনড্রোপিন কার্যকরী ব্যথানাশক – ফলে প্রাকৃতিক ভাবেই যন্ত্রনা হ্রাস পায়। তাই যদি আপনার মাথাব্যথা, গেটে বাতের ব্যথা সহ অন্য শাররীক ব্যথা থাকে তাহলে যৌনমিলনের পর ইনড্রোপিন তা কমিয়ে আনবে।

    বুলেটিন অব এ্যক্সপেরিমন্টাল বায়োলজি এন্ড মেডিসিন এ মুদ্রিত এক আটির্কেলে উল্ল্যেখ করা হয় ৪৮ জন সেচ্ছাসেবককে শ্বাসের মাধ্যমে অক্সিটসিনের বাষ্পীয় রুপ সেবন করানো হয় এবং তাদের হাতের আঙুল মচেকে দেয়া হয়। অক্সিটসিন ক্রিয়াশীল অবস্থায় তাদের ব্যথার অনুভুতি প্রায় অর্ধেক পাওয়া গিয়েছে।

     

    ৮. শাররীক মিলন মুত্রাশয় এবং মুত্রনালীর ক্যান্সারের ঝুকি কমায়ঃ নিয়মিত বীর্যপাত, বিশেষ করে ২০ উর্দ্ধ বয়সের পুরুষের ক্ষেত্রে পরবর্তীতে (বয়স্ক অবস্খায়) মুত্রাশয় এবং মুত্রনালীর ক্যান্সারের ঝুকি কমায়। অষ্ট্রেলিয়ান গবেষকদলের তথ্য মতে (ব্রিটিশ জার্নাল অব ইউরোলোজি ইন্টারন্যাশনালে মুদ্রিত) যখন তারা প্রোষ্টেট ক্যান্সার রোগী এবং সাধারন (রোগমুক্ত) পুরুষের রোগ নির্নয়ের পরীক্ষা করেন, তখন তারা মুত্রাশয় এবং মুত্রনালীর ক্যান্সারের সাথে ৩০, ৪০ এবং ৫০ বছর বয়সে শাররীক মিলনের হারের বড় একটি সম্পর্ক আবিষ্কার করেন। যেসকল পুরুষ ২০ উর্দ্ধ বয়সে সপ্তাহে পাঁচ অথবা ততোধিক বীর্যপাত ঘটিয়েছেন তাদের মুত্রাশয় এবং মুত্রনালীর ক্যান্সারের ঝুকি ৩৩% কম। অর্থাৎ কম শাররীক মিলন মানে বেশি মুত্রাশয় এবং মুত্রনালীর ক্যান্সারের ঝুকি।

    অন্য একটি গবেষনায় ডাক্তারগন বলেন, মাসে ২১ বার কিংবা ততোদিক যৌনমিলনের ফলে বৃদ্ধ বয়সে মুত্রাশয় এবং মুত্রনালীর ক্যান্সারের সম্ভাবনা ২১ বারের কম এমনকি চার থেকে সাত বার মিলনকারীদের চেয়ে ৩৩% ভাগ কম।

     

    ৯. যৌনমিলন পিলভিক প্লোর পেশী (নারী এবং পরুষের গোপনাঙ্গের কাছে অবস্থিত পেশী যা শাররীক মিলনে গুরুত্বপুর্ন ভুমিকা রাখে) শক্তিশালী করেঃ নারীর জন্য, শাররীক মিলনের সময় সামান্য পরিমনা কিগ্যিল তথা পিলভিক প্লোর ব্যয়ামে নানাবিধ উপকারীতা পরিলক্ষিত হয়। এতে অধিক আনন্দ (pleasure) উপভোগের সাথে যৌনাঙ্গ টাইট করা সহ অধিক বয়সে অন্য নারীর তুলনায় বেশি সুস্থ্য থাকবেন।

    সাধারন কিগ্যিল ব্যয়ামের জন্য মিলনকালে পিলভিক পেশীকে সংকুচিত করে ধরুন যেমনটি প্রস্রাবের গতি রোধ করার জন্য করে থাকেন। সংকুচিত অবস্থায় এক থেকে তিন পর্যন্ত গুনুন এবং তার পর ছেড়ে দিয়ে স্বাভাবিক হউন। একই নিয়মের পুনরাবৃত্তি করুন ১০ বার।

     

    ১০. শাররীক মিলন নিরবচ্ছিন্ন নিদ্রা নিশ্চিত করেঃ মিলনে পূর্নতৃপ্তিতে যে অক্সিটিসন

    Professor Answered on June 26, 2015.
    Add Comment
  • RELATED QUESTIONS

  • POPULAR QUESTIONS

  • LATEST QUESTIONS

  • Your Answer

    By posting your answer, you agree to the privacy policy and terms of service.