কীভাবে বুঝবো কোনো মেয়ের মনের কথা?
অনেকেই বলে থাকেন মেয়েদের মন বোঝা খুবই জটিল।
মেয়েরা কখন কি করে, কখন কি ভাবে, কখন কি বলে সত্যিই নাকি ছেলেদের পক্ষে জটিল বিষয় হয়ে দাঁড়ায়।
তবে আমি বলবো মেয়েদের মন বোঝা খুব একটা জটিল বিষয় নয়। চেষ্টা করলে এবং সঠিক ভাবে অনুসরণ করলে সহজেই তাদের ব্যাপারে অনেক কিছু অজানা তথ্য জানতে পারা যায়।
যেসব ছেলেদের মেয়ে বন্ধু বেশি আছে তারা খুব সহজেই অন্য মেয়েদের ব্যাপারে অনেক কিছু বলে দিতে পারবে।
কিন্তু অপরদিকে আপনি পারবেন না।
কারণ, তেমন ভাবে মেয়েদের সঙ্গে আপনি মেলামেশা করেন নি।
আপনি হয়তো গল্পের বই পড়ে, কিংবা সিনেমা দেখে কিছু অবশ্যই জানতে পারবেন।
কিন্তু সেগুলো বাস্তবে খুব একটা কার্যকর হয়ে উঠে না।
যেমন, সিনেমার নায়ক কিংবা নায়িকারা অনেক টা পাগলাটে টাইপের হয়ে থাকে। নায়ক নায়িকা কে দেখার পর তার সব কাজ ফেলে দিয়ে নায়িকার পেছনে পেছনে ঘুরতে থাকে।
এখানে আমি বলবো আপনি যত বেশি মেয়েটির পেছনে ঘুরবেন। মেয়েটির লেজ ও তত বেশি মোটা হয়ে যাবে।
সত্যি কারের কাউকে ভালোবাসতে চাইলে ভুলেও তার পেছনে ঘুরবেন না………..
তার আগে মেয়েদের ব্যাপারে কিছু অজানা তথ্য জেনে নেওয়া জরুরী……..
(১) মেয়েরা সাধারণত কোনটা সত্যি কথা এবং কোনটা মিথ্যা কথা খুব সহজেই বুঝতে পারে। কারণ, তারা মিথ্যা কথা ছেলেদের তুলনায় বেশি বলে থাকে এবং মেয়েদের অবজারভেশন ক্ষমতা খুব ভালো।
তাই আপনি যদি তাদের মিথ্যা কথা বলতে যান তাহলে আপনার ধরা পড়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
(২) মেয়েদের মধ্যে ঈর্ষান্বিত ব্যাপারটা ছেলেদের তুলনায় একটু বেশি করে দেখা যায়। মেয়েরা সাধারণত অধিকার বজায় রাখতে বেশি পছন্দ করে। আপনি যদি অন্য কারোর সাথে কথা বলেন তখন সে ভীষন রেগে যায় সেই মেয়েটির উপর।
(৩) মেয়েদের সামনে আপনার জীবনের সব ঘটনা, সব কথা খুলে বললে তারা সেটিকে বিশ্বাস করে এবং নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করে….
(৪) একজন নারী কোন কথা বা কোন গোপন বিষয় বেশি দিন পেটের ভিতর রাখতে পারে না। দুই দিনের মধ্যেই বমি করে বের করে দেয়।
(৫) মেয়েরা আর একটি জিনিস খুব ভালো পারে, সেটি হল কান্নাকাটি করতে। কথায় কথায় এদের চোখে জল এসে যায়।
(৬) মেয়েরা ফেসবুকে বা অন্য কোন সোস্যাল সাইটে কোন কারণ ছাড়াই সহজে কোন পৌস্ট করে না। জানতে হবে এর পেছনে নিশ্চয়ই কোন কারণ অবশ্যই আছে।
(৭) মেয়েদের কে আপনার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে এবং আপনার বন্ধুদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিলে আপনার প্রতি তার ভরসা আর বিশ্বাস অনেক গুন বেড়ে যায়।
(৮) ছেলেরা যেমন মেয়েদের দিকে তাকায় তেমনি মেয়েরাও ছেলেদের দিকে তাকায়। কিন্তু তাদের তাকানোর কিছু কৌশল আছে । ছেলেরা যেমন ভেলভেল করে তাকায় মেয়েদের দিকে। মেয়েরা কিন্তু এতটা সময় নেয় না তারা একবার চোখ বুলিয়ে বলে দিতে পারে কে বা কারা তার দিকে কি ভাবে তাকিয়ে আছে।
(৯) মেয়েরা জানে তাদের কেমন দেখায় তবুও তারা জানতে চায়। কারণ, প্রশংসা শুনতে কার না ভালো লাগে আর মেয়েরা এটা একটু বেশিই চায়….
