কিভাবে সবসময় নিজেকে টেনশন মুক্ত রাখব? বা চিন্তা থেকে দুরে রাখবো?
কিভাবে সবসময় নিজেকে টেনশন মুক্ত রাখব? বা চিন্তা থেকে দুরে রাখবো?
আমাদের মস্তিষ্ক সবসময় চিন্তা করে চলে এটাই মস্তিষ্কের ধর্ম। আমাদের দেহের কোন অংশেতে একটি কোষ ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থায় রয়েছে এবং তাকে সুস্থ করতে হবে সেই চিন্তাটা মস্তিষ্কের। কিন্তু এই চিন্তাটা যে মস্তিষ্ক করছে সেটা আমাদের চিন্তাতে আসেনা। হৃদপিণ্ড কে সবসময় ধুকপুক করাতে হবে, এই চিন্তার দায়টাও আমরা মস্তিষ্কের উপর ছেড়ে দিয়ে নিশ্চিন্ত। সচেতন এবং অবচেতনভাবে মস্তিষ্ক ক্রমাগত চিন্তা করে চলেছে। অবচেতনভাবে মস্তিষ্ক যে চিন্তাগুলো করে সে গুলোকে স্তব্ধ করলে জীবন স্তব্ধ।
সচেতনভাবে আমরা যে চিন্তাভাবনাগুলো করি সেগুলো আমাদের টেনশনের কারণ। সচেতনভাবে আমরা কি ধরনের চিন্তা করি এবং টেনসনে আক্রান্ত হই?
সংসারের চিন্তা, ভবিষ্যতের চিন্তা, দেশের রাজনৈতিক চিন্তা ইত্যাদি নানান রকমের চিন্তা।
মনকে চিন্তা শূন্য সব সময় করে রাখা উচিত নয়। তবে চিন্তার উপরে নিয়ন্ত্রণে আনা অত্যন্ত জরুরী। এক্ষেত্রে জাগতিক এবং আধ্যাত্মিক দুটো উপায় আছে। আর আরেকটা আছে জীবন যুদ্ধে আমার মতো ফাঁকিবাজ ছাত্রদের জন্য বিশেষ টোটকা।
জাগতিক উপায় হচ্ছে, যখন কোন বিষয়ে প্রচন্ড চিন্তা হবে তখন কায়িক পরিশ্রম হয় এমন কাজ করা শুরু করে দিন। না করতে ইচ্ছা হবে না। কিন্তু করতেই হবে। কাজ না থাকলে খুঁজে কাজ বার করে কাজ করুন যাতে পরিশ্রম হয়। টেনশন থেকে অনেক স্বস্তি পাওয়া যাবে। সম্প্রতি আমি পারিবারিকভাবে বিশাল সমস্যায় রয়েছি মারাত্মক ডিপ্রেশন আসছে মাঝে মাঝে। কারণটা আমার পূর্ববর্তী লেখায় আপনি পেয়ে যাবেন, যাইহোক এই মুহূর্তে যখন আমার প্রচন্ড চিন্তা অথবা ডিপ্রেশন অথবা দুঃখ আসছে তখন আমি দেহের পরিশ্রম হয় এমন কাজকর্ম করা শুরু করে দিচ্ছি। পেশাগত কারণে আমার কাজ কম্পিউটার টেবিলে বসে। ডিপ্রেশন যখন আসে তখন আমি ঘর মোছা-ঝাড় দেওয়া বাসন মাজা ইত্যাদি পরিশ্রমের কাজ করা শুরু করেদি। এর ফলে অনেকটা টেনশন মুক্ত রাখতে পারছি নিজেকে। যদিও এ ধরনের কাজ করার ফলে আমার পরিচারক আমাকে হয়তো পাগল ভাবছেন। কিন্তু কিছু করার নেই। আপনি বাঁচলে বাপের নাম ।
আধ্যাত্বিক উপায় টা হচ্ছে মনকে চিন্তাশূন্য করার জন্য নাক দিয়ে নিঃশ্বাস নিয়ে মুখ দিয়ে নিঃশ্বাস ছাড়া এবং নিঃশ্বাস নেওয়ার সময় মনে করতে হবে যে নিশ্বাসটা প্রবেশ করছে দুই ভুরুর মাঝখানে অবস্থিত তৃতীয় নেত্র দিয়ে। সামান্য প্রক্রিয়া। কিন্তু এতে দ্রুত মস্তিষ্কের উপর কন্ট্রোল আসে। মনকে চিন্তাশূন্য করা যায় সহজে। কারণ, আপনি যখন নিঃশ্বাসে ধ্যানস্থ হচ্ছেন তখন চিন্তাটা নিঃশ্বাসে থাকছে আর ধ্যানস্থ হওয়ার কারণে নিঃশ্বাস এর মাত্রা আছে আস্তে আস্তে কমছে। এতে মস্তিষ্ক চিন্তাশূন্য হয়ে যাচ্ছে অভ্যাসের মাধ্যমে।
গোজামিল পদ্ধতি আছে একটা। সেটা হচ্ছে মস্তিষ্ককে বোকা বানানো। আপনি কোন বিষয়ে চিন্তা করছেন। সেখান থেকে আরেকটা বিষয় পৌঁছাচ্ছেন। এরকম করে দশ মোটা চিন্তা ক্রমাগত করে যাচ্ছেন। এবার আপনি আপনার মস্তিষ্ককে মন দিয়ে প্রশ্ন করুন, আমি তো এই দশটা চিন্তা করলাম এরপরে আমার কি নিয়ে চিন্তা করা উচিত? ক্রমাগত মস্তিষ্ককে এই প্রশ্ন টি করতে থাকুন। মস্তিষ্ক বোকা হয়ে চিন্তা করা বন্ধ করে দেয়।
ট্রাই করে দেখুন, আমার কাজে লেগেছে আপনাদের যদি কাজে লাগে ভালো লাগবে। যদিও চিন্তা ভরা এই বিশ্বে চিন্তামণির কর্মে এ ব্যাঘাত ঘটানো অধিকার আমার নেই।
প্রশ্ন করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।