(১০) মেয়েরা চায় তার সঙ্গী যেন তাকে খুব ভালোবাসুক।
যে মেয়ে এই ভালোবাসা পায় সে মেয়ে সহজে তাকে ছাড়তে পারে না এবং ভুলতেও পারে না কখনও………
(১১) কোন মেয়ে যদি একবার কোন ছেলেকে মন থেকে অপছন্দ করতে শুরু করে যে কোন কারনে। তাহলে সেই মেয়ে সহজে তাকে আর মনের মধ্যে জায়গা দিতে পারে না।
সে ছেলে যত চেষ্টাই করুক না কেন তবুও….
(১২) মেয়েদের প্রবল ইচ্ছা জাগলেও তারা মুখে কিছুই বলবেনা। কিন্তু তার কিছু আচরণ, হাবভাব দেখে আপনাকে বুঝতে হবে, না হলে এরা ভীষন রেগে যায়।
মেয়েরা চায় আপনি আগে শুরু করুন, আপনি আগে তাকে তার গোপন কথা বলুন।
(১৩) মেয়েরা দূর্বল, ব্যক্তিত্বহীন পুরুষের সাথে মিশতে পছন্দ করে না। তারা সবসময় পুরুষের যে কোন একটি ভালো গুণ দেখে তার পর তার সাথে রিলেশন করে। কিন্তু তার আগে পর্যন্ত এরা কাউকে পাত্তা দেয় না।
(১৪) মেয়েদের কে তাদের অতীতের কোন বিষয় গল্প করার ছলে মনে করিয়ে দিলে তারা মনে মনে ভীষন খুশী হয় এবং আপনার প্রতি তার শ্রদ্ধা অনেক খানি বেড়ে যায়….
(১৫) মেয়েরা যখন তাদের ফোনে আপনার নোটিফিকেশন দেখে তখন তাদের হৃদয়ের স্পন্দন হঠাৎ করে বেড়ে যায় …..
(১৬) মনোবিজ্ঞান বলে একজন মেয়ে একজন অপরিচিত ব্যক্তি কে মূল্যায়ন করতে পরে মাত্র ৪৫ সেকেন্ডে।
এরমধ্যে ১০ সেকেন্ড শরীরের সামগ্ৰিক ছাপ তৈরি করতে, ৮ সেকেন্ড চোখে, ৭ সেকেন্ড ঠোঁটে, এবং ১০ সেকেন্ড চিবুকের দিকে আর ৫ সেকেন্ড কাঁধে।
আর শেষ ৫ সেকেন্ড হাতের আংটির দিকে তাকায়। তার বিয়ে হয়েছে কি না……
(১৭) মেয়েরা যদি কোন পুরুষের থেকে সমস্ত আগ্ৰহ হারিয়ে ফেলে তার তখন নিজেদের কে খুবই ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করে।
(১৮) মেয়েরা সব সময় পুরুষের উপর নির্ভরশীল হয়ে থাকতে চাই না। তারা অনেক সময় পুরুষদের সাহায্য করার জন্য এগিয়ে আসে এবং নিজের সবটুকু দিয়ে সাহায্য করার চেষ্টা করে।
(১৯) যখন কোন মেয়ে আপনার প্রতি হতাশ এবং রাগাঙ্গিত হয় না। তখন আপনি ভাবতে পারেন সে আপনাকে নিয়ে কোন পরোয়া করে না।
(২০) যে সকল মেয়েদের আই কিউ বেশি অর্থাৎ বুদ্ধিমতি মহিলাদের সঙ্গী খুঁজে পেতে অনেক সময় লাগে।
(২১) মেয়েরা তাদের প্রেমের কথা সহজে কাউকে বলে না। বর্তমানে সে কাকে ভালোবাসে। কারণ, তারা বিশ্বাস করতে পারে না কারোর উপর।
(২২) যদি কোন মেয়ে চুপচাপ থাকে, কিংবা একা থাকার চেষ্টা করছে তার মানে সে কোন বিষয় নিয়ে খুবই চিন্তিত আছে। অথবা তার মাথায় অনেক গুলো চিন্তা ভাবনা ঘুরপাক খাচ্ছে।
(২৩) যদি কোন পুরুষ কোন মেয়েকে “আই লাভ ইউ” বলে। তখন সেই মুহূর্তে মেয়েটি নিজেকে অনেক সুন্দরী মনে করে।
২৪) বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আমরা এটাই শুনে থাকি, একজন পুরুষ একজন মেয়েকে খুব ভালোবাসে। কিন্তু এই কথাটা পুরোপুরি ঠিক না, একজন মেয়েও একজন পুরুষকে প্রচুর পরিমাণে ভালো বাসে।
শুধুমাত্র ছেলেরা নয়, মেয়েরাও সমান ভাবে ভালোবাসতে জানে।
(২৫) ভালোবাসার কথা মেয়েরা কখনোই আগে বলতে চায় না। তারা সবসময় চেষ্টা করে ছেলেরা আগে তাদের ভালোবাসার কথা বলুক।
(২৬) মেয়েদের সহজে বুঝতে যাওয়ার চেষ্টা করবেন না। তাহলে আপনার হয় মাথা খারাপ হয়ে যাবে কিংবা প্রেমে পড়ে যাবেন……..
তবে এখানে একটা কথা বলে রাখি, সব মেয়েদের ক্ষেত্রে এই ব্যাপার গুলো নাও ফলতে পারে। কারণ, এই পৃথিবীতে বিভিন্ন ধরনের মানুষের বসবাস তাদের স্বভাব চরিত্র মন এক রকম হওয়া খুবই জটিল।
তাই আমি বলবো সময়, পরিস্থিতি, স্থান, কাল, পাত্র এগুলো সবসময় মাথায় রাখা উচিত।
নাহলে কখন কি বলতে হয় না জানলে বিপদে পড়ার সৌভাগ্য বেশি হয়ে যাবে।
এরপর বলি কেন তাদের মন বোঝা ছেলেদের ক্ষেত্রে জটিল মনে হয়।
(১) তারা বেশির ভাগ সময় চায় ছেলেটি তার সাথে আগে কথা বলুন কিন্তু যখন তার সাথে আপনি কথা বলতে যাবেন তখন তাদের ভাব ভেতর থেকে বেড়ে যায়। তারা তখন ভাবতে শুরু করে একে আর একটুখানি পাজিয়ে দেখা যাক।
২) এদের মনে সর্বদা একটার পর একটা চিন্তা ঘুরপাক খেতেই থাকে। তাই তারা অনেক সময় নিজেরাই জানে না কখন কি করবো বা কখন কি বলবে….
(৩) এদের মাঝে মধ্যে আবেগ এতো খানি বেড়ে যায় সামান্য একটু কারনেই।
তাই তারা আবেগের বশে বড় সড় ভুল করে ফেলে এবং পরে মনে করে আপসোস করে। আর অপরদিকে ছেলেটি অপমানিত হয়ে তার থেকে দূরে সরে যায়….
(৪) মেয়েরা একা চলতে পছন্দ করে না তাই তারা দল বেঁধে বান্ধবী দের সাথে যুক্ত হয় কিংবা বন্ধুদের সাথে বা অন্য কারোর সাথে সব সময় এদের দেখা যায়।
(৫) এদের আর একটা বড়ো দোষ হলো, এরা বন্ধুদের বান্ধবদের কথা বেশি শুনে থাকে এবং তারা যেসব আলোচনা করে সেগুলো বিশ্বাস করে থাকে মনে প্রানে। তাই এরা নিজেদের চিন্তা ভাবনা অন্যের উপর ছেড়ে দেয়…..
সামান্য একটা ছোট কাজ করতে গেলেও অন্যের পরামর্শ নিয়ে থাকে।
(৬) অন্যের কথা বিশ্বাস করে খুব সহজেই কাছের মানুষদের ভুল বুঝে। আর একটি সুন্দর সম্পর্কের থেকে আলাদা হয়ে যায়।
(৭) আজকের দিনে ডিভোস বেশি হয়ে থাকে সাধারণত এই কতকগুলো কারনের জন্য।
মেয়েরা অন্যদের কথা বিশ্বাস করবে কিনতু আপনার কথা বিশ্বাস করতে চাইবে না।
(৮) মেয়েদের কখনো কোন ভাবেই খারাপ কিছু বলতে যেওনা। যদি তার কাছে আপনার কথাটি খারাপ মনে হয়। তাহলে আপনি জানবেন আরো ২০ টি মেয়ে আপনাকে খারাপ মানুষ বলেই জানবে। কারণ, এরা প্রচার করতে খুব ভালো পারে…..
(৯) মেয়েদের কে কখনোই ধূয়া তুলসী পাতা ভাবতে যেওনা। কারণ, এরা ছেলেদের থেকে বেশি খারাপ কিছু কথা বলে এবং আলোচনা করে। কিন্তু সেটা বুঝতে দেয় না।
যদি আপনার সে রকম কোনো বৌদি থাকে তার সাথে একবার ফ্রী মাইন্ডে মিশে দেখুন….
(১০) সবচেয়ে বড় কথা হলো, এরা মন থেকে সবেই করতে চায় কিন্তু লোক লজ্জার ভয়ে এরা কিছুই করতে পারে না। যদি আপনাকে বাগে পায় সেদিন ভালো করে বুঝতে পারবেন আপনি তার থেকে এখনও অনেক ছোট আছেন।
(১১) মেয়েরা বাইরে এক রকম অভিনয় করে, মানে আমরা তাদের যতক্ষণ সবার মধ্যে দেখে থাকি তারা ততক্ষণ তাদের অভিনয় চালিয়ে যায়।
যেই তারা লোকালয়ের থেকে তাদের নিরাপদ স্থানে পৌছায় ওমনি তাদের আসল রূপ ফুটে ওঠে।
(১২) যদি আপনি তাদের ভালো করে বুঝতে চান। তাহলে সে যেখানে নিরাপদ মনে করবে সেই স্থানে নিয়ে যান, দেখবেন তার সন্মদ্ধে অনেক কিছু অজানা তথ্য জানতে পারবেন।
(১৩) মেয়েরা সবচেয়ে বেশি নিরাপত্তা হীনতায় জন্য অনেক ভুল ভাল কাজ করে থাকে। তারা যেটা করতে চায় না সেটাও অনেক সময় বাধ্য হয়ে করে থাকে।
হয়তো আপনাকে অপমান করার তার কোন ইচ্ছাই ছিল না কিন্তু আপনি এমন জায়গায় এমন সময় তাকে আপনার মনের কথা জানালেন। যেটা সেই মূহূর্তে তার থেকে মেনে নেওয়া মুসকিল ছিল………….
পরে হয়তো আপনার কথা মনে করে সে একটু দুঃখ প্রকাশ করবে, এবং মনে মনে ভাববে তাকে ওভাবে এত লোকের সামনে অপমান করা আমার ঠিক হয়নি। বা আমি একটু আবেগের বশে বেশিই বাড়াবাড়ি করে ফেলেছি।
আবার অনেকে এসব নাও ভাবতে পারে যারা একটু অহংকারী, জেদী টাইপের মেয়ে হয়ে থাকে।
তাই এদের একটু সঠিক ভাবে অনুসরণ করলেই এদের ব্যাপারে অনেক কিছু অজানা তথ্য জানতে পারা যায়……
যাইহোক, মেয়েদের ব্যাপারে মনোবিজ্ঞান এবং বাস্তব মিলিয়ে যে সব কথা গুলো বলেছি, এর মধ্যে যদি আমার কোন ভুল হয়ে থাকে তাহলে, মেয়েদের কাছে আগের থেকেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি…..